মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা
লেখকঃ সাঈদ ইবন আলী ইবন ওহাফ আল-কাহতানী
১২
চার. বাজার-ঘাট ও লোকসমাগম স্থান ও বিভিন্ন মৌসুমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দা‘ওয়াত
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/12
নবুওয়াতের দশম বছর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ থেকে ফিরে এসে মক্কায় আবারো ইসলামের দা‘ওয়াত দিতে আরম্ভ করেন। তিনি সব সময় এবং সব জায়গায় মানুষকে ইসলামের দিকে দা‘ওয়াত দেওয়ার কাজে লিপ্ত থাকেন। হাট, বাজার, রাস্তা, ঘাট সব জায়গায় তিনি ইসলামের দা‘ওয়াত চালিয়ে যেতেন। যেখানে যেখানে বাজার বসত সেখানে গিয়ে তিনি লোকদের দা‘ওয়াত দিতেন। জাহিলিয়্যাতের যুগে উকাজ, মাজনা ও জি-মাজায নামে বিভিন্ন বাজার ছিল। লোকেরা এখানে সপ্তাহে একবার বা দুইবার একত্র হত। এ ছাড়া ও আরবরা তাদের ব্যবসা বাণিজ্য, গান-বাজনা ইত্যাদির অনুষ্ঠান করার জন্য এ সব বাজারগুলোতে একত্র হত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গিয়ে মানুষকে ইসলামের দা‘ওয়াত দিতেন এবং তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আহ্বান করতেন। বিশেষ করে হজের মৌসুম আসলে, আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা মক্কায় একত্র হত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সুযোগটাকে কাজে লাগাতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি গোত্রের নিকট আলাদা আলাদা করে যেতেন এবং তাদের তিনি ইসলামের দা‘ওয়াত দিতেন। শুধু গোত্রের লোকদের নিকট ইসলামের দা‘ওয়াত দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্ষান্ত হন নি, তিনি একজন একজন করে প্রতিটি লোককে তার দা‘ওয়াত পৌঁছিয়ে দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় মানুষকে কল্যাণের প্রতি আহ্বান করেন এবং ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদান করতেন। আব্দুর রহমান ইবন আবিয যানাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, বনী দাইল গোত্রের রাবীয়া ইবন উব্বাদ নামে একজন মূর্খ লোক আমাকে জানান যে, আমি জাহেলিয়্যাতের যুগে যিল-মাযাজ বাজারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখি, সে সমবেত লোকদের বলছে, হে মানুষ সকল! তোমরা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বল يا أيها الناس قولوا لا إله إلا اللَّه تفلحوا তোমারা অবশ্যই সফল হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে পিছনে বিবর্ণ চেহারার একজন লোক লেগে ছিল, সে লোকদের বলছে, লোকটি ধর্মত্যাগী, মিথ্যুক। তোমরা তার কথা শোনো না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানেই যেত, লোকটি তার সাথে সাথে থাকত এবং এ কথা বলে বেড়াত। আমি উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞাসা করলাম লোকটি কে? লোকেরা বলল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাচা আবূ লাহাব। [মুসনাদে আহমদ: ৪৯২/৩, ৩৪১/৪, হাদীসটির সনদ হাসান। একই সনদের পক্ষে শাহেদ আছে।]
আওস ও খাযরাজের লোকেরাও আরবদের মতো হজ পালন করার উদ্দেশ্যে মক্কায় আসত। আনসারীগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবস্থা ও তার গুণাগুণ দেখে বুঝতে পারল, এ হলো, সে নবী যার প্রতিশ্রুতি ইয়াহূদীরা আমাদেরকে সুদীর্ঘ কাল পর্যন্ত দিয়ে আসছিল। যার কারণে তারা চাইত তার নিকট গিয়ে তারাই আগে আগে ইসলাম গ্রহণ করবে। কিন্তু তারা অজ্ঞাত কারণে এ বছর ইসলাম গ্রহণ করল না এবং মদিনায় ফিরে গেল। [যাদুল মা‘আদ ৪৩/৩, ৪৪; তারীখে ইসলামী ১৩৬/২; আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ১২৯; বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৪৯/৩, ইবন হিশাম ৩১/২।]
নবুওয়াতের এগারতম বছর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন গোত্রের লোকদের সাথে আলাদা আলাদা বসে তাদের নিকট ইসলামের দা‘ওয়াত পেশ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আকাবায়ে মিনা দিয়ে অতিক্রম করছিল, তখন তার সাথে ইয়াসরবের ছয়জন যুবকের সাথে দেখা হয়, তাদের দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাল বিলম্ব না করে তাদের মধ্যে ইসলামের দা‘ওয়াত পেশ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দা‘ওয়াত পেয়ে তারা ইসলামের দা‘ওয়াতে সাড়া দেয় এবং তার রিসালাতের ওপর ঈমান আনে। তারা নিজেরা ইসলাম কবুল করার পর, তারা ইসলামের দা‘ওয়াতের দায়িত্ব নিয়ে তাদের নিজেদের কওমের নিকট ফিরে যায়। তাদের দা‘ওয়াতের বদৌলতে আনসারদের প্রতিটি ঘরে ঘরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার দা‘ওয়াতের আলোচনা পৌঁছে যায়। [যাদুল মা‘আদ: ৪৫/৩; সীরাতে ইবন হিশাম: ৩৮/২; বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৪৯/৩; মাহমুদ শাকের রহ.-এর তারিখে ইসলামী ১৩৭/২ এবং হাযাল হাবীবু ইয়া মুহিব্ব, পৃ. ১৪৫/২; আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ১৩২।]
পরবর্তী বছর ছিল (নবুওয়াতের বারোতম বছর) বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আবারো হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আগমন করে। ঐ বছর যারা হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় গমন করে, তাদের মধ্যে বারোজন আনসারী যুবক ছিল। তাদের পাঁচজন হলো বিগত বছর যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাৎ করেছিল তারা, আর বাকীরা হলো নতুন। তারা সবাই তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মিনায় আকাবার নিকট মিলিত হয় এবং সবাই ইসলাম গ্রহণ করে। ইসলাম গ্রহণের পর তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতে বাই‘আত গ্রহণ করে। [যাদুল মা‘আদ ৪৬, ৪৪/৩; সীরাতে ইবন হিশাম ৩৮/২; বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৪৯/৩; মাহমুদ শাকের রহ.-এর তারিখে ইসলামী ১৩৯/২ এবং হাযাল হাবীবু ইয়া মুহিব্ব পৃ. ১৪৫; আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ১৩৯।]
উবাদা ইবন সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أن رسول اللَّه صلى الله عليه وسلم قال وحوله عصابة من أصحابه : تعالوا بايعوني على أن لا تشركوا باللَّه شيئاً، ولا تسرقوا، ولا تزنوا، ولا تقتلوا أولادكم، ولا تأتوا ببهتانٍ تفترونه بين أيديكم وأرجلكم، ولا تعصوني في معروفٍ، فمن وفى منكم فأجره على اللَّه، ومن أصاب من ذلك شيئاً فعوقب به في الدنيا فهو لـه كفارة، ومن أصاب من ذلك شيئاً فستره اللَّه عليه فأمره إلى اللَّه : إن شاء عاقبه، وإن شاء عفا عنه» فبايعناه على ذلك»
“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আশ পাশে এক জামা‘আত সাহাবী বসা ছিল, তখন তিনি সবাইকে বললেন, আসো তোমরা আমার হাতে এ কথার ওপর বাইয়াত গ্রহণ কর যে, তোমরা আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না ব্যভিচার করবে না, তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না এবং কাউকে সরাসরি অপবাদ দিবে না। কোনো ভালো কাজের নির্দেশ দিলে তাতে তোমরা আমার অবাধ্য হবে না। তোমাদের মধ্যে যে আমার সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি পালন করবে, তার বিনিময় আল্লাহর নিকট অবধারিত। আর যে আমার নির্দেশ অমান্য করবে এবং তার জন্য তাকে দুনিয়াতে শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে তা তার জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর যদি কেউ কোনো অপরাধ করে এবং আল্লাহ তা‘আলা তা গোপন রাখে, তার বিষয়টি আল্লাহর নিকট সোপর্দ। আল্লাহ যদি চায়, তাকে শাস্তি দিবে আর যদি চান, তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমরা সমবেত সবাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে এর ওপর বাইয়াত গ্রহণ করি। [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: মানাকেবুল আনসার, পরিচ্ছেদ মক্কায় আনসারীদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আগমন: ২১৯/৭, ৩৮৯২। কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: আমাদের হাদীস বর্ণনা করেন আবুল আইমান ১৮।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাই‘আত শেষ হওয়ার পর যখন আমরা হজ পালন করে মক্কা থেকে মদিনার দিকে রওয়ানা দিই, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুস‘আব ইবন উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আমাদের সাথে পাঠান, যাতে সে আমাদেরকে ইসলামের আহকাম শিখান এবং আমাদের মধ্যে ইসলামের দা‘ওয়াত দেন। মুসআব ইবন উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন। যার ফলে পরবর্তী বছর অর্থাৎ নুবওয়াতের তেরতম বছরে ইয়াসরেব থেকে ৭৩ জন পুরুষ ও দুইজন মহিলা হজ পালন করতে মক্কায় আসে এবং তাদের সবাই ইসলাম গ্রহণ করে। এরা মক্কায় গমনের পূর্বেই মক্কায় এসে আকাবায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাতের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তারা তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মক্কায় উপস্থিত হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাত করে এবং তার সাথে কথা-বার্তা বলে। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলে, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার হাতে কিসের ওপর বাইয়াত গ্রহণ করব? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন,
«تبايعوني على : السمع والطاعة في النشاط والكسل، والنفقة في العسر واليسر، وعلى الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر، وأن تقولوا في اللَّه لا تخافون لومة لائم، وعلى أن تنصروني فتمنعوني إذا قدمت عليكم ما تمنعون منه أنفسكم وأزواجكم وأبناءكم ولكم الجنة، فقاموا إليه فبايعوه»
“তোমরা সচ্ছল ও অসচ্ছল, ব্যস্ত ও অবসর সর্বাবস্থায় আমার কথা শুনবে এবং মানবে এ কথার ওপর আমার হাতে বাইয়াত কর। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে মানুষকে বারণ করবে এ বিষয়ের ওপর বাইয়াত গ্রহণ কর। আর তোমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও, তোমরা আল্লাহর বিষয়ে কোনো সত্য কথা বলতে কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না। আর আমি যখন তোমাদের নিকট পৌঁছব, তখন তোমরা আমার সাহায্য করবে। আমার থেকে যে কোনো নির্যাতন ও যুলুম তোমরা প্রতিহত করবে। যেমনটি তোমরা তোমাদের নিজেদের স্ত্রী সন্তান ও তোমাদের মাতা-পিতা হতে প্রতিহত করে থাক। আর এ সবের বিনিময়ে তোমরা লাভ করবে জান্নাত। [মুসনাদে আহমাদ: ৩২২/৩; বাইহাকী ৯/৯; হাকেম হাদীসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।] তারপর তারা সবাই তার দিকে অগ্রসর হয়ে তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে।
এ বাইয়াত শেষ হওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মধ্য থেকে বারো জনকে তাদের নেতা বানিয়ে দেন। তারা প্রত্যেকেই তাদের সম্প্রদায়ের লোকদের ইসলামের দা‘ওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এদের মধ্যে নয়জন ছিল খাযরাজ গোত্রের আর তিনজন ছিলেন আওস গোত্রের। তারপর তারা ইয়াসরবে ফিরে এসে, তাদের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়। আল্লাহ তা‘আলা তাদের মাধ্যমেই ইসলামের দা‘ওয়াতকে আরও সু-সংঘটিত করেন। [যাদুল মা‘আদ, ৪৫/৩; সীরাতে ইবন হিশাম ৪৯/২; বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৫৮/৩; মাহমুদ শাকের রহ.-এর তারিখে ইসলামী ১৪২/২ এবং আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ১৪৩।]
আকাবার দ্বিতীয় বাই‘আত সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীনের দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেলেন। ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য একটি দারুল ইসলাম বা ইসলামের আবাস ভূমি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলেন। এ খবরটি মক্কায় ছড়িয়ে পড়লে মক্কার কাফিরদের ক্ষোভ আরও বেড়ে গেল এবং তারা মুসলিমদের ওপর তাদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল। তাদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের মদিনায় হিজরত করার নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে অনেক মুসলিমগণ মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে। শেষ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হন। নবুওয়াতের চৌদ্দতম বছর সফর মাসের ২৬ তারিখে কুরাইশরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করার বিষয়ে একমত হলে, আল্লাহ তা‘আলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহীর মাধ্যমে মদিনায় হিজরত করার নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত সুকৌশলে কাফিরদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। আলী ইবন আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে স্বীয় বিছানায় ঘুমিয়ে থাকতে বলেন। তারপর তিনি তাকে তার বিছানায় ঘুমিয়ে রেখে, কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে যান। কাফিররা সারা রাত জানালা দিয়ে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর বিছানার দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। তারা মনে করছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে শুয়ে আছে। এ ফাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সঙ্গে নিয়ে স্বীয় ঘর থেকে বের হয়ে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। [যাদুল মা‘আদ: ৫৪/৩; সীরাতে ইবন হিশাম ৯৫/২; বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৭৫/৩; মাহমুদ শাকের রহ.-এর তারিখে ইসলামী ১৪৮/২ এবং হাযাল হাবীবু ইয়া মুহিব্ব, পৃ. ১৫৬; আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ১৩২।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কত বড় হিকমতের অধিকারী, ধৈর্যশীল ও সাহসী ছিলেন, তার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো তার হিজরত করা। কারণ, তিনি যখন বুঝতে পারলেন, কুরাইশরা তার দা‘ওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করছে এবং তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে, তখন তিনি অপর একটি জায়গার সন্ধান করলেন, যেখানে গিয়ে ইসলামের দা‘ওয়াত দেওয়া যায়। মক্কার কাফিররা তার বিরোধিতা করাতে তিনি কোনো প্রকার হতাশ হন নি। তিনি মদিনার লোকদের থেকে প্রতিশ্রুতি নেন, যাতে তারা ইসলাম ও মুসলিমের সহযোগিতা করে এবং বহিঃশত্রুর বিরোধিতা ও তাদের নির্যাতন থেকে তাদের হিফাযত করে।
তিনি দু’টি মজলিশে তাদের সাথে এ চুক্তি সম্পন্ন করেন। ইসলামের ইতিহাসে এ দু’টি চুক্তিকে আকাবায়ে উলা ও আকাবায়ে ছানিয়া বলা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নিশ্চিতভাবে দা‘ওয়াতের একটি ক্ষেত্র পেলেন এবং ইসলাম ও মুসলিমদের সহযোগিতা করার মতো যোগ্য লোক পেলেন, তখন তিনি তার সাহাবীদের হিজরতের অনুমতি দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে উন্নত কৌশল অবলম্বন করলেন। তিনি তাদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ফলায়ন করেন নি, তার মধ্যে কোনো প্রকার দুর্বলতা দেখা যায় নি এবং মৃত্যু ভয়েও তিনি আতংকিত হন নি বা পলায়ন করেন নি, বরং উন্নত উপায়ই তিনি অবলম্বন করেন। তিনি যে পদ্ধতি অবলম্বন করেন এটিই হলো দা‘ওয়াতী কাজের সফলতার জন্য সর্বোত্তম পদ্ধতি ও হিকমত। যারা আল্লাহর দিকে মানুষকে আহ্বান করে, তাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ ঘটনা ও জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেত হবে। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন দা‘ঈদের জন্য আদর্শ ও তাদের ইমাম। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে আমল করার তাওফীক দান করুন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/12
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।