hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নবী মুহাম্মদ সা. এর আগমনের প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য, দা‘ওয়াতের পদ্ধতি ও কৌশল

লেখকঃ ড. মো: আবদুল কাদের

২১
এক. আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহবান
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে সর্বপ্রথম আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপনের আহবান জানান। এক আল্লাহর আহবান মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করে। রাজা-প্রজা, ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালোর ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়, তাঁর সাথে কোন শরীক নেই। তিনি চিরস্থায়ী, চিরঞ্জীব, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সর্ব বিষয়ে তিনি অধিক জ্ঞাত, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অাঁধার। তাঁর ইশারায় রাত-দিন আবর্তিত হয়। আলোকিত হয় সারা বিশ্বময়, আকাশ ও জমীনের মধ্যবর্তী সমুদয় কিছুর তিনিই স্রষ্টা। [এ মর্মে পবিত্র কুরআনের সূরা ত্বা-হায় এসেছে, ﴿ لَهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَا وَمَا تَحۡتَ ٱلثَّرَىٰ ٦ وَإِن تَجۡهَرۡ بِٱلۡقَوۡلِ فَإِنَّهُۥ يَعۡلَمُ ٱلسِّرَّ وَأَخۡفَى ٧ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ لَهُ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ ٨ ﴾ [ طه : ٦، ٨ ] ‘‘আর আসমান সমূহ ও যমীনের উপর অবস্থিত যাবতীয় বস্ত্ত এবং যা কিছু তার মাঝে ও মাটির নীচে অবস্থিত সব কিছুর মালিক তিনিই। তুমি উচ্চ কন্ঠে যা বল তা সহ তিনি যাবতীয় গুপ্ত ও অব্যক্ত সবই জানেন। আল্লাহ , তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তাঁর অনেক উত্তম নাম রয়েছে।’’ সূরা ত্বা-হা : ৬-৮।সূরা আল-কাসাসে এসেছে, ﴿ وَرَبُّكَ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُ وَيَخۡتَارُۗ مَا كَانَ لَهُمُ ٱلۡخِيَرَةُۚ سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٦٨ وَرَبُّكَ يَعۡلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمۡ وَمَا يُعۡلِنُونَ ٦٩ وَهُوَ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ لَهُ ٱلۡحَمۡدُ فِي ٱلۡأُولَىٰ وَٱلۡأٓخِرَةِۖ وَلَهُ ٱلۡحُكۡمُ وَإِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ ٧٠ ﴾ [ القصص : ٦٨، ٧٠ ] ‘‘আপনার পালনকর্তা যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং পছন্দ করেন। তাদের কোন ক্ষমতা নেই। আল্লাহ পবিত্র এবং তারা যাকে শরীক করে তা থেকে তিনি উর্দ্ধে। তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে আপনার পালনকর্তা তা জানেন।’’ সূরা আল-কাসাস : ৬৮-৭০।] তিনি এসব কিছু সৃষ্টি করে আমাদের উপর বিশাল অনুগ্রহ করেছেন। মানুষের প্রত্যাবর্তনস্থল মূলতঃ তাঁরই দিকে। এসব বিষয়ের সমুদয় জ্ঞান লাভের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৎকালীন সমজের মানুষকে আহবান জানিয়েছিলেন। যেহেতু তারা তখন আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করত, গাছ-পালা, তরু-লতা, মুর্তি-দেবতা, পাথর প্রভৃতির পূজায় তারা নিজেদের নিয়োজিত করত। আদি যুগে উত্তর ও দক্ষিন আরবের মরু ও পাহাড়ী অঞ্চলে এরূপ বস্তু পূজার নানা প্রকার নিদর্শন প্রত্নতত্ত্ববিদরা উদঘাটন করেছেন। ফিলিপ হিট্রির মতে, মস্তবড় এরূপ অন্ধবিশ্বাস ভিত্তিক ধর্মীয় অনুভূতি মরুদ্যানের অধিবাসীদেরকে কল্যাণকর দেব-দেবী পূজায় ও তীর্থস্থান পূজায় নিবিষ্ট করে। [P.K Hitti, History of The Arabs, opcit, p-97.] মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তাওহীদবাণী তাদের এসব বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে। আল্লাহর অনুপম সৃষ্টি ও অসংখ্য নিয়ামতরাজি নিয়ে একটু ভেবে দেখার জন্য তিনি স্বজাতিকে উদাত্ত আহবান জানান। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে,

﴿ قُلۡ أَرَءَيۡتُمۡ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَيۡكُمُ ٱلَّيۡلَ سَرۡمَدًا إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ مَنۡ إِلَٰهٌ غَيۡرُ ٱللَّهِ يَأۡتِيكُم بِضِيَآءٍۚ أَفَلَا تَسۡمَعُونَ ٧١ قُلۡ أَرَءَيۡتُمۡ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَيۡكُمُ ٱلنَّهَارَ سَرۡمَدًا إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ مَنۡ إِلَٰهٌ غَيۡرُ ٱللَّهِ يَأۡتِيكُم بِلَيۡلٖ تَسۡكُنُونَ فِيهِۚ أَفَلَا تُبۡصِرُونَ ٧٢ وَمِن رَّحۡمَتِهِۦ جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّيۡلَ وَٱلنَّهَارَ لِتَسۡكُنُواْ فِيهِ وَلِتَبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ٧٣ ﴾ [ القصص : ٧١، ٧٣ ]

‘‘হে রাসূল ! আপনি বলে দিন, ভেবে দেখ তো, আল্লাহ যদি রাত্রিকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে, যে তোমাদেরকে আলোকদান করতে পারে? তোমরা কি তবুও কর্ণপাত করবে না? আর আল্লাহ যদি দীনকে কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে, তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে যে তোমাদেরকে রাত্রিদান করতে পারে, যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে, তোমরা কি তবুও ভেবে দেখবে না? তিনি স্বীয় করুনায় তোমাদের জন্য রাত ও দিন করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ কর ও তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষন কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-কাসাস : ৭১-৭৩।]এভাবে তিনি আল্লাহর সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে তাদের উপাস্যদের সাথে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন। কিন্তু তথাপিও তারা অনুধাবন করতে সক্ষম হল না। পরকাল দিবসে তাদের উপাস্যদের কাছ থেকে প্রমাণ চাওয়া হবে। তখনই তারা তা বুঝতে ও অনুধাবন করতে পারবে, অথচ সেদিনের তাদের অনুভুতি কোন্‌ কাজে আসবে। [আল্লাহ বলেন, ﴿ وَيَوۡمَ يُنَادِيهِمۡ فَيَقُولُ أَيۡنَ شُرَكَآءِيَ ٱلَّذِينَ كُنتُمۡ تَزۡعُمُونَ ٧٤ وَنَزَعۡنَا مِن كُلِّ أُمَّةٖ شَهِيدٗا فَقُلۡنَا هَاتُواْ بُرۡهَٰنَكُمۡ فَعَلِمُوٓاْ أَنَّ ٱلۡحَقَّ لِلَّهِ وَضَلَّ عَنۡهُم مَّا كَانُواْ يَفۡتَرُونَ ٧٥ ﴾ [ القصص : ٧٤، ٧٥ ] ‘‘সে দিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেন, তোমরা যাদেরকে আমার সাথে শরীক মনে করতে তারা কোথায় ? প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে আমি একজন সাক্ষ্য আলাদা করব ; অতঃপর বলব, তোমাদের প্রমান আন। তখন তারা জানতে পারবে যে, সত্য আল্লাহর এবং তারা যা গড়ত তা তাদের কাছ থেকে উত্থাত হয়ে যাবে।’’ আল-কুরআন, সূরা কাসাস : ৭৪-৭৫।]

যুগে যুগে সকল নবী-রাসূল তাদের স্বজাতিকে সর্বপ্রথম এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও শির্কের অপনোদনের প্রতিই আহবান জানিয়েছেন। নূহ, হুদ ও ছালেহ আলাইহিস সালাম সকলেই এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি নিজ নিজ সম্প্রদায়কে দা‘ওয়াত দিয়েছেন এবং অন্যান্য ইলাহদের অস্বীকার করার প্রতি তাদের দৃষ্টি নিবন্ধ করেছেন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে,

﴿ وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِيٓ إِلَيۡهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعۡبُدُونِ ٢٥ ﴾ [ الانبياء : ٢٥ ]

‘‘আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশ দিয়ে প্রেরণ করেছি যে. আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই ইবাদত কর।’’ [আল-কুরআন, সূরা আল-আম্বিয়া : ২৫।]

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। এ পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহর অসংখ্য নি’আমত প্রাপ্ত হয়। তদুপরি গর্ব-অহংকারবশতঃ আল্লাহর নির্দেশমত জীবন পরিচালনা হতে বিরত থাকে। এ জন্যে মহান আল্লাহ তাদের উপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মাধ্যম হিসেবে কতিপয় ইবাদত ফরয করে দিয়েছেন, যেন বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। আর সেই নির্দেশগুলো যুগে যুগে নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে জনসাধারনের নিকট পৌঁছে দেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদতে রত থাকতেন এবং পাশাপাশি স্বীয় পরিবার-পরিজনকে সে ইবাদতের প্রতি আহবান জনাতেন। এ ক্ষেত্রে সালাতের গুরুত্ব সর্বাধিক। যুগে যুগে প্রেরিত সকল নবী-রাসূলের উপরই তা ফরয ছিল। কেননা, এর মাধ্যমে আল্লাহর সপ্রশংস মহিমা বর্ণনা করা যায় এবং পুরোপুরি তার কাছে মাথানত করে আত্মসমর্পণ করা সম্ভব হয়। এ দিকে ইঙ্গিত করে মহান আল্লাহ বলেন ‘‘হে নবী! তুমি তোমার পরিবার পরিজনকে নামাজের আদেশ দাও এবং নিজের উপর অবিচল থাকুন।’’ [আল-কুরআন, সূরা ত্বা-হা : ১৩২।]

ইসলাম শুধুমাত্র ব্যক্তির সংশোধনই কামনা করে না। ব্যক্তির পাশাপাশি স্বীয় পরিবার, সমাজ প্রভৃতির সংশোধনও নিশ্চিত করে। আর সেজন্যে প্রয়োজন নিজ নিজ পরিবার-পরিজনের ইসলামের অনুশীলন, যার মাধ্যমে একটি ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হওয়া সম্ভব। পরিবার ও সমাজের পরিবেশ ভিন্নরূপ হলে কোন ব্যক্তির পক্ষে ইসলামের পূর্ণ অনুশীলন অসম্ভব। অতএব, ব্যক্তির নামাযসহ যাবতীয় বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে সহায়ক শক্তি হলো আপন আপন পরিবার। এজন্যে মহান আল্লাহ তাঁকে এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবনে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তা বাস্তবায়ন করে গেছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম পরিবারের নিকট এ বিষয়ে দা‘ওয়াত উপস্থান করেছিলেন। ইমাম কুরতুবী বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেহ ফজরের নামাযের সময় আলী ও ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর গৃহে গমন করে الصلاة ، الصلاة বলতেন। [ইমাম কুরতুবী, প্রাগুক্ত, ৩য় খন্ড, পৃ. ২৫৬।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন