hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য

লেখকঃ অধ্যাপক ড. ফালেহ ইবন মুহাম্মাদ আস-সুগাইর

প্রথমত: তার প্রতিপালকের প্রতি তার ঈমান তথা বিশ্বাস প্রসঙ্গে:
আর এটা হলো সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এবং আবশ্যকীয় কর্তব্যকাজ। কেননা পূর্বে উল্লেখিত আয়াতসমূহের [দেখুন, পূর্ববর্তী পৃ. .....।] মধ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা উত্তম প্রতিদান প্রাপ্তির সাথে তাঁর প্রতি ঈমানের শর্তারোপ করেছেন। তিনি বলেন,

﴿وَمَن يَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَأُوْلَٰٓئِكَ يَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا يُظۡلَمُونَ نَقِيرٗا ١٢٤﴾ [ سورة النساء : 124]

“মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎ কাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি অণু পরিমাণও যুলুম করা হবে না।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৪] তাছাড়া এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আরও অনেক আয়াত রয়েছে।

এই ঈমানের অনুসরণকারীকে ঈমানের ছয়টি রুকন মেনে চলতে হবে,

(ক) আল্লাহর প্রতি ঈমান: এর মানে আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের তিনটি অংশের প্রতিই বিশ্বাস স্থাপন করা। যথা:

- আল্লাহ তা‘আলার কাজের ক্ষেত্রে তাঁর একত্ববাদ। একজন মুসলিম নারী ঈমান আনবে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা হলেন সকল কিছুর মালিক, পরিচালনাকারী, সৃষ্টিকর্তা ও রিযিকদাতা। তিনি বলেন,

﴿ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ٣ مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ ٤﴾ [ سورة الفاتحة : 2 – 4]

“সকল প্রশংসা সৃষ্টিজগতের রব আল্লাহরই; যিনি দয়াময়, পরম দয়ালু; কর্মফল দিবসের মালিক।” [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ২-৪] তাছাড়া আরও অনেক আয়াত রয়েছে। আর এটাই হলো রব হিসেবে আল্লাহর একত্ববাদ (তাওহীদ আর-রুবূবিয়াহ

- বান্দাদের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে তাঁর একত্ববাদ। একজন মুসলিম নারী ঈমান আনবে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা হলেন একচ্ছত্র মা‘বুদ তথা ইবাদতের উপযুক্ত এবং সে সকল প্রকার ইবাদত তাঁকে উদ্দেশ্য করেই করবে। তাই সে সালাত আদায় করবে আল্লাহর জন্য, পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধতা অর্জন করবে আল্লাহর জন্য; সে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে না, আর সে আল্লাহর কারণেই পিতা-মাতার আনুগত্য করবে; পর্দা করবে আল্লাহ্‌র আনুগত্য করে, আর আল্লাহর নিকট যা আছে, তা পাওয়ার আশায়ই স্বামীর আনুগত্য করবে ... এভাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ ﴾ [ سورة الذاريات : 56]

“আমি সৃষ্টি করেছি জিন্ন এবং মানুষকে এইজন্য যে, তারা শুধু আমারই ইবাদত করবে।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬] আর এটাই হলো ইলাহ হিসেবে তাঁর একত্ববাদ (তাওহীদ আল-উলূহিয়াহ) অথবা ইবাদতের ক্ষেত্রে তাঁর একত্ববাদ (তাওহীদ আল-‘ইবাদাহ্

- তাঁর নামসমূহ ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তাঁর একত্ববাদ। মুসলিম নারী আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার জন্য সাব্যস্ত করবে সকল সুন্দর নামসমূহ এবং মহৎ গুণাবলী। আর তা করতে হবে যেকোনো প্রকার অপব্যাখ্যা, তার ধরন-প্রকৃতি খোঁজা, সৃষ্টির গুণাবলীর সাথে সেগুলোর সাদৃশ্যস্থাপন অথবা এগুলোকে অর্থশূন্য করা ছাড়াই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ سورة الشورى : 11]

“কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

- মুসলিম নারী এসব সুন্দর নামসমূহ এবং মহৎ গুণাবলীর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে। সে স্বীকৃতি দেবে যে, আল্লাহ হলেন দয়াময়, পরম দয়ালু; তাই সে তাঁর নিকট রহমত কামনা করবে। তিনি হলেন রিযিকদাতা, পরম শক্তির অধিকারী; তাই সে তাঁর নিকট রিযিকের জন্য আবেদন করবে। তিনি হলেন রোগ নিরাময়কারী ও যথেষ্ট, সুতরাং সে তাঁর নিকট রোগ থেকে মুক্তির জন্য আবেদন করবে। আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাপরায়ণ। তাই সে তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। তিনি হলেন মার্জনাকারী ও দানশীল; তাই সে তাঁর নিকটই মাফ চাইবে ... ইত্যাদি।

(খ) ফিরিশতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা: সুতরাং মুসলিম নারী বিশ্বাস স্থাপন করবে যে, আল্লাহ তা‘আলার অনেক ফিরিশতা রয়েছে, যারা রাতদিন অক্লান্তভাবে তাঁর দাসত্ব করে। আর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক আছে যারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে, আর তাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছেন, যার নাম ও গুরুত্ব আমাদের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, জিবরীল ‘আলাইহিস সালাম, যিনি অহীর দায়িত্বপ্রাপ্ত; ইসরাফীল ‘আলাইহিস সালাম যিনি সিঙায় ফুঁ দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত; আর সেখানে পাহাড়-পর্বত, বাতাস এবং বান্দাদের হিসাব-নিকাশ ও তাদের কর্মতৎপরতা লিপিবদ্ধ করার জন্য আরও অনেক ফিরিশতা রয়েছে, এমনকি প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে দু’জন করে ফিরিশতা রয়েছে, যারা ঐ ব্যক্তি থেকে প্রকাশিত প্রতিটি কথা ও কাজ লিপিবদ্ধ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِذۡ يَتَلَقَّى ٱلۡمُتَلَقِّيَانِ عَنِ ٱلۡيَمِينِ وَعَنِ ٱلشِّمَالِ قَعِيدٞ ١٧ مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨﴾ [ سُورَةُ قٓ : 17-18]

“স্মরণ রাখ, দুই সাক্ষাৎ গ্রহণকারী ফিরিশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কর্ম লিপিবদ্ধ করে; মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।” [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৭-১৮]

(গ) রাসূলদের ওপর নাযিলকৃত আল্লাহ তা‘আলার কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা: আল-কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিতভাবে তার উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে আমাদের জন্য চারটি কিতাবের নাম স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে: তাওরাত, যা মূসা ‘আলাইহিস সালামের ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। ইঞ্জিল, যা ঈসা ‘আলাইহিস সালামের ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। যাবুর, যা দাউদ ‘আলাইহিস সালামকে দেওয়া হয়েছে এবং আল-কুরআন, যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। আর আল-কুরআনুল কারীম হলো সর্বশেষ কিতাব, যার মাধ্যমে কিতাব অবতীর্ণের ধারার পরিসমাপ্তি ঘটেছে এবং যা বাকি সকল কিতাবের বিধানকে রহিত করে দিয়েছে; আর তার (কুরআনের) মধ্যে যা এসেছে, তা ব্যতীত অন্য কোনো কিতাবের বিধান অনুযায়ী আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা বৈধ নয়।

(ঘ) মানুষের জন্য আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক প্রেরিত রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা: তারা মানুষকে সুসংবাদ দেয়, সতর্ক করে এবং তাদের প্রতিপালকের ইবাদত করার আবশ্যকতার কথা তাদের নিকট প্রচার করে। আর ঐসব রাসূলদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছেন, আমাদের জন্য যাদের নাম আলোচিত হয়েছে, আর তাদের মধ্যে এমন অনেক রয়েছেন, যাদের নাম আলোচিত হয় নি। সুতরাং মুসলিম নারী তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে, যাদের নাম বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে তাদের প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করবে, যাদের নাম উল্লেখ করা হয় নি। আর তাদের মধ্যে প্রথম হলেন নূহ ‘আলাইহিস সালাম এবং সর্বশেষ হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যার মাধ্যমে নবুওয়াত ও রিসালাতের ধারার সমাপ্তি ঘটে এবং তিনি তাদের মধ্যে সর্বশেষ, তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবে না, তাঁকে সকল মানুষ ও জিনের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে; আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে শরী‘আত প্রবর্তন করেছেন, সে অনুযায়ী আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত না হলে তা বৈধ হবে না।

(ঙ) আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা: মানুষের এই জীবনের পরিসমাপ্তির সূচনা হয় কতগুলো ভূমিকা বা উপাদানের মাধ্যমে; আর তা হলো তার মৃত্যু ও পরবর্তী জীবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে, আর কবরের ফিতনা (পরীক্ষা), তার নি‘আমত ও শাস্তির মাধ্যমে, আর কিয়ামতের ছোট ও বড় শর্ত বা নিদর্শনের মাধ্যমে। অতঃপর পুনরুত্থান বা পুনরায় জীবিত করা, হাশর (সমাবেশ), হিসাব, প্রতিদান ও সিরাত (পুলসিরাত) এবং সব শেষে জান্নাত ও জাহান্নামে মাধ্যমে।

এই হলো মুসলিম নারীর আকীদা বা বিশ্বাস, যার ওপর ভিত্তি করে তার নিজের জীবনকে গড়ে তোলা এবং সে ব্যাপারে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকা আবশ্যক।

অতঃপর এই ঈমান বা বিশ্বাস আরও কতগুলো আবশ্যকীয় বিষয়কে অনুসরণ করে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলার ভালোবাসা, তাঁর প্রতি একনিষ্ঠতা; তাঁর নিকট প্রত্যাশা করা, তাঁকে ভয় করা, আর সে এগুলো জেনে রাখবে এবং তার ওপর ধৈর্যধারণ করবে। আর সে এই আকীদা-বিশ্বাস পরিপন্থী কর্মকাণ্ডসমূহ এবং ঈমান বিনষ্টকারী বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাকবে। আর এগুলোর শীর্ষে রয়েছে আল্লাহ তা‘আলার সাথে শরীক করা, কুফরী করা, নিফাকী করা এবং আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর দীন ও তিনি যে শরী‘আত প্রবর্তন করেছেন, তার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা অথবা যে কোনো প্রকারের ইবাদত আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কারও উদ্দেশ্যে করা অথবা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের বিধান আল্লাহ তা‘আলার বিধানের সমান বা তার চেয়ে উত্তম বলে বিশ্বাস করা এবং এই বিশ্বাস করা যে, মানবতা এমনিতেই সৌভাগ্যবান হবে, যেমনিভাবে সে আল্লাহ তা‘আলার বিধানের মধ্যে সৌভাগ্যবান হয় অথবা এই বিশ্বাস করা যে, যুগ-যামানা আল্লাহ তা‘আলার বিধান নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে এবং তা পবিত্র উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ হিসেবে অবিশিষ্ট রয়েছে। এই জীবনে তার ওপর আমলের প্রয়োজন নেই অথবা জাদুকর ও জ্যোতিষীর কর্মকাণ্ডে বিশ্বাস স্থাপন করা এবং ঈমান বিনষ্টকারী জাদুকর, ভেল্কিবাজ ও ভণ্ড-প্রতারকদের অনুসরণ করা।

সুতরাং মুমিন নারীর আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো, সে এই ধরনের ভয়াবহ শিরকে নিপতিত হওয়া থেকে সতর্ক থাকবে; অতএব সে ঈমান গ্রহণের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং আরও দায়িত্বপ্রাপ্ত ঈমান বিনষ্ট করে, এমন বিষয় থেকে সতর্ক থাকার ব্যাপারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন