মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দেশের নানা প্রান্তে ঘটমান হাজারও অবাঞ্ছিত, অযাচিত, দুঃখজনক, বেদনাদায়ক, মর্মান্তিক, অনভিপ্রেত সব ঘটনাই মুক্তবাসিনী বইটির প্রধান উপজীব্য বিষয়। জানি, এসব ঘটনা শুনতে ভালো লাগে না। ভালো লাগার বিষয়ও না। অপ্রীতিকর ঘটনা শুনিয়ে মানুষের কান ভারি করতে তাই কষ্টও হয় বৈকি। তাছাড়া এসব ঘটনা এখন এত ঘটছে যে, অনেকের অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে ঢের বেশি। এক তরুণের কথা শুনেছি, সে মুক্তবাসিনী প্রথম খণ্ডের করুণ আখ্যানগুলো পড়ে মন্তব্য করে বলেছে, এসব কাহিনী আমার ঢের জানা আছে! তাই এগুলো শুনতে বা বলতে ইচ্ছা করে না। তার কথা অবশ্যই সত্য। তারুণ্যের সাথে অভিজ্ঞতার এই মিশ্রণ সত্যিই রোমাঞ্চকর ও কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু কথা হলো, তারুণ্যমিশ্রিত এই অভিজ্ঞতার ফলাফল কোথায়? ফলাফলশূন্য অভিজ্ঞতা কি জাতির ভবিষ্যত সমৃদ্ধ করবে? তাই আমি ফলাফলশূন্য অভিজ্ঞতার পক্ষপাতি নই। আমি চাই কিঞ্চিত অভিজ্ঞতা দিয়েই মানুষ যেন শিক্ষা নেয়, সরল পথের পথিক হয়।
সে যাকগে, এবার আসল কথায় আসি। মানুষের ‘মনুষ্যস্বভাব’ আছে একটি। বল প্রয়োগ ও জবরদস্তি। সবকিছু মানুষ শক্তি প্রয়োগে ক্ষমতার দম্ভে হাসিল করতে চায়। শক্তির এই অপপ্রয়োগ যে সব সময় শুভ ফল বয়ে আনে না মানুষ তা স্বীকার করে কই? সমাজের সাথে মিলেমিশে চলা, সামাজিক আচারগুলোর ক্ষেত্রে সহনশীল ও সংবেদনশীল হওয়া সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের অপরিহার্য কর্তব্য হওয়া উচিত। অন্যের সম্ভ্রমের মূল্য দেয়া একজন মানুষের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও কর্তব্য। অন্যথায় সমাজে কেবল মানুষই বাস করবে কিন্তু মনুষ্যত্বের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। ফলে নিজেকেই পস্তাতে হবে। নিজের হাতেই নষ্ট হবে নিজের আখের।
বিয়েশাদীর ব্যাপারগুলোতে মানুষ এমনিতেই সহনশীল থাকে এবং তাই থাকা উচিত। এক বড়লোকের কাণ্ড শুনেছি। জনৈক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে ওই বড়লোকের কন্যার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রস্তাবকের পরিচয় ও তার দারিদ্রের কথা জেনে অগ্নিশর্মা হয়ে কষে একটা থাপ্পড় দিলেন তিনি ঘটকের মুখে। এই ঘটনার বহুদিন পর জেনেছি যে মেয়ের জন্য প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই মেয়েটি এখনও বাবার হোটেল ব্যস্ত রেখে চলেছেন। ঘটনা শোনার পর কোনো ঘটক কিংবা অন্য কেউ প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি। বাবার দাম্ভিকতা, বড়লোকী আর অহংকারের বলি হয়ে মেয়েটিকে এভাবেই দিনের পর দিন বছরের পর বছর নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে হয়েছিল। অবশ্য দূরে থেকে শোনা এই ঘটনা কোনো অবাঞ্ছিত পরিণতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল কিনা তা বলতে পারি না। তবে খুব কাছ দেখে দেখা এধরনের একটি ঘটনার সমাপ্তি ঘটেছিল চরম অবমাননা আর লাঞ্ছনার মধ্য দিয়ে। বলি সেই ঘটনা :
সদ্য দারিদ্র থেকে উঠে আসা একটি পরিবার। বঞ্ছনার পাহাড় মাড়িয়ে আসা সানজিদাদের (ছদ্মনাম) পরিবারে এই কেবলই ঐশ্বর্য্যের ছোঁয়া লেগেছে। সংসার জীবনে নতুন যৌবন পাওয়ার মতো অবস্থা। সে সময় সবকিছু গোছালোভাবে ও সংযত উপায়ে করা সবার সাথে যায় না। গেল না সানজিদাদের সাথেও। মেয়েটার মা-ও অনেকটা অহংকারী হয়ে উঠছেন। পিছে ফেলে আসা অতীত যে পাড়া-প্রতিবেশীদের স্মৃতিতে ভোলার মতো সুদূর নয়, তা তিনি বুঝতেই চান না। সেই না বোঝা থেকে সৃষ্ট দাম্ভিকতা অন্যের হাসির খোরাক হয়। কোনোটা হয়তা তার নিজেরই কাল হয়ে দাঁড়ায়।
আসলে মানুষ এমন কোনো দাম্ভিকতা আর অহংকার দেখেছে কি যার পতন নেই? অহংকার আর দাম্ভিকতার পতন তো আবশ্যকীয় সত্তা। কিন্তু মানুষের বড় দোষ এই যে, অকাট্য শিক্ষণীয় বিষয় থেকেও তারা শিক্ষা নেয় না। ইতিহাসের পথ বেয়ে সেই চিরচেনা মানবিক নির্বুদ্ধিতার শিকার হলেন সানজিদার মা। সানজিদা তখন ছোট। বালিকা। মেয়েটা সুন্দর ও চঞ্চল। মায়া করে যে দেখে সেই। ওর দুই ফুফুর বিয়ে হয়েছে একই গ্রামে। একদিন সানজিদার ছোট ফুফা আসলেন একটা প্রস্তাব নিয়ে।
প্রস্তাবের বিষয়টি শাশ্বত, তবে সময়টা অগ্রিম হয়ে গেছে। প্রস্তাব ছিল সানজিদার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে রাখার। প্রস্তাবটা যিনি দিলেন তিনি পর কেউ নন। সানজিদারই ফুফুর স্বামী, সানজিদার মায়ের স্বামীর ভগ্নিপতি। তাই খুব সহজেই প্রস্তাবটা কাটিয়ে দিতে পারতেন। একেবারেই দুধের বাচ্চা বলে হেসেই উড়িয়ে দেয়া যেত প্রস্তাবটা। তাতেও সাপও মরত, লাঠিও বাঁচত। কিন্তু তিনি তা করলেন না। ঐশ্বর্য্যের উষ্ণতা তার দেমাগ ছুঁয়ে গেল। তিনি নিদারুণ অপমান করলেন প্রস্তাবদাতাকে। ‘কত বড় সাহস’, ‘কী স্পর্ধা, আমার মেয়ের সাথে অমুক ছেলের বিয়ের প্রস্তাব’ ইত্যাকর কথা বলে বড়ত্বের এক শেষ দেখালেন।
অথচ নরম ব্যবহার আর কোমল আচরণ মানুষের সৌন্দর্যের অলঙ্কার। পৃথিবীর তাবত জালেম আর ঘৃণিত ব্যক্তিদের সাথেও আল্লাহ তাআলা নরম ও কোমল ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন। মনে পড়ে কি কুরআনের সেই আয়াতটির কথা, যেখানে মুসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তা‘আলা ফিরআউনের মতো অভিশপ্ত কাফেরের প্রতি কোমল ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন?
‘এবং তোমরা তাদের সাথে কোমল ভাষায় কথা বলবে, যাতে সে স্মরণ করে অথবা আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে।’ {সূরা ত-হা, আয়াত : ৪৩-৪৪}
কিন্তু কোথায় সেই মুসা, আর মুসার আদর্শ? সমাজের প্রতিটি ঘরে ঘরে যে আজ সানজিদার মায়েদের বসবাস! এদের কঠোরতায় নির্মিত ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে আমরা কেবলই খুঁজে বেড়াই অতীতের সেই সোনালী অধ্যায়!
যাহোক, অপমানিত হয়ে লোকটি তখনই বিদায় নিলেন। মুসাবিহীন সানজিদার মায়েদের এই সমাজে আসমানী দাবিদার ফিরাউন যে কোমলতা পেয়েছিল, একজন আল্লাহ বিশ্বাসী ব্যক্তি হয়েও সেই কোমলতাটুকু তিনি পেলেন না। সেদিন তার আত্মায় অপমানের কী দাগ কেটেছিল তা কেউ তালাশ করতে যায় নি। কিন্তু এক যুগ পর ঠিকই প্রকাশ পেয়েছে তার আত্মার সেই অভিশাপ। বড় অপমান আর কষ্টের মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছে একটা করুণ ইতিহাস।
সানজিদা উপযুক্ত বয়সে উপনীত হলে তাকে ঢাকায় চাকুরে এক পাত্রের সাথে পাত্রস্থ করা হলো। নবপরিণিতা সানজিদার জীবন স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলছিল। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি সে কী ভয়ানক পদক্ষেপ নিয়ে বসে আছে। এভাবে প্রায় তিন বছরের মতো কেটে যায় তাদের দাম্পত্য জীবন। চাকুরে স্বামী ছুটিছাটা পেলে বাড়ি যেত এবং শ্বশুরালয় থেকে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যেত। এমনি একটি ছুটি আসল সানজিদার স্বামীর জীবনে। যেই ছুটি তার স্বামীর মৃত্যুপরওয়ানা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। বাড়ি যাওয়ার আগে সে শাশুড়ীর কাছে ফোন দিয়ে বলল, আমি আজ আসছি। আপনি কষ্ট করে সানজিদাকে অমুক জায়গায় নিয়ে আসুন। আমি ওখান থেকে তাকে বাড়ি নিয়ে যাবো।
সানজিদার মা সরল মনে মেয়ের জামাইয়ের কথায় সাড়া দিলেন। কিন্তু এর আগের দিন ছিল সানজিদার অন্য রকম ব্যস্ততা। তাই মা যখন তাকে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার প্রস্তাব দেন তখন সে সানন্দে রাজি হয়ে যায়, এধরনের ঘটনা আগে কখনও না ঘটায় তার মাও বেশ অবাক হয়ে যান। মায়ের সাথে বাড়ি থেকে বের হয়েই সানজিদা বলে, মা! এই সামান্য একটু পথ। তোমাকে কষ্ট করে যেতে হবে না। আমি একাই যেতে পারব! মেয়ের কথায় মা কথা বাড়ালেন না। সন্দেহ করার কোনো উপাদানও খুঁজে পেলেন না তিনি। তাই সরল মনেই তিনি তাকে একা ছেড়ে দিলেন।
সময় বলে চলে আপন গতিতে। বয়ে যায় নির্দিষ্ট বেলা। কিন্তু সানজিদার দেখা নেই। স্বামী তার উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। বহুক্ষণ পর সে শাশুড়ীর কাছে ফোন দিয়ে সানজিদার অবস্থান জানতে চাইলে সানজিদার মা অবাক হয়ে বললেন- কেন, সে যায়নি?
স্বামী ততধিক উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন- কই, নাতো!
নিজ হাতে বিদায় দেয়ার পর যতক্ষণ অপেক্ষা করলে মেয়ে স্বামীর কাছে পৌঁছতে পারবে বলে অনুমান করা যায় তার চেয়ে বহুগুণ সময় বেশি গত হয়েছে। অতএব এখনও না পৌঁছা স্বাভাবিক কোনো ঘটনার প্রমাণ বহন করে না। তা সানজিদার মা উদ্বিগ্ন হলেন। মুহূর্তের মধ্যে সারা এলাকায় হইচই পড়ে গেল। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে সানজিদার অবস্থান জানার চেষ্টা করা হলো। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া গেল না। আতংক, উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। কিন্তু তবু সানজিদার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
অবশেষে তার সন্ধান মিলল এবং তা বড়ই অপ্রীতিকর জায়গায়! যে ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বহুদিন আগে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়েছিল সেই ফুফাতো ভাইয়ের কাছেই ঠিকানা খুঁজে নিয়েছিল সানজিদা। বাপ-চাচাসহ বহু আত্মীয় তাকে আনতে গিয়েছিল। কিন্তু সকলের সামনে দরবারের মধ্যে সে বলেছিল, বাপ-চাচার সাথে সানজিদা যাবে না, গেলে তার লাশ যেতে পারে! সেদিন তার বাপ-চাচারা বোনের বাড়িতে গিয়ে আপ্যায়িত হয়েছেন অবমাননা আর লাঞ্ছনা দ্বারা। কন্যা জন্ম দিয়ে কি এভাবে আপ্যায়িত হওয়া কাম্য কোনো পিতার?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/657/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।