মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য
লেখকঃ অধ্যাপক ড. ফালেহ ইবন মুহাম্মাদ আস-সুগাইর
১১
তৃতীয়ত: মুসলিম মহিলার নিজের ব্যাপারে দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহের অন্যতম আরেকটি দিক হলো: সৎকর্ম করা:
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/660/11
আর সৎকর্ম এমন কাজকে বলে, যার সমর্থনে আল-কুরআনুল কারীম অথবা সুন্নাতে নববী তথা হাদীসের দলীল রয়েছে।
আর সৎকর্মকে তার হুকুম তথা বিধান অনুযায়ী ফরয ও মুস্তাহাবের মত প্রকারে বিভক্ত করা হয়ে থাকে, আর তার প্রকারের মধ্যে এমন ধরণের সৎকর্ম আছে, যার উপকারিতা ব্যক্তির নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ; আবার এমন ধরনের সৎকাজ আছে, যার উপকারিতা অপরের দিকে ধাবিত হয়। সহজে বোধগম্য ব্যাপার হলো ইসলাম যা স্থির করে দিয়েছে, তা হলো: নারী তার কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে দায়বদ্ধ; তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে এবং তার কাজের হিসাব নেয়া হবে; এর ওপর নির্দেশিত আয়াতসমূহের আলোচনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে; উদাহরণস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“অতঃপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘আমি তোমাদের মধ্যে কর্মনিষ্ঠ কোনো নর অথবা নারীর কর্ম বিফল করি না; তোমরা একে অপরের অংশ।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯৫]
“মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, তাকে আমি নিশ্চয় পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭]
ঈমান ও ইলম (জ্ঞান) অর্জন যেমন একজন মুসলিম নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য, তেমনি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, সে এই জ্ঞানের দাবি অনুযায়ী আমল বা কাজ করবে, আর এই আমল ব্যতীত দুনিয়া ও আখিরাতে তার কোনো ফলাফল অর্জিত হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“মহামহিমান্বিত তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব যাঁর করায়ত্ব; তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য- কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।” [সূরা আল-মুলক, আয়াত: ১-২]
কাযী ‘আইয়ায রহ. বলেন, أحسن (উত্তম বা সুন্দর) মানে: তার (কাজের) একনিষ্ঠতা ও বিশুদ্ধতা।
সুতরাং আয়াতসমূহ আমল গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য দু’টি শর্ত নির্ধারণ করেছে:
ঈমান ও ইখলাস তথা একনিষ্ঠতাকে এক আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করা এবং তার সকল কর্মকাণ্ডকে তার অধীন করা।
সৎকর্ম: আর সৎকর্ম ততক্ষণ পর্যন্ত সৎকর্ম বলে গণ্য হবে না, যতক্ষণ তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্মের মত করে না হবে।
অনুরূপভাবে আয়াতসমূহ আমলের (সৎকাজের) জন্য দু’টি প্রতিদান বা পুরস্কারকে নির্ধারণ করে দিয়েছে: দুনিয়াতে পবিত্র জীবন এবং পরকালে জান্নাত।
আর মুসলিম নারীর ওপর আবশ্যক হলো এই কাজ বাস্তবায়ন করা। সুতরাং যদি তা ফরয কাজ হয়, যেমন ফরয সালাত, ফরয যাকাত, রমযান মাসের সাওম, সামর্থ্যবান হলে জীবনে একবার হজ করা এবং অপরাপর আবশ্যকীয় কাজস হয়, তবে তার ওপর কর্তব্য হচ্ছে কোনো প্রকার ত্রুটিবিচ্যুতি অথবা কমতি অথবা অবহেলা অথবা তুচ্ছ জ্ঞান করা ছাড়াই তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা।
পক্ষান্তরে যদি তা ফরয কাজ না হয়ে নফল ও মুস্তাহাবের মত কাজ হয়, যার করার অনুমতি দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তার মুমিন বান্দাদেরকে করুণা করেছেন, তাহলে তার উচিৎ হবে সে কাজগুলো থেকে একটি পূর্ণ অংশ গ্রহণ করা। কারণ,
ফরযসমূহ পালনের ক্ষেত্রে যে ত্রুটিবিচ্যুতি হয়েছে, এই নফল কাজসমূহ তার ক্ষতিপূরণ করবে।
তা ঐসব অপকর্ম ও গুণাহসমূহ ক্ষমা করার ব্যবস্থা করবে, যে অপরাধ তার জীবনে সংঘটিত হয়েছে।
এবং তা তার মর্যাদাকে সমুন্নত করবে।
আর এর মাধ্যমে সৎকর্মশীল পুরুষ ও নারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে এবং ঈমানের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।
আর সেই হলো মুসলিম বুদ্ধিমতী নারী, যে তার জন্য এই সালাত, সাওম, দান-সাদকা, হজ, উমরাহ, দাওয়াত, সৎকাজের আদেশ করা, অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা, সততা, পরোপকার ইত্যাদি নফল ইবাদতের কিছু অংশ বরাদ্ধ করে রাখে।
আর তার উচিৎ হবে, সে যেন বিভিন্ন প্রকারের নফল কাজ করার ব্যাপারে যত্নবান হয়, সুতরাং সে নফল কর্মসমূহ থেকে এমন কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে, যার ফায়দা বা উপকারিতা তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং এমন কাজ করার উদ্যোগও গ্রহণ করবে, যার ফায়দা অপরাপর ব্যক্তিদের দিকে ধাবিত হবে; আর উভয় শ্রেণীর আমল বা কার্যক্রমের মধ্যে বিরোধের সময় ঐ কাজটিকেই প্রাধান্য দেবে, যার মধ্যে অপরের কল্যাণ বা উপকার নিহিত রয়েছে, আর যখন বিভিন্ন প্রকার নফল কাজ তার সামনে এসে উপস্থিত হবে যেমন, নিজে কুরআন পাঠ অথবা অপরকে কুরআন পাঠ করানো ও তাকে শিক্ষা দেওয়া, এমতাবস্থায় সে ঐ আমলটিকেই প্রাধান্য দেবে, যার উপকারিতা অন্যের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে; আর তা হলো দ্বিতীয় কাজটি (অর্থাৎ অপরকে কুরআন পাঠ করানো ও তাকে শিক্ষা দেওয়া
আর সেখান থেকেই আমি বলব: মুসলিম নারীর আবশ্যকীয় কাজ হলো সে তার দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক কর্মকাণ্ডের জন্য একটি কর্মসূচী তৈরি করবে। অতঃপর তার জন্য একটা সম্ভাব্য ছক তৈরি করবে যাতে সে তার কাজগুলোর অনুশীলন, বাস্তবায়ন ও এগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে; এমনকি সে আল্লাহর ইবাদত করবে তার কার্যক্রমের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে।
আর এভাবেই তার কার্যক্রম পরিচালিত হবে। যেমন, অচিরেই এ গ্রন্থের উপসংহারে তার বিস্তারিত বর্ণনা আসবে ইনশাআল্লাহ।
তাহলে বুঝা গেল যে, নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সৎ আমলের অন্তর্ভুক্ত হবে:
- ইসলামের পাঁচটি রুকন বা স্তম্ভকে বাস্তবায়ণ করা: সুতরাং সে পাঁচবার সময়মত সালাত আদায় করবে। তার শর্ত ও ওয়াজিবসমূহ এবং যথাসম্ভব তার মুস্তাহাবসমূহ যথাযথভাবে আদায় করবে।
- আর সে যাকাত আদায়ের মাধ্যমে তার সম্পদকে পবিত্র করবে, যদি তার নিকট এমন সম্পদ থাকে, যাতে যাকাত ওয়াজিব হয়।
- আর সে রমযান মাসে সাওম (রোযা) পালন করবে।
- আর সে জীবনে একবার হজ পালন করবে, যদি সে হজ পালনের এই পথে সামর্থ্যবান হয়; আর সামর্থ্যের মধ্যে তার সাথে মাহরাম ব্যক্তি বিদ্যমান থাকা অন্যতম।
- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إذا صلت المرأة خمسها وصامت شهرها وحفظت فرجها وأطاعت زوجها قيل لها : أدخلي الجنة من أي أبواب الجنة شئت»
“যখন নারী তার পাঁচ ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে; তার (রমযান) মাসের সাওম পালন করবে, তার লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন তাকে বলা হবে: তুমি জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা কর, সে দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ কর।” [আহমদ, মুসানাদ, অধ্যায়: মুসনাদুল ‘আশরাতিল মুবাশশিরীনা বিল জান্নাহ ( مسند العشرة المبشرين بالجنة ), পরিচ্ছেদ: আবদুর রহমান ইবন ‘আউফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস ( حديث عبد الرحمن بن عوف الزهري رضي الله عنه ), হাদীস নং ১৬৬১।]
- তার বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ পালন করা: উদাহরণস্বরূপ সে শরী‘আত কর্তৃক ফরযকৃত পর্দা যথাযথভাবে মেনে চলবে; আর তা হলো, সে তার অপরিচিত পুরুষদের থেকে তার চেহারা ও দুই হাতসহ সম্পূর্ণ শরীরকে ঢেকে রাখবে; অনুরূপভাবে সে লজ্জা, শরম ও সচ্চরিত্রের হিফাযত করবে। আর এই বক্তব্যের সমর্থনে অনেক দলীল-প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“হে নবী-পত্নিগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে তোমরা পর-পুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে অন্তরে যার ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায়সংগত কথা বলবে। আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন (জাহেলী) যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না। তোমরা সালাত কায়েম করবে ও যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত থাকবে। হে নবী-পরিবার! আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩২-৩৩]
“হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া না হলে তোমরা খাবার প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে ভোজনের জন্য নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমাদেরকে আহ্বান করলে তোমরা প্রবেশ কর এবং ভোজনশেষে তোমরা চলে যাও, তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না। কারণ, তোমাদের এই আচরণ নবীকে কষ্ট দেয়, সে তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করে; কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না। তোমরা তার স্ত্রীদের নিকট কোনো কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে। এই বিধান তোমাদের এবং তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র। তোমাদের কারও পক্ষে আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেওয়া সংগত নয় এবং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীদেরকে বিয়ে করা তোমাদের জন্য কখনও বৈধ নয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা ঘোরতর অপরাধ।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৩] আর এই আয়াতটি ‘পর্দার আয়াত’ বলে পরিচিত।
সুতরাং যখন এই আয়াত দু‘টি সর্বশ্রেষ্ঠ যুগের মুমিনদের স্ত্রীগণের পবিত্রতার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, তখন তাদের পরবর্তী নারীদের জন্য পর্দা তো আরও অতি উত্তমভাবেই জরুরি হয়ে পড়ে, এই বক্তব্যকে সমর্থন করে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯] [শাইখ ডক্টর আবূ যায়েদ তার ‘হারাসাতুল ফদিলত’ ( حراسة الفضيلة ) নামক অভিনব পুস্তকে আয়াতসমূহকে দলীল হিসেবে পেশ করার কারণসমূহ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।]
- আর সৎ কাজের মধ্যে আরও যা অন্তর্ভুক্ত, তা হলো: নফল ও মুস্তাহাবসমূহ, যা সম্পাদনের জন্য প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারী উদ্বুদ্ধ করে, পূর্বে যার বর্ণনা করা হয়েছে, আর তা হলো: কুরআন পাঠ, যিকির-আযকার, নফল সালাত, নফল সাওম এবং নফল দান-সাদকা।
- অনুরূপভাবে আদব-কায়দা, শিষ্টাচারিতা ও নৈতিক চরিত্র, যা আত্মস্থ করা মুসলিম নারীর জন্য আবশ্যক। যেমন, কথায় ও কাজে সত্যবাদিতা, মিথ্যা না বলা, ধৈর্যধারণ করা, অপরের সাথে উত্তম ব্যবহার করা, কথার সময় বিনয় ও নম্রতা প্রদর্শন করা, সাক্ষাতের সময় প্রফুল্ল থাকা এবং চলাফেরায়, পানাহারে, ঘুমানোর সময়, কথাবার্তায়, উঠা-বসা ইত্যাদির ক্ষেত্রে সাধারণ শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখা। সুতরাং মুসলিম নারীর ওপর আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো এইসব মর্যদাপূর্ণ নৈতিক চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনে আত্মনিবেদন করা এবং এসব উত্তম আচরণ ও শিষ্টাচারের অনুসরণ করা।
- আর সৎ কর্মসমূহের মধ্য থেকে অন্যতম সৎকাজ হলো: আন্তরিকতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড। যেমন, আল্লাহ তা‘আলাকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা, তাঁকে ভয় করা, তাঁর নিকট প্রত্যাশা করা, তাঁর ধ্যান করা (সর্বক্ষণ তাঁর কথা খেয়াল রাখা) ইত্যাদি।
- আর সৎ কর্মসমূহের মধ্য থেকে আরও কিছু সৎকাজ হলো: এমন কতিপয় কর্মকাণ্ড, যেগুলোর ফায়দা বা উপকারিতা অন্যের প্রতি ধাবিত হয়। যেমন, ইলম বা জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া, কুরআন পাঠ করানো, উপদেশ দেওয়া, দরিদ্রকে দান করা, অভাবীকে সহযোগিতা করা, ইয়াতীম ও বিধবাকে সাহায্য করা, দুঃখ-কষ্ট দূর করা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রশমিত করা, সৎকর্মের আদেশ দেওয়া ইত্যাদি, অচিরেই যার বিষদ বর্ণনা আসছে ইনশাআল্লাহ।
- আর সৎ কর্মসমূহের মধ্য থেকে আরও কিছু সৎকাজ হলো: লজ্জাস্থান ও জিহ্বা (ভাষা) কে হিফাযত করা এবং দৃষ্টি অবনমিত করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১] আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বে উল্লেখিত হাদীসে জন্নাতে প্রবেশের কতগুলো শর্ত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন:
«وحفظت فرجها »
“সে তার লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে”।
পরিতাপের বিষয় হলো, অধিকাংশ মুসলিম নারী তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গসমূহের ব্যাপারে উদার বা ছাড় দেওয়ার নীতি অবলম্বন করেছে; তারা তাদের চোখের লাগাম ছেড়ে দিয়েছে। ফলে তারা জনসমাবেশ, ম্যাগাজিন, হাট-বাজার ইত্যাদিতে হালাল ও হারাম জিনিস প্রত্যক্ষ করতে থাকে, যেমনিভাবে তারা তাদের জিহ্বাকে মুসলিম পুরুষ ও নারীদের মানসম্মান নিয়ে টানাটানির অনুমোদন দিয়ে থাকে এবং তারা গিবত (পরচর্চা), কুৎসা, মিথ্যা ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়ে।
- আর সৎ কাজের মধ্যে আরও অন্যতম কাজ হলো: তার স্বামীর অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠা বা আদায় করা। বস্তুতঃ এই অধিকারটি বিশেষভাবে আলোচনার দাবী রাখে, তার গুরুত্ব, মহত্ব ও এই ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে দৃঢ় অবস্থান ও গুরুত্ব প্রদানের কারণে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার হক তথা অধিকারসমূহের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হলো স্বামীর হক, আর তার স্বামীর অধিকারসমূহ হলো:
তাকে সন্তুষ্ট রাখা এবং তাকে অসন্তুষ্ট বা বিরাগভাজন না করা।
তার পোষাক-পরিচ্ছদ ও খাবার প্রস্তুতের মত বিশেষ কাজসমূহ সম্পাদন করা।
তার মন-মানষিকতার প্রতি খেয়াল রাখা।
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে তাকে বিব্রত না করা। বিশেষ করে সে যখন স্বল্প আয়ের লোক হয়।
ভাল কাজে তাকে উৎসাহিত করা।
তাকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করা, যখন সে ক্রটিবিচ্যুতি করে অথবা ভালো কাজে অবহেলা করে, আর তাকে কোমল ভাষায় উপদেশ দেওয়া।
তাকে তার কর্মকাণ্ডে ও মানসিক অবস্থার উন্নয়নে উৎসাহ প্রদান করা।
প্রত্যেক কল্যাণকর পথে তার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
তার নির্দেশসমূহ কাজে পরিণত করা, তবে সেই নির্দেশ অন্যায় কাজের হলে তা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
অন্যায় ও অবাধ্যতার ক্ষেত্রে তার অনুগামী না হওয়া।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/660/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।