hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুক্তবাসিনী-২

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

২৬
ভুলটা আসলে কোথায়?
‘আমরা হুমকি পাওয়ার পর থানার পুলিশের কাছে প্রতিকার চেয়েছি। জিডি করতে গিয়েছি। কিন্তু থানার লোকেরা আমাদেরকে বলেছে জসিমের সাথে আপোস করতে। দলীয় লোক বলে তারা জিডি নেয়নি এবং আমার বোনকে রক্ষার কোনো ব্যবস্থা করে নি।’

কথাগুলো বোনহারা এক নারীর। যার শোকে এখনও ক্ষত থেকে দরদর করে রক্ত ঝরছে নারীটির। মুক্তবাসের বিষাক্ত ছোবলে জীবন আর আপনজন হারানোর কষ্টের ভয়াবহতা কত গভীর তা আজ খুব তীব্র ভাবে অনুভব করছে আগৈলঝরার একটি পরিবার। তাদের স্বপ্নের বীজ অংকুরিত হতে না হতেই দানবীয় চতুষ্পদ জন্তু তা গিলে ফেলেছে। আর গোটা পরিবার কষ্টের দহন কমাতে মরিয়া হয়ে বুক চাপড়ে শোক প্রকাশ করছে। ঘটনাটি বড় মর্মান্তিক :

একজন বিবাহিত নারী। ঘর আছে, স্বামী আছে। এমনকি সংসারের স্থায়ীত্বের জ্বলন্ত প্রমাণ গর্ভে দাম্পত্যের ঐশ্বর্য্যও আগমন করেছে। এমন একজন নারীকে প্রেম প্রস্তাব করা এবং তাতে প্রত্যাখ্যাত হলে পৃথিবীর কোনো নিষ্ঠুরতম সংজ্ঞা ও মনুষ্যত্বহীনতায়ও ক্ষোভ বা অপমানিত হওয়ার বিধান আছে কিনা তা আমার জানা নাই। কিন্তু শত না জানার মধ্যেই ঘটছে হাজারও ঘটনা। যা বিশ্বাস হয় না বিশ্বাস করতে মন মানে না- এমন সব ঘটনাই আজ আমাদের সমাজের নিত্য চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজনকাঠি গ্রামের বামন উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শারমিন জাহানা সুমু (২৪)। এক বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন উপজেলার মাগুরা গ্রামের সোহেল তালুকদারের সাথে। স্বামী সোহেল তালুকদার সেনাবাহিনীর সিভিল বিভাগে চাকরি করেন। থাকেন চট্রগ্রামে। শিক্ষিকা সুমু স্বামীর বাড়ি অত্যন্ত প্রত্যাঞ্চল হওয়ায় স্বামীর কাছে অনুমতি নিয়ে পাশের গ্রাম গৈলায় বাবার বাড়িতে থেকে শিক্ষকতা করতেন।

পূর্ব সুজনকাঠি গ্রামের আবুল হোসেন গোমস্তা (৩২) তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সে সুমুকে একাধিকবার প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সুমু তাতে সাড়া দেননি। ফলে মারাত্মক ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে গোমস্তা। সে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে তাকে। সুমু তার ছোট বোনকে নিয়ে বাসায় রাত যাপন করতেন। ছোট বোন জানান, মাঝেমধ্যেই রাতদুপুরে গোমস্তা এসে বাহির থেকে দরজায় আঘাত করত। কখনও বা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিয়ে যেত। আমরা তখন মারাত্মক ভীতসন্তস্ত্র হতাম। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু থানার কর্তব্যরত ব্যক্তিরা গোমস্তা দলীয় লোক হওয়ায় জিডি নেননি বরং তারা আমাদেরকে আপোস করার পরামর্শ দেন।

আমাদের দেশে মানবতা বস্তুটা বেশি আহত হয় দলীয় বিবেচনায়। যত বড় অপরাধীই হোক না কেন লোকটা যদি দলীয় হয় ব্যস, আর কথা নেই। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে না, অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলে নির্লজ্জভাবে তাকে মাফ করে দিতে হবে- ইত্যকার অনৈতিক চিন্তা আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থাকে অনেকটাই কলঙ্কিত করেছে। সুতরাং এমনি এক বে-ইনসাফের সমাজে বাস করে, ভণ্ড, প্রতারকদের দ্বারা বেষ্টিত হয়ে সমাজে চললে নিজেকে কতটুকু গুটিয়ে চলা দরকার সেটার ফয়সালা অন্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে নিজেই করে দেখা দরকার।

যাহোক, গোমস্তা বেচারা দলীয় লোক। দলের জন্য এত খাটাখাটি করে যদি কোনো নারীকে ধর্ষণ কিংবা খুনটা করে মাফটাই পাওয়া না যায় তবে দল করে লাভ কী? গোমস্তা লোকটা তো আর একা নয়। সে আর আগেও নিজের পূর্বসূরীকে দেখেছে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করতে এবং বিনিময়ে দলীয় লোক হওয়ায় পুরস্কৃতও হতে দেখেছে। সে হিসেবে এ কোন্ ছাই! তাই মজলুমের পক্ষ থেকে প্রতিকারের সংবাদ পেয়ে আরো ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে সে। তার প্রেমদহন সর্বগ্রাসী দাবানলের রূপ ধারণ করে। এই দাবানলে জ্বলে ছারখার হয়ে যায় মনুষ্যত্বহীন সমাজের নৈতিকার ক্ষীণ ও দুর্বল বৃক্ষ। সে ওঁৎ পেতে থাকে সুযোগের সন্ধানে। ক্লাশ শেষ করে সুমু যে পথে নিয়মিত বাড়ি ফিরতেন সে পথে হিংস্রতার মধ্যমনি গোমস্তা মৃত্যুপয়গাম নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। ১২ অক্টোবর বুধবার সুমু বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে কালুরপাড়া এলাকায় পৌঁছলে গোমস্তা উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে তার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দেয়। [তথ্যসূত্র : দৈনিক আমার দেশ ও অন্যান্য জাতীয় দৈনিক ১৩/১০/১১ইং]

খুনি, জালেম গোমস্তাকে এলাকার লোকজন ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। কিন্তু যে পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর কোনো ব্যবস্থা নিল না সেই পুলিশের কাছে খুনিকে আটক থাকতে দেখে কি সুমুর বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে? আমাদের দেশের বিচার ও ইনসাফের এমন রুগ্নদশা যে, একে প্রহসন বললেও কম হয়। শুধু দলীয় বিবেচনায় বহু নিষ্ঠুর, নরপশু বর্বরতার একশেষ করেও পার পেয়ে যায়। তাদের দ্বারা বারবার লঙ্ঘিত হয় মানবতা। ধ্বংস হয় মনুষ্যত্ব। সমাজে ছড়িয়ে পড়ে পাপের দুর্গন্ধ।

আর আমার বড় আপসোস হয় সুমুর ছোটবোনের কথায়। তিনি বারবার বলেছেন, আমরা পুলিশের কাছে প্রতিকার চাইতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করেনি। আসলে কী পুলিশ প্রতিকার করতে পারে? হাজারও সম্ভ্রমখেকোর ভয়ানক থাবা থেকে দেশের নারীসমাজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে পুলিশ কি সক্ষমতা রাখে? তারুণ্যের লোমে লোমে যেখানে পাপ ও লালসার অগ্নি বাসা বেঁধেছে সেখানে গুটিকয়েক পুলিশ যদি আন্তরিকও হয় তবু তাদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেয়া আমার কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়।

কারণ বাস্তবতা, অতীত ইতিহাস এবং কুরআন-হাদীসের শিক্ষা আমাদেরকে একথা বলতে বাধ্য করছে। ইসলামের সোনালী যুগে যেখানে বেইনসাফীর কোনো প্রশ্নই ছিল না, খলীফা ওমরের মতো ইতিহাসখ্যাত মহান শাসকের হাতে ইনসাফের ছড়ি, অপরাধী অপরাধ করে পার পাওয়ার ঘুণাক্ষরেও যখন কল্পনা করতে পারত না তখনও কিন্তু পর্দার বিধান বহাল ছিল এবং তখনও এই আদেশ দেয়া হয়নি যে, তোমরা সম্ভ্রমের প্রশ্নে সমস্যার সম্মুখীন হলে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের আশ্রয় নাও। বরং পর্দার সার্বজনীন কল্যাণ ও সুফলতার কথা বলে তখনকার নারীদেরকে এর নিরাপত্তাবেষ্টনীতে আবদ্ধ হতে বলা হয়েছে।

সুতরাং আমরা কোথায় ভুল করছি এবং কী করা দরকার সেটা মনে হয় নতুন করে ভেবে দেখা দরকার এবং সে অনুযায়ী আমাদেরকে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন