মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
লেখকঃ ইলমী গবেষণা ডীনশীপ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা
২৫
(৯) নবীদের মু‘জিযা:
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/21/25
আল্লাহ তাঁর রাসূলদের সহযোগিতা করেছেন বড় বড় নিদর্শন ও উজ্জ্বল মু‘জিযার (অলৌকিক শক্তির) দ্বারা। যাতে হুজ্জাত (পক্ষে-বিপক্ষে প্রমাণ) প্রতিষ্ঠিত হয় অথবা প্রয়োজন পূরণ হয়।
যেমন, কুরআনুল কারীম, চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া, লাঠি ভয়ানক সাপে পরিণত হওয়া, ইত্যাদি।
«ما من نيي من الأنبياء إلا وقد أوتي من الآيات ما آمن على مثله البشر وإنما كان الذي أوتيته وحياً أوحاه إلي فأرجو أن أكون أكثرهم تابعاً يوم القيامة» .
“প্রত্যেক নবীই নিদর্শন বা মু‘জিযাপ্রাপ্ত হয়েছেন, যে মু‘জিযার মত কিছু দেখে মানুষ ঈমান এনেছে। আর আমি যা প্রাপ্ত হয়েছি তা সেই অহী যা আমার নিকট (আল্লাহ) অবতীর্ণ করেছেন। ফলে আমি আশাবাদী যে, কিয়ামত দিবসে তাদের চেয়ে আমার অনুসারী বেশি হবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
(১০) আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের ওপর ঈমান:
নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের ওপর ঈমান আনা ঈমানের মূলনীতিসমূহের একটি অন্যতম মূলনীতি। এর ওপর ঈমান আনা ছাড়া কারোও ঈমান পরিপূর্ণ হবে না।
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আনে না, আমি সেসব কাফিরের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ১৩]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إلا إله إلا الله وإني رسول الله» .
“আমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি যে মানুষের সাথে যুদ্ধ করব যতক্ষণ না তারা-আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য দিবে।” (সহীহ মুসলিম)
নিম্নে বর্ণিত বিষয়ের ওপর ঈমান আনার মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনা পরিপূর্ণ হবে:
প্রথমত: আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা বা জানা। তিনি হলেন মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল মুত্তালিব ইবন হাশিম, হাশিম কুরাইশ বংশ, আর কুরাইশ আরব বংশ আর আরব ইসমাঈল ইবন ইবরাহীম আল-খালীল এর বংশধর, তাঁর ও আমাদের নবীর ওপর সর্ব উত্তম দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হউক। তাঁর তেষট্টি বছর বয়স হয়েছিল। নবুয়াতের পূর্বে চল্লিশ বৎসর, নবী ও রাসূল হওয়ার পরে তেইশ বৎসর।
দ্বিতীয়ত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বিষয়ে সংবাদ দিয়েছেন সে বিষয়ে তাঁকে বিশ্বাস করা, যে বিষয় তিনি আদেশ করেছেন, তার অনুসরণ করা। যে বিষয় থেকে তিনি নিষেধ করেছেন ও সতর্ক করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। তিনি যে বিধান দান করেছেন সে অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদত করা।
তৃতীয়ত: তিনি জিন্ন ও ইনসান সকলের নিকট প্রেরিত আল্লাহর রাসূল এ কথার বিশ্বাস রাখা। সবাইকে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তিনি আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪১]
এবং তিনি আল্লাহর খালীল ও আদম সন্তানের সর্দার বা নেতা। তিনি মহান শাফা‘আতের মালিক এবং জান্নাতে সুউচ্চ ওসীলা নামক স্থান তাঁরই জন্য। তিনি কাউসারের মালিক। তাঁর উম্মাত সর্বশ্রেষ্ঠ বা উত্তম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত যা মানুষের (কল্যাণের) জন্য সৃজিত হয়েছে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০]
অধিকাংশ জান্নাতবাসী হবে তাঁরই উম্মত এবং তাঁর রিসালাত পূর্ববর্তী সকল রিসালাতের রহিতকারী।
পঞ্চমতঃ আল্লাহ তাঁকে মহান মু‘জিযা ও সুস্পষ্ট নিদর্শন দ্বারা সহযোগিতা করেছেন। তা হলো মহাগ্রন্থ আল-কুরআন; আল্লাহর বাণী, যা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হতে সংরক্ষিত।
“বলুন, যদি মানব ও জিন্ন এই কুরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্য একত্রিত হয় এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়,তবুও তারা এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৮৮]
“আমরা স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমরা নিজেই এর সংরক্ষক।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯]
ষষ্টত: নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিসালাত প্রচার করেছেন, আমানত আদায় করেছেন, উম্মাতদেরকে উপদেশ দিয়েছেন। সকল প্রকার কল্যাণের সন্ধান দিয়েছেন ও তার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। সকল প্রকার অকল্যাণ হতে তাঁর উম্মাতকে নিষেধ করেছেন ও তা থেকে তাদেরকে সাবধান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তাঁর পক্ষে-দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৮]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ما من نبي بعثه الله في أمة قبلي إلا كان حقاً عليه أن يدل أمته على خير ما يعلمه لهم ويحذر أمته من شرما يعلمه لهم» .
“আমার উম্মাতের পূর্বে আল্লাহ যত নবী প্রেরণ করেছেন, তাদের ওপর দায়িত্ব ছিল নিজ উম্মাতের জন্য যা কল্যাণকর তাদেরকে তার সন্ধান দেওয়া। আর যা কল্যাণকর নয় তা থেকে তাদেরকে সতর্ক করা।” (সহীহ মুসলিম)
সপ্তমত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ও তাঁর ভালোবাসাকে নিজের জানের ও সকল সৃষ্টিজীবের ভালোবাসার ওপর প্রাধান্য দেওয়া। তাঁকে সম্মান করা, মর্যাদা দেওয়া, ইহতেরাম করা ও তাঁর আনুগত্য করা। নিশ্চয় এটা সে হক্ব বা অধিকার যা আল্লাহ তাঁর কিতাবে তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য সাবস্ত করেছেন। কারণ তাঁর ভালোবাসা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর ভালোবাসা এবং তাঁর আনুগত্য প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আনুগত্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من ولده ووالده والناس أجمعين» .
“তোমাদের কেহই ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকট তার ছেলে সন্তান, পিতামাতা ও সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়তম না হবো।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
অষ্টমত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ ও সালাম বেশি বেশি পাঠ করা। কারণ কৃপণ ঐ ব্যক্তি যার নিকট নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম উল্লেখ হওয়ার পরও তাঁর ওপর দুরূদ পাঠ করে না।
“আল্লাহ ও তাঁর ফিরিশতাগণ নবীর ওপর দুরুদ পাঠ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর ওপর দুরুদ ও সালাম পাঠ কর।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من صلى عليّ واحدة صلى الله عليه بها عشراً» .
“যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তার ওপর এর বিনিময়ে দশবার দুরুদ পাঠ করবেন।” (সহীহ মুসলিম)
নিম্নের স্থানগুলোতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সালাতের তাশাহুদে, বিতির সালাতের কুনুতের দো‘আয়, জানাযার সালাতে, জুমু‘আর খুৎবাতে। আযানের পর, মসজিদে প্রবেশ ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময়। দো‘আর সময় এবং যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম উল্লেখ করা হয়, আরো অন্যান্য স্থানে।
নবমত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সকল নবী তাদের প্রভূর নিকট জীবিত। শহীদদের কবরের জীবন থেকে তাদের কবরের জীবন আরো বেশি পরিপূর্ণ ও উচ্চ। তবে তাদের কবরের জীবন, পৃথিবীর জীবনের মত নয়। তা এমন জীবন যার বিবরণ সম্পর্কে আমরা জানি না, সে জীবন তাদের থেকে মৃত্যুর নামও দূর করে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إن الله حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء» .
“আল্লাহ জমিনের জন্য নবীদের লাশ ভক্ষণকে হারাম করে দিয়েছেন।” (আবু দাউদ ও নাসাঈ)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
«ما من مسلم يسلم عليّ إلا رد الله عليّ روحي كي أرد عليه السلام» .
“যখনই কোনো মুসলিম আমাকে সালাম দেয় তখনই আল্লাহ আমার রুহ্ বা আত্মা আমার নিকট ফিরিয়ে দেন তার সালামের উত্তর দেওয়ার জন্য।” (আবূ দাউদ)
দশমত: তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর সামনে উচু আওয়াজ না করা, অনুরূপ তাঁর কবরে তাঁর ওপর সালাম দেওয়ার সময় উচু আওয়াজ না করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইহতেরামের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের ওপর তোমাদের কন্ঠস্বর-উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচু স্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।” [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ২]
দাফনের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্মান করা তাঁর জীবিত অবস্থায় সম্মান করার ন্যায়। সুতরাং তাঁকে আমরা সেভাবে সম্মান করবো যেভাবে সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে সম্মান করতেন। কারণ, তারা সকল মানুষের চেয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অধিক অনুসরণকারী ছিলেন। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরোধিতা করা থেকে এবং দীনের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন কিছু দীনের মাঝে সংযোজন করা থেকে অধিক দূরে থাকতেন।
একাদশতম: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদেরকে, পরিবার-পরিজনকে ও স্ত্রীদেরকে ভালোবাসা ও তাদের সকলের সাথে বন্ধুত্ব রাখা। তাদের মর্যাদাহানী হতে বা তাদেরকে গালী দেওয়া থেকে ও তাদের চরিত্রে কোনো প্রকার আঘাত হানা থেকে সাবধান থাকা। কারণ, আল্লাহ তাদের প্রতি রাজি হয়েছেন ও তাদেরকে তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহচর হিসেবে নির্বাচন করে নিয়েছেন। এই উম্মাতের ওপর তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে পুরাতন এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১০০]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا تسبوا أصحابي فوالذي نفسي بيده لو أنفق أحدكم مثل أحد ذهبا ما بلغ مد أحدهم ولا نصيفه» .
“তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালী দিও না, সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ যদি উহুদ পর্বতের সমপরিমাণ (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে, তবুও তাদের এ বিশাল ব্যয় সাহাবাদের আল্লাহর রাস্তায় এক মুদ (প্রায় ৭০০ গ্রাম) বা অর্ধ মুদ ব্যয় করার সমান হবে না।” (সহীহ বুখারী)
সুতরাং পরবর্তী লোকদের উচিৎ সাহাবীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং নিজেদের মনে তাদের ব্যাপারে যাতে কোনো প্রকার কুটিলতা না থাকে এ জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করা।
“যারা তাদের পরে আগমন করেছে তারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের রব, আপনি দয়ালু পরম করুণাময়।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ১০]
দ্বাদশতম: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে অতিরঞ্জিত করা থেকে বিরত থাকা। কারণ, অতিরঞ্জিত করা তাঁকে বড় কষ্ট দেওয়ার অন্তর্ভুক্ত। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মাতকে তাঁর ব্যাপারে অতিরঞ্জিত করা থেকে ও তাঁর প্রশংসা করার সময় সীমালংঘন করা থেকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যে মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁকে তার চেয়ে মর্যাদা দেওয়া থেকে সতর্ক করেছেন। কারণ, তা একমাত্র আল্লাহর জন্য খাস।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إنما أنا عبد فقولوا عبد الله ورسوله، لا أحب أن تر فعوني فوق منزلتي»
“আমি একজন বান্দা বা দাস। সুতরাং তোমরা আমাকে আল্লাহর বান্দা ও আল্লাহর রাসূল বল। তোমরা আমাকে আমার মর্যাদার চেয়ে উঁচু কর না এটা আমি ভালোবাসি না”।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
«لا تطروني كما أطرت النصارى ابن مريم» .
“তোমরা আমার ব্যাপারে অতিরঞ্জিত কর না যেমন খৃষ্টানরা ঈসা ইবন মারইয়াম-এর ব্যাপারে অতিরঞ্জিত করেছিল।” (সহীহ বুখারী)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আহ্বান করা ও তাঁর কাছে ফরিয়াদ করা। তাঁর কবরের পাশ দিয়ে ত্বাওয়াফ করা, তাঁর নামে মান্নত মানা, পশু যবেহ করা বৈধ নয়।
এ সকল কাজ আল্লাহর সাথে শরীক করার নামান্তর, অথচ আল্লাহ অন্যের ইবাদত করা থেকে নিষেধ করেছেন।
অনুরূপভাবে তাঁকে ইহতেরাম না করায় তাঁর প্রতি অনীহা প্রকাশ পায়। তাঁর মানহানি করা, তাঁকে তুচ্ছ জানা, তাঁর ব্যাপারে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা, ইসলাম থেকে মুর্তাদ বা বের হয়ে যাওয়া ও আল্লাহর সাথে কুফুরী করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহ্কামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেছিলে? ওযর পেশ করো না, তোমরা তো কাফির হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৫-৬৬]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যিকার ভালোবাসা, তাঁর নীতির ও সুন্নাতের অনুসরণ-অনুকরণ, তাঁর পথের বিরোধিতা না করার প্রেরণা যোগায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর; যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মানের ব্যাপারে কম-বেশি করে সীমালঙ্ঘন না করা ওয়াজিব। তাই তাঁকে ইলাহ বা মা‘বুদের গুণে গুণাম্বিত করা যাবে না। তাঁর মর্যাদা সম্মান ও ভালোবাসার অধিকার কমানোও যাবে না, যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তার শরী‘আতের অনুসরণ করা, তার নীতির ওপর চলা ও তাঁর অনুকরণ করা।
ত্রয়োদশতম: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনা পূর্ণাঙ্গ হবে তাঁকে সত্যায়ন করা এবং তিনি যে শরী‘আত নিয়ে এসেছেন তার ওপর আমল করার মাধ্যমে, এটাই তাঁর আনুগত্য করার অর্থ।
বস্তুতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য আল্লাহরই আনুগত্য, আর তাঁর নাফরমানী বস্তুত আল্লাহরই নাফরমানী। আর তাঁকে পূর্ণভাবে বিশ্বাস ও অনুসরণের মাধ্যমেই তাঁর প্রতি পরিপূর্ণভাবে ঈমান আনা হয়ে থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/21/25
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।