মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নবী মুহাম্মদ সা. এর আগমনের প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য, দা‘ওয়াতের পদ্ধতি ও কৌশল
লেখকঃ ড. মো: আবদুল কাদের
১৭
দা‘ওয়াতের সূচনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/470/17
হেরা গুহায় প্রথম ওহী নাযিল হওয়ার মধ্য দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত, আর সূরা আল-মুদ্দাসসিরের মাধ্যমে রিসালাতের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন। সূরা ‘আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জ্ঞান অন্বেষণের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। তৎকালীন সমাজ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উচ্চ শিখরে আরোহন করেছিল। বিশেষতঃ সাহিত্যের অঙ্গনে তাদের বিচরণ ছিল অত্যাধিক। এজন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দা‘ওয়াতের কাজ আঞ্জাম দেয়ার প্রস্তুতিস্বরূপ জ্ঞান অর্জন করার আহবান জানানো হয়। কারণ আল্লাহর পথে মানুষদেরকে যিনি দা‘ওয়াত দিবেন, তাঁকে অবশ্যই উদ্দিষ্ট বিষয়ে প্রভূত জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। এটি আল্লাহ প্রদত্ত ওহীর জ্ঞান, যা মানুষদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে, বাতিলের পথ থেকে হকের পথে, সন্দেহ-সংশয় থেকে বিশ্বাসের পথে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় ওহীর আগমন বন্ধ থাকে যা ‘‘ফাতরাতুল ওহী’’ নামে খ্যাত। [‘‘ فترة الوحي ’’ এর সময়কাল কারও কারও নিকট তিন বছর। মূলত: সেটা অল্প কিছু দিন ছিল। [আর রাহীকুল মাখতুম, প্রাগুক্ত, (সম্পাদক)] এ সময়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর পবিত্র কুরআনের অবতরণ বন্ধ ছিল। সময়টি হলো সূরা আলাক ও সূরা আল-মুদ্দাচ্ছির অবতীর্ণ হওয়ার মধ্যবর্তী সময়। ( ইবন হাজর আসকালানী, ফতহুল বারী, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ.২২)। তারপরও আবার কিছু দিন বন্ধ থাকার পর সূরা দুহা নাযিল হয়। [সম্পাদক]] ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত অস্থির ও বিচলিত হয়ে মানসিকভাবে কষ্ট অনুভব করেন। তাঁর মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা দূরীভূত করে মহান আল্লাহ ওহী নাযিল করেন। এ সময় সূরা মুদ্দাসি্সর এর ১-৭ আয়াত অবতীর্ণ হয়, যার মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দা‘ওয়াতী কাজে অগ্রবর্তী হয়ে সংশোধন ও সংস্কারের নির্দেশসহ পবিত্রতা অন্যায়-অবিচার হতে বিরত থাকা, অল্পে তুষ্ট থাকা ও যাবতীয় বাধা বিপত্তিতে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। [আল্লাহর বাণী, ﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥ وَلَا تَمۡنُن تَسۡتَكۡثِرُ ٦ ﴾ [ المدثر : ١، ٦ ] ‘‘হে বস্ত্রাবৃত ! উঠ এবং সতর্ক কর। তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা কর। স্বীয় পোশাক পরিচ্ছেদ পবিত্র করুন। অপবিত্রতা হতে দূরে থাক। অধিক পাওয়ার প্রত্যাশায় দান করিও না এবং তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ কর।’’ সূরা মুদ্দাচ্ছির : ১-৭।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আলোচ্য আয়াত ক’টি অবতীর্ণের মাধ্যমে ইসলামী দা‘ওয়াতের সূচনা হয়। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিগতভাবে এ কাজ শুরু করেন। সে সময় তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে নিকটতম ব্যক্তিদের দা‘ওয়াত দেওয়ার টার্গেট নির্ধারণ করেন। স্বীয় পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের নিকট ইসলামের সুমহান দা‘ওয়াত উপস্থাপন করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ঐ সকল লোকদের দা‘ওয়াত দিয়েছেন, যাদের চেহারায় সরলতা ও নমনীয়তার ছাপ রয়েছে এবং যারা তাঁকে সত্যবাদী, ন্যায়নীতিপরায়ণ ও সৎমানুষ হিসেবে জানে ও শ্রদ্ধা করে। [আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারকপূরী, প্রাগুক্ত, পৃ.৯০।] তাঁর সহধর্মিনী খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা ওহীর অবতরণ ও ওয়ারাকা ইবন নওফলের ভবিষ্যতবাণী শুনে তাঁর প্রতি ঈমান আনয়নের ঘোষণা দেন এবং অত্যন্ত বিচলিত অবস্থায় তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দৃঢ়তার সাথে সান্ত্বনা দিলেন। অতপরঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকটতম ব্যক্তিদের মধ্যে স্বীয় চাচাত ভাই আলী ইবন আবি তালেব ও স্বীয় গোলাম যায়েদ বিন হারেছাকে দা‘ওয়াত দেন। [যায়েদ ইবন হারেছা এসেছিলেন যুদ্ধে বন্দী হয়ে। পরে খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁর মালিক হন এবং স্বামীর জন্য তাকে নিয়োজিত করেন। এরপর তার পিতা ও চাচা তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিলেন কিন্তু পিতা ও চাচাকে ছেড়ে তিনি প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে থাকতে পছন্দ করেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ভৃত্য যায়েদকে আরব দেশীয় রীতি অনুযায়ী পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। এ ঘটনার পর তিনি যায়েদ ইবন মুহাম্মদ নামে পরিচিত হন। (আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপূরী, প্রাগুক্ত, পৃ.৯০)।] এভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে নিজ পরিবারে দা‘ওয়াতের কাজ করেন। এরা সবাই প্রিয় রাসূলের সততা, সত্যবাদিতা ও মহানুভবতা দেখে ইসলামের সূশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নেন। ইতিহাসে তারা ‘‘সাবেকীনে আউয়ালীন’’ নামে পরিচিত। [সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদেরকে ‘‘সাবেকীনে আউয়ালীন’’ বলে। ইসলামে তাদের মর্যাদা সর্বাধিক। সর্বপ্রথম স্বাধীন পুরুষদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু, মহিলাদের মধ্যে খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা, আযাদকৃত গোলামদের মধ্যে যায়েদ ইবন হারেছা রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং বালকদের মধ্যে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু। ( আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩য় খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩১)।] খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা ইসলাম গ্রহণের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদিজাকে নিয়ে প্রথম দু’রাকাত নামায আদায় করেন। তখন নামায দু’রাকাতই ছিল। পরে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে নিয়ে কাবাগৃহে নামায আদায় করেন। [আফীফ কিন্দী বলেন, আমি জাহেলী যুগে স্ত্রীর আতর ও কাপড় ক্রয় করার জন্য মক্কায় এসেছিলাম। সেখানে ভোর বেলায় কা‘বা শরীফের দিকে আমার দৃষ্টি পড়ে। আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুও আমার সাথে ছিলেন। এ সময় একজন যুবক আগমন করেন এবং আকাশ পানে তাকিয়ে কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ান। কিছুক্ষন পর একজন বালক এসে তাঁর ডান পাশে দাঁড়ায়। অতঃপর একজন নারী এসে এদের পিছনে দাঁড়ায়। এরা দু’জন নামায আদায় করে চলে গেলে আমি আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞেস করলাম, আব্বাস ঘটনা কি? তখন আব্বাস বললেন, তুমি কি জান এ যুবক ও মহিলাটি কে? আমি জবাব দিলাম না। তিনি বললেন যুবকটি হচ্ছে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ। আর বালকটি হচ্ছে আলী। আর এ মহিলা হচ্ছে মুহাম্মদের স্ত্রী। আমার ধারণা সারা দুনিয়ায় এ তিনজন ছাড়া কেউ তাদের দীনের অনুসারী নেই। আফীফ বলেন, এ কথা শুনে আমার মনে হয়েছে, চতুর্থ ব্যক্তি যদি তাদের সাথে আমি হতাম!।] তারপর তাঁর ঘনিষ্ট সুহৃদ আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং ইসলাম প্রচারে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি ছিলেন সর্বজনপ্রিয়, নরম মেজায, উত্তম চরিত্র এবং উদার মনের মানুষ। চমৎকার ব্যবহারের কারণে সবসময় তার কাছে মানুষ আসা যাওয়া করতো। এ সময় তিনি সমাজের এমন কিছু ব্যক্তিবর্গকে দা‘ওয়াতের জন্য বেছে নিলেন, যাদের উপর তাঁর দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় অনেক লোক ইসলামের অমীয় সূধা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়। তারা হলেন : ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু, আব্দুর রহমান ইবন আউফ, সা‘দ ইবন আবি ওয়াক্কাস, তালহা ইবন ওবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ। পরবর্তীতে এদের অনেকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। এরা সংখ্যায় আট জন, তারাই ছিল প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী দল। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ওহী নাযিলে বিশ্বাস স্থাপন করেন এবং তাঁর সাথে নামাজ আদায় করেন। এভাবে বিভিন্ন গোত্রের লোকজন ইসলামের শীতল ছায়ায় দলে দলে যোগদান করতে লাগল। মক্কার সর্বত্র ইসলামের আলোচনা চলতে থাকে এবং ইসলাম ব্যপকতা লাভ করে। [সীরাতে ইবন হিশাম, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৬২।] গোপন দা‘ওয়াতে যারা ইসলাম গ্রহণ করে তাদের সংখ্যা ছিল ৬০ জন। যার মধ্যে ১২ জন মহিলা ও ১৪ জন গোলাম ছিল। [ড. আকিল আব্দুহ মিশরী, তারিখুদ্ দা‘ওয়াতুল ইসলামীয়্যা, ১ম সংস্করণ, (সৌদি আরব: মাকতাবা দারুল মদিনা, ১৯৮৭), পৃ. ৮৬।] দা‘ওয়াতের এ পর্যায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ পরিবারকে সর্বপ্রথম তাঁর এ কাজে সহযোগী বানান। ফলে সর্বপ্রথম স্বীয় স্ত্রীর নিকট দা‘ওয়াত উপস্থাপন করেন। কারণ, নিজের স্ত্রী যদি তার আদর্শের সাথে একমত না থাকে তাহলে এ কাজ যতই ভাল হোক অন্যরা তা গ্রহণ করতে কখনো এগিয়ে আসবে না। মানুষ কোন ব্যক্তিকে তখনই সার্বজনীনভাবে গ্রহণ করে যখন তাকে স্বীয় পরিবার পরিজনের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দেখে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দা‘ওয়াতের এ গুরুদায়িত্ব সাময়িক কোন কাজ ছিল না। বরং এটি ছিল মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব। ফলে পরিবারের সহযোগিতা না থাকলে এ কাজ আঞ্জাম দেয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার ছিল। এ কারণে তিনি প্রথমেই তাঁর স্ত্রীকে এ কাজের সাথী হিসেবে পেলেন। অপরদিকে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও স্বীয় তত্বাবধানে প্রতিপালিত দশ বৎসর বয়সের এক বালক। [ইবনে সাইয়্যেদ আন্ নাস, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ৯২।] আজ হয়ত সে বালক, কিন্তু আগামী দিনে সে হবে যুবক। একটি সমাজ ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার জন্য যুবকদের ভূমিকা অপরিসীম। কেননা যুবকেরাই সমাজ গড়ে এবং ভাঙ্গে। সুতরাং যুবকেরা যদি প্রথমেই একটি আদর্শের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে তাহলে তাদের পক্ষে রিসালাতের এ মহান দায়িত্বের বোঝা বহন করা এবং সেটা প্রতিষ্ঠার কাজে ত্যাগ-তিতিক্ষা ও যাবতীয় কষ্ট মসিবত বরদাশত করা সম্ভব। তাই তিনি এ পর্যায়ে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রথমে টার্গেট নিলেন। অতঃপর তিনি স্বীয় ক্রীতদাস যায়েদ ইবন হারেছাকে ইসলাম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেন। মূলতঃ সে ছিল তাঁর পরিবারের একজন সদস্য। পরিবারের ভাল-মন্দ সবই তাঁর জানা আছে। তৎকালীন সমাজে দাস-দাসীদের মাধ্যমে মালিকগণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করাতো। অন্যদিকে কোন ব্যক্তি ভাল না মন্দ তার পরিচয় পাওয়া যায় দাসদের নিকট থেকে। অতএব, দাসদের ইসলাম গ্রহণ অত্যধিক গুরুত্বের দাবী রাখে। তিনি জাহেলী সমাজের চরিত্রবান, প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে ইসলামের ছায়াতলে আনতে সক্ষম হন। এভাবে গোপন দা‘ওয়াতে ইসলাম গ্রহণকারী সকল মুসলিম নিজের জান মাল দীনের জন্য উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থেকে একজন নেতার আনুগত্যের পরাকাষ্ঠার অধীনে ইসলামের সুমহান আলোকে চারদিকে বিচ্ছুরিত করে দেন। সময়, স্থান, কাল ও পরিপার্শ্বিক অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে তাঁরা দা‘ওয়াত দিয়েছেন। শুধু আবেগের বশবর্তী হয়ে দা‘ওয়াত দিলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল অত্যাধিক। মক্কায় প্রাথমিক পর্যায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোপন দা‘ওয়াতের পশ্চাতে উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ হলো :
মক্কার কাফেরগণ যাতে এ বিষয়ে অবগত হয়ে প্রথম থেকে দা‘ওয়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার সুযোগ না পায়।
গোপন দা‘ওয়াতের মাধ্যমে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন একদল সাহায্যকারী লোক তৈরী অতীব প্রয়োজন ছিল। কেননা, কোন আদর্শই সমাজে বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব নয়, যতক্ষণ সে আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য একদল সাহায্যকারী ও সমর্থক পাওয়া না যায়।
গোপন দা‘ওয়াতে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল তাদের জাহেলিয়াতের সকল বন্ধন ও সম্পর্ক ভুলে গিয়ে নতুন ভৃাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যা অতি অল্প সময়ে সম্ভব নয় বরং সুদীর্ঘ সময়ে তিন বছরে এ ধরনের একদল ভাতৃত্ব সম্পন্ন লোক তৈরী হয়েছিল।
গোপনে দা‘ওয়াতী কাজ পরিচালনার মাধ্যমে মক্কার সকল গোত্রের নিকট দা‘ওয়াত পৌঁছানো সম্ভব হয়েছিল। সমাজের সকল শ্রেণীর ও সকল পর্যায়ের লোকদের অংশগ্রহণ একটি আন্দোলনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এ পর্যায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবাগত মুসলিমদেরকে ‘‘দারুল আরকামে’’ প্রশিক্ষণ দিয়ে এমন এক পর্যয়ে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন যারা পরবর্তীতে কুরাইশদের নিষ্ঠুর, নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন ও কঠিন অগ্নি পরীক্ষার সময়ও ইসলাম থেকে বিচ্যুত হননি বরং সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় একতাবদ্ধ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য সার্বক্ষণিক নিজেদেরকে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/470/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।