hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য

লেখকঃ অধ্যাপক ড. ফালেহ ইবন মুহাম্মাদ আস-সুগাইর

২৬
পঞ্চম অনুচ্ছেদ: নারীর দাওয়াতী ক্ষেত্রসমূহ থেকে:
পূর্বে প্রস্তাবিত দাওয়াতী ক্ষেত্রসমূহের কিছু উল্লেখযোগ্য ও প্রসিদ্ধ দিক নিম্নে পেশ করা হলো:

১. সরকারী ও বেসরকারী বালিকা বিদ্যালয়সমূহ।

২. সৎকাজের আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধকারী সংস্থাসমূহ।

৩. নারীদের হিফযুল কুরআন মাদরাসা ও কোর্সসমূহ।

৪. স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ।

৫. শর‘ঈ নিয়মনীতির আলোকে নারীর জন্য উপযুক্ত গণমাধ্যমকে (পঠিত ও শ্রুত) কাজে লাগানো।

৬. আবাসিক গৃহ।

৭. মাসজিদ।

৮. নারী সঙ্ঘ।

৯. হজের কাফেলা ইত্যাদি।

আর এই প্রাণবন্ত প্রস্তাবনাটি অচিরেই সীমিত পয়েন্ট আকারে ও সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা হবে, তবে তা নির্ধারিত ক্ষেত্রসমূহ, প্রত্যেক ক্ষেত্রে কাজের ধরণ-প্রকৃতি এবং সময় ও স্থানের জন্য উপযুক্ত বিবেচনা করে উন্নতকরণ ও পুনর্বিন্যাসের দাবী রাখে:

১. সরকারী ও বেসরকারী বালিকা বিদ্যালয়সমূহ:

শিক্ষিকার দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রসঙ্গে যা আলোচনা হয়েছে, তা সত্ত্বেও এমন কিছু সুস্পষ্ট প্রাণবন্ত বিষয়ের উল্লেখ করা যায়, যেগুলো বালিকা বিদ্যালয়সমূহের অভ্যন্তরে নারীর জন্য উপস্থাপন করা সম্ভব:

১. কিছু সিডি/ক্যাসেট অথবা বাছাই করা পুস্তিকা তার প্রস্তাবনার ভিত্তিতে সৌজন্য কপি হিসেবে অথবা কোনো একজন শিক্ষিকার মাধ্যমে বিতরণ করা।

২. কিছু সংখ্যক শিক্ষিকাকে বিভিন্ন প্রকার প্রতিযোগিতার প্যাকেজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা। যেমন, হিফযুল কুরআন অথবা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অথবা বিভিন্ন প্রকার উপদেশমূলক প্রচারপত্র ও বার্ষিকী সংকলনের প্রকাশনা উপলক্ষে রচনা লিখন অথবা কিছু সংখ্যক কিতাবের সারাংশ লিখন প্রতিযোগিতা... ইত্যাদি।

৩. বিভিন্ন প্রকার জনকল্যাণমূলক মেলার আয়োজন করা এবং তার মধ্য দিয়ে কিছু সিডি/ক্যাসেট বা বই-পুস্তক প্রদর্শন করা; আর একই সাথে কোনো একজন শিক্ষিকা অথবা পরিচালিকার দ্বারা সেমিনার বা সিম্পোজিয়ামের ব্যবস্থা করা।

৪. কিছু সংখ্যক সক্রিয় শিক্ষিকাকে ছাত্রীদের জন্য বিদ্যালয়ে নির্ধারিত মুসাল্লা তথা সালাত আদায় করার জায়গায় নিয়মিত দারস বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য উৎসাহিত করা।

৫. মুসাল্লা (সালাতের আদায়ের স্থান) ভিত্তিক সংঘ প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনো একজন শিক্ষিকাকে উৎসাহিত করা, যাতে বিদ্যালয়ের উপদেশ ও দিকনির্দেশনামূলক দিকগুলো প্রাণচঞ্চল করা যায়।

৬. শিক্ষিকাদের মাঝে যোগাযোগ ও দেখা-সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা, যাতে বিদ্যালয়ে দাওয়াতী কর্মসূচী পালন করার ব্যাপারে আলোচনা করা যায়।

৭. বিদ্যালয় ও কলেজসমূহে উপকারী সিডি/ক্যাসেট ও পুস্তিকাসমূহ বিক্রয়ের জন্য একটা গ্রুপ বা স্টাফ তৈরি করা।

৮. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিকট থেকে ময়দানে প্রশিক্ষণকালীন সময়ের মধ্যে দাওয়াতী প্রেরণা লাভের উদ্দেশ্যে জ্ঞান লাভ করা।

৯. ইসলামী বিভিন্ন সমিতি ও সংস্থার সাথে সমন্বয় সাধন করা; যাতে কিছু সংখ্যক প্রদর্শনী মেলা এবং ইসলামী বিশ্বের সমস্যা ও ক্ষত-যখম-আঘাতসমূহ সম্পর্কে পরিচিত করে তোলা যায় এবং তাদের জন্য অনুদান সংগ্রহের সাথে সাথে তাদের মধ্যে ইসলামী চেতনা পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে তা থেকে ফায়দা হাসিল করা যায়।

১০. বেসরকারী মাদরাসাসমূহের পরিচালকদের নিকট আল-কুরআন ও আরবি ভাষার সাথে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত দারস বা পাঠ তৈরির জন্য প্রস্তাব দেওয়া, যেমনটি কোনো কোনো মাদরাসায় চালু রয়েছে।

১১. বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রেডিওর মধ্য থেকে যা উপকারী, তার থেকে ফায়দা হাসিল করা; চাই তা সকাল বেলার এসেম্বলীর মাধ্যমে হোক অথবা বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কোনো ক্লাসের কর্মতৎপরতার মাধ্যমেই হোক।

১২. নেতিবাচক বাহ্যিক দৃশ্য ও শরী‘আত বিরোধী কর্মকাণ্ডের নযরদারী করা, যা কখনও কখনও ছাত্রীদের মধ্যে পাওয়া যায় এবং এই বাহ্যিক দিকগুলো প্রতিকারের জন্য প্রচারপত্র অথবা বুকলেট বা পুস্তিকা তৈরি করা। আর এ ব্যাপারে যে বিষয়গুলোতে বেশি গুরুত্ব প্রদান করা যায়, তা হলো: “টেলিফোনে কথা চালাচালি, অপ্রচলিত বা অসামাজিক সম্পর্ক, আত্মতুষ্টি বা গর্ব ও পর্দার ক্ষেত্রে শৈথিল্য”।

১৩. ছাত্রী ও শিক্ষিকাদেরকে বিভিন্ন বার্ষিক ইসলামী ম্যাগাজিন সংগ্রহে রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করা।

১৪. বার্ষিক ইসলামী বই ও সিডি মেলার আয়োজন করা।

১৫. বিদ্যালয়ে “প্রতিক্ষার ব্যাগ” ভর্তি করে রাখা, যাতে শিক্ষিকা অপেক্ষাকালীন সময়ে ব্যাগ থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারে; আর শ্রেণির ছাত্রীদের সংখ্যা অনুপাতে ব্যাগের ভিতরে পুস্তিকা (গল্প বা উপন্যাস জাতীয়) এবং প্রতিযোগিতার বই-পুস্তকের মধ্য থেকে প্রতিযোগিতামূলক বইসমূহ থাকবে। আর শিক্ষিকা ছাত্রীদেরকে পুস্তিকাসমূহ পাঠ করার দায়িত্ব অর্পণ করবেন অথবা তিনি প্রতিযোগিতার বই-পুস্তকের মধ্যে সময়ে সময়ে পস্তিকাসমূহে পরিবর্তন করে আগ্রহ সৃষ্টিসহকারে তাদের জন্য প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করবেন।

১৬. কার্য পরিকল্পনার দলীল বা রেকর্ড লিখিত আকারে সংরক্ষণে রাখা, যা এমন কিছু বিনোদনমূলক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করবে, যার মধ্য থেকে স্বাধীন কর্মকাণ্ডের ক্লাসে সহজেই উপকৃত হওয়া যায় অথবা এই ক্লাসে দাওয়াতদানে প্রসিদ্ধ কোনো মহিলা দাওয়াতদানকারিনীকে বিদ্যালয়ে আহ্বান করার ব্যাপারে সমন্বয় সাধন করা।

১৭. শিক্ষিকাদের কক্ষসমূহকে উপযুক্ত কিছু ম্যাগাজিন বা সাময়িকী দ্বারা সমৃদ্ধশালী করা। তার সাথে বিভিন্ন উপলক্ষে প্রকাশিত ছোট ছোট পুস্তিকাসমূহও থাকতে পারে।

২. সৎকাজের আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধ করা:

নারীকে সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদান এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট অশ্লিলতা থেকে মুক্তির আন্দোলনে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধ করার বড় ধরণের ভূমিকা রয়েছে; তন্মধ্যে কিছু দিক হলো:

(ক) মুসলিম নারীকে এমন দিক-নির্দেশনা প্রদান করা, যা তাকে তার ধর্মীয় ব্যাপারে উপকৃত করবে এবং তাকে এমন মতামত বা পরমর্শ দেওয়া, যা তাকে তার পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উপকৃত করবে।

(খ) বাইরের দেশে ভ্রমণ করা এবং তা থেকে যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, তার ভয়াবহ বর্ণনা পেশ করা।

(গ) অভিভাবকগণকে উৎসাহ দেওয়া, যাতে তারা তাদের স্ত্রী ও কন্যাদেরকে মাহরাম ব্যতীত সফর করতে না দেয়।

(ঘ) কিছু গণমাধ্যম ও মিডিয়ার ভয়াবহ দিক বর্ণনা করা। যেমন, ডিশ-এন্টিনা, ভিডিও, টেলিভিশন এবং কুরুচিপূর্ণ ম্যাগাজিন।

(ঙ) যেসব স্থানে নারীদের একত্রিত হওয়ার মধ্যে অশ্লিলতা ও বেহায়াপনার মত কাজ হয়, সেসব স্থানের ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা (বিদ্যালয়, বাজার বা মেলা, বাগান বা পার্ক এবং বিনোদন কেন্দ্রসমূহ

(চ) ক্লিনিক ও হাসপাতালসমূহের মধ্যে যেসব শরী‘আত বিরোধী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়, সে সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা।

৩. নারীদের হিফযুল কুরআন মাদরাসা ও মক্তবসমূহ:

এই বরকতময় দেশ ও অন্যান্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিফযুল কুরআন বা তাহফিযুল কুরআন মাদরাসা ও মক্তব ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন বয়স ও শিক্ষা-সাংস্কৃতির দিক থেকে বিভিন্ন স্তরের নারীদের অনেকে সেসব মাদরাসা ও মক্তবে আসা-যাওয়া করে থাকে। সেখানকার দাওয়াতী ক্ষেত্রের বা দাওয়াতকে সহযোগিতার কথা নিম্নলিখিতরূপে উল্লেখ করা যেতে পারে:

১. নারীদের জন্য হিফযুল কুরআনের আসরে সহযোগিতার জন্য কল্যাণকামীদেরকে উৎসাহিত করা এবং আরও উৎসাহিত করা এসব আসরের সাহায্যার্থে ওয়াকফকারী ব্যক্তি খুঁজে বের করতে কাজ করা।

২. এসব মাদরাসার তত্ত্বাবধায়ক কমিটিতে অংশগ্রহণ করা অথবা তার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করা অথবা তার কোনো কোনো মাদরাসার কোনো কোনো আসরের তত্ত্বাবধান করা।

৩. হিফযুল কুরআন বা তাহফিযুল কুরআন মক্তবসমূহের জন্য সিলেবাস বা পাঠপরিকল্পনা তৈরি করা এবং আসরগুলো চালানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা।

৪. মহল্লার এসব মাদরাসার মধ্যে সমন্বয় সাধন ও সেতু বন্ধনের কাজ করা।

৫. প্রত্যেক এলাকায় বিভিন্ন বক্তৃতা ও শিক্ষাদানে ছাত্রীদের সাথে অংশগ্রহণ করা এবং উপযুক্ত দিক-নির্দেশনা প্রদানকারিনীদের কারও কারও কাছ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপকৃত হওয়া।

৬. পরিবার ও বোনদেরকে শিক্ষাদানের কাজে উদ্বুদ্ধ করা এবং হিফযুল কুরআন বা তাহফিযুল কুরআন মাদরাসাসমূহে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা।

৭. শর‘ঈ নিয়ম-কানূন প্রাণবন্তকরণমূলক কোর্সের আয়োজন করা এবং ঐসব মাদরাসার শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক মহিলা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

৮. নারী দা‘ঈ তৈরির উদ্দেশ্যে দাওয়াতী কাজের প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা।

৪. তথ্য ও প্রচার মাধ্যমের (পঠিত ও শ্রুত) ব্যবহার করা:

উপযুক্ত কাজ হলো, পাঠযোগ্য তথ্য ও প্রচার মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো পেশ করা:

১. স্বামী-স্ত্রী ও সামাজিক সমস্যাসমূহের মতো প্রধান সমস্যাগুলো পেশ করা, যা ছোট-খাট সমস্যাগুলোর মৌল বলে বিবেচিত।

২. কিছু কিছু বিষয়ের মৌলিকত্ব প্রতিষ্ঠিত করা, যে ব্যাপারগুলো শরী‘আত অকাট্যভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে; যেমন, নারীর বাইরে বের হওয়া এবং তার কাজ করার বিষয়টি।

৩. এই উপস্থাপন করাটা অব্যাহতভাবে করে যেতে হবে এবং মৌলিকভাবে হতে হবে, কোনোক্রমেই যেন তা বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে উপস্থাপিত না হয়।

৪. আরব রাষ্ট্রে নারীমুক্তি আন্দোলনের ফলাফলসমূহ ও তার নেতিবাচক প্রভাবসমূহ প্রকাশ করা।

৫. শরী‘আতের বিধানসমূহ ও সামাজিক প্রথার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা।

৬. এই দেশের প্রতিষ্ঠার সময়, তার মাঝখানে ও তার পরে পবিত্রা নারীদের ইতিবাচক ভূমিকা প্রকাশ করা; যেমন, ইমাম মুহাম্মাদ ইবন সা‘উদকে ইমাম মুহাম্মাদ ইবন আবদিল ওহাব রহ. এর সহযোগিতার প্রতি উৎসাহদান করার ক্ষেত্রে ইমাম মুহাম্মাদ ইবন সা‘উদের স্ত্রীর ভূমিকা।

৫. স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ:

স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নারীর কর্মক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সেখানে নারীর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করাই রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের আশা-আকাঙ্খা বা চাহিদা। সেখানে যে সকল দাওয়াতী কাজ করা সম্ভব তা হচ্ছে:

১. বড় হাসপাতালগুলোতে দিক-নির্দেশনা ও পথপ্রদর্শনের জন্য অফিস উদ্ভাবনের ব্যাপারে কাজ করা, যাতে সে অফিস মহিলা রোগী, দর্শনার্থী এবং তাদের সঙ্গী-সাথীর সেবা দিতে পারে; আর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কোনো হাসপাতালে প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সেবাকেন্দ্রগুলো থেকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।

২. হাসপাতালের লাইব্রেরির জন্য জ্ঞানধর্মী পুস্তকাদি ও রেফারেন্স বইয়ের সমষ্টি সরবরাহ করার কাজের সাথে সাথে ক্লিনিক ও হাসপাতালসমূহকে পুস্তকাদি ও সংশ্লিষ্ট উপকারী স্টিকারাদি দ্বারা সমৃদ্ধশালী করা।

৩. তথ্য ও প্রচার মাধ্যমে সময়ে সময়ে হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং এই কেন্দ্রীক যেসব লেখার প্রচার ও প্রকাশ হয় তা অনুসরণ করা এবং এ ব্যাপারে লেখালেখি করা।

৬. আবাসিক গৃহ:

প্রভাবের দিক দিয়ে তা হলো শ্রেষ্ঠ ময়দান ও মাধ্যম। আর অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, আল্লাহ তা‘আলা স্বামী ও স্ত্রীর প্রত্যেককেই তার ঘরের দায়িত্বশীল বানিয়ে দিয়েছেন, আর অচিরেই আল্লাহ স্বামীকে তার পরিবার-পরিজন ও তার স্ত্রীর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে এবং স্ত্রীকে তার পরিবার-পরিজন ও তার স্বামীর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবেন। আর তিনি তাদের উভয়কে নির্দেশ দিয়েছেন পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য। অপরাপর মাধ্যমসমূহের মধ্য দিয়ে দাওয়াতী কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন যতই কম হবে ততই তা পিতা-মাতার দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে অতিরিক্ত মাত্রা যোগ করবে। আর দায়িত্বের একটা বিরাট অংশ হলো মায়ের। যেসব দায়িত্বের মধ্যে নারী পুরুষের অংশীদার তার পরিমাণ অনেক। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হলো: ঈমানী প্রশিক্ষণ, জ্ঞানগত, চারিত্রিক, শারীরিক, আত্মিক, সামাজিক, লিঙ্গগত, সৎকর্মের আদেশ করা, অসৎকর্মে নিষেধ করা এবং আল্লাহ তা‘আলার দিকে দাওয়াত তথা আহ্বান করার দায়িত্ব।

আর গৃহের ব্যাপারটি অন্যান্য উপায়-উপকরণ বা মাধ্যমসমূহ থেকে আলাদা। কারণ, পরিবারের সকল সদস্য দীর্ঘ সময় ধরে একত্রে বসবাস করে থাকে; আর তাদের মধ্যে আত্মিক ও সামাজিক মিল বা সমন্বয় থাকে, ফলে সেখানে সহজেই উত্তম আদর্শ পেশ করা সম্ভব। তাছাড়া সেখানে রয়েছে পরোক্ষ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে প্রভাবিত করার, সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের সূবর্ণ সুযোগ। আরও রয়েছে সকল প্রকার সুযোগ ও অবস্থার সদ্ব্যাবহার। আর সাধারণ মানুষের চক্ষুর অন্তরালে দিক-নির্দেশনা প্রদান ও শাস্তি দ্বারা প্রভাবিত করার মতো ব্যবস্থা। [এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত বর্ণনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে।]

৭. সমাজ:

আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও অভাবীদের প্রতি ইহসান তথা অনুগ্রহ করা এবং তাদেরকে দাওয়াত ও নির্দেশনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে একটি জাতির প্রতিটি সদস্যের মধ্যে একটি চমৎকার বন্ধন ও তাদের মধ্যে একটি শরীরের মত সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, অনুরূপভাবে কতগুলো দাওয়াতী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে তা আারও শক্তিশালী হয়ে থাকে, যেমন,

পারিবারিক পরামর্শ আদান-প্রদান কেন্দ্র।

পরস্পর সম্পর্ক সংস্কার কেন্দ্র।

কারাগারে বন্দীদের পরিবারের তত্ত্বাবধান করা।

বিয়ের উপযুক্ত পাত্রদের জন্য কোর্সের আয়োজন করা।

৮. মসজিদ:

যখন নারীর জন্য তার অভিভাবকের অনুমতিক্রমে মাসজিদে উপস্থিত হওয়া বৈধ-আর তার অভিভাবকের জন্য তাকে বারণ করা উচিৎ হবে না, যখন সে তার নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে তখন মাসজিদে যে বক্তব্য পেশ করা হয়, তা থেকে এবং অপর কোনো আদর্শ সৎকর্মশীলা নারী থেকে ফায়দা হাসিল করা সম্ভব। কারণ, সাধারণতঃ মানুষের মধ্য থেকে বাছাই করা ভালো লোকরাই মাসজিদে যাওয়া-আসা করে থাকে। আর এ মাসজিদই হচ্ছে তাহফিযুল কুরআন এবং উপকারী শর‘ঈ জ্ঞান শিক্ষা ইত্যাদির আসর থেকে নারীদেরকে প্রাণবন্তকরণের জন্য যথাযথ স্থান। আর সেই প্রাণবন্তকরণের বিষয়গুলো থেকে প্রস্তাবিত কিছু দিক হচ্ছে:

১. মাসজিদে নারীদের জন্য বিশেষ আলোচনার ব্যবস্থা করা, যাতে নারীদের বিরাট একটা সংখ্যা তাতে সহজে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পায়।

২. মহিলা দা‘ঈদেরকে আমন্ত্রণ জানানো, যাতে তারা রমযান মাসে তারাবীর সালাতের পর নারী মুসল্লীদের (নামাযীদের) মাঝে আলোচনা পেশ করতে পারেন।

৩. খতীবগণ জুমু‘আ ও অন্যান্য আলোচনার মধ্যে এমন কিছু বিষয়কে নিয়ে আসবেন, যেগুলো নারী, পরিবার, আদব-কায়দার প্রশিক্ষণ... ইত্যাদির সাথে নির্দিষ্ট।

৪. রমযান মাসে, গ্রীষ্মকালে ও বিভিন্ন উপলক্ষকে কেন্দ্র করে পারিবারিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।

৫. মসজিদের প্রশিক্ষণ ও দাওয়াতী ভূমিকা ক্রিয়াশীল করা।

৯. নারী সঙ্ঘ:

কিছু দরিদ্র পরিবার ও কারাবন্দী পরিবারকে সাথে নিয়ে এই ধরনের সঙ্ঘ বা সমিতির জন্য কিছু কিছু কল্যাণকর উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়, তবে তা ব্যক্তি ও বস্তুর সম্ভাব্যতার ওপর ভিত্তি করে সীমিত আকারে হবে। সুতরাং উল্লেখিত ক্ষেত্রসমূহ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে এসব সঙ্ঘ বা সমিতি প্রাণবন্ত হয়ে উঠার সম্ভাবনা রাখে।

১০. হজের সফর:

হজের সফরে নারী বিভাগে দাওয়াতী কর্মসূচী গ্রহণ করা; আর এখানে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো হলো:

১. অভিজ্ঞ নারী দা‘ঈদেরকে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করা, যাতে তারা হজের শর‘ঈ বিধানসমূহ বর্ণনা করে দিতে পারেন এবং নারীদেরকে এমন নির্দেশনা দিতে পারেন, যা তাদেরকে উপকৃত করবে।

২. নারীর জন্য বিভিন্ন প্রকারের দাওয়াতী ও দিকনির্দেশনামূলক কর্মসূচী প্রস্তুত করা। যেমন, নারীর জন্য উপযোগী প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা, হাল্কা কথোপকথন, সিডি, পুস্তিকা ও বিভিন্ন সংকলনসমূহ প্রস্তুত করা; তারপর তা অন্যান্য কাফেলায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বন্টন করা এবং তাদের মাঝেও তা কার্যকর করতে উৎসাহ প্রদান করা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন