মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা
লেখকঃ সাঈদ ইবন আলী ইবন ওহাফ আল-কাহতানী
২১
দুই. উহুদের যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ত্যাগ ও বীরত্ব
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/21
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ যুদ্ধেও অত্যন্ত সাহসিকতা ও ধৈর্যের পরিচয় দেন। এ যুদ্ধে তার স্বজাতি লোকেরা তাকে যে কষ্ট দেয় তার ওপর তিনি ধৈর্যধারণ করেন এবং তিনি কাফিরদের বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধ করেন। এ যুদ্ধে প্রথমে বিজয় মুসলিমদের হাতে ছিল, মুশরিকরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এমনকি তারা পালাতে পালাতে তাদের নারীদের নিকট পৌছে যায়। এ দিকে মুসলিম তীরান্দাজরা যখন তাদের পরাজয় দেখতে পেল তারা (মুসলিমগণ) মনে করছিল, কাফিররা আর ফেরত আসবে না। তাই তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামযে স্থানের হিফাযত করার নির্দেশ দিয়েছিন তা রক্ষার করার চিন্তা বাদ দিয়ে স্থান ত্যাগ করে। তারা মনে করছিল মুশরিকরা আর ফিরে আসবে না। তাই তারা গণিমতের মালামাল একত্র করার জন্য যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং পাহাড়ের পাহারা ছেড়ে দেয়। মুশরিকরা যখন দেখতে পেল, মুসলিমদের নিরাপত্তা বেষ্টনী এখন আর নেই এবং তীরান্দাজ যোদ্ধারা পাহাড় থেকে গিয়ে গণিমতের মালামাল একত্র করতে ময়দানে নেমে গেছে। তাই তারা কোনো প্রকার কাল ক্ষেপন না করে, ফিরে এসে মুসলিমদের ঘেরাও করে ফেলল এবং তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফলে এ যুদ্ধে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের সত্তরজন সাহাবীকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করলেন। মুশরিকরা আক্রমণ করতে করতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছে গেল, তারা তার চেহারাকে আঘাত করল, তার চারটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলল, তার মাথার ওপর আঘাত হানল। কতক সাহাবী জীবন বাজি রেখে তার থেকে শত্রুর আঘাত প্রতিহত করল। ( [দেখুন: যাদুল মা‘আদ ১৯৬/৩; আর-রাহীকুল মাখতুম, ২৫৫।])
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আশেপাশে কুরাইশের দুই এবং আনসারের সাতজন লোক ছিল। যখন মুশরিকরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তীর মারতে ছিল এবং নিকটে পৌঁছে গেল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
«من يردهم عنا وله الجنة، أو هو رفيقي في الجنة [ ، فتقدم رجل من الأنصار فقاتل حتى قتل، ثم رهقوه أيضاً فقال : ] من يردهم عنا وله الجنة، [ فتقدم رجل من الأنصار فقاتل حتى قتل، فلم يزل كذلك حتى قتل السبعة، فقال رسول اللَّه صلى الله عليه وسلم لصاحبيه : [ ما أنصفنا أصحابنا»
“যে আমার থেকে তাদের প্রতিহত করবে তার জন্য অবশ্যই জান্নাত অথবা জান্নাতে সে আমার সাথী হয়ে থাকবে। এ কথা শোনে একজন আনসারী সাহাবী সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হন। তারপর তারা আবারো তীর নিক্ষেপ করতে থাকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আমার থেকে তাদের প্রতিহত করবে তার জন্য অবশ্যই জান্নাত অথবা জান্নাতে সে আমার সাথী হবে। এ কথা শোনে অপর একজন আনসারী সাহাবী সামনে অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ করতে থাকে অবশেষে সেও শহীদ হয়। তারপর তারা আবারো তীর নিক্ষেপ করতে থাকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আমার থেকে তাদের প্রতিহত করবে তার জন্য অবশ্যই জান্নাত অথবা জান্নাতে সে আমার সাথী হবে। [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং ১৭৮৯।] এ কথা শোনে একজন আনসারী সামনে অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ করতে করতে সেও শহীদ হয়। তারপর তারা আবারো তীর নিক্ষেপ করতে থাকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আমার থেকে তাদের প্রতিহত করবে সে অবশ্যই জান্নাতী অথবা জান্নাতে সে আমার সাথী হবে। এভাবে চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সাতজন সাহাবী শহীদ হয়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দুই সাথীকে বলল, আমাদের সাথীরা আমাদের সাথে যে কাজটি করেছে তা মোটেই ঠিক করে নি।
আর যখন মুসলিমগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘিরে একটি দুর্গে একত্র হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই ইবন খালফ তার একটি ঘোড়ার আরোহণ অবস্থায় পাহাড়ের প্রান্তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখতে পেয়ে বলল, মুহাম্মাদ কোথায়? সে যদি নাজাত পায়, তা হলে আমার কোনো নাজাত নেই। তার কথা শোনে লোকেরা বলল, আমাদের কেউ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না তাকে তার অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও। তারপর যখন সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আক্রমণের জন্য সামনের দিক অগ্রসর হচ্ছিল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারেস ইবন সাম্মাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি লাটি নিয়ে তার দিকে ছুড়ে মারল। এতেই উবাই ইবন খালফের অবস্থা খারাব হয়ে গেল। সে যখন তার স্বজাতির নিকট ফিরে যায় তখন সে বলে আল্লাহর শপথ! আমাকে মুহাম্মাদ হত্যা করে ফেলছে। তখন তারা তাকে বলল, তুমি খামাখা ভয় পাচ্ছ! আমরা তোমার মধ্যে কোনো আঘাতই দেখতে পাচ্ছি না। তখন সে বলে, মুহাম্মাদ মক্কা থাকা অবস্থায় একদিন আমাকে হত্যা করবে বলছিল, আল্লাহর কসম করে বলছি, সে যদি আমার দিকে একটু থু থু ও নিক্ষেপ করে আমার মৃত্যুর জন্য তাই যথেষ্ট হবে। তারপর আল্লাহ এ শত্রুটি মক্কা থেকে ফেরার পথে সারাফ নামক স্থানে মারা যায়। [বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৩২/৪; যাদুল মা‘আদ ১৯৯/৩; আর-রাহীকুল মাখতুম, ২৬৩; তাবারী ৬৭/২ ফিকহুস সীরাহ ২২৬।]
সাহাল ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আঘাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে,
«جُرحَ وجه النبي صلى الله عليه وسلم وكُسرَت رباعيته، وهُشِمَت البيضة على رأسه، فكانت فاطمة – عليها السلام – تغسل الدم، وعليٌّ يمسك، فلما رأت أن الدم لا يرتد إلا كثرة أخذت حصيراً فأحرقته حتى صار رماداً، ثم ألزقته فاستمسك الدم . »
“উহুদ যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা মোবারক জখম হয়, তার রুবা‘য়ী দাঁত ভেঙে যায় এবং তার মাথায় তীর আঘাত হানে। ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁর মাথা থেকে প্রবহমান রক্ত ধুইছিল, আর আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু রক্ত বন্ধ করতে চেষ্টা করছিল; তিনি যখন দেখতে পেলেন কোনোভাবেই রক্ত বন্ধ করা যাচ্ছে না তখন সে একটি চাটাই নিয়ে তাতে আগুন জ্বালিয়ে ছাই বানায় এবং সেগুলোকে ক্ষত স্থানে মালিশ করার পর তার রক্ত বন্ধ হয়”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল জিহাদ ২৯১১; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং ১৭৯০।]
এভাবেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দীনের জন্য কাফির মুশরিকদের পক্ষ থেকে কষ্ট, নির্যাতন ও যুলুম সইতে হয়। তারপরও তিনি তার স্বজাতির বিরুদ্ধে কোনো দিন বদ-দোয়া করেন নি বরং তাদের জন্য তিনি আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কারণ, তারাতো জানে না।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসূদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كأني أنظر إلى رسول اللَّه صلى الله عليه وسلم يحكي نبياً من الأنبياء ضربه قومه وهو يمسح الدم عن وجهه، ويقول : ] اللَّهم اغفر لقومي فإنهم لا يعلمون» .
“আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে তাকিয়ে থাকলে তাকে দেখি তিনি আগেকার আমলের একজন নবীর বর্ণনা দেন যে, তার গোত্রের লোকেরা তাকে মেরে রক্তাক্ত করছে, আর সে তার চেহারা হতে রক্ত মুছছে। (এত নির্যাতন সত্বেও সে তার জাতির বিপক্ষে কোনো বদ-দো‘আ করে নি।) সে বলছে, হে আল্লাহ আপনি আমার কাওমের লোকদের ক্ষমা করে দেন! কারণ, তারা বুঝে না”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া, হাদীস নং ৩৪৭৭; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং ১৭৯২।]
নবীরা তাদের উম্মতদের দা‘ওয়াত দিতে গিয়ে তাদের থেকে যেসব যুলুম নির্যাতনের স্বীকার হন তার ওপর ধৈর্যধারণ করা এবং সহনশীলতার পরিচয় দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনো দৃষ্টান্ত খুজে পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে সমগ্র নবীদের সরদার মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি যে ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তারা শুধু ধৈর্যধারণই করেন নি, বরং তারা তাদের ক্ষমা করে দিতেন তাদের জন্য হিদায়েত ও মাগফিরাতের দো‘আ করতেন। তাদের অপরাধকে এ বলে ক্ষমা করে দিতেন যে তারা জানে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেন,
«اشتد غضب اللَّه على قوم فعلوا هذا برسول اللَّه صلى الله عليه وسلم، وهو حينئذ يشير إلى رباعيته، اشتد غضب اللَّه على رجل يقتله رسول اللَّه صلى الله عليه وسلم في سبيل اللَّه تعالى»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রুবা‘য়ী দাঁতের দিকে ইশারা করে বলেন, যে জাতি তাদের নবীর সাথে এ ধরনের আচরণ করে, তাদের ওপর আল্লাহর ‘আযাব অবধারিত। আর যাকে আল্লাহর রাহে কোনো নবী বা রাসূল হত্যা করে তার ওপর আল্লাহর আযাব অবধারিত”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল মাগাযী, হাদীস নং ৪০৭৩; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং ১৭৩৯।]
উহুদ যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে আঘাত পেয়েছেন এবং যুলুম নির্যাতনের ওপর যেভাবে ধৈর্যধারণ করেছেন, আল্লাহর পথের দা‘ঈদের জন্য তা আজীবন আদর্শ হয়ে থাকবে। যারা আল্লাহর পথে দা‘ওয়াত দিতে গিয়ে জেল-যুলুম, দৈহিক নির্যাতন, দেশান্তর হওয়া এবং সর্বশেষ তাদের জীবন কেড়ে নেওয়া ইত্যাদির স্বীকার হয়ে থাকে তাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলো উত্তম আদর্শ। কারণ, তাকে অনুরূপ অনেক কষ্টই দেওয়া হয়েছে। আর তিনি তাতে ধৈর্য ধরেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/21
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।