hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুক্তবাসিনী-২

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

২৯
মুক্তবাসের দেনা শোধ
বিশ্বের সব জায়গার অবস্থা একই। দর্শনীয় স্থানগুলো দখল করে রাখবে বিলবোর্ড এবং অবশ্যই তা নারীর শোভায় সুশোভিত। অশ্লীল ও অর্ধউলঙ্গ নারীর ছবিসম্বলিত এসব বিলবোর্ড টাঙিয়েই পুঁজিপতিরা নিজেদের পকেট ভারি করে। মাঝখান থেকে মডেল নারীরা পায় সামান্য কিছু পয়সা আর দর্শকরা পায় চোখ কপলানোর সুযোগ! রাজধানী ঢাকার অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে। সবকিছুতে মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার যে চর্চা শুরু হয়েছে তার প্রধান চিত্র ফুঠে ওঠে এসব বিলবোর্ডের গায়ে। কোনো কোনো কোম্পানি এমন সব বিলবোর্ড দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে যা দেখে মনে হয় আমরা বোধ হয় পাশ্চাত্যের কোনো উলঙ্গদেশের বাসিন্দা!

নারীদেরকে এভাবে নগ্নদেহে প্রকাশ করার হীনকর্মে লিপ্ত হয় সাধারণত ইলেক্ট্রিক ও প্রিন্টমিডিয়া। সুন্দরী কোনো মডেলের একটা মাত্র নগ্ন ছবির পোজ বদলে দিতে পারে তাদের জীবন। হু হু করে বাড়বে গ্রাহক। কাটতি হবে পত্রিকার। আর যে মিডিয়া তা পরিদর্শনের ব্যবস্থা করবে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে দর্শক-শ্রোতা। প্রচুর বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে। স্ফীত হবে ব্যাংকের একাউন্ট। এসব স্বার্থচিন্তা থেকেই তারা মডেলদের পেছনে লাগে। তাদেরকে উত্যক্ত করে এবং প্রলোভনে শেষ পর্যন্ত উলঙ্গ হওয়ার ছাড়পত্রই আদায় করে ছাড়ে।

আর যারা এভাবে বিলিয়ে দেয় নিজেদেরকে, কয়েক মুঠো পয়সার কাছে কাবু হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করে বিকৃতি ভঙ্গিতে তারা কি সত্যিই সুখী? বিলবোর্ডে টাঙানো হাস্যোজ্জ্বল চেহারার মতোই কি তাদের আভ্যন্তরীণ জীবন, ভেতরের অবস্থা? নাকি বিলবোর্ডের গায়ে টাঙানো পণ্যের মতোই ঠিকানাহীন ছন্নছাড়া তাদের জীবন?

বর্তমানে মডেলিংয়ের রকমফেরের অভাব নেই। র‌্যাম্প মডেলিং এগুলোর অন্যতম। বাংলাদেশে খুব বেশিদিন হয়নি এর আগমন ঘটেছে। অতিমাত্রার আধুনিকতা বলে এদেশে প্রবেশ করতে সময় নিয়েছে এটি। এখনও তা সংকুচিত পরিসরে আবদ্ধ হয়ে আছে। কিন্তু দিন দিন বাড়ছে এর পরিধি। কোনো প্রতিষ্ঠান নতুন কিছু বাজারে নিয়ে আসলেই গ্রাহকদের কাছে যাওয়ার আগে ছুটে যাচ্ছে মডেলদের কাছে। বিবসনা একজন মডেলের বস্ত্র কোম্পানীর মডেল হওয়ার যৌক্তিকতা কতখানি সে কথা কিন্তু আমরা কখনই ভাবি না। আর এই না ভাবার সুযোগে স্বার্থন্বেষী মহল তাদের স্বার্থ পুরে নিচ্ছে যাচ্ছে তাই ভাবে।

তাহিয়া তাবাস্সুম আদৃতা। শোবিজ জগতের পরিচিত মুখ। টানা দুই বছর তিনি র‌্যাম্প মডেলিংয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বহু কোম্পানিকে করেছেন পরিপুষ্ট। কিন্তু যখন চলে গেলেন তখন একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেলেন। তার প্রস্থানপথে কেউ আলোর মশাল নিয়ে আসেনি। আঁধার রাতের চলার উপকরণ সঙ্গে দেয়নি। একেবারে নিষ্ঠুর নির্মমভাবে তাকে চলে যেতে হয়েছে। যে মডেলিংয়ে নিজেকে জড়িয়েছিলেন এবং যারা তার দ্বারা ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছে তারাই তার চলে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ বলে কথা উঠেছে।

০১/১১/২০১১ইং রোজ সোমবার রাতে মুহাম্মাদপুরের ১২/৬ তাজমহল রোডের একটি বাসার চারতলার দরজার সামনে অজ্ঞাত হিসেবে আদৃতার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনদিন তিনি অজ্ঞাত হিসেবেই পড়েছিলেন আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের লাশের হিমাগারে। র‌্যাম্পে যিনি এত মানুষের সামনে উপস্থাপিত হতেন, যার পারফর্ম দেখে দর্শকরা হাতে তালি দিতে তিনি আজ বেওয়ারিশ লাশ! এই বুঝি নিষ্ঠুর দুনিয়ার খেলা?

নিষ্ঠুর দুনিয়ার সাথে আরও অনেকেই নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছিল আদৃতাকে নিয়ে। রেহান নামের যে বন্ধুর সাথে তিনি ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনিও তাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেন। তার বন্ধুদের ভাষায়- আরেক মডেল রেহানের সাথে আদৃতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাস ছয়েক আগে তারা বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু বিয়ে নতুন থাকতেই পুরান বিষয় এসে হাজির। ঝগড়া। নতুন বধূর সাথে প্রায় ঝগড়া করতেন স্বামী রেহান। আদৃতা ছিলেন সিসায় আসক্ত। এছাড়া জেদি থাকার কারণে বিভিন্ন ফটোশুটে গিয়ে প্রায়ই আদৃতা-রেহান ঝগড়া এমনকি মারামারি পর্যন্ত করতেন।

এভাবে ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষের নিষ্ঠুর প্রহসনের শিকার হন আদৃতা। যে কাজকে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এবং তাদের সাথে পেশাগত সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন সেই পেশা ও পেশার মানুষেরাও তার সাথে নিষ্ঠুর খেলা খেলেছে। তার আরেক বন্ধু জানান, আদৃতার প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল। কোনো ভিজ্যুয়াল বিজ্ঞাপনে মডেলিংয়ের অফার পেলেই তিনি দৌঁড়ে যেতেন। হয়ত নিষ্ঠুর খেলোয়াড়েরা এটাকেই সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছিল। যে বাসার ছাদে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায় সে বাসাতেই রয়েছে মডেলিং ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘জেনেসিস ভিউ’-এর কার্যালয়। আদৃতা এই সংস্থার হয়ে কাজও করেছেন এক সময়। বন্ধুদের ধারণা, সেদিন জেনেসিস কর্তৃপক্ষের ডাকেই আদৃতা সেখানে গিয়েছিলেন।

এই বিজ্ঞাপনী সংস্থা শুধু আদৃতার জীবনকেই ধ্বংস করেনি। ধ্বংস করেছে আরও বহু মানুষের জীবন। ধ্বংস করেছে বিত্তশালীদের নৈতিকা। একাধিক র‌্যাম্প মডেলের বক্তব্য, জেনেসিস ভিউ বিজ্ঞাপনী সংস্থা হিসেবে কাজ করলেও তারা বিভিন্ন র‌্যাম্প মডেলকে বিজ্ঞাপনের মডেল বানানোর লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন উচ্চবিত্ত লোকদের মনোরঞ্জনের জন্য পাঠাত। জেনেসিসের কর্ণধার ফজল হোসেন বরুণ (ছদ্মনাম) নিজে ‘সাপ্লায়ার’ হিসেবে কাজ করেন বলে মডেলিং জগতে প্রচলিত রয়েছে। হয়ত মোতালেবদের চাওয়ার শেষ দেখতে চেয়েছিলেন বলেই জান দিতে হলো আদৃতাকে। কারণ তিনি যে বাসায় খুন হন সেখানে যাওয়ার একমাত্র চাবি ছিল ওই জেনেসিস কর্তৃপক্ষের কাছেই। একারণে ওই বাসার অন্যান্য বাসিন্দারা ছাদে যেতে পারতেন না। ছাদের ওই অংশটুকুও অন্ধকার।

ফলে হত্যা করার পর চব্বিশ ঘণ্টা লাশ ফেলে রাখা হলেও কেউ তা দেখতে পায়নি। পরে জেনেসিস কর্তৃপক্ষই লাশের খবর দিয়েছে পুলিশকে। পুলিশ জেনেসিসের চারজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞেসায় তারা আদৃতাকে চেনে না বলে জানায়। শুধু কি তাই? যাদের এক সময় সব দিয়েছেন আদৃতা তারাই তাকে পতিতা সাব্যস্ত করে ছেড়েছে। পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বরুণ ওই বাসার একজন বাসিন্দাকে জানান, ‘লাশটা টোকাই টাইপের কোনো পতিতার হবে!’ [তথ্যসূত্র : দৈনিক সকালের খবর ০৫/১১/২০১১ ইং]

মহল্লাবাসীর বিশ্বাস, মোতালেব এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। নতুবা আদৃতাকে চেনার পরও তাকে টোকাই ও পতিতার পরিচয়ে পরিচিত করতে যাবে কেন? আসলে কথা কিন্তু এখানেই। মুক্তবাসের জীবনের দেনা শোধ করতে করতে মানুষ নিঃশেষ হয়ে যাবে তবু তার দেনা শোধ হবে না। মৃত্যুর পরও দেনা চুকাবার পালা থেকে যাবে। মডেল আদৃতা বোধ হয় সেই পয়গামই দিয়ে গেলেন অনাগত ভবিষ্যতের কাছে।

প্রথম অবস্থায় বরুণকে দায়ী করা হলেও পরে আসল তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রেহান নামের যে লোকটির সাথে তার বিয়ে হয়েছিল সে ছিল ছদ্মবেশী হিন্দু যুবক। আদৃতার সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেয়। একপর্যায়ে দৈহিক সম্পর্ক নিরাপদ করার জন্য বিবাহবন্ধনেরও আশ্রয় নেয়। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে দূরে সরে যেতে উদ্যত হয় সে। বিশেষ করে তার ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ছে দেখে আদৃতাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়াকেই শ্রেয় বলে স্থির করে। এরই ধারাবাহিকতায় সে তাকে হত্যা করে।

আদৃতার পারিবারিক অবস্থার তথ্য নিয়ে জানা যায় তিনি এক প্রকার দরিদ্র পরিবার থেকেই এসেছেন। দারিদ্রের কারণেই হয়ত এসএসসি পাশের পর লেখাপড়া আর এগোয় নি। তাই ক্লাসমেট এক বান্ধবীর হাত ধরে পা রাখেন মডেলিং জগতে। সেখান থেকেই পথচলা সম্পূর্ণ এক ভিন্ন জগতের দিকে।

কিন্তু কথা হচ্ছে, মানবজীবনের সাথে দারিদ্রের এই ঘনিষ্ঠতা তো সেই প্রাচীনকাল থেকেই। মানুষ আর দারিদ্র দুটো অকৃত্রিম বন্ধু। ইতিহাসের কোনো পাঠক কি এই তথ্য দিতে পারবে যে, মানবইতিহাসের বিশেষ কোনো কালে দারিদ্রের অস্তিত্ব ছিল না? মানবজাতির পথ চলা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে সেদিন থেকে দারিদ্রেরও পথচলা শুরু হয়েছে। তাই দারিদ্রের সাথে মানুষের লড়াই, সংগ্রামও অনেক প্রাচীন। ইতিহাসের পাতায় কেবল বিখ্যাত লড়াই আর যুদ্ধ-বিগ্রহের কথাই লেখা হয় কিন্তু সে সব লড়াইয়ের বাইরেও যে আরও লড়াইয়ের ময়দান আছে এবং সে সব ময়দানের নিত্য লড়াই হচ্ছে অভাবী মানুষের, সে সব কথা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায়না।

ফলে প্রকাশ পায় না হাজারও বীরত্বগাঁথা কাহিনী, মানসিক দৃঢ়তার শক্তি বলে অনৈতিকার বিরুদ্ধে জয়ী হবার প্রত্যায়ী কাহিনী। একারণে দুর্বলরা লড়বার সাহস পায় না, প্রেরণা পায় না। তাই তারা সহজেই দারিদ্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে হেরে যায়। পরাজিত সৈনিক হয়ে হারিয়ে যায় ইতিহাসের অতল গহবরে। আদৃতা সেই হারিয়ে যাওয়া পরাজিত সৈনিকদেরই একজন!

আদৃতার এই ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ তার বেপরোয়া, উচ্ছৃঙ্খল ও জৈবিক উন্মাদনার জীবন। মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগেও তিনি ইয়াবা সেবন করেছিলেন এবং ইয়াবার সন্ধানে বের হয়েই তিনি এই পরিণতির শিকার হন।

আদৃতার হারিয়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ আছে বলে আমার মনে হয়। তার মামা আব্দুল গাফফার জানিয়েছেন, আদৃতা ছিল প্রচণ্ড জেদি ও রাগী। কখনও কখনও রাগ ও জেদ করে সে বান্ধবীদের বাসায় চলে যেত এবং সেখানে রাত কাটাতো। ঘটনার আগের দিন রবিবার যখন সে বাসা থেকে বের হয়ে যায় এবং ফেরার নাম করে না, তখন বাসার মানুষেরা ভেবেছিলেন হয়ত কারো সাথে রাগ করেই আদৃতা বের হয়ে গেছে, সময় মতো আবার ফিরে আসবে। কিন্তু দুইদিন গত হওয়ার পর তাদের টনক নড়ে এবং পত্রিকায় লাশ ও লাশের পোশাক-আশাক দেখে তারা আদৃতাকে চিনতে পারেন।

রাগে, ক্ষোভেই মানুষ। মানুষের সত্তার মধ্যে ভালোমন্দ এসব গুণ থাকবেই। কিন্তু তার একটা পরিমাণ থাকা চাই। পরিমাণের অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। রাগ, জেদ বস্তুটা নারীদের জন্য একটু বেশি বেমানান। নারীর প্রকৃতি আর সামাজিক জীবনে যেখানে তার অবস্থান, সাংসারিক জীবনে তাকে যেখান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় সেখানে রাগ আর জেদের পরশ থাকা বেশ ঝুঁকিপূর্ণই বটে। একথা নারীকে বুঝতে হবে। বুঝতে হবে অভিভাবকদেরকেও।

একজন পিতা বা মাতা হিসেবে সন্তানকে অবশ্যই ভালোবাসবেন। সন্তানের প্রতি পিতামাতার এই ভালোবাসা, স্নেহপ্রীতি শাশ্বত বাস্তবতা। তবে তা যেন কখনও মাত্রা ছেড়ে না যায় কিংবা উৎকট ভাবে তার প্রকাশ না ঘটে। আপনার ভালোবাসা যেন এভাবে প্রকাশ না পায় যে, পৃথিবীর সবকিছুর ঊর্দ্ধে আপনি আপনার সন্তানকে ভালোবাসেন। আপনার ভালোবাসার কাছে বাস্তবতার পাত্তা পায় না। এমন হওয়া কখনই কাম্য নয়। পিতা হিসেবে আপনি কন্যাকে একটু বেশি ভালোবাসেন।

আমাদের দেশে এরূপই দেখা যায়। বাবারা মেয়েকে এবং মায়েরা ছেলেকে বেশি ভালোবাসেন। সেটা প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু বাবাদেরকে অনুরোধ করবো, আপনার কন্যাকে কিন্তু একদিন অন্যের ঘরে পাঠাতে হবে। যার ঘরে পাঠাবেন হয়ত সে আপনার মতো মমতা দিয়ে তাকে বরণ করতে নাও পারে। নিজেকে কেবল শাসক ভেবে সংসার চালানোর কর্মী হিসেবেও তাকে ঘরে তুলতে পারে। আল্লাহ না করুন, কেউ যদি এ উদ্দেশ্যেই আপনার কন্যাকে শাদী করে নিয়ে যায় তখন যেন সে সেই ঝড়ঝাঁপটা ও প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে, সংসার সমুদ্রে লড়ে যেতে পারে সে রকম দীক্ষা আপনি তাকে আগেই দিয়ে রাখুন।

কেবল ভালোবাসা আর স্নেহপ্রীতি দিয়ে গেলে এবং ভালোবাসার উৎকট মাত্রার প্রকাশ ঘটালে নতুন পরিবেশে গিয়ে আপনার কন্যা ভেঙে পড়তে পারে। এই সংসার আর ওই সংসারের প্রাপ্তির বিশাল ব্যবধান দেখে সমাজ-সংসার সম্পর্কে হতাশ হয়ে জীবনকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। তাই কন্যার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এখনই ভালো সিদ্ধান্ত নিন। তাকে যথাযথ দীক্ষা দিন। মানসিকভাবে শক্ত করে গড়ে তুলুন।

রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালামের সেই অমূল্য বাণীর কথা স্মরণ করুন, যা তিনি কন্যা রুকাইয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন। কন্যা স্বামী উসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসলে তিনি বলেছিলেন, ‘নারীরা স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করুক তা আমার একদম পছন্দ নয়। যাও, স্বামীর ঘরে চলে যাও।’ [আওযাজুস সিয়ার (ইবন ফারিস রহ. প্রণীত)]

আপনিও আপনার কন্যাকে এভাবে দীক্ষা দিন। বিয়ের আগে এবং পরেও। আর সাবধান, কন্যার রাগ ও জেদকে কখনও প্রশ্রয় দেবেন না। আপনার ভালোবাসার চেয়ে তার জন্য উপকারি হবে জেদকে প্রশ্রয় না দেয়া। যে ভালোবাসা ভবিষ্যত অকল্যাণ ডেকে আনে সে ভালোবাসার যৌক্তিকতা কোথায়?

আদৃতা আমাদেরকে যে সব বিষয়ে চোখে আঙুল দিয়ে শিক্ষা দিয়ে গেল, নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে অন্যের উপদেশের পাত্র হলো সে সব উপদেশ মানাই হবে প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ। কারও মৃত্যু ও চলে যাওয়াটা অপ্রীতিকর হতে পারে। তাই বলে তা থেকে শিক্ষা নিতে তো দোষ নেই!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন