মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা
লেখকঃ সাঈদ ইবন আলী ইবন ওহাফ আল-কাহতানী
১৭
চার. হিকমতপূর্ণ তা‘লীম
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/17
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় মুসলিমদের তা‘লীম, তরবিয়ত, আত্মার পরিশুদ্ধি ও উত্তম আখলাক শেখানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি অত্যন্ত মুহব্বত ও ভালোবাসার সাথে তাদের ইসলামী শিষ্টাচার ও ইবাদত বন্দেগীর তা‘লীম দিতেন। [আর-রাহীকুল মাখতুম, ১৭৯, ২০৮, ১৮১; মাহমুদ শাকের-এর তারিখে ইসলামী ১৬৫/২।]
“হে মানুষ! তোমরা সালামের প্রসার কর, মেহমানের মেহমানদারী কর, মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা সালাত আদায় কর, আর নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ কর”। [তিরমিযী, কিতাব কিয়ামতের বর্ণনা, হাদীস নং ২৪৮৫। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। আর ইবন মাজাহ, কিতাবুল আত‘ইমাহ পরিচ্ছেদ: হাদীস নং ১০৮৩/২, ৩২৫১; দারামী ১৫৬/১ এবং আহমদ ১৬৫/১।]
তিনি আরও বলেন,
«لا يدخل الجنة من لا يأمن جاره بوائقه»
“যার অত্যাচার থেকে প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজন নিরাপদ থাকতে পারে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না”। [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: প্রতিবেশীদের কষ্ট দেওয়া বিষয়ে, হাদীস নং ৪৬।]
«المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده»
“সত্যিকার মুসলিম সে ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদে থাকে”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: কোন ইসলাম উত্তম? ৫৪/১; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: بيان تفاضل الإسلام وأي الأمور أفضل হাদীস নং ৪১।] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«لا يؤمن أحدكم حتى يحب لأخيه ما يحب لنفسه»
“যে ব্যক্তি নিজের জন্য যা পছন্দ করে, তা তার অপর ভাইয়ের জন্য পছন্দ না করা পর্যন্ত সে প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: নিজের জন্য যা ভালোবাসে অপরের জন্য তা ভালোবাসা বিষয়ে, হাদীস নং ১৩, ৫৬/১; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান: باب الدليل على أن من خصال الإيمان أن يحب لأخيه ما يحب لنفسه، ৬৭/১।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«المؤمن للمؤمن كالبنيان يشد بعضه بعضا، وشبك بين أصابعه»
“একজন মুমিন অপর মুমিনের জন্য প্রাচীরের ন্যায়, তার একটি অংশ অপর অংশকে শক্তি যোগায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলে আঙ্গুল গুলোকে জড়ো করে দেখান। [সহীহ বুখারী, কিতাবুস সালাত: পরিচ্ছেদ মসজিদে আঙ্গুল ফুটানো বিষয়ে, হাদীস নং ৪৮১; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সিলাহ, পরিচ্ছেদ: মুমিনদের পরস্পর ভালোবাসা, সহযোগিতা করা ও দয়া করা, হাদীস নং ২৫৮৫।] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«لا تحاسدوا، ولا تناجشوا، ولا تباغضوا، ولا تدابروا، ولا يبع بعضكم على بيع بعض، وكونوا عباد اللَّه إخواناً، المسلم أخو المسلم، لا يظلمه، ولا يخذله، ولا يحقره، التقوى هاهنا ويشير إلى صدره ثلاث مرات بحسب امرئ من الشر أن يحقر أخاه المسلم، كل المسلم على المسلم حرام : دمه، وماله وعرضه»
“তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ করো না ধোঁকা দিবে না, হিংসা করবে না এবং দুর্নাম করবে না। আর কারো বেচা-কেনার ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা ও ভাইয়ে পরিণত হও। একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে কাউকে অপমান করে না। কাউকে ঠকায় না এবং কারো ওপর অত্যাচার করে না। আর তাকওয়া এখানে। এ বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় বক্ষের দিকে তিনবার ইশারা করে। একজন মানুষ নিকৃষ্ট হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার একজন ভাইকে অপমান করা। প্রতিটি মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের রক্তপাত, ধন-সম্পদ আত্মসাৎ ও ইজ্জত সম্মানহানী করা হারাম করা হয়েছে। [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সিলাহ পরিচ্ছেদ: কোনো মুসলিমের ওপর যুলুম করা, তাকে অপমান করা, তাকে ছোট করে দেখা এবং কোনো মুসলিমের জানমাল ও ইজ্জত সম্মান হনন করা হারাম হওয়া বিষয়ে, হাদীস নং ২৫৬৪।]
«وقال لا يحل لمسلم أن يهجر أخاه فوق ثلاث ليال، يلتقيان فيعرض هذا، ويعرض هذا، وخيرهما الذي يبدأ بالسلام»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, একজন মুসলিম তার অপর ভাইকে তিন রাতের বেশি ছেড়ে রাখতে পারে না। তারা একে অপরের সাথে মিলিত হলে একজন এদিক আরেকজন অন্যদিক ফিরে থাকে। তাদের উভয়ের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে আগে সালাম দেয়। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল আদব, পরিচ্ছেদ: ছেড়ে দেওয়া ও রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী لا يحل لرجل أن يهجر أخاه فوق ثلاث بلا عذر شرعي، অর্থাৎ শর‘ঈ কোনো ওযর ব্যতীত কোনো লোকের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক না রাখা হারাম হওয়া প্রসঙ্গে, হাদীস নং ২৫৬০।] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«تفتح أبواب الجنة يوم الإثنين، ويوم الخميس، فيغفر لكل عبد لا يشرك باللَّه شيئاً إلا رجلاً كانت بينه وبين أخيه شحناء، فيقال : انظِروا هذين حتى يصطلحا، انظِروا هذين حتى يصطلحا، انظِروا هذين حتى يصطلحا»
“সোমবার ও বৃহস্পতিবারে জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয়ে থাকে। তখন আল্লাহ তা‘আলা যেসব বান্দাগণ আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করে না তাদের ক্ষমা করে দেন। তবে কোনো ব্যক্তি যদি এমন হয়, তার মধ্যে ও তার ভাইয়ের মধ্যে শত্রুতা থাকে, তবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করেন না। আল্লাহ তার ফিরিশতাদের বলেন, তোমরা এ দু’জনকে সুযোগ দাও, যাতে তারা আপোষ করে ফেলে। তোমরা এ দু’জনকে সুযোগ দাও যাতে তারা আপোষ করে ফেলে। তোমরা এ দু’জনকে সুযোগ দাও যাতে তারা আপোষ করে ফেলে”। [সহীহ বুখারী: ৫৬/১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৬৫, ১৯৮৭/৪।]
«وقال : تعرض الأعمال في كل يوم خميس وإثنين فيغفر الله في ذلك اليوم لكل امرئٍ لا يُشرك باللَّه شيئاً إلا امرأ كانت بينه وبين أخيه شحناء، فيقال : اركوا هذين حتى يصطلحا، اركوا هذين حتى يصطلحا»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন আল্লাহ তা‘আলার নিকট সোমবার ও বৃহস্পতিবারে বান্দার আমলসমূহ পেশ করা হয়ে থাকে, তখন আল্লাহ তা‘আলা যারা আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করে তাদের ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। তবে কোনো ব্যক্তি যদি এমন হয়, তার মধ্যে ও তার ভাইয়ের মধ্যে শত্রুতা থাকে, তবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করেন না। তার বিষয়ে বলা হয়, তাকে তোমরা সুযোগ দাও! যাতে তারা আপোষ করে নেয়”। [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সিলাহ পরিচ্ছেদ: হিংসা-বিদ্বেষ ও সম্পর্কচ্ছেদ করা নিষেধ হওয়া প্রসংঙ্গে, ১৯৮৭/৪, ৩৬/২৫৬৫।]
«وقال صلى الله عليه وسلم : انصر أخاك ظالماً أو مظلوماً قيل : يا رسول اللَّه، هذا نصرته مظلوماً، فكيف أنصره إذا كان ظالماً؟ قال : تحجزه أو تمنعه من الظلم فذلك نصره»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা তোমার যালিম অথবা মাযলুম ভাই উভয়কে সহযোগিতা কর। একজন জিজ্ঞাসা করে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল মযলুমের সাহায্য করা আমরা বুঝতে পারলাম, কিন্তু যদি যালিম হয়, তাকে কীভাবে সাহায্য করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে তোমরা বিরত রাখবে অথবা তাকে যুলুম করতে বাধা দিবে”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল মাযালিম পরিচ্ছেদ: তোমার ভাই যালিম ও মাযলুকে সাহায্য কর, হাদীস নং ২৪৪৪, ২৪৪১; কিতাবুল ইকরাহ হাদীস ৬৯৫২; সহীহ মুসলিম, তোমার ভাই যালিম ও মযলুমকে সাহায্য কর, হাদীস নং ২৫৮৫।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«حق المسلم على المسلم ست، قيل : ما هن يا رسول اللَّه؟ قال : [ إذا لقيته فسلِّم عليه، وإذا دعاك فأجبه، وإذا استنصحك فانصح له، وإذا عطس فحمد اللَّه فشمِّته، وإذا مرض فعُده، وإذا مات فاتبعه»
“একজন মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের ওপর ছয়টি দায়িত্ব রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হলো, সেগুলো কী হে আল্লাহর রাসূল!? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, যখন তুমি তার সাথে সাক্ষাৎ করবে, তাকে সালাম দিবে। যখন তোমাকে দা‘ওয়াত দিবে, তখন তুমি তার দা‘ওয়াতে সাড়া দিবে। যখন তোমার নিকট কোনো উপদেশ চাইবে তখন তুমি তাকে উপদেশ দিবে। আর হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, তুমি তার উত্তর দিবে। আর যখন অসুস্থ হবে, তুমি তাকে দেখতে যাবে। আর যখন মারা যাবে, তার জানাজায় শরীক হবে”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল জানায়েয, পরিচ্ছে: জানাযায় অংশগ্রহণ করার নির্দেশ প্রসঙ্গে, হাদীস নং ১২৪০; সহীহ মুসলিম, কিতাবুস সালাম, পরিচ্ছেদ: এক মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের হক হলো, সালামের উত্তর দেওয়া বিষয় ১৭০৫/৪।]
বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ونهانا عن سبع : [ أمرنا بعيادة المريض، واتباع الجنازة، وتشميت العاطس، وإجابة الداعي , وإفشاء السلام، ونصر المظلوم، وإبرار المقسم، ونهانا عن خواتيم الذهب، وعن الشرب في الفضة أو قال : في آنية الفضة وعن المياثر، والقسي، وعن لبس الحرير، والديباج، والإستبرق» .
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি আদেশ দেন এবং সাতটি বিষয়ে নিষেধ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের রোগীদের দেখতে যাওয়া, জানাজায় শরীক হওয়া, হাঁচির উত্তর দেওয়া, সালামের প্রসার করা, মযলুমের সাহায্য করা, দা‘ওয়াতে সাড়া দেওয়া এবং শপথকারীকে দায়মুক্ত করার নির্দেশ দেন। আর তিনি আমাদের স্বর্ণের আংটি পরা, রুপার পাত্রে পান করা, রেশমের পোশাক পরিধান করা, রেশমের নির্মিত বিছানা, রেশমের দ্বারা খচিত কাপড়, দিবাজ ও ইসতাবরাক পরিধান করা হতে নিষেধ করেন”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল জানায়েয, পরিচ্ছে: জানাযায় অংশগ্রহণ করার নির্দেশ প্রসঙ্গে, হাদীস নং ১২৩৯, ১১২/৩, ৯৯/৫।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا تدخلون الجنة حتى تؤمنوا، ولا تؤمنوا حتى تحابوا، أَوَلا أدلكم على شيء إذا فعلتموه تحاببتم، أفشوا السلام بينكم «
“তোমারা পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর তোমরা পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না, তোমরা একে অপরকে মহব্বত করবে। আমি কি তোমাদের এমন একটি বিষয়ের সন্ধান দিব, যা পালন করলে তোমরা একে অপরকে মুহব্বত করবে? তোমরা তোমাদের নিজেদের মধ্যে সালামের ব্যাপকতা বৃদ্ধি কর”! [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: জান্নাতে শুধু মুমিনরাই প্রবেশ করবে বিষয়ে, ৭৪/১, হাদীস নং ৫৪]
«وسئل صلى الله عليه وسلم : أي الإسلام خير؟ فقال : تطعم الطعام، وتقرأ السلام على من عرفت ومن لم تعرف»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ইসলামে সর্বোত্তম আমল কোনটি? তখন রাসূল উত্তর দেন, মেহমানের মেহমানদারী করা, তুমি যাকে চিন বা যাকে চিন না সবাইকে সালাম দেওয়া”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: খানা খাওয়ানো ইসলাম হওয়া বিষয়ে ৫৫/১,১২; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদীস নং ৩৯।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَثَل المؤمنين في توادهم وتراحمهم وتعاطفهم، كمثل الجسد إذا اشتكى منه عضو تداعى له سائر الجسد بالسهر والحمى»
“মুমিনদের দৃষ্টান্ত পরস্পরের প্রতি দয়া, নম্রতা ও আন্তরিকতার দিক দিয়ে একটি দেহের মতো। তাদের দেহের একটি অংশ আক্রান্ত হলে, তার সমগ্র অঙ্গ ব্যথা, যন্ত্রণা ও অনিদ্রায় আক্রান্ত হয়”। [সহীহ বুখারী: কিতাবুল আদব পরিচ্ছেদ: মানুষ ও চতুষ্পদ জন্তুর ওপর দয়া করা বিষয়ে, ৪৩৮/১০, ৬০১১ ৫৫/১, ১২; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াসসিলাহ, পরিচ্ছেদ: মুমিনদের প্রতি দয়া ও নমনীয়তা বিষয়ে, ২০০০/৪, ২৫৮৬।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«من لا يرحَم لا يُرحم»
“যে ব্যক্তি রহম করে না তাকে রহম করা হবে না”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল আদব পরিচ্ছেদ: মানুষের প্রতি দয়া ও নমনীয়তা বিষয়ে ৪৩৮/১০, ৬০১৩; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ফাযায়েল باب رحمته الصبيان والعيال وتواضعه وفضل ذلك، , হাদীস নং ২৩১৯।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«من لا يرحم الناس لا يرحمه اللَّه تعالى»
“যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করে না, আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি দয়া করবে না”। [সহীহ মুসলিম, ১৮০৯/৪, হাদীস নং ২৩১৯।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
«سباب المسلم فسوقٌ، وقتاله كفر»
“মুসলিমদের গালি দেওয়া ফাসেকী, আর কোনো মুসলিমকে হত্যা করা হলো, কুফুরী”। [সহীহ বুখারী, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: خوف المؤمن من أن يحبط عمله وهو لا يشعر , হাদীস নং ৪৮; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ: রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী سباب المسلم فسوق وقتاله كفر হাদীস নং ৬৪।]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উল্লিখিত বাণীসমূহ আনসারীদের নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সরাসরি পৌঁছুক বা তারা মুহাজিরদের মাধ্যমে পৌঁছুক, যারা হিজরতের পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছে, সবই হলো তাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে বিশেষ তা‘লীম ও শিক্ষা। এ ছাড়া কিয়ামত পর্যন্ত অনাগত উম্মতের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চিরন্তন বাণীসমূহ বিশেষ তা‘লীম যা তারা তাদের জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারে।
এ ছাড়াও আরও অনেক হাদীস ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী রয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি তার সাহাবীদের তা‘লীম দিতেন, তাদের দান খয়রাত করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতেন এবং দান করার ফযীলত বর্ণনা করতেন, যাতে তাদের অন্তর বিগলিত ও উৎসাহী হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ভিক্ষা করা হতে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করেন। তাদের জন্য ধৈর্যধারণ ও কানায়াত করার গুরুত্ব আলোচনা করতেন। যেসব ইবাদতে অধিক সাওয়াব ও বিনিময় রয়েছে, তার প্রতি তাদের যত্নবান হওয়ার তা‘লীম দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসমান থেকে অবতীর্ণ অহীর সাথে সম্পৃক্ত করতেন। তিনি নিজে তাদের পড়ে শোনাতেন এবং তাদের থেকে তিনি শুনতেন। যাতে এ শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ওপর দা‘ওয়াতের যে দায়িত্ব রয়েছে, তার অনুভূতি জাগ্রত হয়।
আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই ধীরে ধীরে তাদের চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধন করেন এবং তাদের একটি মান-সম্পন্ন জাতিতে পরিণত করেন। যার ফলে তারা কিয়ামত অবধি মানবতার জন্য একটি আদর্শে পরিণত হন। এভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ইতিহাসে একটি আদর্শবান ও উন্নত মানের মুসলিম সমাজ বিনির্মাণ করতে তিনি সক্ষম হন। সাথে সাথে জাহেলি সমাজের যাবতীয় সমস্যার বিজ্ঞান সম্মত সমাধান তিনি জাতির সামনে পেশ করেন এবং তা বাস্তবায়ন করে দেখান। ফলে অন্ধকারাচ্ছন্ন জাহেলি সমাজ ব্যবস্থা মানবতার জন্য একটি উন্নত আদর্শের দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী পরিণত হয়। এগুলো সবই হলো, আল্লাহ তা‘আলার অপার অনুগ্রহ তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আন্তরিক প্রচেষ্টার সুফল। যারা আল্লাহর দিকে মানুষকে আহ্বান করবে তাদের উচিৎ হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণ করা এবং তার অনুসৃত পথে চলা। [দেখুন: আর-রাহীকুল মাখতুম, ১৮৩।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/454/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।