hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহের ওপর আরোপিত বিভিন্ন প্রশ্নের জাওয়াব

লেখকঃ শাইখ: আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রহ., শাইখ: মুহাম্মাদ বিন সালেহ বিন উসাইমীন রহ., শাইখ: আব্দুর রায্‌যাক আফীফি রহ., শাইখ: আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-জাবরীন রহ., শাইখ: সালেহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান

“মাতৃগর্ভের সন্তান সম্পর্কে ডাক্তারদের অবগত হওয়া”
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ ٣٤﴾ [ لقمان : ٣٤ ] “এবং জরায়ুতে যা আছে, তা তিনি জানেন” আর মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে সে সম্পর্কে ডাক্তারদের বলে দেয়া!।

প্রশ্ন: বর্তমানে মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে, সে সম্পর্কে ডাক্তারদের অবগত হওয়া আর আল্লাহর বাণী: ﴿وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ ٣٤﴾ [ لقمان : ٣٤ ] “এবং জরায়ুতে যা আছে, তা কেবল তিনিই জানেন।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪] উভয়ের মাঝে যে বৈপরীত্য ও বিরোধ লক্ষ্য করা যায় তা কীভাবে নিরসন করা যাবে? তা জানতে চাই। এ ছাড়াও ইবনে জারির রহ. স্বীয় তাফসীরে মুজাহিদ থেকে এবং একই বর্ণনা ক্বাতাদাহ থেকে নকল করেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার গর্ভবতী স্ত্রীর গর্ভের সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বলল, সে কন্যা সন্তান জন্ম দেবে নাকি ছেলে? এ জিজ্ঞাসার প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তা‘আলা এ ﴿وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ ٣٤﴾ [ لقمان : ٣٤ ] “এবং জরায়ুতে যা আছে, তা কেবল তিনিই জানেন” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪] আয়াত নাযিল করেন।

উত্তর: মাস’আলাটি উত্তর দেওয়ার পূর্বে এ কথা জানিয়ে দেওয়া জরুরি মনে করছি যে, কুরআনের সু-স্পষ্ট আয়াত কখনোই বাস্তবতার পরিপন্থী বা বাস্তবতার সাথে বিরোধপূর্ণ হতে পারে না। যদিও বাহ্যিক অর্থে বিরোধ দেখা যায়, তবে তা নিছক জ্ঞানের অভাব বা অহেতুক দাবী ছাড়া আর কিছুই নয়। অথবা কুরআনের আয়াতের বর্ণনাটি তার কাছে অস্পষ্ট এবং সে বুঝতে অক্ষম। কারণ, কুরআনের স্পষ্ট বাণী ও বাস্তবতা উভয়টি অকাট্য সত্য। আর দু’টি অকাট্য সত্য বিপরীতমুখী বা পরস্পর বিরোধী হওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব।

বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর বলা যায় যে, বর্তমানে ডাক্তারগণ অত্যাধুনিক ও সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মাতৃগর্ভের সন্তান সম্পর্কে অবগত হওয়ার দক্ষতা অর্জন করেছেন। মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে? সে সম্পর্কে তাদের অবগত হওয়ার দাবি যদি অসত্য হয়, তবে তাতে কোন প্রশ্ন থাকে না। (যেমনটি অনেক সময় হয়ে থাকে) আর যদি সত্য হয়, তবে তাও কুরআনের আয়াতের সাথে বিরোধপূর্ণ নয়। কারণ, এ আয়াত পাঁচটি বিষয় গাইবী হওয়াকে প্রমাণ করে যার ইলম কেবল আল্লাহর ইলমের সাথে সম্পর্ক। এগুলো একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। আর মাতৃগর্ভের সন্তান বিষয়ে গাইবী বিষয়গুলো হলো, মায়ের পেটে তার অবস্থানের সময়ের পরিমাণ, হায়াত, কর্ম, রিযিক, সৎ হওয়া, অসৎ হওয়া এবং সৃষ্টির পূর্বে ছেলে বা মেয়ে হওয়া। (এ বিষয়গুলো কেবল আল্লাহ জানেন আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না) ফলে সৃষ্টির পর ছেলে বা মেয়ে হওয়া সম্পর্কে জানা কোন গাইবী বিষয় নয় যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না। কারণ, সৃষ্টির পর তা আর অদৃশ্য থাকে না বরং তা দৃশ্য, যা প্রত্যক্ষ জ্ঞানে পরিণত হয়। তবে সন্তানটি এমন তিনটি অন্ধকারের মধ্যে লুকায়িত ও গোপন যা দূর করা হলে তার বিষয়টি স্পষ্ট হয় যাবে। আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে এমন কোন শক্তিশালী আলো বা যন্ত্র পাওয়া যাওয়া অসম্ভব নয়, যা এ তিন অন্ধকারকে ভেদ করে বাচ্চাটির ছেলে না মেয়ে তা প্রকাশ করে দিতে পারে। আর আয়াতে বা রাসূল থেকে বর্ণিত হাদীসে স্পষ্ট করে এ কথা বলা হয়নি যে, ছেলে হওয়া বা মেয়ে হওয়ার বিষয়টি গাইবী বিষয় যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না।

প্রশ্নকারী ইবনে জারীর থেকে এবং তিনি মুজাহিদ থেকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন—এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন, তার স্ত্রী কেমন সন্তান প্রসব করবেন? তখন আল্লাহ তা‘আলা উল্লিখিত আয়াত নাযিল করেন—সে হাদীসটি মুনকাতে‘। কারণ, মুজাহিদ রহ. তাবে‘ঈনদের একজন ছিলেন সাহাবী ছিলেন না।

আর কাতাদাহ রহ. ‘কেবল আল্লাহ জানেন’ বলে হাদীসটির যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে ব্যাখ্যার অর্থ, এ হতে পারে যে, বাচ্চাটি সৃষ্টির পূর্বের বিষয়গুলো কেবল আল্লাহ জানেন। আর সৃষ্টির পর তার সম্পর্কে অন্যরাও জানতে পারে তাতে কোন অসুবিধা নেই।

আল্লামা ইবন কাসীর রহ. সূরা লুকমানের আয়াতের তাফসীরে বলেছেন, ‘আর অনুরূপভাবে মাতৃগর্ভে যা রয়েছে সেটিকে তিনি কি সৃষ্টি করার ইচ্ছা করবেন, তা তিনি ছাড়া আর কেউ জানেন না। কিন্তু যখন তিনি ছেলে বা মেয়ে এবং নেককার বা বদকার হওয়ার নির্দেশ দেন তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিরিশতাগণ এবং অন্যান্য মাখলুক যাদেরকে তিনি জানান, তারা জানতে পারেন’।

আল্লাহর ব্যাপক বাণী— ﴿وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ ٣٤﴾ [ لقمان : ٣٤ ]-“এবং জরায়ূতে যা আছে, তা কেবল তিনি জানেন” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪] -তে খাস করা সম্পর্কে তোমাদের করা প্রশ্নের উত্তর হলো, সৃষ্টি করার পর যদি আয়াতটি ছেলে হওয়া বা কন্যা হওয়া বিষয়ে যদি জানা যায়, তখন খাসকারী হলো বাস্তবতা ও অনুধাবন। উসূলের ইমামগণ বলেছেন, কিতাব ও সূন্নাহের মুখাস্সিস হয়তো নস হবে অথবা ইজমা অথবা কিয়াস অথবা বাস্তবতা। এ বিষয়ে তাদের কথা অত্যন্ত সু-প্রসিদ্ধ।

আর যদি আয়াত সৃষ্টির পরকে অর্ন্তভুক্ত না করে এবং তার দ্বারা উদ্দেশ্য শুধুমাত্র সৃষ্টির পূর্বের বিষয়গুলো হয়ে থাকে তাহলে গর্বের সন্তান ছেলে না মেয়ে সে সম্পর্কে কারো জানা না থাকা এবং তা কেবল আল্লাহর জানা থাকার সাথে তোমরা যা বলেছ তার সাথে আয়াতটি মোটেও বিরোধপূর্ণ নয়।

আলহামদু লিল্লাহ! বাস্তবে এমন কোন বিষয় কখনো পাওয়া যায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না, যা কুরআনের স্পষ্ট বাণীর সাথে পরস্পর বিরোধী হবে।

কিছু বিষয় যেগুলো বাহ্যিক ভাবে কুরআনের স্পষ্ট বাণীর সাথে বিরোধ মনে হয় সেগুলোকে নিয়ে ইসলাম ও মুসলিমের দুশমনরা যে সব কল্পকাহিনী, প্রশ্ন ও আপত্তি আরোপ করে, তা তাদের জ্ঞানের দুর্বলতা এবং আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতার কারণে হয় অথবা তাদের খারাপ কোন উদ্দেশ্যের কারণে হয়ে থাকে।

কিন্তু যারা দীনদার ও আহলে ইলম তারা গবেষণা ও চিন্তা করে আসল রহস্য উদঘাটন করতে পারেন, যা তাদের সন্দেহ-সংশয়কে দূর করে দেন। যাবতীয় প্রশংসা ও দয়া কেবলই আল্লাহর।

মনে রাখবে, এ মাস’আলাটির ক্ষেত্রে মানুষ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত:

প্রথম—এক শ্রেণী যারা কুরআনের বাহ্যিক অর্থ যা স্পষ্ট নয় তা গ্রহণ করেছে এবং কুরআনের বাহ্যিক অর্থের বিপরীত যে বাস্তবতা ও অনিবার্য সত্য রয়েছে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে আপত্তিটি হয় তার নিজের দুর্বলতা ও অক্ষমতাকে টেনে নিয়ে আসে অথবা কুরআনের প্রতি আপত্তিটি আরোপিত হয়। কারণ, তার দৃষ্টিতে কুরআনে এমন একটি বিষয় বলা হয়েছে যা অকাট্য একটি সত্যকে অস্বীকার করে এবং তা তার বিপরীত।

দ্বিতীয়— যারা কুরআন দ্বারা প্রমাণিত বিষয়কে পুরোপুরি অস্বীকার করে এবং বস্তুবাদের দ্বারা সাব্যস্ত বাস্তব বিষয়টিকে গ্রহণ করে থাকে। এর ফলে তারা নাস্তিকদের দলভুক্ত হয়ে পড়ে।

তৃতীয়— যারা মধ্যপন্থী। তারা কুরআনের দ্বারা প্রমাণিত বিষয়টিও জানেন এবং বাস্তবতাকে স্বীকার করেন। তারা এ কথা মেনে নেন যে, কুরআন ও বাস্তবতা উভয়টিই সত্য। কুরআনের কোন একটি স্পষ্ট বিষয় বাস্তব ও চাক্ষুষ কোন বিষয়ে সাথে সাংঘর্সিক হওয়া কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। তারা আকল (জ্ঞান বা যুক্তি) ও নকল (কুরআন ও হাদীসের বর্ণনা) উভয়ের মাঝে সামঞ্জস্য সাধন করেন। যার ফলে তাদের দীনদারি ও বাস্তবতা উভয়টি যথাস্থানে বহাল থাকে। আল্লাহ তা‘আলা যারা ঈমান এনেছেন তাদেরকে বিরোধপূর্ণ বিষয়ে সঠিক পথ দেখান। আর আল্লাহ যাকে চান তাকে সঠিক পথের প্রতি হিদায়েত দিয়ে থাকেন। আল্লাহর নিকট আমাদের কামনা এই যে, তিনি যেন আমাদের ও তোমাদের সবাইকে ভালো কর্মের তাওফীক দেন। হে আল্লাহ তুমিই একমাত্র তাওফীক দাতা, তোমার ওপরই ভরসা। আর তোমার দিকেই আমাদের ফিরে যাওয়া।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন