hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিদআতের পরিচয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২৭
৬ষ্ট পর্ব : বিদআত ও কুসংস্কার থেকে বাঁচার উপায়
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদআত থেকে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন। এরপরও বিদআত থেকে বেঁচে থাকাটা খুবই জরুরি। নিম্নে বিদআত থেকে বেঁচে থাকার কতিপয় উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. কুরআন ও হাদীসকে আঁকড়ে ধরা :

বিদআত থেকে বেঁচে থাকতে হলে সর্বপ্রথম করণীয় হচ্ছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَاۤ أَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ أَطِيْعُوا اللّٰهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ إِلَى اللّٰهِ وَالرَّسُوْلِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ ذٰلِكَ خَيْرٌ وَّأَحْسَنُ تَأْوِيْلًا﴾

হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসূলের এবং তাদের- যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী (তথা আমীর ও ওলামা); কোনো বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপন কর আল্লাহ ও রাসূলের নিকট। এটাই উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর। (সূরা নিসা- ৫৯)

আবার হাদীসেও অনুরূপ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যেমন-

عَنْ مَالِكٍ اَنَّهٗ بَلَغَهٗ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : تَرَكْتُ فِيْكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهٖ

মালেক (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি সংবাদ পৌঁছিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সে দুটি জিনিসকে আঁকড়ে ধরবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। সে দুটি হলো- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাত। [মুয়াত্তায়ে মালেক ১৫৯৪; মিশকাতুল মাসাবীহ ১৮৬।]

অতএব যে ব্যক্তি কুরআন ও সহীহ সুন্নাহকে যত শক্তভাবে আঁকড়ে ধরবে, তার পক্ষে বিদআতে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা তত কম থাকবে।

২. সন্দেহযুক্ত বিষয়সমূহ হতে বিরত থাকা :

বিদআত থেকে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই সন্দেহযুক্ত বিষয়সমূহ হতে বিরত থাকতে হবে। কেননা অধিকাংশ মানুষ ইসলামের সন্দেহযুক্ত বিষয়সমূহ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণেই বিভ্রান্তিতে পতিত হয়।

﴿وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا﴾

আর এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অনুমানের অনুসরণ করে; সত্যের মোকাবিলায় অনুমানের কোন মূল্য নেই। (সূরা নাজম-২৮)

৩. সর্বদা কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ থাকা :

বিদআতীদের কর্মসমূহের অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে, বিভিন্ন প্রকার বিদআত সৃষ্টির মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানো। কুরআন মাজীদে এসেছে,

﴿اِنَّ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِيْ شَيْءٍؕ اِنَّمَاۤ اَمْرُهُمْ اِلَى اللهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ﴾

নিশ্চয় যারা দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের ওপর তোমার কোনো দায়িত্ব নেই; তাদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন।

(সূরা আন‘আম- ১৫৯)

সুতরাং বিদআত থেকে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই মুসলিম উম্মাহর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। যার ভিত্তি হবে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ।

৪. বিদআতীদের সাথে চলাফেরা না করা :

বিদআতীদের সাথে চলাফেরা করাটা একজন মুমিনের জন্য খুবই বিপজ্জনক। কেননা বিদআতীরা মাঝে মধ্যে এমন কথা বা কাজ করে ফেলতে পারে, যা তার ঈমান ও আমলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্যই কুরআন মাজীদে এসেছে,

﴿اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ يَعْلَمُ اللهُ مَا فِيْ قُلُوْبِهِمْۗ فَاَعْرِضْ عَنْهُمْ وَعِظْهُمْ وَقُلْ لَّهُمْ فِۤيْ اَنْفُسِهِمْ قَوْلًا ۢبَلِيْغًا﴾

এরাই তারা, যাদের অন্তরে কী আছে আল্লাহ তা জানেন। সুতরাং তুমি তাদেরকে উপেক্ষা করো, তাদেরকে উপদেশ দাও এবং তাদেরকে মর্মস্পর্শী কথা বলো। (সূরা নিসা- ৬৩)

﴿وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِيْنَ يَخُوْضُوْنَ فِيْۤ اٰيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتّٰى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِه وَإِمَّا يُنْسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرٰى مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِيْنَ﴾

তুমি যখন দেখবে যে, তারা আমার নিদর্শন সম্বন্ধে নিরর্থক আলোচনায় মগ্ন, তখন তুমি দূরে সরে পড়বে যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় এবং শয়তান যদি তোমাকে ভ্রমে ফেলে দেয়, তবে স্মরণ হওয়ার পরে অত্যাচারী সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না। (সূরা আনআম- ৬৮)

৫. মানুষকে সহীহ সুন্নার প্রতি দাওয়াত দেয়া :

বিদআত থেকে শুধু নিজে নয়, বরং সমাজের সকলকে বাঁচানোর চেষ্টা করাও মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুতরাং সমাজ থেকে বিদআতকে দূরীভূত করার জন্য অবশ্যই বেশি বেশি করে সহীহ সুন্নার প্রতি দাওয়াত দিতে হবে। কুরআন মাজীদে এসেছে,

﴿وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ أُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ﴾

তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎ কর্মের নির্দেশ দিবে ও অসৎ কর্মে বাধা দান করবে। আর এরাই হবে সফলকাম। (সূরা আলে ইমরান- ১০৪)

৬. বিদআতী কর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা :

বিদআত নিঃসন্দেহে একটি ঘৃণিত কাজ। আর যে কোনো প্রকার ঘৃণিত ও অবৈধ কাজের প্রতিবাদ করা একজন মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো অসৎ কাজ দেখলে তা স্বহস্ত দ্বারা অপসারিত করবে, যদি সক্ষম না হয় তবে মুখ দ্বারা, তাতেও যদি সক্ষম না হয়, তবে তার অন্তর দ্বারা এবং এটা সবচেয়ে দুর্বলতম ঈমান (এর পরিচায়ক)। [সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬।]

অতএব বিদআতকে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে উচ্ছেদ করতে হলে বিদআতী কর্ম দেখা মাত্রই যথাসম্ভব প্রতিবাদ করতে হবে।

৭. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি :

যেহেতু বিদআতী কর্ম সামাজিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে, সেহেতু বিদআতের ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। অপরদিকে সমাজের অধিকাংশ মানুষ বিদআত সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ও উদাসীন থাকে। তাদের অজ্ঞতার কারণেই সমাজে এসব বিদআত জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু খুতবা, সেমিনার অথবা সমালোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমাজের মানুষকে সচেতন করে তোলা অত্যাবশ্যক। এ ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি বিদআতী আমল করে থাকে, তার সমালোচনা করাতেও দোষের কিছু নেই। আর বৃহত্তম কল্যাণের স্বার্থে ফাসেক ব্যক্তির গীবত করাও বৈধ।

৮. দ্বীন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা :

বিদআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য দ্বীন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা যে কোনো সমাজে দ্বীন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবেই বিদআতের প্রচলন ঘটে থাকে। কিন্তু যে সমাজে লোকেরা দ্বীন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখে, সেখানে যে কোনো প্রকার বিদআতী কর্মের অনুপ্রবেশ ঘটা সম্ভব নয়।

৯. আল্লাহভীতি অর্জন করা :

বিদআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই আল্লাহভীতি অর্জন করতে হবে। কেননা একমাত্র আল্লাহভীতি অর্জনকারী লোকেরাই বিদআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য আগ্রহী থাকে। তাছাড়া আল্লাহভীতি হচ্ছে মানুষের জন্য এমন একটি গুণ, যা মানুষকে সকল প্রকার বিভ্রান্তি থেকে সুরক্ষা করে এবং তাদেরকে সর্বদা সত্যের উপর অটল রাখে।

১০. মূর্খদের কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস না করা :

মূর্খদের কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস করাটা হচ্ছে আরেক ধরনের মূর্খতা। কেননা কোনো মূর্খ ব্যক্তির কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস করলে, সে তো উক্ত বিষয়ে সঠিক উত্তর দিতে পারবেই না, বরং উল্টো তাকে আরো বিভ্রান্ত করবে। এক সময় সেটিই সমাজে বিদআতী আমল হিসেবে চালু হয়ে যাবে। সুতরাং বিদআত থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই মূর্খ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ফতোয়া নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং ফতোয়া গ্রহণ করতে হবে কেবলমাত্র সেসব আলেমের কাছ থেকে, যারা প্রকৃতপক্ষেই আলেম এবং মুত্তাকী।

১১. কারো অন্ধ অনুসরণ না করা :

কারো অন্ধ অনুসরণ করা বিদআত সৃষ্টির অন্যতম কারণ। সুতরাং বিদআত থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই যে কোনো প্রকার লোকের অন্ধ অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর যদি কারো কোনো কথা বা নির্দেশনা গ্রহণ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে যাচাই করতে হবে যে, সেটির পক্ষে কুরআন ও সহীহ হাদীসের কোনো দলীল আছে কি না। যদি থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে গ্রহণ করতে হবে। আর যদি না থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় তা বর্জন করতে হবে।

১২. জাল হাদীসের উপর আমল না করা :

বিদআতী আমলসমূহের মূল উৎস হচ্ছে জাল হাদীসসমূহ। অনেক মানুষ সহীহ হাদীসের কোনোরূপ তোয়াক্কা না করে নির্দ্বিধায় এসব হাদীসের উপর আমল করে যাচ্ছে। আর এরূপ হাদীসের উপর আমল করাটাও হচ্ছে বিদআতের একটি অন্যতম অংশ। সুতরাং বিদআত থেকে বাঁচতে হলে জাল হাদীসের উপর আমল করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৩. অমুসলিমদের সংস্কৃতির অনুসরণ না করা :

অনেক বিদআত অমুসলিম সংস্কৃতি থেকে মুসলিম সমাজে প্রবেশ করে থাকে। আর মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য ইসলামের শত্রুরা অনেক সময় এ পথকেই বেছে নেয়। এ জন্যই কুরআন-হাদীসে তাদের অনুসরণের ব্যাপারে বার বার সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং বিদআত থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই অমুসলিমদের সংস্কৃতির অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৪. বেশি বেশি দু‘আ করা :

সর্বোপরি বিদআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দু‘আ করতে হবে। কেননা বিদআত সমাজ জীবনে এতটাই কঠিন বিষয় যে, আল্লাহর সাহায্য না থাকলে তা থেকে বেঁচে থাকা যে কোনো বান্দার জন্য অত্যন্ত কঠিন বিষয়। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ঈমান ও আমলকে হেফাযত করার তাওফীক দান করুন। আমীন!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন