মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দ্বাদশ-ইমামী শী‘আ ধর্মের মূলনীতিসমূহের সুস্পষ্ট রূপরেখা
লেখকঃ মুহিব্বুদ্দীন আল-খতিব
৩
[দ্বাদশ-ইমামী শী‘আ ধর্মের মূলনীতিসমূহের সুস্পষ্ট চিত্র এবং তাদের ও ইসলামের সকল মাযহাব ও ফিরকার নীতিমালার মধ্যে সমন্বয় সাধনের অসাধ্যতা]
বিভিন্ন মাযহাব ও ইসলামী উপদলসমূহের মধ্যে ঐক্যের বিষয়
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/701/3
চিন্তা-চেতনা, মনন, গতিবিধি ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের ব্যাপারে মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য সাধন করা ইসলামের অন্যতম মহৎ উদ্দেশ্যের অন্তর্ভুক্ত এবং শক্তি-সামর্থ, জাগরণ ও সংশোধন বা সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ উপায়। আর তা হবে সর্বযুগে ও সকল স্থানে তাদের জনগোষ্ঠী ও জোটগুলোর জন্য কল্যাণজনক।
এ ঐক্য সাধনের দিকে আহ্বান করা যখন সৎ উদ্দেশ্যে হয় এবং তার ব্যাপক আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত উপকারের আড়ালে ক্ষতির উদ্দেশ্য না থাকে, তখন সকল মুসলিমের দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে সে আহ্বানে সাড়া দেয়া এবং তা সফল করার উদ্দেশ্যে মুসলিম ব্যক্তিবর্গকে পরস্পর সহযোগিতা করা।
বিগত বছরগুলোতে এ ঐক্যের দাওয়াত নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে; অতঃপর তার প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, এমন কি তা আল-আযহার পর্যন্ত পৌঁছেছে। অথচ আল-আযহার হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ফিকহী মাযহাব চতুষ্টয়ের অনুসারীদের একটি বিখ্যাত দীনী প্রতিষ্ঠান। অতঃপর আল-আযহারে ‘তাকরীব’ বা ‘ঐক্যের’ ধারণাটিকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে। ফলে বিরতিহীনভাবে সালাহ উদ্দিন আল-আইয়ূবী’র আমল থেকে এখন পর্যন্ত চলে আসা আল-আযহার কর্তৃক গ্রহণ করা ধারা ও গণ্ডির বাইরে এ ঐক্যের ধারণাটি গ্রহণ করে। এভাবেই আল-আযহার কর্তৃপক্ষ এই গণ্ডি থেকে বের হয়ে অন্যান্য মতবাদসমূহের ব্যাপারে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই তারা প্রথমেই জানতে চায় দ্বাদশ-ইমামী শী‘আদের মাযহাব ( مذهب الشيعة الإمامية الاثني عشرية ) সম্পর্কে। তবে এখন পর্যন্ত আল-আযহার কর্তৃপক্ষ এই কর্মসূচির প্রথমেই রয়ে গেছে। এ জন্যই এ গুরুতর বিষয়টি নিয়ে এমন প্রত্যেক মুসলিমের আলোচনা, গবেষণা ও উপস্থাপনা গুরুত্বের দাবী রাখে, যার এ ব্যাপারে সামান্যতম জ্ঞানও রয়েছে এবং যে এর সাথে সম্পর্ক রাখার পরিণতি ও এর সমস্যা ও ফলাফল সম্পর্কে অবহিত রয়েছে।
ধর্মীয় মাসআলাগুলোর স্বভাব-প্রকৃতি যখন কণ্টকময়, তখন তার সমাধান হওয়া উচিত অত্যন্ত হিকমত, দূরদৃষ্টি ও নৈপুন্যতার সাথে; আর এ বিষয়ে গবেষণার উদ্যোগগ্রহণকারীকে হতে হবে গভীর যুক্তিনির্ভর; আল্লাহর নূরের আশ্রয়ী এবং চিন্তা-ভাবনা ও রায় প্রদানে ইনসাফনির্ভর, যাতে এই সমাধানটি উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় ফলপ্রসু ও উপকারী হয়।
আর এই বিষয়ে এবং অনুরূপ এমন প্রত্যেকটি ঘটনা বা বিষয় যার মূলে একাধিক পক্ষের সম্পৃক্ততা রয়েছে, এসব বিষয়ে আমাদের সর্বপ্রথম দৃষ্টি আকর্ষণী হল যে, এটা ফলপ্রসু হওয়ার শক্তিশালী উপায় হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষ বা পক্ষসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা করা।
এ জন্য আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত ও শী‘আদের তাকরীবের (সমন্বয় সাধন ও ঐক্যের) বিষয়টিকে দৃষ্টান্ত হিসেবে পেশ করি। কারণ, লক্ষ্য করা যায় যে, উভয় পক্ষকে কাছাকাছি নিয়ে আসা বা উভয়ের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে দাওয়াতের জন্য মিসরে একটি কমপ্লেক্স তৈরি হয়, যার জন্য এক শী‘আ রাষ্ট্রের সরকারী বাজেট থেকে অর্থ ব্যয় করা হয়। আর এই মহনুভব শী‘আ রাষ্ট্রটি তাদের এই মহানুভবতা ও সম্মান দ্বারা আমাদেরকে প্রভাবিত করেছে এবং তারা এই সরকারী অনুদান দ্বারা আমাদেরকেই বিশেষিত করেছে। অথচ তারা তাদের নিজেদের এবং মাযহাবের অনুসারীদের ব্যাপারে অনুরূপ ব্যয় করতে কুণ্ঠিত হয়। এমন কি তারা শী‘আ মাযহাব সম্প্রসারণ ও প্রচার কেন্দ্রগুলো মধ্য থেকে তেহরান, কুম, নাজাফ, জাবালে আমেল প্রভৃতি স্থানে এই ‘দারে তাকরীব’ ( دار تقريب ) তৈরিতেও অনুরূপভাবে ব্যয় করার মত উদারতা প্রকাশ করে নি। [আর এই প্রাধান্য প্রদান তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন যুগে বারবার করা হয়েছে; আর এই ধরনের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তারা যাদেরকে দা‘ঈ হিসেবে প্রেরণ করেছে, তাদের দ্বারা তারা দক্ষিণ ইরাকের শী‘আ সংখ্যালঘু সুন্নি অঞ্চলকে সুন্নি সংখ্যালঘু শী‘আ অঞ্চলে রূপান্তরিত করেছে। আল-জালাল আস-সাইয়ুতীর আমলে ইরান থেকে তাদের দাওয়াতী মিশনের পক্ষ থেকে এক দা‘ঈ (আহ্বানকারী) মিসরে গিয়ে উপস্থিত হয়। আস-সাইয়ুতী তাঁর ‘আল-হাবী লিল ফাতাওয়ী’ ( الحاوي للفتاوي ) নামক কিতাবের মনিরীয়া সংস্করণের প্রথম খণ্ডের ৩৩০ পৃষ্ঠায় এ দিকেই ইঙ্গিত করেছেন; আর এই ইরানী দা‘ঈ’র কারণেই আল-সাইয়ুতী তাঁর “মিফতাহ আল-জান্নাত ফিল ই‘তিসাম বিস-সুন্নাহ” ( مفتاح الجنة في الاعتصام بالسنة ) নামক পুস্তিকাটিও রচনা করেছিলেন।]
শী‘আ মতবাদ প্রচার ও প্রসারের কেন্দ্রগুলো থেকে বিগত বছরগুলোতে এমন কতগুলো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যেগুলো পারস্পরিক সমন্বয় ও আপোষ-মীমাংসার সকল চিন্তা-ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়; যার কারণে শরীর শিহরিত হয়। সেসব গ্রন্থসমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি গ্রন্থের নাম হল ‘আয-যাহরা’ ( الزهراء ), যা তিন খণ্ডে সমাপ্ত। এ গ্রন্থটি নাজাফের শী‘আপন্থি আলেমরা প্রকাশ করেছে। তাতে তারা আমীরুল মুমিনীন ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু’র ব্যাপারে (অত্যন্ত আপত্তিকর কথা) বলেছে: তিনি এমন এক জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন, পুরুষ লোকের বীর্য ব্যতীত তার চিকিৎসা হতো না (না‘উযুবিল্লাহ)!!? এ বিষয়টি আলজেরিয়ার আলেমকুল শিরোমণি অধ্যাপক আল-বশির আল-ইবরাহিমী প্রথমবার ইরাক সফরে গেলেই তার দৃষ্টিগোচর হয়।
সুতরাং যে সব অপবিত্র আত্মা থেকে এ ধরনের মাযহাবী অপকর্ম প্রকাশ পায়; আমাদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের চেয়ে ‘ঐক্য সাধনের’ দিকে তাদেরকে আহ্বান করার প্রয়োজনীয়তাই বেশি।
যখন আমাদের ও তাদের মধ্যে মৌলিক মতপার্থক্য বিদ্যমান তাদের এই দাবির উপর ভিত্তি করে যে, তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আহলে বাইতের (নবী পরিবারের) বন্ধু ও মিত্র; আর যখন যাদের কাঁধের উপর ভর করে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐসব সাহাবীদের উদ্দেশ্যে তারা হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা গোপন করে (বস্তুত প্রকাশই করে থাকে), এমনকি আমীরুল মুমিনীন ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু’র এর ব্যাপারে তারা এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অবস্থায় পৌঁছেছে; তখন ইনসাফের দাবি অনুযায়ী তারাই ইসলামের প্রথম সারির নেতৃবৃন্দের প্রতি তাদের হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতার অবসানকল্পে কার্যক্রম সূচনা করবে এবং আহলে বাইতের ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মহতি অবস্থান ও তাদের পক্ষ থেকে তাদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রকার কমতি না করার কারণে তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। তবে আহলে বাইতের প্রতি আমাদের কমতি হচ্ছে আমরা তাঁদেরকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করি নি যে, আমরা আল্লাহর সাথে তাঁদের ইবাদত করব; যেমন দৃশ্য তাদের কবরস্থানগুলোতে দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে। যে অংশে আমাদের ও তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য ইচ্ছা করা হয়ে থাকে।
নিশ্চয় উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা ও সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি; আর বাদী ও বিবাদী একত্রিত হওয়া ব্যতীত এ ধরনের আলাপ-আলোচনা হতে পারে না। আর এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়নের ব্যাপারে আহ্বান জানানোর ক্ষেত্রে কোন এক পক্ষ থেকে শৈথিল্য প্রদর্শন করলেও হবে না, এখন যেমন হচ্ছে।
ঐক্য প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে শী‘আ মতবাদের প্রধান নগরীসমূহ, শী‘আ মতবাদের বিজ্ঞাপন প্রদান ও অন্যান্য মতের উপর বাড়াবাড়ি করতে তৎপর প্রচার ও প্রকাশনা কেন্দ্রসমূহের কথা না বলে কেবল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রধান নগরী মিসরে ‘ঐক্য সংস্থা’ প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতার ব্যাপারে পূর্বে বলা হয়েছে। অনুরূপভাবে উভয়পক্ষের ঐক্যের বিষয়টি শী‘আ প্রতিষ্ঠানসমূহের অন্তর্ভুক্ত করার পূর্বে আল-আযহারের পাঠ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা কতটুকু যৌক্তিক—সেটা বলাই বাহুল্য।
তবে এখনকার বাস্তবতার মত যখন বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষ বা পক্ষসমূহের মধ্য থেকে কোন এক পক্ষের উপর সীমাবদ্ধ করা হয়, তখন তার সফলতা আশা করা যায় না।
পারস্পরিক পরিচিতির সবচেয়ে বাজে মাধ্যম হচ্ছে মৌলিক বিষয়ের পূর্বে শাখা-প্রশাখাজনিত বিষয় দিয়ে শুরু করা! যেমন ফিকহ শাস্ত্র। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত ও শী‘আ উভয়ের নিকটই ফিকহ এমন বিষয় যা উভয়ের-নিকট-স্বীকৃত কোন নীতিমালার দিকে ধাবিত করা যায় না। শী‘আদের নিকট ফিকহী শরীয়ত যে বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমাম চতুষ্টয়ের নিকট ফিকহী শরীয়ত সে বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। যতক্ষণ-না শাখা-প্রশাখায় মনোযোগ দেয়ার পূর্বে এই মূলনীতিসমূহ ও বুনিয়াদের উপর আপোষ-মীমাংসা হবে এবং যতক্ষণ না এই ব্যাপারে উভয়ের পক্ষ থেকে ফলপ্রসু আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময় সম্পন্ন হবে, ততক্ষণ মূলনীতিসমূহের পূর্বে শাখা-প্রশাখায় অযথা সময় নষ্ট করে কোন ফায়দা হবে না। আর এই নীতিমালা বলতে আমারা ‘উসুল আল-ফিকহ’ তথা ফিকহ শাস্ত্রের নীতিমালাকে বুঝাচ্ছি না, বরং উভয়পক্ষের ‘উসুল আল-দীন’ তথা দীনের নীতিমালার একেবারে প্রথম শিকড়সমূহকে বুঝাচ্ছি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/701/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।