মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘মুমিনের স্বভাবে সব রকমের গুনাহ থাকতে পারে। কিন্তু দুটি গুনাহ নয় প্রতারণা ও মিথ্যা।’ [মুসনাদে আহমাদ : ২২১৭০; মুসান্নাফ : ৩০৩৩৯]
কল্পনার শীর্ণতায় যদি কারও জীবন নাশ হয়, বিবেচনার দীনতায় যদি কাউকে নির্মম ভাবে জীবন দিতে হয় তাহলে সেই কল্পনা আর বিবেচনার জন্য আক্ষেপ হয় বৈকি! নারীসত্তা পৃথিবীর দুর্বলতম বস্তুর অন্যতম। এই দুর্বল বস্তুর ওপর কতজন যে কতভাবে নিজেদের স্বার্থের বাঁধ নির্মাণ করে তার ইয়াত্তা নেই। সেই বাঁধের ভারে নুয়ে পড়ে নারীর জীবন। ধ্বংস হয় তাদের সুখকল্পনা, ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় তাদের আশার মিনার।
কিশোরগঞ্জের দুই তরুণীর ঘটনা। দুজন নারী সেদিন ঢাকার এক হোটেলে এক সাথে প্রাণ দিয়েছিলেন এবং নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ঢাকাবাসীর বর্জ্যভাগাড়ে। এ এমন নির্মম ঘটনা যার তুলনা মেলা সত্যিই কঠিন। এরূপ একটি ঘটনাই একটা সমাজের রূপ পাল্টে দেবার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আমাদের অনুভূতিবোধ এত নিষ্ক্রিয় যে, সমাজের ঘটমান এসব হাজার ঘটনাও আমাদেরকে জাগাতে পারছে না।
‘সম্ভবত বেলা বারোটা তখন। আমার পরীক্ষা ছিল, তাই পড়ছিলাম। সুমি আপু মাকে বলে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল। আমাকে বলে গেল, রুনি, আমি উর্মিকে নিয়ে বিউটিপার্লারে যাচ্ছি। দেখবি আজ খুব সুন্দর করে সেজে আসব।’ কিন্তু সেই সেজে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি সুমির। অভিশপ্ত মুক্তবাসের জীবন কেড়ে নিয়েছে ঘরে ফেরার চিরন্তন আশা।
ঘটনাটি ২০০৮ সালের ১৬ই জুলাইয়ের। আফরোজা আক্তার সুমি ও আফরোজা আক্তার ঊর্মি দুই বান্ধবী। দুজনেরই বাড়ি কিশোরগঞ্জ শহরে। দীর্ঘদিন একসঙ্গে লেখাপড়া করেছেন।
মুঠোফোনের মাধ্যমেই উভয়ে জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সম্পর্কে। তাদের দুই প্রেমিক শামীম হাওলাদার (৩৬) ও মনিরুজ্জামান ওরফে হলুদ মিয়া (৩৪)। সুমির সাথে মুঠোফোনে শামীম হাওলাদারের সাথে সখ্য গড়ে ওঠে। শামীম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। চট্রগ্রামের লালখান বাজারে একটি ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর দোকানের পরিচ্ছন্ন কর্মী। কিন্তু প্রেমের সম্পর্ক তৈরির সময় সে তার পরিচয় দেয় ইলেক্ট্রিক কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে। তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কাওখারা গ্রামে।
একইভাবে আফরোজা উর্মির পরিচয় হয় কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনের কনষ্টেবল মনিরুজ্জামান ওরফে হলুদ মিয়ার সাথে। হলুদ মিয়া নিজেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেয়। তার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হাটবারেঙ্গা গ্রামে।
এসব ক্ষেত্রে যা হয় তাহলো, পরস্পরের মধ্যে দেখা করার তাড়না সৃষ্টি হওয়া। তাদের বেলায়ও ব্যত্যয় ঘটল না। এই জুটিদ্বয় পরস্পরের মধ্যে দেখাদেখির পর্বটা সেরে নিলেন। আর এই দেখাদেখির পর্বেই মনিরুজ্জামান ও শামীমের মধ্যে যোগাযোগ হয় এবং তারা একে অপরের ফোন নম্বর বিনিময় করে।
সত্য বেশিদিন চাপা থাকে না। পৃথিবীর অন্যতম শাশ্বত বাস্তবতা এটি। সেই ধারাবাহিকতায় উর্মি ও সুমি তাদের মনের মানুষের আসল পরিচয়ে পরিচিত হয়। এই পরিচয়ের পর তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ঠিক ইয়াহূদীদের মতো। আল্লাহর বিধান না মানার কারণে তাদের ওপর তুর পাহাড় চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। সুমি ও উর্মিও কী তবে সেই কঠিন বোঝার বাহক? দুষ্ট ইহুদীরা পরামর্শ করেছিল, তারা পালাক্রমে পাহাড় মাথায় করে রাখবে, তবু নবীর কথা শুনবে না, আল্লাহর বিধান মানবে না। কিন্তু উর্মিরা কী পারবে দুষ্টবুদ্ধির এমন অসাধ্য কাজ করতে? মনিরুজ্জামান আর শামীমরা তাদের ওপর মিথ্যা ও ছলনার যে পাহাড় চাপিয়ে দিয়েছে তা দীর্ঘদিন বহন করা কি তাদের জন্য আদৌ সহজ হবে? এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যেই কেটে যায় বেশ কিছুদিন।
ওদিকে প্রেমিক ব্যাটাদেরও তো মানসম্মানের ব্যাপার বলে কথা আছে! কোম্পানি কর্মকর্তা আর উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারের ফাঁক গলে যখন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আর কনস্টেবলের পরিচয়টা বের হয়ে আসে তখন আর তারা বিষয়টিকে মর্যাদার জন্য নিরাপদ মনে করে না। ফলে কথিত প্রিয় মানুষদেরকে নিয়ে চরম ও জঘন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে তারা। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০০৮ সালের জুলাই মাসে উর্মি ও সুমি দুই বান্ধবীকে কিশোরগঞ্জের একটি বিউটি পার্লার থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। নারীসত্তার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদেরকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়। এধরনের ভয়ানক একটি ফাঁদে দুইজন তরুণী পা দিলেন কিন্তু একজনও পরিণতির ভয়াবহতার কথা চিন্তা করলেন না কিংবা পরিবারের সদস্যের সাথে বিষয়টি আলোচনা করলেন না। যার পুরো সুবিধা গ্রহণ করল প্রতারক লোক দুটি। তারা মিথ্যা পরিচয়ে মেয়ে দুটিকে নিয়ে কারওয়ান বাজারের ওয়েস্টার্ন গার্ডেন হোটেলে ৩০৬ ও ৩০৭ নম্বর কক্ষে আশ্রয় নেয় এবং রাতে প্রেমিকাদের শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে কক্ষ দুটিতে তালা দিয়ে খাবার আনার কথা বলে হোটেল থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর হোটেলের দুই মালিক আঃ খালেক ও রানা এবং ব্যবস্থাপক আবুল মিয়া খুনের কথা পুলিশকে না জানিয়ে লাশ দুটি সব্জির ঝুড়িতে ভরে একটি ঝুড়ি মগবাজার হাতিরঝিলের পানিতে ফেলে দেয় এবং অপর ঝুড়ি তেজগাঁও রেলষ্টেশনের পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। [তথ্যসূত্র : কালের কণ্ঠ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০ইং]
হায় আক্ষেপ! মোহ আর ভালোবাসার রূপকথা এভাবে দুজন তরুণীকে করুণ পরিণতিতে ভোগালো? কী মর্মান্তিক এই আখ্যান! মিথ্যার জাল বিছিয়ে, প্রতারণার ফাঁদ পেতে কীভাবে নারীজাতিকে ধ্বংস করে চলেছে সম্ভ্রমখেকো পুরুষগুলো! আর নারীরাও অবলার মতো নিজেদেরকে ধ্বংসের ভাগাড়ে নিক্ষেপ করছে। তাদেরকে কে বোঝাবে যে, তথাকথিত প্রেম-ভালোবাসা জীবনের অপরিহার্য কোনো অংশ নয়? বরং এগুলো হচ্ছে একটা মোহ। আর মোহ মানেই সাময়িক উত্তেজনা। এই সাময়িক উত্তেজনার কাছে কি বাস্তবতা বন্ধক থাকতে পারে? বহু মোহাচ্ছন্ন ব্যক্তিকে মোহ কেটে যাওয়ার পর পূর্বের মোহের কারণে আক্ষেপ করতে দেখেছি। বাস্তবতার কাছে হার মানতে দেখেছি। তারা নিজেরা বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, এটাই বাস্তবতা। মোহ কল্পনা, আর জীবন বাস্তব। আর বাস্তবতার কাছে কল্পনা হার মানতে বাধ্য।
প্রযুক্তির সৃষ্টিগুলো মানুষের মঙ্গলের জন্য করা হয়। কিন্তু তার ভুল ব্যবহার হলেই তা অনাসৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজ বাস্তবতা একথা বলাতে বাধ্য করছে যে, মোবাইলপ্রেম আপনাকে সমৃদ্ধ করছে না, শূন্য করছে।
এক্ষেত্রে তরুণ-তরুণী ও যুবক-যুবতীদেরকে নিজ গরজে সচেতন হতে হবে। একথা তাদেরকে সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, মোবাইল ফোন জীবনের অনুষঙ্গ, কখনই জীবনের জন্য অপরিহার্য নয়। বিরক্তিকর বা অপরিচিত কলগুলোতে মজা করার কথা না ভেবে এড়িয়ে চলা উচিত। তাহলে জীবনের অনেকাংশই নিরাপদ হয়ে যাবে।
মানুষমাত্রই ভুল করে। আর এই বয়সটায় এধরনের ভুল ও পদস্খলন হওয়া অস্বাভাবিকও নয়। তাই কোনোভাবে অবাঞ্ছিত এই সম্পর্ক হয়ে গেলে সেটা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে। তার নিজের কাছে পরিষ্কার থাকা উচিত যে, আমি ভুল করছি না তো। এরূপ হয়ে গেলে পরিবারকে পর না ভেবে তাদেরকে আপন ভাবুন। মা-বাবা অথবা ভাই-বোনের সাথে মন খুলে আলাপ করুন। এসব সম্পর্কের ভালোমন্দ দিক তাদের সাথে শেয়ার করুন।
যুবক-যুবতীদের সাথে সাথে অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। এধরনের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিশোর-কিশোরীরা। তাই অভিভাবকদের অবহেলা তাদের জীবনকে অধিক দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় বিনোদনের সুযোগ কম এবং বেকারত্বের থাবাও প্রবল। তাই কেউ কেউ বিনোদনের স্বাদ নিতে কিংবা বেকারত্বের দুঃখ ভুলতে মোবাইলের মাধ্যমে উচ্ছৃংখল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তাই পরিবারের লোকদের উচিত এসব যুবক-যুবতীর প্রতি খেয়াল রাখা। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, দুটি মেয়ে এক সাথে পলায়ন করেছে। আসলে পরিবারের লোকদেরকে যদি সন্তানরা আপন ভাবে, তাদের মর্যাদা রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকে তবে তাদের মনে এধরনের চিন্তা আসবে না এবং পরিবারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে এধরনের পদক্ষেপও কখনও নেবে না।
এমনিভাবে অভিভাবকের বেখেয়াল, অসচেতনতা সন্তানকে জেদি আর অসংযমী করে তোলে। তাই এধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে অবশ্যই অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। আর সব সময় শাসনের লাঠি ব্যবহার না করে কৌশলে তাদেরকে বশে রাখার প্রয়াস পেতে হবে।
এ ধরনের ঘটনায় ছেলেমেয়েরা সাধারণত খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে তারা অজান্তেই ফাঁদে পা দেয়। তাই অভিভাবকদের একটু বেশি সচেতন হতে হবে। সন্তানের বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই মা-বাবার উচিত সন্তানের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেয়া। তাদের গতিবিধি ও চলাফেরার দিকে খেয়াল রাখা। সন্তান জন্ম দেয়া সহজ কিন্তু মানুষ এবং আদর্শবান করে গড়ে তোলা কঠিন বৈকি! স্বাধীনতার মতো। যা অর্জন করা সহজ কিন্তু ধরে রাখা কঠিন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/657/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।