hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের রুকনসমূহ

লেখকঃ ইলমী গবেষণা ডীনশীপ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা

২৬
পঞ্চম রুকন: শেষ দিবসের ওপর ঈমান (১) শেষ দিবসের (আখিরাতের) ওপর ঈমান
আখেরাতের ওপর ঈমান হচ্ছে, এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, পার্থিব জীবন শেষ হয়ে মৃত্যু ও কবর জীবনের মাধ্যমে অন্য জগত শুরু হবে। এভাবে কিয়ামত সংঘটিত হবে, তারপর পুনরুত্থান, হাশর, নাশর ও হিসাব-নিকাশের পর ফলাফল প্রাপ্ত হয়ে জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে যাবে।

শেষ দিবসের ওপর ঈমান আনা ঈমানের রুকনসমূহের অন্যতম একটি রুকন। যার ওপর ঈমান আনা ছাড়া কোনো বান্দার ঈমান পরিপূর্ণ হবে না। আর যে ব্যক্তি শেষ দিবসকে অস্বীকার করবে সে কাফির হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ ﴾ [ البقرة : ١٧٧ ]

“বরং সৎকাজ হলো এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর ও কিয়ামত দিবসের ওপর।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৭৭]

অনুরূপভাবে হাদীসে জিবরীল-এ এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«فأخبرني عن الإيمان؟ قال : أن تؤمن بالله، وملائكته وكتبه، ورسله واليوم الآخر، وتؤمن بالقدر خيره وشره» .

“জিব্রাঈল বলেন, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবগত করান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঈমান হলো, আল্লাহ ও তাঁর ফিরিশতা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূল এবং শেষ দিবসের ওপর ঈমান আনা, আরো ঈমান আনা তাকদীরের ভাল মন্দের প্রতি।” (সহীহ মুসলিম: ১/১৫৭)

শেষ দিবসের পূর্বে কিয়ামতের যে সকল আলামত সংঘটিত হবে তার ওপর ঈমান আনা, যেগুলো সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন।

আলেমগণ এ আলামতকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন:

(ক) ছোট আলামত: যা কিয়ামত নিকটে হওয়া বুঝায়, আর তার সংখ্যাও অনেক। তন্মধ্যকার অধিকাংশ সংঘটিত না হলেও অনেকগুলো সংঘটিত হয়ে গেছে। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেরণ। আমানতের খিয়ানত করা। মসজিদ অধিক মাত্রায় সাজ-সজ্জা ও তা নিয়ে গর্ব করা। বড় বড় অট্রালিকা নিয়ে রাখালদের গর্ব করা। ইয়াহূদীদের সাথে যুদ্ধ ও তাদের নিহত হওয়া। সময় নিকটবর্তী হওয়া, আমল কমে যাওয়া, ফিৎনা-ফাসাদ প্রকাশ পাওয়া, অধিক হত্যা হওয়া, ব্যভিচার ও অন্যায় কাজ অধিক মাত্রায় হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱقۡتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلۡقَمَرُ ١﴾ [ القمر : ١ ]

“কিয়ামত আসন্ন ও চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। [সূরা আল-ক্বামার-আয়াত-১]

(খ) বড় আলামত: যা কিয়ামতের পূর্ব মূহুর্তে সংঘটিত হবে এবং কিয়ামত শুরু হওয়ার সতর্ক করবে। এমন বড় আলামত দশটি। যার কোনো একটিও প্রকাশিত হয় নি।

বড় আলামতসমূহ হলো: ইমাম মাহদীর আগমন, দাজ্জালের আগমন, ঈসা আলাইহিস সালাম-এর আকাশ হতে ন্যায় বিচারক হিসাবে অবতরণ, তিনি খৃষ্টানদের ক্রুসেড ভেঙ্গে দিবেন, দাজ্জাল ও শুকুরকে হত্যা করবেন। জিযিয়া করের আইন রহিত করবেন। ইসলামী শরী‘আত অনুপাতে বিচার পরিচালনা করবেন। ইয়াজুজ, মাজুজ বের হবে। তাদের ধ্বংসের জন্য তিনি দো‘আ করবেন, অতঃপর তারা মারা যাবে। তিনটি বড় ভূমিকম্প হবে। পূর্বে একটি, পশ্চিমে একটি, জাযিরাতুল আরবে একটি। ধোঁয়া বের হবে, তা হলো আকাশ হতে প্রচণ্ড ধোঁয়া নেমে এসে সকল মানুষকে ঢেকে নিবে। কুরআন যমীন থেকে আকাশে তুলে নেওয়া হবে। পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হবে। এক (অদ্ভুত) চতুস্পদ জন্তু বের হবে। ইয়ামানের আদন (জায়গার নাম) থেকে ভয়ানক আগুণ বের হয়ে মানুষদের শামের দিকে নিয়ে আসবে। এটাই সর্বশেষ বড় আলামত।

হুযাইফা ইবন আসীদ আল-গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে, ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন। হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«اطلع النبي ونحن نتذاكر فقال : «ما تذكرون؟» قالوا : نذكر الساعة . قال : «إنها لن تقوم حتى تروا قبلها عشر آيات . فذكر : الدخان، والدجال، والدابة، وطلوع الشمس من مغربها ،ونزول عيسى بن مريم، ويأجوج، وثلاثة خسوف : خسف بالمشرق، وخسف بالمغرب، وخسف بجزيرة العرب، وآخرذلك نار تخرج من اليمن تطرد الناس إلى محشرهم» .

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করলেন, এমতাবস্থায় আমরা এক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন তোমরা কি বিষয় আলোচনা করছ? তারা বললেন আমরা কিয়ামতের ব্যাপারে আলোচনা করছি। তিনি বললেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা তার পূর্বে দশটি আলামত সংঘটিত হতে দেখবে। অতঃপর আলামতসমূহ উল্লেখ করলেন, ধোঁয়া, দাজ্জাল, চতুস্পদ জন্তু, পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উঠা, ঈসা ইবন মারইয়াম এর আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন, তিনটি ভূমি কম্প- একটি প্রাচ্যে আর একটি পাশ্চাত্যে, আর একটি জাযিরাতুল আরবে, শেষ আলামত হল ইয়ামান থেকে আগুন বের হয়ে মানুষদেরকে হাশরের মাঠের দিকে নিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,

«يخرج في آخر أمتي المهدي، يسقيه الله الغيث، وتخرج الأرض نباتها، ويعطي المال صحاحاً، وتكثر الماشية، وتعظم الأمة، يعيش سبعاً، أو ثمانياً، يعني حججاً» .

“আমার উম্মাতের শেষ ভাগে ইমাম মাহদী বের হবেন, তার ওপর আল্লাহ বৃষ্টি বর্ষন করবেন। যমীন উদ্ভিদ জন্ম দিবে। সুস্থ্য ও সচ্ছল লোকদের মাল প্রদান করা হবে। চতুস্পদ জানোয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। উম্মাতের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তিনি সাত অথবা আট বছর বসবাস করবেন। (হাকেম)

বর্ণিত আছে যে, ঐ নিদর্শনগুলো পর্যায়ক্রমে সংঘটিত হবে, যেমন পুতির মালায় পুতি পর্যায়ক্রমে সাজানো থাকে। এগুলোর একটি সংঘটিত হওয়ার পর পরই অপরটি সংঘটিত হবে। এ দশটি নিদর্শন সংঘটিত হওয়ার পর পরই আল্লাহর আদেশে কিয়ামত সংঘটিত হবে।

কিয়ামত দ্বারা কি বুঝায়: কিয়ামত দ্বারা উদ্দেশ্য হল ঐ দিন, যে দিন মানুষ আল্লাহর আদেশে তাদের কবর থেকে বের হবে, হিসাব নিকাশের জন্য, অতঃপর সৎকর্মশীল সুফল ও শান্তি এবং অসৎ কর্মশীল কুফল ও শাস্তি প্রাপ্ত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَوۡمَ يَخۡرُجُونَ مِنَ ٱلۡأَجۡدَاثِ سِرَاعٗا كَأَنَّهُمۡ إِلَىٰ نُصُبٖ يُوفِضُونَ ٤٣﴾ [ المعارج : ٤٣ ]

“সে দিন তারা কবর থেকে দ্রত বেগে বের হবে-যেন তারা কোনো এক লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে।” [সূরা আল-মা‘আরিজ, আয়াত: ৪৩]

এ দিনের একাধিক নাম কুরআনে কারীমে উল্লেখ হয়েছে। যেমন,

( يوم القيامة ) ইয়াওমুল ক্বিয়ামাহ, ( القارعة ) আল-ক্বারি‘আহ,

( يوم الحساب ) ইয়াওমুল হিসাব, (( يوم الدين ইয়াওমুদ্দিন, ( الطامة ) আত্ত্বামাহ, ( الواقعة ) আল-ওয়াক্বি‘আহ, ( الحاقة ) আল-হা-ক্কাহ, ( الصاخة ) আসসাখখাহ, ( الغاشية ) আল-গাশিয়াহ ইত্যাদি।

( يوم القيامة ) ইয়াওমুল ক্বিয়ামাহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَآ أُقۡسِمُ بِيَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ ١ ﴾ [ القيامة : ١ ]

“কিয়ামাত দিবসের শপথ।” [সূরা আল-ক্বিয়ামাহ, আয়াত: ১]

( القارعة ) আল-ক্বারি‘আহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱلۡقَارِعَةُ ١ مَا ٱلۡقَارِعَةُ ٢﴾ [ القارعة : ١، ٢ ]

“(আল ক্বারিয়াহ) করাঘাতকারী, করাঘাতকারী কী? [সূরা আল-ক্বারি‘আহ, আয়াত: ১-২]

( يوم الحساب ) ইয়াওমুল হিসাব: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَضِلُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدُۢ بِمَا نَسُواْ يَوۡمَ ٱلۡحِسَابِ ٢٦﴾ [ص: ٢٦ ]

“নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি, এ কারণে যে, তারা হিসাব দিবসকে ভুলে যায়।” [সূরা ছোয়াদ, আয়াত: ২৬]

( يوم الدين ) ইয়াওমুদ দিন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِنَّ ٱلۡفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٖ ١٤ يَصۡلَوۡنَهَا يَوۡمَ ٱلدِّينِ ١٥﴾ [ الانفطار : ١٤، ١٥ ]

“এবং পাপিষ্টরা থাকবে জাহান্নামে, তারা বিচার দিবসে তথায় প্রবেশ করবে।” [সূরা আল- ইনফিতার, আয়াত: ১৪-১৫]

( الطّامة )আত্ত্বামাহ্: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِذَا جَآءَتِ ٱلطَّآمَّةُ ٱلۡكُبۡرَىٰ ٣٤﴾ [ النازعات : ٣٤ ]

“অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে।” [সূরা আন-নাযি‘আত, আয়াত: ৩৪]

( الواقعة ) আল-ওয়াক্বি‘আহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِذَا وَقَعَتِ ٱلۡوَاقِعَةُ ١﴾ [ الواقعة : ١ ]

“যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে।” [সূরা আল-ওয়াকি‘আহ, আয়াত: ১]

( الحاقة ) আল-হাক্কাহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱلۡحَآقَّةُ ١ مَا ٱلۡحَآقَّةُ ٢﴾ [ الحاقة : ١، ٢ ]

“সু-নিশ্চিত বিষয়, সু-নিশ্চিত বিষয় কী? [সূরা আল-হাক্কাহ, আয়াত: ১-২]

( الصّاخة ) আস-সাখখাহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِذَا جَآءَتِ ٱلصَّآخَّةُ ٣٣ ﴾ [ عبس : ٣٣ ]

“অতঃপর যে দিন কর্ণ বিদারক আওয়াজ আসবে।” [সূরা আবাসা-আয়াত, ৩৩]

( الغاشية ) আল-গাশিয়াহ: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هَلۡ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ٱلۡغَٰشِيَةِ ١﴾ [ الغاشية : ١ ]

“আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কিয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি? [সূরা আল-গাশিয়াহ, আয়াত: ১]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন