মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা
লেখকঃ সাঈদ ইবন আলী ইবন ওহাফ আল-কাহতানী
২০
এক. বদর যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/20
বদরের যুদ্ধ ছিল ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণের এ যুদ্ধের ভূমিকা অপরিসীম। এ যুদ্ধ ছিল নিরস্ত্র মুষ্টিময় মুসলিমদের অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত একটি সংখ্যাগরিষ্ট জামাতের বিরুদ্ধে লড়াই করা। এ কারণে এ যুদ্ধে মুসলিমদের সাথে বুদ্ধি পরামর্শ করা তাদের মতামত নিয়ে যুদ্ধে নামার গুরুত্ব ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট অনিবার্য বাস্তবতা। তাই এ যুদ্ধে প্রথমেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীদের মতামত জানার জন্য মুসলিমদের নিকট পরামর্শ চান। কারণ, তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মদিনা অভ্যন্তরে জানমাল ও সন্তানদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন; কিন্তু মদিনার বাইরে তারা তাদের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি ইতোপূর্বে দেন নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে মুসলিমদের সবাইকে একত্র করে তাদের সবার মতামত জানতে চান। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাদের সকলকে একত্র করলে, প্রথমে আবুবকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু অত্যন্ত সুন্দরভাবে তাদের নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কথা ধৈর্য সহকারে শোনেন। কিন্তু শুধু তাদের কথার ওপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট থাকতে না পারায় তিনি আবারো সবার পরামর্শ চাইলেন। তারপর মিকদাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা যা করার নির্দেশ দিয়েছে, তা চালিয়ে যান, আমরা আপনার সাথে আছি। আর আমরা বনী ইসরাঈল মূসা আলাইসি সালামকে যা বলছে, যাও তুমি ও তোমার রব যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকব, এ ধরনের কথা আমরা বলব না। আমরা বলব, যাও তুমি ও তোমার রব যুদ্ধ কর, আমরাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করব। আমরা তোমার ডান, বাম, সামনে, পিছনে সবদিক দিয়ে তোমার সাথে যুদ্ধ করব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবারো পরামর্শ চাইলে সা‘দ ইবন মু‘আয তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি মনে হয় আমাদের থেকে শুনতে চান এবং আমাদের মতামত জানতে চান। মূলতঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থেকেই শোনতে চাইতে ছিলেন। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বলল, আপনি আশংকা করছেন আমরা শুধু মদিনার ভিতরে আপনার সহযোগিতা করবো এবং মদীনার ভিতরেই আপনাদের থেকে প্রতিহত করবো। আমি আনসারীদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, আপনি যেখানে চান সৈন্য পাঠান, যাকে কাটতে চান বা জোড়া লাগাতে চান আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমাদের সম্পদ থেকে আপনি যা চান নেন, আর যা চান আমাদের দেন। আপনি আমাদের থেকে যা নিলেন, তা আমাদেরকে যা দিলেন তার থেকে অধিক পছন্দনীয়। আপনি আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের সিদ্ধান্ত আপনার সিদ্ধান্তের অনুসারী। আল্লাহর শপথ করে বলছি! যদি আপনি আমাদের নিয়ে গামদান যান আমরা আপনার সাথে থাকবো। আরও শপথ করে বলছি! আপনি যদি আমাদের এ সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেন, আমরা আপনার সাথে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব। আমাদের থেকে একজন লোককেও পিছু হটতে পাবেন না। আগামী দিন আমরা শত্রুর মোকাবেলা করাকে কোনো ক্রমেই অপছন্দ করছি না। আমরা যুদ্ধে ধৈর্যশীল, শত্রুর সাথে মোকাবেলা করতে বিশ্বাসী। হতে পারে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের থেকে আপনাকে এমন কিছু দেখাবে, যা আপনার চোখকে শীতল করবে। আপনি আমাদের সাথে নিয়ে আল্লাহর নামের বরকতে আরম্ভ করেন। এ কথা শোনার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা হাস্যজ্জল হয়ে যায়, তার অন্তর খুশি হয়ে যায় এবং কর্ম উদ্যম আরও বেড়ে যায়। তারপর তিনি বলেন,
«سيروا وأبشروا، فإن اللَّه قد وعدني إحدى الطائفتين، ولكأني الآن أنظر إلى مصارع القوم»
“তোমরা চল, আর সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে একটি জামাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে আমি কওমের বড় বড় লোকদের পড়ে থাকার স্থানগুলো দেখে নিচ্ছি”। [আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ২১৪/৩; সীরাতে ইবন হিশাম: ২৫৩/২; যাদুল মা‘আদ ১৭৩/২; আর-রাহীকুল মাখতুম, ২০০; হাযাল হাবীবু ইয়া মুহিব্ব: ১৭৫; তারিখে ইসলামী ১৯৪/২।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিকমত হলো, তিনি শুধু আসবাব বা মাধ্যমের ওপর তাওয়াক্কুল করেন নি, তিনি আল্লাহর ওপরই তাওয়াক্কুল করেন, তবে আসবাব ও মাধ্যমকেও তিনি একেবারে ছেড়ে না দিয়ে তাও অবলম্বন করেন।
উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, বদর যুদ্ধের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের দিকে দেখেন তখন তাদের সংখ্যা ছিল এক হাজার আর তার সাথীদের সংখ্যা ছিল মাত্র তিনশত তেরো জন। এ অবস্থা দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেবলা মুখ হয়ে দু’হাত তুলে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতে থাকেন। তিনি আল্লাহর নিকট কেদে কেদে বলেন,
«اللَّهم أنجز لي ما وعدتني، اللَّهم إن تهلك هذه العصابة من أهل الإسلام لا تعبد في الأرض»
“হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যে ওয়াদা দিয়েছে, তা পূরণ কর। হে আল্লাহ! মুসলিমদের এ ক্ষুদ্র জামা‘আতটিকে যদি তুমি ধ্বংস কর, তাহলে যমীনে তোমার নাম নেওয়ার মতো আর কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। এভাবে তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে কান্নাকাটি করতে ছিলেন। কান্নাকাটি করতে করতে তার ঘাড় থেকে চাদর পড়ে গেলে আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে তাঁর ঘাড়ের উপর চাদরটি উঠিয়ে দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর সাথে আপনার মোনাজাত যথেষ্ট হয়েছে! তিনি অবশ্যই আপনাকে যে ওয়াদা দিয়েছেন তা পূরণ করবেন। তারপর আল্লাহর এ আয়াত নাযিল হয়
“আর স্মরণ কর, যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকট ফরিয়াদ করছিলে, তখন তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন যে, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে পর পর আগমনকারী এক হাজার ফিরিশতা দ্বারা সাহায্য করছি”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৯]
আল্লাহ তা‘আলা এ যুদ্ধে ফিরিশতাদের মাধ্যমে মুসলিমদের সাহায্য করেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৯৫২; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং ১৭৬৩; আর-রাহীকুল মাখতুম, ২০৮।]
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরা থেকে এ কথা বলতে বলতে বের হন,
﴿سَيُهۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ﴾ [ القمر :45 ]
“সংঘবদ্ধ দলটি শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পিঠ দেখিয়ে পালাবে”। [সূরা আল-কামার, আয়াত: ৪৫ ] [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৯৫৩।]
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু দো‘আ করেই ক্ষান্ত ছিলেন না তিনি বীরত্বের সাথে কাফিরদের মোকাবেলা করেন। যেভাবে তিনি দো‘আ করতে গিয়ে নাছোঁড় বান্দা ছিলেন যুদ্ধেও তার অবস্থা ছিল তাই। তার সাথে আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন, তারা উভয়ে এক দিকে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটিতে সবার চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন অনুরুপভাবে তারা উভয়ে যুদ্ধের ময়দানেও ছিলেন সবার অগ্রভাগে। তারা উভয়ে যুদ্ধের ময়দানে মুসলিমদের সাহস যোগাতে থাকেন তাদের যুদ্ধের ময়দানে উৎসাহ প্রদান করতে থাকেন। তারা তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে স্ব-শরীরে যুদ্ধ করতে থাকেন।
আলী ইবন আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
«لقد رأَيْتُنَا يوم بدر، ونحن نلوذ برسول اللَّه صلى الله عليه وسلم وهو أقربنا إلى العدو، وكان من أشد الناس يومئذ بأساً ( [আহমাদ ৮৬/১; হাকিম ১৪৩/২।])».
“বদরের দিন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসতাম তখন আমরা তাকে দেখতে পেতাম সে আমাদের চেয়েও শত্রুর মোকাবেলায় অধিক অগ্রসর। আর তিনি সেদিন আমাদের মধ্য হতে সর্বাধিক আঘাত প্রাপ্ত ছিলেন। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরও বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كنا إذا حمي البأس، ولقي القومُ القومَ اتقينا برسول اللَّه صلى الله عليه وسلم فلا يكون أحدنا أدنى إلى القوم منه»
“আমরা যখন আঘাতপ্রাপ্ত হতাম এবং উভয় সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলত, তখন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসতাম বাঁচার জন্য, তখন আমরা দেখতাম তিনি আমাদের চাইতে আরও বেশি আক্রান্ত। ( [হাকিম ১৪৩/২; বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে ২৭৯/২; আল্লামা ইবন কাসীর নাসাঈর দিক নিসবত করেন।])
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/20
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।