hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

একজন ঈমানদার দা‘ঈর গুণাবলী

লেখকঃ মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম

৩৭
পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার
৩৫. পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার: পিতা-মাতা আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অতুল্য নে‘আমত। আল্লাহ তাঁর ইবাদতের পরেই পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হিসাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উল্লেখ করেছেন। পিতা-মাতাকে পেয়ে তাদের সাথে সদাচরণ করে যে ব্যক্তি জান্নাত লাভ করতে পারল না, তার চেয়ে হতভাগ্য আর নেই। পিতা-মাতা অত্যাচারী, অন্যায়কারী, এমনকি বিধর্মী হলেও তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। পিতা-মাতার সাথে সদাচরণের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন:

﴿ وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ أَنِ ٱشۡكُرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيۡكَ إِلَيَّ ٱلۡمَصِيرُ ١٤ ﴾ [ لقمان : ١٤ ]

‘আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। একাধারে দু’বছর দুধ পান করিয়েছে। অতএব আমার প্রতি ও পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। আর আমার নিকটেই তোমাদের ফিরে আসতে হবে’। [. সুরা লোক্বমান ১৪]

তিনি আরো বলেন:

﴿ ۞وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعۡبُدُوٓاْ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنًاۚ إِمَّا يَبۡلُغَنَّ عِندَكَ ٱلۡكِبَرَ أَحَدُهُمَآ أَوۡ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَآ أُفّٖ وَلَا تَنۡهَرۡهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوۡلٗا كَرِيمٗا ٢٣ وَٱخۡفِضۡ لَهُمَا جَنَاحَ ٱلذُّلِّ مِنَ ٱلرَّحۡمَةِ وَقُل رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٣، ٢٤ ]

‘তোমার পালনকর্তা নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তাকে ছাড়া যেন অন্য কারো ইবাদত না কর। পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলবে না এবং তাদেরকে ধমক দিও না ও তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। তাদের সাথে নম্রভাবে করুণার ডানা অবনত করে দাও এবং বল হে আমার পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর যেমন শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছে’। [. সুরা বানী ইসরাঈল, ২৩-২৪]

অত্র আয়াতে আল্লাহ তাঁর ইবাদতের পরেই পিতা-মাতার সাথে উত্তম আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। (১) কারো কোন কাজের জন্য তার পিতামাত কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। (২) তাদের কোন কাজের জন্য তাদেরকে ধমক বা কষ্ট দেয়া যাবে না।তাদের সাথে উত্তম আচরণ করতে হবে। তাদের সাথে সদা নম্র-ভদ্র ব্যবহার করতে হবে। (৩) বৃদ্ধাবস্থায় তাদের প্রতি দয়ার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। (৪) তাদের মৃত্যুর পরে তাদের জন্য দো‘আ করতে হবে। এ আয়াত ব্যতীত আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ এভাবে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা নির্দেশ দিয়েছেন।

পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আল্লাহ্র নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘সময়মত ছালাত আদায় করা। আবার জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তারপর হচ্ছে পিতা-মাতার অনুগত হওয়া। তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম,এরপর কি? তিনি বললেন: আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা’। [. মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৮]

এ হাদীসে আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় আমল সময়মত সালাত আদায়ের পরই পিতা-মাতার সাথে সদাচরণের কথা বলা হয়েছে। এমনকি এতে জিহাদের উপরেও পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে, পিতা-মাতার মধ্যে মায়ের মর্যাদা পিতার চেয়ে তিনগুণ বেশী বলে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার নিকট সর্বাপেক্ষা অধিক সৌজন্যমূলক আচরণ পাওয়ার অধিকারী কে? উত্তরে তিনি বললেন: তোমার মা। সে আবার জিজ্ঞেস করল তারপর কে? তিনি বললেন: তোমার মা। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন: তোমার মা। সে আবার জিজ্ঞেস করল তারপর কে? তিনি বললেন: তোমার পিতা’। [. মুসলিম, হাদীস নং-৪৯১১]

এ হাদীসে প্রথমে তিনবার মায়ের কথা বলে চর্তুবার পিতার কথা বলা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, মায়ের মর্যাদা সর্বোচ্চে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘তার নাক ধূলায় মলিন হোক (একথা তিনি তিন বার বললেন)। বলা হল, সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন: যে ব্যক্তি বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে অথবা দু’জনের একজনকে পেল (অথচ তাদের সেবা করল না) সে জান্নাত লাভ করতে পারল না’। [. মুসলিম, হাদীস নং-৪৯১২]

আমর ইবনু আছ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: বড় গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা। পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, মানুষকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা’। [. আত-তারগীব, হাদীস নং-৩৫৬৮]

ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণীর মানুষের প্রতি দয়ার দৃষ্টি দিবেন না। (১) পিতা-মাতার অবাধ্য ব্যক্তি (২) নিয়মিত নেশাদার দ্রব্য পানকারী (৩) দান করার পর খোটা দানকারী। তিনি আবার বলেন: তিন শ্রেণীর মানুষ জান্নাতে যাবে না। পিতা-মাতার অবাধ্য ব্যক্তি, দায়ূছ ব্যক্তি, পুরুষের বেশধারী নারী’। [. আত-তারগীব, হাদীস নং-৩৫৭০]

আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তিন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে, যাদের ফরয ও নফল ইবাদত আল্লাহ কবুল করবেন না। (১) পিতা-মাতার অবাধ্য ব্যক্তি, (২)খোটা দানকারী (৩) ভাগ্যকে অস্বীকারকারী’। [. আত-তারগীব, হাদীস নং-৩৫৭৩]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘পিতা-মাতার অনুগত হলে বয়স বৃদ্ধি পায়। মিথ্যা কথা রুযী কমিয়ে দেয়। দো‘আ নির্ধারিত ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটায়’। [. আত-তারগীব হাদীস নং-৪২০৩]

ইবনু আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: যখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর স্ত্রীর (সারার) মাঝে যা হবার হয়ে গেল, তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম শিশুপুত্র ইসমাঈল এবং তার মাকে নিয়ে বের হলেন। তাদের সঙ্গে একটি থলে ছিল, যাতে পানি ছিল। ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর মা মশক হতে পানি করতেন। ফলে শিশুর জন্য তার স্তন দুধ বাড়তে থাকে। অবশেষে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মক্কায় পৌঁছে হাজেরাকে একটি বিরাট গাছের নিচে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। অতঃপর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম স্বীয় পরিবারের (সারার) নিকট ফিরে চললেন। তখন ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর মা কিছু দূর পর্যন্ত তার অনুসরণ করলেন। অবশেষে যখন কাদা নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন তিনি পিছন হতে ডেকে বললেন: হে ইবরাহীম! আপনি আমাদেরকে কার নিকট রেখে যাচ্ছেন? ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বললেন: আল্লাহর কাছে। হাজেরা আলাইহিস সালাম বললেন: আমি আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। রাবী বলেন:অতঃপর হাজেরা আলাইহিস সালাম ফিরে আসলেন, তিনি মশক হতে পানি পান করতেন। আর শিশুর জন্য দুধ বাড়ত। অবশেষে যখন পানি শেষ হয়ে গেল। তখন ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর মা বললেন: আমি যদি গিয়ে এদিকে সেদিকে তাকাতাম, তাহলে হয়তো কোন মানুষ দেখতে পেতাম। রাবী বলেন: অতঃপর ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর মা গেলেন এবং ছাফা পাহাড়ে উঠলেন। আর এদিকে ওদিকে তাকালেন এবং কাউকে দেখেন কিনা এজন্য বিশেষভাবে তাকিয়ে দেখলেন। কিন্তু কাউকেও দেখতে পেলেন না। তখন দ্রুত বেগে মারওয়া পাহাড়ে এসে গেলেন এবং এভাবে কয়েক চক্কর দিলেন। পুনরায় তিনি বললেন: যদি গিয়ে দেখতাম যে, শিশুটি কি করছে? অতঃপর তিনি গেলেন এবং দেখতে পেলেন যে, সে তার অবস্থায়ই আছে। সে যেন মরণাপন্ন হয়ে গেছে। এতে তার মন স্বস্তি পাচ্ছিল না। তখন তিনি বললেন: যদি সেখানে যেতাম এবং এদিকে সেদিকে তাকিয়ে দেখতাম, সম্ভবত কাউকে দেখতে পেতাম। অতঃপর তিনি গেলেন, ছাফা পাহাড়ের উপর উঠলেন এবং এদিক সেদিক দেখলেন এবং গভীর ভাবে তাকিয়ে দেখলেন। কিন্তু কাউকে দেখতে পেলেন না। এমনকি তিনি সাতটি চক্কর পূর্ণ করলেন। তখন তিনি বললেন: যদি যেতাম তখন দেখতাম যে, সে কি করছে? হঠাৎ তিনি একটি শব্দ শুনতে পেলেন। অতঃপর তিনি মনে মনে বললেন: যদি আপনার কোন সাহায্য করার থাকে, তবে আমাকে সাহায্য করুন। হঠাৎ তিনি জিবরাঈল আলাইহিস সালাম-কে দেখতে পেলেন। রাবী বলেন: তখন তিনি (জিবরাঈল) তার পায়ের গোড়ালী দ্বারা এরূপ করলেন। হঠাৎ গোড়ালী দ্বারা যমীনের উপর আঘাত করলেন। রাবী বলেন: তখনি পানি বেরিয়ে আসল। এ দেখে ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর মা অস্থির হয়ে গেলেন এবং গর্ত খুঁড়তে লাগলেন। রাবী বলেন: এ প্রসঙ্গে আবুল কাসেম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: হাজেরা আলাইহিস সালাম যদি একে তার অবস্থার উপর ছেড়ে দিতেন, তাহলে পানি বিসৃতত হয়ে যেত। রাবী বলেন: তখন হাজেরা আলাইহিস সালাম পানি পান করতে লাগলেন এবং তার সন্তানের জন্য তার দুধ বাড়তে থাকে। রাবী বলেন: অতঃপর জুরহুম গোত্রের এক দল লোক উপত্যকার নিচু ভূমি দিয়ে অতিক্রম করছিল। হঠাৎ তারা দেখল কিছু পাখি উড়ছে। তারা যেন তা বিশ্বাসই করতে পারছিল না। আর তারা বলতে লাগল, এসব পাখিতো পানি ব্যতীত কোথাও থাকতে পারে না। তখন তারা সেখানে তাদের একজন পাঠাল। সে খোনে গিয়ে দেখল, সেখানে পানি মওজুদ আছে। তখন সে তার দলের লোকদের নিকট ফিরে আসল এবং তাদেরকে সংবাদ দিল। অতঃপর তারা হাজেরা আলাইহিস সালাম-এর নিকট এসে বলল: হে ইসমাঈলের মা! আপনি কি আমাদেরকে আপনার নিকট থাকা অথবা (রাবী বলেছেন:) আপনার নিকট বসবাস করার অনুমতি দিবেন? হাজেরা আলাইহিস সালাম তাদেরকে বসবাসের অনুমতি দিলেন এবং এভাবে অনেক দিন কেটে গেল। অতঃপর তার ছেলে বয়ঃপ্রাপ্ত হল। তখন তিনি (ইসমাঈল) জুরহুম গোত্রেরই একটি মেয়েকে বিয়ে করলেন। রাবী বলেন: পুনরায় ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর মনে জাগল, তখন তিনি তার স্ত্রী (সারা)-কে বললেন: আমি আমার পরিত্যক্ত পরিজনের খবর নিতে চাই। রাবী বলেন: অতঃপর তিনি আসলেন এবং সালাম দিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ইসমাঈল কোথায়? ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর স্ত্রী বলল: তিনি শিকারে গেছেন। তিনি পুত্রবধূকে তাদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল: আমরা অতি দুরাবস্থায়, অতি টানাটানি ও খুব কষ্টে আছি। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বললেন: সে যখন আসবে তখন তুমি তাকে আমার এ নির্দেশের কথা বলবে, তুমি তোমার ঘরের চৌকাঠ খানা বদলিয়ে ফেলবে। ইসমাঈল আলাইহিস সালাম যখন আসলেন, তখন স্ত্রী তাকে খবরটি জানালেন। তিনি স্ত্রীকে বললেন: তুমি সেই চৌকাঠ। অতএব তুমি তোমার পিতার নিকট চলে যাও। রাবী বলেন: অতঃপর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর আবার মনে পড়ল। তখন তিনি স্ত্রী (সারা)-কে বললেন: আমি আমার নির্বাসিত পরিবারের খবর নিতে চাই। অতঃপর তিনি সেখানে আসলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, ইসমাঈল কোথায়? ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর স্ত্রী বলল: তিনি শিকারে গেছেন। পুত্রবধূ তাকে বললেন: আপনি কি আমাদের এখানে অবস্থান করবেন না? কিছু পানাহার করবেন না? তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বললেন: তোমাদের খাদ্য ও পানীয় কি? স্ত্রী বলল: আমাদের খাদ্য হল গোশত এবং পানীয় হল পানি। তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম দো‘আ করলেন, হে আল্লাহ! তাদের খাদ্য এবং পানীয় দ্রব্যের মধ্যে বরকত দিন। রাবী বলেন: আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর দো‘আর কারণেই বরকত রয়েছে। রাবী বলেন: আবার কিছু দিন পর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর মনে তাঁর নির্বাসিত পরিজনের কথা জাগল। তখন তিনি তাঁর স্ত্রী (সারা)-কে আমি আমার পরিত্যক্ত পরিজনের খবর নিতে চাই। অতঃপর তিনি এলন এবং ইসমাঈলের দেখা পেলেন, তিনি যমযম কূপের পিছনে বসে তার একটি তীর মেরামত করছেন। তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ডেকে বললেন: হে ইসমাঈল! তোমার রব তাঁর জন্য এক খানা ঘর নির্মাণ করতে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইসমাঈল আলাইহিস সালাম আপনার রবের নির্দেশ পালন করুন। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বললেন: তিনি আমাকে এও নির্দেশ দিয়েছেন যে, তুমি যেন আমাকে এ বিষয়ে সহায়তা কর। ইসমাঈল আলাইহিস সালাম বললেন: তাহলে আমি তা করব অথবা তিনি অনুরূপ কিছু বলেছিলেন। অতঃপর উভয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ইমারত বানাতে লাগলেন। আর ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তাঁকে পাথর এনে দিতে লাগলেন। আর তারা উভয়ে দো‘আ করছিলেন, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের এ কাজ কবুল করুন। আপনিতো সবকিছু শোনেন এবং জানেন? রাবী বলেন: এরই মধ্যে প্রাচীর উঁচু হয়ে গেল আর বৃদ্ধ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এতটা উঠতে দুর্বল হয়ে পড়লেন। তখন তিনি (মাকামে ইবরাহীমের) পাথরের উপর দাঁড়ালেন। ইসমাঈল তাঁকে পাথর এগিয়ে দিতে লাগলেন। আর উভয়ে এ দো‘আ পড়তে লাগলেন, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের এ কাজটুকু কবুল করুন। নিঃসন্দেহে আপনি সবকিছু শোনেন ও জানেন। [. বাক্বারাহ ১২৭; বুখারী, হাদীস নং-৩৩৬৫]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন