hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

একজন ঈমানদার দা‘ঈর গুণাবলী

লেখকঃ মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম

বিনয় ও কোমলতা
৩. বিনয় ও কোমলতা: একজন মুসলিম হবেন অত্যন্ত বিনয়ী ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি অন্যান্য মুমিনদেরকে বটবৃক্ষের মত ছায়া দান করবেন যেন তার মাধ্যমে অন্যকে স্বীয় আদর্শে আকৃষ্ট করা যায়। আর কঠোরতা মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়। সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল ও নবীদের সর্দার হওয়া সত্ত্বেও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আচরণ ছিল বিনয়পূর্ণ ও কোমলতায় ভরপুর। তাঁর এ প্রশংসায় আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَبِمَا رَحۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ ﴾ [ ال عمران : ١٥٩ ]

“আর আপনার প্রতি আল্লাহর রহমত থাকার দরুন আপনি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় হয়েছিলেন ; কিন্তু যদি আপনি কর্কশ স্বভাব ও কঠোর হৃদয় হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং আপনি তাদের মাফ করে দিন এবং তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। ... [. সূরা আলে ‘ইমরান, ৩ : ১৫৯।]

এ প্রসঙ্গে হাদীসের এক বর্ণনায় জানা যায়, “নিকৃষ্ট দায়িত্বশীল ঐ ব্যক্তি যে তার অধীনস্ত লোকদের প্রতি কঠোর। তোমরা সতর্ক থাকবে যাতে তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে না পড়।’’ [. মুসলিম, হাদীস নং-৮২।]

ভদ্রতা, নম্রতা ও শালীনতা মানব জীবনের এক মহৎ গুণ। বিনয়-নম্রতা মানব চরিত্রের ভূষণ। এসব গুণের কারণে মানুষ সমাজে নন্দিত ও প্রশংসিত হয়। আর এসব গুণের অভাবে মানুষ নিগৃহীত, লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নিন্দিত হয়। মহান আল্লাহ নিজে নম্র,তিনি নম্রতাকে পছন্দ করেন, ভালবাসেন। তাই প্রত্যেক দা'ঈ, মু’মিন ও মুসলিমের উচিত সকল ক্ষেত্রে নম্রতাকে অবলম্বন করা। আল্লাহ বলেন:

﴿ خُذِ ٱلۡعَفۡوَ وَأۡمُرۡ بِٱلۡعُرۡفِ وَأَعۡرِضۡ عَنِ ٱلۡجَٰهِلِينَ ١٩٩ ﴾ [ الاعراف : ١٩٩ ]

“ক্ষমাশীলতা অবলম্বন কর, সৎকাজের আদেশ দাও, মূর্খ লোকদের এড়িয়ে চল।” [. সূরা আল-আ‘রাফ ১৯৯।] এ আয়াতে আদর্শবান হওয়ার জন্য আল্লাহ ৩টি গুণ অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। (১) ক্ষমাশীল হওয়া। ক্ষমার মাধ্যমে মানুষ মহৎ হতে পারে। (২) সৎকাজের আদেশ দেওয়া। শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সে মানুষকে সদা পাপকাজে লিপ্ত করার চেষ্টা করে। এজন্য মানুষকে শয়তানের কবল থেকে রক্ষার জন্য মুসলিমের কর্তব্য হচ্ছে সৎকাজের আদেশ দেয়া। অনুরূপভাবে অন্যায়-অসৎকাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে বাধা দিতে হবে। যাতে তারা ঐসব কাজ থেকে বিরত থাকে। (৩) মূর্খদের সংসর্গ পরিহার করা। তাদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা। অর্থাৎ তাদের অন্যায় কাজের সমর্থক ও সহযোগী না হওয়া।

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেন:

﴿وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ﴾ [ المائ‍دة : ٢ ]

‘তোমরা কল্যাণকর কাজে ও পরহেযগারিতার ব্যাপারে একে অন্যকে সহযোগিতা কর। পাপ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর না। [. সূরা আল-মায়েদাহ: ২] এ আয়াতে মহান আল্লাহ তাকওয়ার কাজে সহযোগিতা করার এবং আল্লাহর নাফরমানী বা অবাধ্যতার কাজে সহযোগিতা না করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ মান্য করা প্রত্যেক মু’মিনের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তিনি আরো বলেন:

﴿ وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ ﴾ [ العصر : ١، ٣ ]

‘যুগের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ মহা ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, নেক আমল করেছে, পরস্পরকে হকের উপদেশ দিয়েছে এবং ধৈর্যধারণের উপদেশ দিয়েছে। [. সূরা আসর: ১-৩]

আদী ইবনু হাতেম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। আর যদি তা না পাও তবে উত্তম কথার মাধ্যমে। [. বুখারী, হাদীস নং ১৪১৩] উক্ত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’মিনদেরকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ লাভের জন্য দু’টি জিনিসের মাধ্যমে চেষ্টা করতে বলেছেন। (১) দান করার মাধ্যমে, যদিও সে দান অতি সামান্য জিনিসও হয়। অন্য বর্ণনায় খেজুরের ছাল পরিমাণ জিনিস হলেও। (২) উত্তম কথার মাধ্যমে। অর্থাৎ দান করার মত কোন জিনিস না পেলে সে যেন উত্তম বাক্য বিনিময় করে। মাসরূক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা আব্দুল্লাহ ইবনু আমরের নিকটে গেলাম, যখন তিনি মু‘আবিয়ার সাথে কুফায় গমন করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা উল্লেখ করে বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশালীন ছিলেন না। ইচ্ছা করেও অশালীন কথা বলতেন না। তিনি আরও বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম, যার স্বভাব-চরিত্র উত্তম। [. বুখারী, হাদীস নং-৩৫৫৯,] উক্ত হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, উত্তম চরিত্রের ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠ ও উত্তম। এ ধরনের ব্যক্তি সমাজে নন্দিত ও সমাদৃত হয়। পক্ষান্তরে চরিত্রহীন মানুষ সমাজে নিন্দিত ও নিগৃহীত হয়। এজন্য মুসলিম জাতিকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে কোমলতা ও নম্রতা অবলস্বন সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ فَبِمَا رَحۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ وَشَاوِرۡهُمۡ فِي ٱلۡأَمۡرِۖ فَإِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُتَوَكِّلِينَ ١٥٩ ﴾ [ ال عمران : ١٥٩ ]

‘আল্লাহর রহমতে আপনি কোমল হৃদয়ের হয়েছেন। আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয়ের হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেত। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আর কাজ-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলার উপরে ভরসা করুন। আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদের ভালবাসেন।” [. সূরা আলে ইমরান: ১৫৯]

এ আয়াতে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কয়েকটি গুণ উল্লেখ করা হয়েছে। যথা:

(১) কোমল স্বভাবের হওয়া (২) রূঢ় প্রকৃতির না হওয়া (৩) মানুষদের প্রতি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা (৪) তাদের জন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাওয়া (৫) যে কোনো কাজে তাদের সাথে পরামর্শ করা (৬) সকল কাজে আল্লাহর উপর ভরসা করা। এসব হচ্ছে আদর্শ মানুষের গুণাবলী।

জারীর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যাকে কোমলতা বা নম্রতা হতে বঞ্চিত করা হয় তাকে যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করা হয়। [. আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৭৫; ইবনু মাজাহ, হাদীস নং-৩৬৭৭]

উপরোক্ত হাদীস হতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, মুসলিম নারী-পুরুষ সকলকেই কোমলতা ও নম্রতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা কোমলতা হচ্ছে মানব চরিত্রের এক অনুপম বৈশিষ্ট্য। যার অভাবে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের অনেক কিছু হতে বঞ্চিত হয়। আবার ঐ গুণের কারণে মানুষ ইহকালে ও পরকালে প্রভূত কল্যাণের অধিকারী হয়। এই গুণের দ্বারাই মানুষ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে। আর এ গুণের অভাবে মানুষের পার্থিব জীবনে নেমে আসে অশান্তির ঘনঘটা। তাই নারীপুরুষ সবাইকে এ গুণ অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন