মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করেন- ‘বনী ছাকীফে একজন মিথ্যুক ও একজন রক্তপিপাসুর জন্ম হবে।’ মিথ্যুককে তো আমরা ইতোপূর্বেই দেখেছি আর রক্তপিপাসু (সে হলে তুমি)। হাজ্জাজ এ কথা শুনে বললেন, (হ্যা, আমি রক্তপিপাসু তবে তা) মুনাফিকদের বেলায়। [মুসনাদ হুমাইদী : ৩২৮; তাবরানী : ২৩২]
রক্তপিপাসু ব্যক্তিটি হলেন হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ। ইতিহাসে তার রক্তপিপাসার কথা বিশদভাবে বিধৃত হয়েছে। তার রক্তপিপাসা এতই তীব্র ছিল যে, সে সব কাহিনী শুনলে গা হিম হয়ে আসে। তার উন্মুক্ত তরবারীর তৃষ্ণা থেকে রক্ষা পেয়েছে এমন সৌভাগ্য সে সময়ের খুব কম লোকের ভাগ্যেই জুটেছে। রক্তে যার এত রক্তপিপাসা সেই লোকটির অন্য একটি ভালো গুণও ছিল। তিনি ছিলেন মুসলিমের বাচ্চা। ধমনীতে তার মুসলিমের শৌর্যবীর্য ছিল পূর্ণমাত্রায়। তাই তার ইসলামী গায়রত ও আত্মমর্যাবোধও ছিল অত্যন্ত প্রখর। সেই মর্যাদাবোধ থেকেই তিনি ইতিহাসের অমর এক কীর্তি রচনা করেছিলেন। ইতিহাস যদি সত্য কথা বলে তাহলে সেই কীর্তি তার নামের পাশে চির অম্লান হয়ে জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকবে।
রাজা দাহির তখন হিন্দুস্তানের প্রতাপশালী শাসক। তার দ্বারাই হিন্দুস্তানের এক মুসলিম তরুণী লাঞ্ছিতা হলেন। সেই খবর হাজ্জাজের কানে পড়ার সাথে সাথে চরম উত্তেজিত হয়ে উঠলেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে তার ধমনীতে মুসলমানী গায়রত ছড়িয়ে পড়ল। তিনি ভারতের মানচিত্র হাতে নিয়ে রাজা দাহিরের এলাকা চিহ্নিত করলেন এবং এর প্রতিশোধ নেয়ার দৃঢ় পরিকল্পনা করলেন। ভারত উপমহাদেশে আটশত বছর মুসলমানী শাসন পরোক্ষভাবে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সেই গায়রতেরই ফসল। তিনি সেদিন একজন মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রমের মূল্য উসুল করে নিতে গোটা মুসলিম বাহিনীকে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছিলেন।
তার বক্তব্য ছিল, একজন মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রমই যদি নিরাপদ না হয় তবে এত খরচ করে সেনাবাহিনী গড়ে তোলার দরকারটা কী? সেই বোধ আর সম্ভ্রমবোধই আমাদের গৌরব, আমাদের অমর ইতিহাস। হাজ্জাজ বিন ইউসুফের মতো একজন অত্যাচারী শাসক ও জালেমের মধ্যেও সেই গৌরবের কীর্তিগাঁথার কমতি ছিল না। কিন্তু মুসলিমজাতি আজ তাদের অমরকীর্তির স্মৃতিচারণ করারও সময় পায় না। তাই ফিরে আসে না সেই রোমাঞ্চকর অতীত। রচিত হয় না নতুন কোনো বীরত্বগাঁথা কাব্য। বরং রচিত হয় ঘৃণিত সব অপকর্ম। ‘দাহিরপুত্রদের’ দ্বারা মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রমহানী হলেও জাগ্রত হয় না সেই হাজ্জাজী গায়রত। বরং আমাদের উদারতার মহাসমুদ্রে হারিয়ে যায় দাহিরের উত্তরসূরী দাহিরপুত্রদের অপকর্ম।
মুক্তবাসিনী বইটির প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হওয়ার কয়েক দিন পরের ঘটনা। মাগরিব সালাত আদায় করে বাসায় যাচ্ছি এমন সময় অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল আসল। কল গ্রহণ করলে কলদাতা আমাকে একহাত নিলেন। এই বইটিতে ঢাকার এক স্কুলের জনৈক শিক্ষকের এধরনের একটি ‘কীর্তি’র কথা তুলে ধরা হয়েছিল। তিনি সেই সম্মানিত শিক্ষকের বন্ধু ও সহকর্মী। অনেক আদেশ-উপদেশের পর তিনি আমাকে এই লেখাটির জন্য প্রচ্ছন্নভাবে হুমকিও দিলেন। হুমকির ভাষ্য জেলের ভাত খাওয়ানো, আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ইত্যাদি।
একজন শিক্ষকের নামে এধরনের লেখা ওঠা দুঃখজনক, আমিও তা বিশ্বাস করি। তাই ওই শিক্ষকের জন্য আমার প্রবল মায়া হলো। আমি তৎক্ষণাৎ আল্লাহর কাছে আমার লেখার কারণে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়া কিংবা কষ্ট পাওয়ার বদলায় রফ‘য়ে দারাজাতের দু‘আ করলাম। কিন্তু ভড়কে গেলাম না মোটেও। আহমাদ ইবন হাম্বল রহ. এর একটি উক্তি ও ঘটনা আমার সবসময় কানে বাজে এবং চোখে ভাসে। আগে ঘটনাটি বলি :
আহমাদ ইবন হাম্বল রহ.-এর পুত্র আব্দুল্লাহ রহ. বলেন, আমার আব্বা দুআয় প্রায়ই বলতেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আবুল হায়ছামকে রহম করুন, আবুল হায়ছামকে ক্ষমা করুন।’ আমরা বারবার তার মুখ থেকে এধরনের কথা শুনতাম। কৌতূহল দমন করতে না পেরে একদিন আব্বাকে আবুল হায়ছামের পরিচয় এবং তার জন্য এসব দু‘আর কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমাকে ‘খলকে কুরআনের’ ফেতনার সময় জেলখানায় নেয়া হলো। জেলখানায় আমার শাস্তি ছিল দিনে সামর্থ্যবান জল্লাদের হাতের বেত্রাঘাত। দুই হাত বেঁধে আমাকে বেত্রাঘাতের জন্য প্রস্তুত করা হলো। ঠিক তখন আবুল হায়ছাম আমার কাছে এসে বলল, হে আবূ আব্দুল্লাহ! আমাকে চেনেন আমি কে? আমি এই শহরের বিখ্যাত সেই পকেটমার আবুল হায়ছাম। খলীফা আমাকে পাকড়াও করে শাস্তি নির্ধারণ করেছেন আঠার হাজার বেত্রাঘাত। আমি শয়তানকে খুশি করতে এবং দুনিয়া কামাই করতে সেই শাস্তি খুশি মনে মেনে নিয়েছি। আমি যদি শয়তানকে খুশি করতে এতো বড় শাস্তি মেনে নিতে পারি, তবে আপনি আল্লাহকে খুশি করতে হকের ওপর থাকার কারণে যে শাস্তি আরোপিত হচ্ছে তা মেনে নেবেন না কেন?
ইমাম আহমাদ রহ. বলেন, আবুল হায়ছামের এই উক্তি আমাকে নির্যাতন বরদাশত করতে সাহস যুগিয়েছিল। এরপর যখন আমাকে বেত্রাঘাত করা হতো তখন এটাকে আমার জন্য কোনো কষ্টের কারণই মনে হতো না। তাই আমি যখন তখন তার জন্য দু‘আ করি।’
কলদাতার জেলজুলুম আর আদালতের হুমকি শুনে আমার আহমাদ ইবন হাম্বল রহ. এর সেই ইতিহাস মনে হলো। আমার আজ কোনো ভয় নেই। কলম ধরে জেলবাস! তাও হকের তরে! এর চেয়ে গৌরবের জেলবাস আর কী হতে পারে? মানুষ দুর্নীতি, চুরি, বদমাশি করে জেলে যেতে পারলে আমি মানুষের বিবেক জাগাতে গিয়ে জেলে গেলে তাতে অসম্মানী হবে কেন?
যাহোক, লোকটির কথা শুনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, জাতির বিবেক শিক্ষকদেরকে নিয়ে আর কোনো লেখা লিখব না। কিন্তু সমাজের অনাচার আর এই ‘মহোদয়দের’ কুকীর্তি আমাকে প্রতিজ্ঞা পালনে বাধা দেয়। বিশেষ করে যে সব প্রতিষ্ঠানে সন্তান ভর্তি করে অভিভাবকগণ গৌরববোধ করেন সে সব প্রতিষ্ঠানে যদি ছাত্রীদের সম্ভ্রমহানীর ঘটনা ঘটে তবে সেক্ষেত্রে চুপ থাকা যায় কি?
ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলের সুনাম ও গৌরব দেশব্যাপী। সারা দেশে সব সময় এই প্রতিষ্ঠানটি লেখাপড়ায় শ্রেষ্ঠত্বের আসন ধরে রাখে। তাই এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি অভিভাবকদের দৃষ্টিও থাকে একটু আলাদা। এখানে সন্তানকে ভর্তি করাতে পারাকে তারা অন্যতম সাফল্য বলে জ্ঞান করেন। ভর্তি করার আগে অভিভাবকগণ সন্তানদের সামনে এই মন্ত্র জপ করেন যে, এখানে ভর্তি হতে পারলে তোমার জীবনটাই পাল্টে যাবে। জীবনের সফলতার সিঁড়িতে কয়েক কদম এগিয়ে থাকবে তুমি!
কিন্তু এধরনের গৌরবগাঁথা কোনো প্রতিষ্ঠানে কন্যা দিয়ে অভিভাবক যদি তার কন্যার সম্ভ্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন তাহলে সে সমাজের চারিত্রিক সনদ দিতে কাউকে ভিন্ন করে চিন্তা করতে হবে না।
‘নরপশু শিক্ষক পরিমল জয়ধর। রাজা দাহিরের এক্কেবারে খাস শিষ্য। ঘরে স্ত্রী এবং একটি সন্তানও আছে। কিন্তু তবু এই পশু সর্বনাশ করেছিল ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলের বসুন্ধরা শাখা (দিবা)-র দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর। একটি মুসলিম দেশে বাস করে সে একজন মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রম কেড়ে নিতে সামান্যও কার্পণ্য করে নি। সে ক্লাশে মূলপাঠের বদলে অশ্লীল কবিতা ও গল্প পড়াতো এবং এদিকে ছাত্রীদের মনোযোগ আকর্ষণ করত।
ভিকারুননিসা স্কুলের আইন অনুযায়ী ৯৯% শিক্ষক হবেন নারী এবং প্রতি শাখায় সর্বোচ্চ দুজন করে পুরুষ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী বলে পরিচিত হুসনে আরা বেগম এক্ষেত্রে চরমভাবে আইন লঙ্ঘন করেন। তিনি এক শাখাতেই ছয়জন পুরুষ শিক্ষক নিয়োগ দেন, যাদের প্রত্যেকেই হিন্দু! আমরা সাম্প্রদায়িক শান্তিতে বিশ্বাসী। কিন্তু একটি মুসলিম দেশে যেভাবে একটা দেশকে খুশি করার জন্য হিন্দু বাবুদের প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে তাতে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে মুসলিমদের জন্য চাকরির কোটা পদ্ধতি চালু করতে হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও চাকরির ক্ষেত্রে তারা হবে সংখ্যালঘু!
এই স্কুলের আরো নিয়ম হলো নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রথম অবস্থায় সর্বোচ্চ পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস নিতে পারবেন, তার ওপরে নয়। আর নিয়োগপ্রাপ্তির পর দুই বছরের আগে কেউ কোচিং (ব্যবসা) শুরু করতে পারবেন না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এলাকার লোক আর বান্ধবী হোসনে আরার আস্থাভাজন হওয়ায় পরিমল এসব আইনের ঊর্ধ্বে যেতে সক্ষম হয়। প্রথম অবস্থাতেই তাকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস দেয়া হয় এবং সিনিয়র শিক্ষকদেরকে অধ্যক্ষ হোসনে আরা বলেন, আপনারা অনেক দিন ধরেই কোচিং করছেন, পরিমলকেও কিছু সুযোগ দিন।
হোসনে আরার নির্দেশে সেই সুযোগ দেয়া হয়েছে কিন্তু তার পরিণাম হয়েছে ভয়াবহ। এর ফলে দেশের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছে। একটি মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রম লুণ্ঠিত হয়েছে। একদিন সে কোচিংয়ের ছাত্রীদেরকে বলে, আগামীকাল তোমরা কেউ আসবে না। আগামীকাল পড়াবো না। তার নির্দেশ অনুযায়ী পরের দিন সবাই অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু সে ওই ছাত্রীকে ফোন দিয়ে পড়তে আসতে বলে। ছাত্রীর ধারণা ছিল, অন্য সব ছাত্রীকেও সম্ভবত এভাবে ফোন করে আসতে বলা হয়েছে। সরল বিশ্বাসে সে শিক্ষকের কোচিং সেন্টারে গিয়ে হাজির হয়। পশুটা আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল। ছাত্রীটি কক্ষে প্রবেশ করা মাত্রই সে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার হাত বেঁধে, মুখে ওড়না গুঁজে এই অপকর্ম সাধন করে সে। অপকর্মটা যেন ছাত্রীটি প্রকাশ না করে সেটার ব্যবস্থা হিসেবে সে মোবাইলে ছবি তুলে রাখে এবং বিদায় দেয়ার সময় হুমকি দিয়ে বলে, যদি ঘটনা কাউকে জানানো হয় তবে ইন্টারনেটে এই ছবি ছেড়ে দেয়া হবে।
ওই বলি মুক্তবাস। এখানেও মুক্তবাসের প্রভাব লক্ষণীয়। প্রথম আলো পত্রিকার ভাষ্যানুযায়ী মেয়েটি ২৮মে টি শার্ট ও স্কার্ট পড়ে ক্লাশে গিয়েছিল।
শিক্ষকের হুমকিতে ভড়কে যায় মেয়েটি। কাউকে না বলে নিজের মধ্যে কষ্টকে দাফন করেই স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যায়। এমনকি পশুটার কাছে আবারও পড়তে যায়। এই সুযোগে ১৭ই জুন সে তাকে আবার লাঞ্ছিত করে। ছাত্রীটি এবার বাধা ও তা ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিলে পরিমল তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
কত বড় স্পর্ধা একজন ‘মালাউনের’! একটি মুসলিম নারীর সম্ভ্রম লুট করবে আর তাতে বাধা দিলে তাকে হত্যা করার হুমকি দেবে! এভাবে মে মাসে সে সুযোগ পেয়ে তরুণীটির সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রথমবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তার ছবি তোলে এবং সেই ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বারবার সে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখে। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর অর্থবাণিজ্যের বলির পাঠা হয় মেয়েটি। নিজের অজান্তেই লণ্ডভণ্ড হয় তার সম্ভ্রমের সাজানো বাগান। এই নরপশু উত্তরা মডেল কলেজেও এমন অপকর্ম করে বিদায় নিয়েছিল। এমন একটা লম্পটকে শুধু দলীয় বিবেচনা, অর্থবানিজ্যের ভিত্তিতে এমন একটি বিখ্যাত স্কুলে শিক্ষকতার দায়িত্ব দেয়া হয়! মেয়েটি বারবার নিপীড়িত হয়ে না পেরে শেষ পর্যন্ত এই ঘটনা প্রকাশ করে দেয়।
সে শুধু ছাত্রীর সাথেই নয়; শিক্ষিকাদের সাথেও অনৈতিক সম্পর্ক ও অনৈতিক আচরণের চেষ্টা করে। ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে গেলে ওই ছাত্রী ও অন্যান্য ছাত্রীর অভিভাবকবৃন্দ নরপশু জয়ধরের শাস্তি দাবি করতে থাকেন। তারা পরিমলের ছবি পেয়ে তাতে জুতা পেটা করতে থাকেন। এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষকরা এখন আমাদের মেয়েদের শরীর ও মন নিয়ে খেলা করা শুরু করেছে! ছি! কী নিকৃষ্ট অভিযোগ শিক্ষার আলো বিতরণকারী শিক্ষক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে!
তবে কথা হচ্ছে, কার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করছেন অভিভাবকরা? এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি এদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিজ এলাকার বাসিন্দা। যিনি প্রধানমন্ত্রীর কথিত বান্ধবী বলে পরিচিত স্কুলের অধ্যক্ষের আপনজন। আর দলীয় বিবেচনা তো আছেই।
অতএব যিনি প্রধানমন্ত্রীর নিজ এলাকার লোক, দলীয় লোক এবং তার বান্ধবীর আপনজন তিনি যতবড়ই অপরাধ করেন না কেন, এদেশে তার বিচার হওয়া ঠিক নয়। তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি হাজ্জাজের আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে দণ্ডায়মান হতে পারবেন না। নিরবে সয়ে নিতে হবে সব অপকর্ম? অবস্থা দেখে তাই মনে হয়। কারণ, অভিভাবকবৃন্দ নরপশু পরিমল জয়ধরের শাস্তি দাবি করে মানবন্ধন করলে অধ্যক্ষ হোসনে আরা স্কুল পরিদর্শনে যান এবং যে সব শিক্ষক প্রতিবাদী অভিভাবকদের পক্ষ নিয়েছেন তাদেরকে তিনি একহাত নেন।
তাদেরকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, এটা মিউচুয়াল সেক্স। আপনারা আসলে বেশি কনজারভেটিভ! আর বর্মণের লাম্পট্যের কথা বলা হলে তিনি বলেন, কেউ খারাপ নজরে তাকালে আমাদের তো করার কিছু থাকে না! শুধু তাই নয়, প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে চরম হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন তিনি। লাঞ্ছিত ছাত্রীর পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো তাকে খারাপ মেয়ে বলে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার কথাও ঘোষণা দেন তিনি!
হায় হোসনে আরা! তুমি কোন্ মায়ের জাত? তোমার কোনো কন্যাকে নিয়ে অন্য কোনো পরিমল যদি এমন ছিনিমিনি খেলা খেলত তাহলে তুমি কি তা নীরবে হজম করতে? তোমার পক্ষে যারা প্রতিবাদ করত তাদেরকেও তুমি একহাত নিতে? তোমার কাছে যদি তোমার সন্তানের সম্ভ্রমের মর্যাদা থাকে তবে নিশ্চয় তা মেনে নিতে না। তাহলে অন্য যাদের সম্ভ্রমের মর্যাদা আছে তারা প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে তুমি একহাত নিতে যাও কেন? একজন অধ্যক্ষ কি করে পারে শুধু আপন ও দলীয় লোক হওয়ার সুবাধে এতবড় এক অপরাধীর পক্ষ নিতে? একটি মুসলিম দেশে একটা চাঁড়াল একজন মুসলিম তরুণীর সম্ভ্রম লুণ্ঠন করে নিরাপদ থাকবে, ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে, তা কী করে মেনে নেয়া যায়?
হোসনে আরারা তা মেনে নিতে পারলেও এখনও যাদের ধমনীতে ইসলামী গায়রতের কিছু লেশমাত্রও অবশিষ্ট আছে তারা থেমে থাকেননি। এই পশুটার কঠিন শাস্তি বিধান সাব্যস্ত করার লড়াই অব্যাহত রেখেছেন। অবশেষে তাদেরই জয় হয়েছে। পশুটাকে খোঁয়াড়ে তোলা হয়েছে এবং আমরা আশা করব খোঁয়াড়ের কোনো ফাঁক গলে যেন বের হয়ে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। এছাড়া তার সাথে অপকর্মে আরও কারা কারা শরীক ছিল প্যাদানী দিয়ে সে সব তথ্যও বের করতে হবে। খবরে প্রকাশ, তার আরও যে পাঁচজন সহযোগী আছে তাদের সবাই হিন্দু এবং এদের মধ্যে বরুণ বর্মণের বিরুদ্ধেও ঠিক এরূপ অভিযোগ উঠেছে। এসবটি পশুকে ভাগমতো ঠেঙ্গানী দিয়ে জন্মের মতো খোঁয়াড়ে তুলে রাখতে হবে।
জাতির পক্ষ থেকে প্রশ্ন, যে ক্যাম্পাস শিক্ষা ও জ্ঞানের আলোয় স্নাত থাকে সেই ক্যাম্পাসের কুঠুরীগুলোতে নৈতিকতার এত দৈন্য কেন? এসব চাঁড়াল লম্পটদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলতে হয়-
ধড়ে আছে ইসলামী শির
রক্তে আছে তীব্রবেগ
সম্ভ্রমলুটেরা জালিমের বিরুদ্ধে মোরা
‘হাজ্জাজ’, মাহমুদ বীর খালেদ।
ফ্রান্সের এক শিক্ষক কম্পিউটারে পর্ণ সাইটে প্রবেশ করেছিলেন বলে তার চাকরি কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তাদের বক্তব্য, সারা দেশ উলঙ্গপনায় ভরে যেতে পারে, ঘরে ঘরে উলঙ্গপনার চর্চা হতে পারে। প্রতি ইঞ্চি মাটি নির্লজ্জতার চাদরে ঢেকে যেতে পারে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এসবের ঊর্ধ্বে। হাজারও পাপের মধ্যে অন্তত এই স্থানটুকু পবিত্র থাকতে হবে।
অদ্ভুত ব্যাপার! উলঙ্গপনা আর বেহায়াপনার জন্ম দিয়েছে যারা, তারাও অন্তত এতটুকু বোঝে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এসবের বাইরে রাখতে হবে। রাখতে হবে কলঙ্ক ও দাগমুক্ত। কিন্তু যাদের বোঝার দরকার ছিল বুঝল না তারা। আমাদের দেশটা এত আত্মীয়, দলীয় ও ব্যক্তিকরণ হয়েছে যে, চরম নির্লজ্জ ও গর্হিত কাজ করেও শুধু এসব কারণে মানুষ বিরাট বিরাট শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। এই যদি হয় সমাজের ভিত্তি তাহলে এদেশের ভবিষ্যতটার চেহারাটা কীরূপ তা ভাবতেই ভয়ে গা কাঁপুনি ধরে যায়। [তথ্যসূত্র : দৈনিক আমার দেশ ও অন্যান্য জাতীয় দৈনিক, ৪ঠা জুলাই ২০১১ইং]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/657/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।