hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুক্তবাসিনী-২

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

ভূমিকা
পাঠকের আদালতে হাজিরা নিবেদন

কুরআনে নারীকে পুরুষের লেবাস বলা হয়েছে :

﴿ هُنَّ لِبَاسٞ لَّكُمۡ وَأَنتُمۡ لِبَاسٞ لَّهُنَّۗ ﴾ [ البقرة : ١٨٧ ]

‘তারা তোমাদের লেবাস তোমরাও তাদের লেবাস।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৮৭}

মানুষ যেমনিভাবে লেবাসের মধ্যে আশ্রয় নেয় তেমনি নারীদের মধ্যে পুরুষেরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আশ্রয় খোঁজে। তাকে আশ্রয় খুঁজতে হয়। বস্তুত আল্লাহ তা‘আলা নারীর মধ্যে এমন বৈশিষ্ট্য রেখেছেন যার কারণে পুরুষরা তাদেরকে আশ্রয়স্থল বানাতে বাধ্য হয়। কুরআনের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছ-

﴿ وَمِنۡ ءَايَٰتِهِۦٓ أَنۡ خَلَقَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَٰجٗا لِّتَسۡكُنُوٓاْ إِلَيۡهَا وَجَعَلَ بَيۡنَكُم مَّوَدَّةٗ وَرَحۡمَةًۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ٢١ ﴾ [ الروم : ٢١ ]

‘আর তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গীনীদেরকে, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক দয়া ও ভালোবাসা সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল কওমের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ {সূরা আর-রূম, আয়াত : ২১}

অর্থাৎ তোমরা যেন তাদের কাছে আশ্রয় খুঁজে পাও, প্রশান্তি পাও।

নারীজাতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের অন্যতম হলো সংসার আগলে রাখা। কর্মক্ষেত্র থেকে প্রত্যাবর্তন করা ঘর্মাক্ত স্বামীর সান্ত্বনা ও আশ্রয়স্থল হওয়া। একজন নারীর জন্য এর চেয়ে বড় সম্মান আর কী হতে পারে যে, স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পুরুষজাতির আশ্রয় ও সান্ত্বনাস্থল বলে অভিহিত করেছেন?

কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত এই সম্মান মনঃপুত না হওয়ায় তারা সম্মান খুঁজে ফিরছে রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে, মার্কেটে -বাজারে, পদ-পদবীতে, সংসদে-মন্ত্রীত্বে! ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। তারা নিজেরা আশ্রয় হারিয়েছে এবং আশ্রয়স্থল হওয়ার মর্যাদাও খুইয়ে বসেছে। কবির ভাষায়- হে পথিক! তুমি তো ভাবছ কা‘বায় যাচ্ছো, কিন্তু তুমি তো ধরেছো খোরাসানের পথ!

পর্দা ও সংযত জীবনাচার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বিভিন্নজন বিভিন্ন আঙ্গিকে কিংবা নিজের মতো করে বুঝিয়ে যাচ্ছেন, সতর্ক করছেন। কেউ সতর্ক হচ্ছেন, কেউ হচ্ছেন না। কেউ সমাজের গড্ডালিকার বাঁধন ছিন্ন করতে পারছেন, আবার কেউ পারছেন না। আবার কেউ কেউ সমাজের দূরের কেউ নন, একান্তই আপনজন দ্বারাই বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। আমার ধারণা, সবচেয়ে বেশি হোঁচট ও চোট খান সম্ভবত এই শ্রেণীর লোকেরা। তারা হয়ত কল্পনাই করতে পারেন না যে, আপনজন হয়ে মানুষ কীভাবে তার চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়! তাই বিষাদগ্রস্ত হয়ে তারা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েন। কিন্তু আমি তাদেরকে খুব বেশি করে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আপনিই সম্ভবত অন্যের তুলনায় সবচেয়ে সাবলীল পথে আছেন! অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, হতে পারেন। কেননা, আপনজন দ্বারাই দ্বীনের পথে বাধাগ্রস্থ হওয়াই যে আমাদের প্রিয় নবীর সুন্নাত! আপনি কেন সেই ইতিহাস পড়েন নি কিংবা পড়লেও স্মরণ করেন না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কাবাসীকে ঈমানের দাওয়াত দিয়ে একত্রিত করলেন এবং তাদের সামনে এক হৃদয়স্পর্ষী ভাষণ পেশ করলেন, ভাষণে এ কথাও বললেন যে, হে মক্কাবাসী! আমি তোমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে যে উপঢৌকন নিয়ে এসেছি সম্ভবত পৃথিবীর কোনো মানুষ তার জাতি ও কওমের জন্য এর চেয়ে ভালো উপঢৌকন নিয়ে আসে নি।’ তখন সর্বপ্রথম কে তার বিরুদ্ধাচারণ করেছিল জানেন? আপন চাচা আবু লাহাব! শুধু বিরুদ্ধাচারণই নয়, সে অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় হুমকি দিয়ে বলেছিল-

فقال أبو لهب تبّاً لك سائر الأيام ألهذا؟

‘তোমার ধ্বংস হোক, এজন্যই বুঝি তুমি আমাদেরকে সমবেত করেছো?’ [তাফসীরে তাবারী : ১৯/৪০৭]

মুফাসসিরীনে কিরাম আরো লিখেন-

ويروى أنه مع ذلك القول أخذ بيديه حجراً ليرمي بها رسول الله صلى الله عليه وسلم

একথা বলার সাথে সাথে সে হাতে পাথর নিলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্য। [রূহুল মা‘আনী : ১৫/৪৯৭]

এবার তুমিই বলো। দ্বীনের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি আপন চাচা যদি পাথর ছুঁড়তে পারে তবে তোমার আপনজন তোমার প্রতি কথার বাণটুকুও ছুঁড়তে পারে না, আর তুমি সেই নবীর উম্মত হয়ে এতটুকু বরদাশত করতে পারবে না?

আচ্ছা, বরদাশত না করে কোথায় যাবে? পাপের পথে? অন্যরা যে পথে চলে সেই পথে? দেখো, তুমি ভালো পথে চলতে গিয়ে বাধাগ্রস্থ হচ্ছো বলে বিষিয়ে উঠছো? কিন্তু মনে রেখো, ভালো পথে বাধা থাকলেও তাতে গৌরব ও আত্মমর্যাদা আছে। কিন্তু খারাপ পথ যে কণ্টকমুক্ত তা কে বলল? সে পথে যে নিন্দা, তিরস্কার আর ঘেন্নার পাহাড় রয়েছে! তুমি যে পথেই যাও না কেন, বাধা আসবেই। তাই ভালো পথেই চলো না! তুমি কি মনে করো, আজ যারা তোমার আপন হয়ে তোমার ভালো কাজ খারাপ চোখে দেখছে, তাদের মন রক্ষা করতে গিয়ে খারাপ কাজ করলে তারা তা ভালো চোখে দেখবে? মনে রেখো পথ কোনোটাই মসৃণ নয়। পর্দা আর রক্ষণশীলতার মরুময় কাঁটা বিছানো পথে চলতে গিয়ে পায়ে ফোসকা পড়ার আশঙ্কা থাকলেও পরে গোলাপ পাওয়ার আশা আছে। কিন্তু বেপর্দার সমুদ্রে হাবুডুবু খেতে গেলে সেখানে কী আছে? সেখানে আছে সলিল সমাধির আশঙ্কা। অতএব তুমিই তোমার পথ স্থির করে নাও।

মনে রেখো, যে ভালোবাসার ভিত্তি ঈমানের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, সেই ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই। এতো ভালোবাসার অভিনয়, কৃত্রিম ভালোবাসা। এ ধরনের ভালোবাসার দাবিদাররা ভালোবাসাকে ঢাল বানিয়ে তোমার কাছে ঘেঁষবে আর বর্শা হয়ে তোমাকে বিদ্ধ করবে। মনে রেখো, নারীবাদীরা যে তোমাকে স্বাধীনতা দেওয়ার নামে তোমার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করছে তাদের এই ভালোবাসা ঈমানের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ নয়। তাই তারা তোমার প্রকৃত বন্ধু নয়, জীবন দুশমন। অতএব, ওদের কথায় তুমি ধ্বংসের পথে নেমো না।

মুক্তবাসিনী-১’র পর ‘মুক্তবাসিনী-২’র উপহার। আসলে উপহার বললে উপহাস করা হবে। যে বইয়ে হাজারও নারীর হৃদয়বিদারক আর মর্মান্তিক কাহিনী বিধৃত হয়েছে সে বইকে উপহার আখ্যায়িত না করে ‘নিষ্ঠুর উপহাস আখ্যান’ আখ্যায়িত করাই শ্রেয় নয় কি! কিন্তু তারপরেও আমি এটাকে উপহার নামেই আখ্যায়িত করলাম এই আশায় যে নারী জাতি তার আপন পথে ফিরে আসবে। নারী জাতি যদি এর মাধ্যমে তার আসল ঠিকানা খুঁজে পায় তবে এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে? এবং যার মাধ্যমে পাবে তার চেয়ে বড় উপহারই বা কী হতে পারে?

মুক্তবাসিনীর পাঠকরা আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন। অনেক জায়গা থেকে ফোন করে উৎসাহিত করেছেন। ভিন্নমাত্রার একটা কাজ ও পদক্ষেপ বলে সামনে চলার সাহস যুগিয়েছেন। বস্তুত পাঠকরা লেখকের প্রাণ। তাদের উৎসাহ-অনুপ্রেরণাই লেখকদেরকে সামনে চলতে সাহায্য করে এবং পাঠকদের আগ্রহ, অনুপ্রেরণা না থাকলে লেখকসত্তার অপমৃত্যু ঘটে। পাঠকগণ অনুপ্রেরণা দিয়ে আমার সেই লেখকসত্তায় প্রাণসঞ্চার করেছেন। তাই আমি সবশ্রেণীর পাঠকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি মনে করি তাদের এই অনুপ্রেরণারই ফসল ‘মুক্তবাসিনী-২’ বইটি। অতএব, চেনা-অচেনা সব পাঠকের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ সালাম।

বইটিতে আমি তুলে ধরলাম বেপর্দার বিড়ম্বনা ও লাঞ্ছনার কথা। আসলে আমি এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি যে, এই বইটি কি সত্যি সত্যি কারো উপকারে আসছে! হীতে বিপরীত হচ্ছে না তো! কথা দিলাম, পাঠকের কাছে যদি পর্দার বিড়ম্বনার চেয়ে বেপর্দার লাঞ্ছনা মর্মান্তিক না ঠেকে এবং আমার এই প্রচেষ্টা সুফল বয়ে আনছে না বলে প্রমাণিত হয় তবে এ ব্যাপারে আর কখনও কলম ধরব না। সকলের ইহকালীন ও পরকালীন কামনা করে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন। আমীন।

আরজগুজার

আবু বকর সিরাজী

abubakarsiraji@gmail.com

মোবাইল : ০১৭৩৬৬১৬৫৯০

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন