hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহের ওপর আরোপিত বিভিন্ন প্রশ্নের জাওয়াব

লেখকঃ শাইখ: আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রহ., শাইখ: মুহাম্মাদ বিন সালেহ বিন উসাইমীন রহ., শাইখ: আব্দুর রায্‌যাক আফীফি রহ., শাইখ: আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-জাবরীন রহ., শাইখ: সালেহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান

৪৪
রাতের শেষাংশে দুনিয়ার আসমানে আল্লাহর অবতরণ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী— يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ “আমাদের রব প্রতি রাতে অবতরণ করেন।” বাস্তবতা হলো, আমাদের এখানে যখন রাত তখন আমেরিকাতে দিন।

প্রশ্ন: আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অবতরণ বিষয়ক হাদীস এবং বাস্তবতা— আমাদের এখানে যখন রাত আমেরিকাতে তখন দিন—হাদীসের মধ্যে এবং বাস্তবতার মাঝে কীভাবে বিরোধ নিরসন করব?

ইমাম বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য ইমামগণ কর্তৃক আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসটি বিশুদ্ধ। যাতে রাসূলুলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ . “রাতের শেষাংশের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকা অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। অতঃপর বলে কে আছ আমার কাছে চাইবে আমি তাকে দিবো। কে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৪৫] ইমাম বুখারী দো‘য়া এবং শেষ রাতের সালাত পরিচ্ছেদে উল্লিখিত শব্দে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সম্পর্কে প্রশ্ন হলো, এ হাদীস ও বাস্তবতা— অর্থাৎ আমাদের এখানে যখন রাত তখন আমেরিকাতে দিন —এর মধ্যে সামঞ্জস্যতা কি?

উত্তর: আলহামদু লিল্লাহ, বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তেমন কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। কারণ, হাদীসটি আল্লাহর কর্মগত সিফাতসমূহের অর্ন্তভুক্ত একটি হাদীস। আল্লাহর সিফাত বিষয়ে সত্বাগত হোক, যেমন—চেহারা, দুই হাত অথবা আধ্যাত্মিক হোক যেমন—হায়াত, ইলম অথবা কর্মগত হোক যেমন—আরশে আরোহন করা, দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করা ইত্যাদি সর্বাবস্থায় আমাদের ওপর নিম্ন বিষয়গুলো গুলো মেনে নেয়া ওয়াজিব।

এক— কুরআন ও সুন্নাহে এর বর্ণনা যেভাবে এসেছে, সেভাবে তার অর্থ ও যথাযোগ্য বাস্তবতার প্রতি ঈমান আনা।

দুই—অন্তরে বা মুখে কোন একটি ধরণ চিন্তা বা ব্যক্ত করে তার জন্য কোন আকৃতি বা ধরণ সাব্যস্ত করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা। কারণ, এটি আল্লাহর ওপর এমন কথা বলা যে সম্পর্কে তার কোন ইলম বা জ্ঞান নেই। আল্লাহ তা‘আলা একে হারাম ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿قُلۡ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ ٱلۡفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَمَا بَطَنَ وَٱلۡإِثۡمَ وَٱلۡبَغۡيَ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّ وَأَن تُشۡرِكُواْ بِٱللَّهِ مَا لَمۡ يُنَزِّلۡ بِهِۦ سُلۡطَٰنٗا وَأَن تَقُولُواْ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ٣٣﴾ [ الاعراف : ٣٣ ] “বল, ‘আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উাপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না।” [সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ৩৩] অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿وَلَا تَقۡفُ مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٌۚ إِنَّ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡبَصَرَ وَٱلۡفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡ‍ُٔولٗا ٣٦﴾ [ الاسراء : ٣٦ ] “আর যে বিষয় তোমার জানা নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ- এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৩৬]

মাখলুকের জন্য আল্লাহর সিফাতের ধরণ জানা ও বাস্তবতা আয়ত্ত করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে ও মহান। কোন কিছু হুবহু বা তার দৃষ্টান্ত দেখা ছাড়া অথবা যিনি দেখেছেন তার সত্য সংবাদ ছাড়া আয়ত্ত করা যায় না। আর আল্লাহর সিফাতের ধরণ বিষয়ে এর কোনটিই আমাদের নিকট উপস্থিত নেই।

তিন—মাখলুকের সিফাতের সাথে দৃষ্টান্ত স্থাপন থেকে বিরত থাকা। চাই অন্তরে চিন্তা করে হোক অথবা মুখে উচ্চারণ করে হোক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ الشورى : ١١ ] “তাঁর মত কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

আল্লাহর সিফাত বিষয়ে আমাদের করনীয় কি তা জানার পর আল্লাহর সিফাত সম্পর্কীয় অবতরণের হাদীস ও অন্যান্য হাদীস বিষয়ে আর কোন প্রশ্ন অবশিষ্ট থাকার কথা নয়।

পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্ত থেকে নিয়ে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র উম্মতকে সম্বোধন করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সংবাদ দেন যে, আল্লাহ তা‘আলা রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। তার সংবাদ দেওয়াটি গাইবী বিষয়ে সংবাদ যা আল্লাহ তা‘আলা তার কাছে প্রকাশ করেছেন। আর যিনি তাকে এ সংবাদ জানিয়েছেন তিনি মহান আল্লাহ যিনি সময়ের ব্যবধান অর্থাৎ এক দেশে দুপুর বারোটা হয়ে পৃথিবীর অন্য দেশে তখন রাত বারোটা—এ সম্পর্কে অবশ্যই অবগত রয়েছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সমস্ত উম্মতকে সম্বোধন করে এ হাদীস বলেছেন, যাতে শেষ রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আল্লাহর অবতরণ করার কথা বিশেষভাবে রয়েছে, তাতে সমস্ত উম্মতকে এ হাদীসটি সামিল করেছে। ফলে যে উম্মতের মধ্যে রাতের এক তৃতীয়াংশ সাব্যস্ত হবে তাদের কাছে আল্লাহর অবতরণও সাব্যস্ত হবে। আমরা তাদের বলব, তোমাদের ক্ষেত্রে এটিই হলো আল্লাহর অবতরণের সময় এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আর যাদের নিকট রাতের শেষাংশ এখনো আসেনি সেখানে তাদের ক্ষেত্রে আল্লাহর অবতরণও সাব্যস্ত হয়নি। দুনিয়ার আকাশে আল্লাহর অবতরণের বিশেষ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্ধারণ করেছেন। যখন ঐ সময় আসবে তখন অবতরণ পাওয়া যাবে। আর যখন ঐ সময়টি শেষ হবে তখন আর অবতরণও অবশিষ্ট থাকবে না। এ বিষয়ে অস্পষ্টতা ও আপত্তির কোন সুযোগ নেই। মাখলুকের অবতরণের ক্ষেত্রে যদিও বিষয়টি চিন্তা করা বা মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু আল্লাহর অবতরণ ও মাখলুকের অবতরণ এক নয়, যার ওপর কিয়াস করা যেতে পারে এবং বলা যায় যে, মাখলুকের ক্ষেত্রে যেটি অসম্ভব আল্লাহর ক্ষেত্রেও সেটি অসম্ভব।

যেমন—আমাদের দেশে যখন ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয় তখন পশ্চিমাদের দেশে রাতের এক তৃতীয়াংশ শুরু হয়। তখন আমরা বলব, আল্লাহর অবতরণের সময় আমাদের ক্ষেত্রে শেষ হয়ে গেছে এবং তাদের ক্ষেত্রে শুরু হয়েছে। আল্লাহর সিফাতের ক্ষেত্রে এটি একেবারেই সাধারণ ব্যাপার মাত্র। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ الشورى : ١١ ] “তাঁর মত কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. অবতরণের হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য আল্লাহর অবতরণ তাদের দেশের রাতের পরিমাণ অনুযায়ী। পশ্চিম প্রান্ত ও পূর্ব প্রান্তের ন্যায় উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তেও রাতের পরিমাণ অনুযায়ী আল্লাহর অবতরণের নির্ধারিত সময়ের ব্যবধান হবে।

এ ছাড়াও যখন কোন সম্প্রদায়ে নিকট রাতের এক তৃতীয়াংশ সাব্যস্ত হলো এবং তাদের নিকটবর্তী অন্য দেশে একটু পরেই রাতের এক তৃতীয়াংশ পাওয়া গেল, তখন তাদের নিকটও আল্লাহর অবতরণ সাব্যস্ত হবে, যে সম্পর্কে মহা সত্যবাদী আমাদের প্রিয় নবী সংবাদ দিয়েছেন। এভাবেই পৃথিবীর সর্বত্র আল্লাহর অবতরণ পাওয়া যাবে ও সাব্যস্ত হবে।

শাইখ মুহাম্মদ বিন উসাইমীন রহ.

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন