মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও তার স্ত্রীগণের কাউকে প্রহার করেন নি। কোনো খাদেমকে প্রহার করেন নি, এবং নিজ হাতে তিনি যুদ্ধের ময়দান ছাড়া কখনও কাউকে আঘাত করেন নি।’ [শামায়েলে তিরমিযী : পৃষ্ঠা ২৩, সুনানে বায়হাকী : ১৩৩০২]
এমনই ছিল রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালামের আচরণ। নারী জাতির প্রতি তাঁর করুণার ধারা ছিল অফুরন্ত। নারীসত্তা বহুমাত্রিক। এ কারণে তিনি তাদের সাথে কোমল ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন। বক্রতার যন্ত্রণা নিয়েই সংসার সমুদ্রে জীবনের দাড় টেনে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আর একান্ত অপরাগ হলে কেবল তখনই শাসন, প্রয়োজনে বিছানা আলাদা করে দেয়া এবং একেবারে অপরাগ হলে তখন সামান্য প্রহার করার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে প্রহার করা কিংবা সীমাতিরিক্ত প্রহার করা অথবা সাধারণ অপরাধে ‘অসাধারণ’ প্রহার করার কথা ইসলাম স্বীকার করে না। ইসলাম এসব অমানবিকতা কেবল ঘৃণাই করে না, তা সমূলে উচ্ছেদ করার দৃঢ়তম পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। আলোচ্য হাদীসে এই আদর্শই শিক্ষা দেয়া হয়েছে। অন্য বহু হাদীসেও নারীদের প্রতি সৌজন্যমূলক আচরণ, কোমল ব্যবহার এবং সদাচারণের আদেশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু আমাদের সমাজ সংসার থেকে হৃদ্যতা, সহমর্মিতা, প্রেম-প্রীতি আর দয়া-মায়া দিন দিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে কিংবা মুমূর্ষ রোগীর মতো আখেরী সালাম জানিয়ে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে। আমার কথায় হয়ত অতিরঞ্জন থাকতে পারে। তবে বাস্তবতা আমাকে এমন তিতা-কড়া কথা বলতে বাধ্য করে। আমি অক্ষম! আমি অপরাগ!!
আর এই পরিস্থিরি জন্য সিংহভাগ দায় পারস্পরিক অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা, নৈতিকমূল্যবোধের অভাব এবং মুক্তবাসের। শেষোক্ত কারণে এমন সব ঘটনা ঘটে চলেছে যা শুনতেও ইচ্ছা করে না বলতেও ইচ্ছা করে না। তবু তা শুনতে বাধ্য হই এবং নির্দয়ভাবে অন্যকে শোনাতে যাই। যদি তাতে সবাই পথে ফিরে আসে...
এবার আসি ঘটনার মূলে :
নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার পঞ্চবটি হরিহরপাড়া। সুদর্শন স্কুলছাত্রী মাহমুদা এই গ্রামেরই বাসিন্দা। স্কুলের পাঠ চুকাবার আগেই শিক্ষানবিশের আরেক মিছিলে যোগ দিয়েছেন তিনি। এতো মিছিল নয়, শোভাযাত্রা নয়- শবযাত্রা! হরিহরপাড়ার পার্শ্ববতী গুলশান রোডের মনসুর মিয়ার ছেলে সোহাগের আহ্বানে তিনি এই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন, জড়িয়ে পড়েছিলেন ছিন্ন করতে অক্ষম মায়াজালে। জাল থেকে বিয়ের পিঁড়ির এই সুদীর্ঘ ও বন্ধুর পথপরিক্রমায় মাহমুদার কোনো অভিভাবক সাথে ছিল না। গিরিখাদ থেকে পা হড়কে সরাসরি মৃত্যুখাদে পতিত হওয়ার যে সমূহ আশঙ্কা ছিল তাতেও তার কোনো রাহবর ছিল না। ফলে জীবনের চলার পথ সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর হয়েছে। তাই আজ ধ্বংসস্তুপে খুঁজে ফিরতে হচ্ছে মাহমুদার বিলুপ্ত অস্তিত্ব! মাহমুদা এক্ষেত্রে দুটি ভুল করেছিলেন।
এক. জীবনসঙ্গী বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে একাকী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অথচ এটা এমন ভয়ানক ও পিচ্ছিল পথ, যাতে হাজার জনকে সাথে নিয়ে পথ চলতেও গা ছমছম করা ভয় চেপে ধরে। পদে পদে ভূপতিত হওয়ার আশঙ্কা কাজ করে। মা বাবা ও মুরুব্বীদের আঁখিজল মেশানো দুআ সত্ত্বেও ভবিষ্যত শঙ্কা গা চেপে ধরে। সেক্ষেত্রে একক সিদ্ধান্ত নেয়া কতটুকু নিরাপদ হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।
দুই. পদ্ধতিতে ভুল করার সাথে সাথে তিনি লোক নির্বাচনেও ভুল করেছিলেন। তিনি সোহাগের বাইরের রূপটাই শুধু দেখেছিলেন। ভেতরের ও মুদ্রার আসল রূপটা দেখার চেষ্টা করেন নি। যদি ভালো করে দেখতে যেতেন তাহলে বিয়ের পরে নয় আগেই দেখতে পেতেন যে, সোহাগ একজন নেশাখোর ও বখাটে যুবক। যাদের অত্যাচারে জর্জরিত আমাদের সমাজ, দেশ ও নারীসত্তা। কিন্তু প্রেমের তীব্রতা মাহমুদার দৃষ্টি থেকে সোহাগের আসল চেহারাটা আড়াল করে রাখে। কল্পিত জীবনসঙ্গীর দোষ খুঁজে বেড়ানোটাকে ভালোবাসার অমর্যাদা বলে মনে হয়। কিন্তু করণীয় যথাসময়ে না করায় জীবনে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ। বিয়ের আগে যাচাই না করলেও বিয়ের পর যাচাই করা ছাড়াই পঁচা বস্তুর মতো সোহাগের আসল পরিচয়টা ভেতর থেকে ঠেলে বের হয়ে আসে।
হাদীসে নেশাকে ‘উম্মুল খাবায়েছ’ বা সব খারাবীর জননী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সেই খারাবীর সবটাই যেন ভর করে আছে সোহাগের ওপর। তাই যে মাহমুদাকে ভালোবেসে বিয়ে করে এনেছিল, অল্পদিনেই সেই মাহমুদার প্রতি খড়গহস্ত হয় সে। ভালোবাসার মানুষের প্রতি ভালোবাসার রূপসুষমা জাহির করার পরিবর্তে পশুত্বের হিংস্রতা ফলায় অহর্নিশ।
নিজ থেকে বিয়ে করায় মাহমুদার পরিবার এই বিয়েকে প্রথমে মেনে নিতে পারে নি। অবশ্য এটাকে দোষেরও বলা যায় না। মা বাবা সন্তান জন্ম দেবেন, দুঃখ-কষ্ট করে লালন পালন করবেন আর বিয়ের সময় তাদের অমতেই সন্তানরা বিয়ে করে অন্যের হাত ধরে চলে যাবে- এটা কি মেনে নেয়ার মতো বিষয়? পৃথিবীর কোনো আদালতে দাঁড়িয়ে কোনো বাদী কি এ কারণে কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে? সঙ্গত কারণেই মাহমুদার এই আচরণে তার পরিবার খুশি হতে পারে নি এবং এর ফলে তারা বিয়ের কোনো অনুষ্ঠানও করে নি। সোহাগের অশুভযাত্রার শুরু এখান থেকেই। সে এ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া বাঁধাতো মাহমুদার সাথে। নেশায় আচ্ছন্ন লোকটা বুঝতেই চাইত না যে, সে মাহমুদাকে সরল পথে বউ করে ঘরে তোলে নি। মা বাবার বুক থেকে এক প্রকার জোর করেই সে তাকে কেড়ে নিয়ে এসেছে। অতএব, এসব ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান-আয়োজনের চিন্তাটা মাথা থেকে ফেলে দাও। কিন্তু তা মানে না সোহাগ। ফলে থেমে থেমে চলতে থাকে ঝগড়া, মারধর ও গালাগাল।
কন্যার ওপর চালিত অত্যাচারের সংবাদ পৌঁছতে দেরি হলো না মা-বাবা পর্যন্ত। সন্তান মা বাবাকে যতই কষ্ট দিক তারা কখনও প্রতিশোধ নেন না। বরং সন্তানের বিপদে, বেদনায়, দুঃখ-দুর্দশায় জর্জরিত হয় তাদের মন। মুহূর্তে ভুলে যান তারা সন্তানের অপরাধ। পাহাড়প্রমাণ অপরাধ করলেও নিমিষে তা ভুলে সন্তানকে বুকে তুলে নেন তারা। তাই পিতা মুফিজুল ইসলাম কন্যার এমন কষ্টের কথা শুনে মর্মাহত হলেন। নিজের ওপরই রাগ হলো তার। তার অভিমানে দগ্ধ হচ্ছে মেয়েটি! না আর হতে দেয়া যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ধুমধাম আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেয়েকে পুনরায় স্বামীর ঘরে পাঠাবেন তিনি। কিন্তু সোহাগের তাতেও তর সয় না। সে পূর্বের মতোই দানবীয় আচরণ করতে থাকে।
০৯-০৮-১০ইং তারিখে মাহমুদা স্কুলে প্রি-টেস্ট পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফেরার পর আবার ঝগড়ায় লিপ্ত হয় সোহাগ। এক পর্যায়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে মাহমুদাকে আটকে রাখে সে। এভাবে গড়িয়ে যায় বেলা। কিন্তু দরজা খোলা হয় না। শঙ্কা বাঁধে মনে। শুরু হয় দরজা ধাক্কাধাক্কি। কিন্তু তাতেও কাজ হয় না। শেষ পর্যন্ত দরজা ভেঙে ফেলা হয়। ভেতরে গুমোট পরিবেশে নিস্তব্ধ শূন্যতায় ফ্যানের সিলিঙের সাথে ভেসে থাকতে দেখা যায় মাহমুদাকে। উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। কিন্তু এর আগেই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছেন তিনি। এখন শুধু ঘোষণাটা বাকি। কর্তব্যরত ডাক্তারগণ সেই অবশিষ্ট কাজটাই সমাপ্ত করলেন। [তথ্যসূত্র : দৈনিক যায় যায় দিন ১১/০৮/১০ইং]
নিহত মাহমুদার শরীর জুড়ে আছে আঘাতের ভয়াবহ চিহ্ন। এ কীসের চিহ্ন? কীসের দাগ? এ আমাদের ঘুণেধরা সমাজের বেপর্দা, উচ্ছৃঙ্খল ও মুক্তবাসের বিষাক্ত ছোবল ও নির্মম কষ্টের দাগ।
ছেলে-মেয়েরা আজ নিজেরাই নিজেদের অভিভাবক সেজে বসে আছে। তাই পিতামাতা ও অভিভাবকদের অমতে, অনিচ্ছায় নিজ পছন্দে, ভালোবাসা করে বিয়ে করছে। এক্ষেত্রে কল্যাণকামী অভিভাবক বাধ সাধলে তারা তাদেরকে পথের কাঁটা মনে করছে। হে যুবক! মনে রেখো, সুখ আর কল্যাণ নিজে রচনা করা যায় না। কিংবা যার মধ্যে সুখ আছে বলে এখন খালি চোখে দেখতে পাচ্ছো, বাস্তবতার চশমা পরলে তাতে কল্পিত সেই সুখের টিকিটিও না পাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই এই বন্ধুর পথে, সংকীর্ণ গলিতে একা হাঁটতে যেও না। মা-বাবা এবং অভিভাবককে সাথে নাও। দেখবে তাদের নেক দুআর ফসল জীবন্ত অস্তিত্ব হয়ে তোমার সুখের উঠানে এসে গড়াগড়ি আর লুটোপুটি খাচ্ছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/657/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।