hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুক্তবাসিনী-২

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

২৭
সেই চঞ্চল মেয়েটি
শিমু নামের মেয়েটি দেখতে বেশ সুন্দর ও চঞ্চল। বয়স মাত্র ১৪। এই বয়সী এক স্কুলের ছাত্রীর চঞ্চল হওয়াই বেশি মানায়। বয়সের বালখিল্যতায় দুষ্টামি করবে, দড়ি লাফ খেলবে, পাড়ার মেয়েদের সাথে হইহুল্লোড় করে সময় কাটাবে আর ভবিষ্যতের দিকে নির্বিঘ্নে এগিয়ে যেতে থাকবে ফড়িংয়ের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে!

কিন্তু আমরা কল্পনার যে রং মাখি তার সাথে বাস্তবতার এখন আর মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। সবখানে এক ধরনের অস্বাভাবিকতা আর অবিশ্বাস্য ঘটনা কল্পনার চিত্রকে কলঙ্কিত করে যায়। তাই কিশোর শিমুর বেলায় আমরা যে কল্পনা করলাম বাস্তবে তার মিল পাওয়া গেল না। মুক্তবাসের একটা বিষাক্ত ছোবল তার জীবনকে শুধু কেড়েই নিল না, বরং কলঙ্কিতও করে দিয়ে গেল পুরোটা।

ঘটনায় ফিরে আসি। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি সরকার সাহেব আলী আবুল হোসেন মেমোরিয়াল উচচবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সায়মা জাহান শিমু। তিতাস উপজেলার দক্ষিণ আকালিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোবারক হোসেনের সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে মন দেয়া-নেয়া চলছিল। কী আশ্চর্য ব্যাপার! মাত্র চৌদ্দ বছরের একটি কিশোরী, তার আবার দীর্ঘদিন ধরে মন দেয়া-নেয়া? তার এই ঘটনা দ্বারা কি একথা প্রতীয়মান হয় না যে, আজকালের মেয়েরা নৈতিক শিক্ষার আগেই প্রেম-ভালোবাসার শিক্ষা রপ্ত করছে? যে জিনিস বহু বছর পর বুঝে আসার কথা তা তারা ক্ষুদ্রতম সময়ে আত্মস্থ করছে?

সে যাকগে, মোবারক একজন পরিণত বয়সের যুবক। এসব উন্মাদ যুবকদের মনের অভিধানে ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষার চেয়ে প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ বেশি গুরুত্ব বহন করে। কেবল ব্যবসায়ী এই মোবারকের সাথে যখন প্রথম দেখা হয় শিমুর তখনই তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার মরণনেশায় লিপ্ত হয় সে। অল্পবয়সী অবুঝ একটা মেয়েকে বাগে পেতে তেমন সমস্যা হয় না মোবারকের। সে খুব সহজেই ঘায়েল করে শিমুর প্রতিরোধ শক্তিকে। তাই সে সহজেই ধরা দেয় মোবারকের ছলনার জালে। উচ্ছল একটি মেয়ের কাছে প্রেম সত্যিই খেলনার বস্তু।

সেই খেলনার বস্তুর সাহায্যে মোবারক তার স্বার্থসিদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে অবিরাম গতিতে। শিমুকে নতুন নতুন কল্পনার জালে আবদ্ধ করে সে নির্ভিক পথে এগিয়ে চলে জোর কদমে। কিন্তু বিষয়টা ধরা পড়ে শিমুর মা-বাবার কাছে। তারা মেয়ের এমন সর্বনাশা খেলাকে মেনে নিতে পারেন না। হয়ত বয়স্ক এবং শিমুর জন্য বেমানান মোবারককে ডেকে তারা তাদের অনিচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। মেয়েকেও শাসন করেন তারা এমন নির্বুদ্ধিতা ও খামখেয়ালীর জন্য।

জন্মদাতা মা-বাবার জন্য এটা কিন্তু মোটেই অনাধিকারের কোনো বিষয় নয়। যারা এত কষ্ট করে সন্তানকে জন্ম দিয়েছেন, হাড়ভাঙা খাটুনির পয়সা দিয়ে লালন-পালন করেছেন তারা সন্তানের বিপথগামীতায় বাধ সাধবেন না তো চুপ করে সন্তানের জীবনপাড় ভাঙার দৃশ্য অবলোকন করবেন? এতো নৈতিকার প্রশ্ন আর মানবতার যুক্তি। কিন্তু মানবতা যেখানে ভূলুণ্ঠিত, মুক্তবাসের ছোবলে নৈতিকতা যেখানে বিষাক্রান্ত সেখানে নৈতিকা ও যুক্তির প্রশ্ন ধোপে টিকবে কেন?

তাই মোবারকের বেলায়ও নৈতিকতার প্রশ্ন ধোপে টেকেনি। শিমুর বাবা মা যখন তাকে শাসন করেছেন এবং নিজের মেয়েকেও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন তখন সে মারাত্মক ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেছে। হয়েছে প্রতিশোধপরায়ণ। তাই মেয়ের বাবা-মার মুখের ওপর বলে দিয়েছে, বাবা মা বাধা দেয়ার কে? সে তাকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করবে! কিন্তু মোবারক যা করতে চেয়েছে করেছে তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি। সে ভালোবাসার মানুষটির সম্ভ্রম ধ্বংস করেছে, তার জীবন কেড়ে নিয়েছে আর মা বাবার বুক খালি করেছে।

১৬ই সেপ্টেম্বর শিমু প্রতিদিনের মতো কোচিংয়ে যাওয়ার সময় মোবারক কয়েকজন বখাটে বন্ধুকে নিয়ে শিমুকে বিয়ের কথা বলে উঠিয়ে নিয়ে যায়। শিমু তাতে বাধ সেধেছে কিনা তা বলতে পারি না। তবে হয়ত মনের অজান্তেই শিহরিত হয়েছে ক্ষণে ক্ষণে। প্রিয় মানুষের সাথে কোথাও যাওয়া, এই আর কী! এরূপ ভেবেছে। কিন্তু মনের মানুষ চেনা আজ বড় দায়। এখন আর মনের ভেতর মন বাস করে না, হিংস্রতা আর বর্বরতা বাস করে সেখানে। তাই সরল মনে তুমি যাকে মনের মানুষ ভাববে, নিষ্ঠুরভাবে সে তোমার সবকিছু কেড়ে নেবে। আমাদের দেশের সাংস্কৃতি আর দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসা নৈতিকতার এই চিত্রই আমরা দেখে আসছি।

যাহোক, বন্ধুদের সহাযোগিতায় মোবারক শিমুকে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং ভালোবাসার সাথে প্রতারণা করে তার সম্ভ্রম কেড়ে নেয়। শুধু তাই নয়, এরপর সে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। প্রিয় মানুষকে যখমী করে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় কোনো অজানার পথে। হাসপাতাল থেকে শিমুর মায়ের কাছে একটি নির্মম দুঃসংবাদবাহক ফোন আসে। ফোনে তাকে জানানো হয় তার মেয়ের লাশ থানা গৌরীপুর হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে আছে। হাসপাতালে গিয়ে সত্যিই মেয়ের লাশ দেখতে পান শিমুর মা সাহিদা বেগম। রাতে খুনী মোবারকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলার রূপ পাল্টে দেয়। খুনিকে বাঁচানোর জন্য তারা অপমৃত্যুর মামলা নেয়। [আমার দেশ ১৩/১০/২০১১ ইং]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন