hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাদের রোযা কবুল হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৮
রমাযান মাসে করণীয় কাজসমূহ
যেহেতু রমাযান মাসটাকে মহান আলস্নাহ বিশেষ ফযীলত ও মর্যাদায় ভূষিত করেছেন যা আমরা কোরআন ও সহীহ হাদীসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তাই এ মাসটাকে ইবাদাত-বন্দেগী ও ভাল কাজের মধ্যে ব্যয় করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর একামত্ম কর্তব্য।

রমাযান মাসে মানুষকে আলস্নাহর পক্ষ থেকে আহবান করা হয়।

يَا بَاغِىَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِىَ الشَّرِّ أَقْصِرْ

‘‘হে মঙ্গল অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে কুপথগামী! একটু থাম।’’ অর্থাৎ এ মাসে যেহেতু রহমতের দরজা খোলা থাকে, তাই তুমি এই সুযোগকে হেলায়-খেলায় নষ্ট করো না। দুনিয়া-আখেরাতে উন্নতি লাভের জন্য তুমি ভাল কাজে তৎপর হও। অপরদিকে এ মাসে যেহেতু শয়তানগুলো বাঁধা থাকে, তাই এ সময়টি হচ্ছে পাপ থেকে দূরে সরে আসার সুবর্ণ সুযোগ। তাই তুমি সচেতন হও, ফিরে আস তোমার প্রভুর দিকে। রমাযানের এই মর্মস্পর্শী ডাকে সকলের সাড়া দেয়া উচিত।

কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী এ মাসে যে সকল আমল করা একামত্ম জরম্নরী এখন আমরা তা জানব এবং সে অনুযায়ী আমল করার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করব। তাহলেই রোযার মাস আমাদের জন্য সার্থক হবে।

১. রোযা রাখা

রমাযান মাসের সবচেয়ে বড় এবং গুরম্নত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে- আলস্নাহর সমত্মুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রোযা রাখা। আলস্নাহ বলেন,

فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ

‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসটি পাবে, সে যেন রোযা রাখে’’।

(সূরা বাকারা- ১৮৫)

হাদীসে এসেছে,

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَه مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমাযান মাসে রোযা রাখবে তার পেছনের সকল গোনাহ আলস্নাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন।’’ (বুখারী, হা/২০১৪; মুসলিম, হা/১৮১৭)

২. তারাবীর নামায আদায় করা

مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমাযান মাসে তারাবীর নামায পড়বে তার পেছনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/ ২৪৯: বুখারী, হা/২০০৯; মুসলিম, হা/১৮৭৫; আবু দাউদ, হা/১৩৭৩; তিরমিযী, হা/৮০৮)

আলস্নাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,

وَالَّذِيْنَ يَبِيْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّقِيَامًا

‘‘আর যারা তাদের প্রভুর সমত্মুষ্টির লক্ষ্যে সিজদাবনত ও দন্ডায়মান অবস্থায় রাত্রি যাপন করে।’’ (সূরা ফুরকান- ৬৪)

প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হবে এ মাসে ইমামের সাথে জামা‘আতে তারাবীর নামাজ আদায় করা; যাতে রাত্রে ইবাদাতকারীদের অমত্মর্ভুক্ত হওয়া যায়। এক হাদীসে নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন,

إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا صَلّى مَعَ الْإِمَامِ حَتّى يَنْصَرِفَ حُسِبَ لَه قِيَامُ لَيْلَةٍ

যে ব্যক্তি তার ইমামের সাথে তারাবীর নামায শেষ পর্যমত্ম আদায় করে তার জন্য পূর্ণ রাত্রি জেগে ইবাদাত করার সওয়াব লেখা হবে। (আবূ দাউদ, হা/১৩৭৭; সুনানে নাসাঈ, হা/১৩৪৭)

কোন কিশোর, পুরম্নষ বা মহিলার ইমামতিতে কোন বাড়িতে মহিলারা একত্রিত হয়ে তারাবীর নামায পড়তে পারে।

৩. বেশি বেশি কোরআন পাঠ করা

কোরআন তিলাওয়াত একটি উত্তম ইবাদাত। কোরআন ও হাদীসে কোরআন তিলাওয়াতের প্রতি খুবই উৎসাহ দেয়া হয়েছে এবং এর যথেষ্ট ফযীলতও বর্ণনা করা হয়েছে। কোরআনে কারীমের এরশাদ হচ্ছে,

إِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ وَأَقَامُوْا الصَّلَاةَ وَأَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ

‘‘নিশ্চয় যারা কোরআন তিলাওয়াত করে, নামায কায়েম করে এবং আমার দেয়া রিযিক হতে কিছু অংশ গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করে তারা এমন ব্যবসার আশা করে যাতে কখনো লোকসান হবে না।’’ (সূরা ফাতির- ২৯)

এ আয়াতে কোরআন পড়াকে একটি লাভজনক ব্যবসা বলা হয়েছে। নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন,

مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا لاَ أَقُولُ الم َرْفٌ وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلاَمٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ

যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে একটি নেকী পাবে আর একটি নেকী হবে দশটি নেকীর সমান। আমি বলছি না আলিফ, লাম, মীম সব মিলিয়ে একটি হরফ; বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর। (তিরমিযী, হা/২৯১০)

রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেন,

اَلصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

কিয়ামতের দিন কোরআন ও রোযা বান্দার জন্য শাফা‘আত করবে। রোযা বলবে, হে প্রভু! আমি এ বান্দাকে দিনে খানা-পিনা ও যৌন চাহিদা মিটানো থেকে বিরত রেখেছি, তাই আমার শাফা‘আত কবুল করম্নন। কোরআন বলবে, হে প্রভু! আমি এ বান্দাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, তাই আমার শাফা‘আত কবুল করম্নন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, ২০৩৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৬২৬)

এজন্য সালাফুস সালেহীন (পূর্ব যুগের নেককার বান্দারা) বিশেষ করে রমাযান মাসে কোরআন পাঠে খুবই মনোযোগ দিতেন। এ মাসে কোরআন পড়ার জন্য তারা সময়ের একটা বড় অংশ নির্ধারণ করে রাখতেন।

 ইমাম যুহরী (রহঃ) রমাযান মাস আসলে বলতেন,

إِنَّمَا هُوَ قِرَأَةُ الْقُرْأنِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ

‘‘রমাযান মাস কেবল কোরআন পড়ার ও মানুষকে খাদ্য দানের মাস।’’

 ইমাম মালেক (রহঃ) রমাযান মাসে হাদীস পড়া স্থগিত রাখতেন এবং কোরআন পড়ার প্রতি ঝুঁকে পড়তেন। (রমাযান শাহরম্নল কোরআন)

 সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) রমাযান মাস এলে অন্যন্য নফল ইবাদাতের চেয়ে কোরআন পড়ার প্রতি অধিক মনযোগী হতেন।

এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, এ সকল মহামনীষীরা না বুঝে কোরআন পড়তেন না। তারা আলস্নাহর কালাম বুঝে বুঝে পড়তেন এবং এর উপর আমল করতেন। কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় যে, বর্তমানে অধিকাংশ মুসলমান এমন আছেন যারা কোরআনের শুধু শব্দগুলো পড়ে প্রতি হরফে দশ নেকী অর্জনের চিমত্মা করেন এবং কে কত খতম দিতে পারে- এ নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। কোরআন না বুঝে পড়লে এর দ্বারা কোরআন নাযিলের আসল উদ্দেশ্য সফল হয় না। মানুষ যাতে কোরআন পড়ে, বুঝে এবং কোরআন অনুযায়ী তাদের জীবন পরিচালনা করে- এটাই হল কোরআন নাযিলের মূল উদ্দেশ্য। কোরআন তিলাওয়াতের ফযীলত সংক্রামত্ম হাদীসগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে কোরআন পড়ার প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা। না বুঝে পড়লে পড়ার হক আদায় হয় না। না বুঝে একশত খতম দেয়ার চেয়ে কেউ যদি দু’চারটি আয়াত অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ বুঝে পড়ে এবং এর উপর আমল করতে পারে তবে এটা তার জন্য হাজার গুণে উত্তম হবে; যেহেতু সে কোরআন নাযিলের উদ্দেশ্যকে বাসত্মবায়িত করেছে।

একজন মুসলমানের সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বড় কাজ ও ইবাদাত হল ইসলামের সঠিক জ্ঞান লাভ করা। এজন্য যে শব্দটি দিয়ে কোরআন নাযিল শুরম্ন হয়েছে তা হল إِقْرَأْ ‘পড়ো’ তার মানে সবকিছুর আগে তোমাকে পড়তে হবে, জানতে হবে। মুসলিম হতে হলে কি কি কাজ করতে হবে, কোন্ কোন্ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোন্ ধরনের আকীদাহ-বিশ্বাস পোষণ করতে হবে তা না জানা পর্যমত্ম কেউ যদি হাজার বারও বলে ‘আমি মুসলিম’ তবে সে আলস্নাহর কাছে মুসলিম হতে পারবে না। তাই ইসলামের সঠিক ও নির্ভুল জ্ঞান অর্জনের জন্য আলস্নাহর কালাম বুঝে পড়তে হবে। কোরআনে এসেছে - وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللهِ قِيْلاً ‘‘আলস্নাহর কথার চেয়ে সঠিক কথা আর কার হতে পারে?’’ ذلِكَ الْكِتَابِ لَارَيْبَ فِيْهِ ‘‘এটা এমন কিতাব যার কথার মধ্যে কোন সন্দেহ-সংশয় নেই।’’

কোরআন যেহেতু আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে, তাই একে ভালভাবে বুঝার জন্য আরবী ভাষা শিক্ষা করা সকলের কর্তব্য। কোরআন-হাদীস বুঝার জন্য যদি কেউ আরবী ভাষা শিখে তবে এটা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। তাছাড়া কোরআনের বিধি-বিধান জানার জন্য মাতৃভাষার সহযোগিতা নেয়া যায়, বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে প্রচলিত যত ভাষা আছে প্রায় সকল ভাষাতেই কোরআনের অনুবাদ ও তাফসীর প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। আলস্নাহর রহমতে আমাদের বাংলাদেশেও বাংলা ভাষায় কোরআন বুঝার যথেষ্ট উপকরণ বের হয়েছে। কোরআনের শাব্দিক অনুবাদ, ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ, কোরআনের শব্দের অভিধান, বিষয় অভিধানসহ বেশ কিছু ভাল ভাল তাফসীর গ্রন্থও বাংলা ভাষায় অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে এবং সর্বত্রই এসব পাওয়া যাচ্ছে।

আমিও আলস্নাহর রহমতে কোরআন দিয়ে কোরআনের একটি বিষয়ভিত্তিক তাফসীর লিখেছি। এতে একেকটি বিষয় সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতগুলো একত্র করে বিভিন্ন পয়েন্টে সাজানো হয়েছে। কোরআনে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোকে হাদীসের কিতাবের মত করে বিভিন্ন অধ্যায়ে বিন্যসত্ম করা হয়েছে। এ গ্রন্থের মাধ্যমে একেকটি বিষয় সম্পর্কে কোরআনের বক্তব্য কী তা একই জায়গায় ধারাবাহিকভাবে জানা যাবে, কিছু দিনের মধ্যে গ্রন্থটি প্রকাশিত হবে, ইনশা-আলস্নাহ!

৪. রমাযান মাসে বেশি বেশি করে দান করা

রমাযান মাসের দান হল সর্বোত্তম দান।

كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ وَأَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ ، وَكَانَ يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ يُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ ، فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ أَجْوَدَ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ

রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম ছিলেন সবচেয়ে বড় দানশীল। আর রমাযান মাসে যখন জিবরাঈল (আঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাত হত তখন তাঁর দান আরো বেড়ে যেত -كَانَ اَجْوَدُ بَالْخَيْرِ مِنَ اَلرِّيْحِ الْمُرْسَلَةِ

নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম প্রবাহমান মুক্ত বাতাসের চেয়েও আরো বেশি মুক্ত হসেত্ম কল্যাণের পথে খরচ করতেন। (বুখারী, হা/৬)

দানের অনেক দিক রয়েছে। যেমন :

 টাকা-পয়সা দান করা।

 কাপড় বা অন্য কোন প্রয়োজনীয় জিনিস দান করা।

 অপরকে খাদ্য খাওয়ানো।

 রোযাদারকে ইফতার করানো আরো সওয়াবের কাজ।

জান্নাতবাসী বান্দাদের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,

وَيُطْعِمُوْنَ الطَّعَامَ عَلٰى حُبِّه مِسْكِيْنًا وَّيَتِيْمًا وَّأَسِيْرًا- إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللهِ لَا نُرِيْدُ مِنْكُمْ جَزَاءً وَّلَا شُكُوْرًا

‘‘তারা আলস্নাহর মহববতে মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীদেরকে খাবার দেয় এবং বলে, আমরা তোমাদেরকে খাওয়াচ্ছি কেবল আলস্নাহর সমত্মুষ্টি অর্জনের জন্য- তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান এবং কৃতজ্ঞতা আমরা চাই না।’’

(সূরা দাহর- ৮, ৯)

আলস্নাহর নেক বান্দাদের মধ্যে এমন অনেক লোক ছিলেন যারা অপরকে খাদ্য দানের ক্ষেত্রে খুবই উৎসাহী ছিলেন। এক্ষেত্রে তারা শুধু গরীবদেরকে বাছাই করতেন না। অনেকে এমনও ছিলেন যারা মেহমান ছাড়া খাবার খেতেন না। অপরকে খাদ্য খাওয়ানোতে যথেষ্ট কল্যাণ রয়েছে, এর মধ্যে একটি হচ্ছে- যে খাওয়ায় এবং যাদেরকে খাওয়ানো হয় তাদের মধ্যে আমত্মরিকতা ও ভালবাসা সৃষ্টি হয়- যা জান্নাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেন,

لَا تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ حَتّى تُؤْمِنُوْا وَلَا تُؤْمِنُوْا حَتّى تَحَابُّوْا

তোমরা মু’মিন না হওয়া পর্যমত্ম জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর পরস্পরে ভালবাসা ব্যতীত মু’মিন হতে পারবে না। (মুসলিম, হা/২০৩; আবু দাউদ, হা/৫১৯৫; তিরমিযী, হা/২৬৮৮; ইবনে মাজাহ, হা/৬৮, ৩৬৯২)

৫. রমাযান মাসে উমরা করা

কাবা হল ইবাদাতের উদ্দেশ্যে নির্মিত পৃথিবীর সর্বপ্রথম গৃহ। এর মধ্যে রয়েছে আলস্নাহর অসংখ্য নিদর্শন। হজ্জ ও উমরার মাধ্যমে এসব নিদর্শন দেখা যায়। উমরার অগণিত ফযীলত রয়েছে।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَلْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَه جَزَاءٌ إِلَّا الْجَنَّةُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে। নবী করীম সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেন, ‘‘একবার উমরা করার পর আবার উমরা করলে তা দুই উমরার মধ্যবর্তী গোনাহসমূহের কাফ্ফারাহ হয়ে যায়। আর হজ্জে মাবরম্নরের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।’’ (মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৭৬৭; বুখারী, হা/১৭৭৩; মুসলিম, হা/৩৩৫৫; তিরমিযী, হা/৯৩৩; নাসাঈ, হা/২৬২৯; ইবনে মাজাহ, হা/২৮৮৮)

فَإِذَا جَاءَ رَمَضَانُ فَاعْتَمِرِىْ فَإِنَّ عُمْرَةً فِيْهِ تَعْدِلُ حَجَّةً

রমাযান মাসে উমরা করার ফযীলত সম্পর্কে নবী বলেন, ‘‘যখন রমাযান মাস আসবে তখন উমরা কর। কেননা এ মাসে উমরা করার সওয়াব একটি হজ্জের সমান।’’ অন্য বর্ণনায় আছে, ‘‘রমাযান মাসে উমরা করা আমার (নবীর) সাথে হজ্জ করার সমান।’’ (সহীহ মুসলিম, হা/৩০৯৭; তিরমিযী, হা/৯৩৯)

নবীর ইমেত্মকালের পরেও নবীর সাথে হজ্জ করার সমান সওয়াব পাওয়া যায় এমন সুযোগ কে হারায়? এ জন্য আলস্নাহ যাদেরকে সামর্থ্য দিয়েছেন তাদের রমাযান মাসে উমরা করা উচিত।

৬. রমাযানে ইতিকাফ করা

 ইতিকাফ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হল আবদ্ধ থাকা, কোন নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করা। ইসলামী পরিভাষায় ইতিকাফ হল; ইবাদাতের নিয়তে আলস্নাহর সমত্মুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম-এর পদ্ধতি অনুযায়ী কোন মসজিদে নিজেকে আবদ্ধ রাখা।

ইতিকাফ খুবই গুরম্নত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত। নবী কারীম সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম নিজেই ইতিকাফ করেছেন এবং তার স্ত্রীগণ ও সাহাবীরাও ইতিকাফ করেছেন। ইতিকাফ আলস্নাহর সমত্মুষ্টি ও নৈকট্য লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। কারণ এটি এমন এক নির্জনতা যখন বান্দা দুনিয়ার বিভিন্ন ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে একাগ্রচিত্তে আলস্নাহর দরজায় হাজির হয় এবং আলস্নাহর আনুগত্য ও যিকির করার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখে। বান্দা তার দেহ ও মনকে স্বীয় প্রভুর উদ্দেশ্যে বেঁধে রাখে।

 ইতিকাফের বাসত্মবরূপটা এমন যেন কোন ব্যক্তি কারো কাছ থেকে তার দাবী-দাওয়া পূরণের জন্য সে তার দরজায় ধর্ণা দেয় এবং দাবী পূরণ না হওয়া পর্যমত্ম ঐ দরজায় পড়ে থাকে। ঠিক তেমনিভাবে যারা ইতিকাফ করেন তারা মায়ার সংসারকে ভুলে লাগাতার কয়েকদিন আলস্নাহর দরজায় নিজেদেরকে আটক রাখেন ফলে আলস্নাহ তাদেরকে যথেষ্ট পুরস্কার দেন।

এক হাদীসে কুদসীতে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি অর্ধ হাত আমার নিকটবর্তী হয় আমি এক হাত তার নিকটবর্তী হই। আর যে ব্যক্তি এক হাত আমার নিকটবর্তী হয় আমি তার দিকে দৌড়ে আসি আর যে যমীন ভর্তি পাপ নিয়ে আমার সাথে সাক্ষাত করে আর সে আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমিও ঐরূপ ক্ষমা নিয়ে তার সাথে সাক্ষাত করি। (সহীহ মুসলিম, হা/৭০০৯)

অপর এক হাদীসে কুদসীতে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে তার ধারণা অনুযায়ী ব্যবহার করে থাকি। আর সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথেই থাকি। সে যখন আমাকে জনসমক্ষে স্মরণ করে তখন আমি এর থেকে উত্তম মজলিসে তাকে স্মরণ করি। আর আমার বান্দা যখন আমাকে একা একা স্মরণ করে তখন আমিও এককভাবে তাকে স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী, হা/৭৩০৫; সহীহ মুসলিম, হা/৬৯৮১)

 ইতিকাফের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল রমাযানের শেষ দশ দিন,

عَنْ أَبِيِّ بْنِ كَعْبٍ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ عَامًا فَلَمَّا كَانَ فِي الْعَامِ الْمُقْبِلِ اِعْتَكَفَ عِشْرِيْنَ لَيْلَةً .

উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম রমাযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। এক বছর তিনি ইতিকাফ করতে পারেননি, তাই পরের বছর তিনি বিশ দিন ইতিকাফ করেছেন। (সহীহ বুখারী, হা/২০৪৪; আবু দাউদ, হা/২৪৬৮)

এটা হল সুন্নাত ইতিকাফ। আর ইতিকাফ করার জন্য মান্নত করলে এটা ওয়াজিব হবে। আর বছরের যেকোন সময়ে অল্প সময় হলেও কেউ যদি ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করে তবে তা নফল ইতিকাফ হবে।

 ইতিকাফ করতে হবে মসজিদে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ

‘‘আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না।’’ (সূরা বাকারা- ১৮৭)

পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতিকাফ চলে, তবে জামে মসজিদে হলে ভাল হয়।

 ইতিকাফকারী মসজিদের কোন এক জায়গায় কিছুটা আড়াল করে সেখানে অবস্থান করবে, সেখানেই খাওয়া-দাওয়া করবে। মানবীয় প্রয়োজন যেমন প্রস্রাব-পায়খানা ইত্যাদি ছাড়া মসজিদের বাইরে যাবে না।

 ইতিকাফের সময় বেশি বেশি নফল ইবাদাত করা উচিত। নফল নামায, কোরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ, তাওবা-ইসিত্মগফার, দরূদ পাঠ ও মুনাজাত ইত্যাদি কাজে মগ্ন থাকবে। তাছাড়া ধর্মীয় বই-কিতাব পড়ে এবং কোরআন-হাদীস চর্চা করে ইসলামী জ্ঞান অর্জন করবে এবং একে অপরের সাথে ইসলামী কথা আলোচনা করবে- এটাও বড় ধরনের ইবাদাত।

৭. লাইলাতুল কদর তালাশ করা

আরবী ভাষায় ক্বাফ- এর যবর ও দাল বর্ণে সাকিন দিয়ে ‘কাদ্রম্নন’ শব্দের অর্থ হল- সম্মান ও মর্যাদা। এদিক থেকে শবে ক্বদর বা লাইলাতুল ক্বাদর এর অর্থ হল সম্মানিত ও মহিমান্বিত রজনী।

অন্যদিকে দাল বর্ণে যবর দিয়ে কাদারম্নন শব্দের অর্থ হল পরিমাপ করা, নির্ধারণ করা। এ হিসেবে লাইলাতুল ক্বাদার অর্থ হল ভাগ্য রজনী, তাকদীরের ফয়সালা করার রাত।

কদরের রাত মহান আলস্নাহর এক বিশেষ অবদান। এ রাতের রয়েছে বিশেষ সম্মান, বিশেষ মাহাত্ম্য ও বিশেষ ফযীলত। এ রাতের নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরা রয়েছে। এ রাতের ব্যাপারে নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম এর অনেক হাদীস রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল এ রাতের কেন এত মর্যাদা? কেন এত ফযীলত? উত্তর একটাই, আর তা হল এ রাতেই মহান আলস্নাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে মর্যাদাপূর্ণ মহাগ্রন্থ আল-কোরআন মর্যাদাবান ফেরেশতা জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে মর্যাদাশীল নবী মুহাম্মাদ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম-এর উপর তাঁর মর্যাদাবান উম্মতের পথপ্রদর্শক হিসেবে নাযিল হয়েছে। সুতরাং যেখানে এতগুলো মর্যাদাপূর্ণ বিষয় একত্র হল সেখানে যে রাতে এগুলোর সমাবেশ ঘটেছে সে রাতটি কি মর্যাদাপূর্ণ না হয়ে পারে?

আলস্নাহ তা‘আলা নিজেই বলেছেন,

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِيْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

‘‘নিশ্চয় আমি এটাকে (আল-কোরআনকে) কদরের রাত্রিতে নাযিল করেছি।’’ (সূরা কদর- ১)

এ রাতে কোরআন নাযিল করার অর্থ হল- লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে এটি নাযিল হয়, পরে প্রয়োজন অনুপাতে পর্যায়ক্রমে তা নবীর উপর নাযিল হতে থাকে। এর অপর অর্থ হচ্ছে- এ রাতে কোরআন নাযিলের সিলসিলা শুরম্ন হয়েছে এবং দীর্ঘ তেইশ বছরে তা পূর্ণতা লাভ করেছে।

এ রাতের মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত করে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ - لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

‘‘তুমি কি জান কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’’ (সূরা কদর ২-৩)

এখানে হাজার মাস বলতে কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝানো উদ্দেশ্য নয়; বরং বেশি বুঝানোর উদ্দেশ্যে এটা বলা হয়েছে, তার মানে এ রাতটি হাজার হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।

উত্তম কথাটির দু’টি ব্যাখ্যা আছে এবং উভয়টিই সঠিক।

১. কদরের রাতটি এমন ফযীলতপূর্ণ যে, এ রাতের ইবাদাত-বন্দেগী হাজার মাসের ইবাদাত-বন্দেগীর চেয়ে উত্তম। নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন,

مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيْمَانًا وَّاحْتِسَابًا غُفِرَ لَه مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে আলস্নাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান লাভের আশায় কদরের রাতে ইবাদাত করবে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (সহীহ বুখারী, হা/৩৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৮১৮)

২. এ রাতটি এদিক দিয়ে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম যে, এ রাতে বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল-কোরআন নাযিল করে মানুষের এত কল্যাণ সাধন করা হয়েছে যা মানব জাতির ইতিহাসে হাজার মাসেও করা হয়নি। কারণ এ কোরআন একটি অসভ্য, বর্বর জাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে তাদেরকে সভ্য, ভদ্র ও চরিত্রবান করে উন্নতি ও কল্যাণের চরম শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল। কোরআনের বাণী শুনে পাথরের মত কঠিন অমত্মরগুলো পানির মত নরম হয়ে গিয়েছিল, এর মুজিযা ও মাধুর্যের সামনে সারা বিশ্ব অবাক, হতভম্ব ও নিসত্মব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সূরা দুখানে এ কথাটি এভাবে বলা হয়েছে,

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِيْ لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ

‘‘আমি একে এক বরকতময় রাত্রে অবতীর্ণ করেছি।’’ (সূরা দুখান- ৩)

এখানে কদরের রাতকে বরকতময় বলা হয়েছে। যেহেতু এ রাতে কল্যাণ ও বরকতের এমন ধারা শুরম্ন হয়েছিল যা সারা দুনিয়ায় এখন পর্যমত্ম অব্যাহত আছে এবং কিয়ামত পর্যমত্ম থাকবে।

কদরের রাতের বিশেষত্ব সম্পর্কে আলস্নাহ তা‘আলা আরো বলেন,

تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوْحُ فِيْهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِّنْ كُلِّ أَمْرٍ

‘‘এ রাতে জিবরাঈল ও অন্যান্য ফেরেশতারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেকটি হুকুম নিয়ে নাযিল হয়।’’ (সূরা ক্বদর- ৪)

এ রাত্রে অগণিত ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন। হাদীসে এসেছে,

إِنَّ الَمَلَائِكَةَ تِلْكَ اللَّيْلَةِ أَكْثَرَ فِيْ الْأَرْضِ مِنْ عَدَدِ الْحَصى

‘‘কদরের রাতে ফেরেশতাদের সংখ্যা পৃথিবীর সমুদয় কংকরের চেয়েও বেশি হয়’’ (ইবনে খুযাইমা)। এই অসংখ্য ফেরেশতারা এ রাতে ইবাদাতকারীদের জন্য দু‘আ করেন।

এ রাতে বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালা করা হয়।। সূরা দুখানে বলা হয়েছে-

فِيْهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيْمٍ

‘‘এই রাতে সব ব্যাপারে জ্ঞানগর্ভ ফায়সালা হয়ে থাকে।’’ (সূরা দুখান- ৪)

سَلَامٌ هِيَ حَتّٰى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

‘‘এ রাতটি ফজর উদয় হওয়া পর্যমত্ম পুরোপুরি শামিত্মময়।’’ (সূরা কদর- ৫)

অর্থাৎ এ রাতে শুধু শামিত্ম আর শামিত্ম, মঙ্গল আর মঙ্গল। এতে অনিষ্টের নাম গন্ধও নেই। অনাবিল শামিত্মপূর্ণ এ রজনীর অফুরমত্ম শামিত্ম ফজর উদয় পর্যমত্ম অব্যাহত থাকে।

লাইলাতুল কদর কোনটি?

কদরের রাত কোন তারিখে তা একেবারে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে কিছু দলীলের ভিত্তিতে এ রাতটি রমাযান মাসে হওয়ার ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পারি। যেমন সূরা কদরের প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে, কোরআন কদরের রাতে নাযিল হয়েছে। আবার সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, রমাযান মাসে কোরআন নাযিল হয়েছে। সুতরাং এ আয়াতের মাধ্যমে এটা নির্দিষ্ট হয়ে গেল যে, কদরের রাতটি রমাযান মাসেই রয়েছে। রমাযান মাসের কোন্ রাত? এ ব্যাপারে হাদীসে এসেছে,

تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنْ الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন, লাইলাতুল কদরকে তোমরা রমাযানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে খোঁজ কর। (সহীহ বুখারী, হা/২০১৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪৮৯)

এ হাদীস দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, এ রাতটি রমাযানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখের রাতগুলোতে রয়েছে এবং ২৭ তারিখের রাতে হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেশি। আবার এ রাতটি পরিবর্তন হয়, অর্থাৎ এ বেজোড় তারিখগুলোর মধ্যে একেক বছর একেক তারিখে হতে পারে।

হাদীসে এসেছে, রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম কদরের রাতের তারিখ জানানোর জন্য বের হলেন, তখন মুসলমানদের দু’ব্যক্তি বিতর্কে লিপ্ত হল, ফলে নবীকে এ রাতটি ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/৬৯৬; সহীহ বুখারী, হা/৪৯; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৩৩৮০)

তবে এ রাতটি নির্দিষ্ট না করার মধ্যে বিরাট কল্যাণ ও হেকমত রয়েছে। এটি নির্দিষ্ট থাকলে কেবল ঐ তারিখেই মানুষ আলস্নাহর ইবাদাত করত, এখন অনির্দিষ্ট থাকাতে শেষ দশকের বেজোড় পাঁচটি রাতেই আলস্নাহর বান্দারা বেশি বেশি ইবাদাত করে আলস্নাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ পাবে।

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَه وَأَحْيَا لَيْلَه وَأَيْقَظَ أَهْلَه

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম রমাযানের শেষ দশকের রাতগুলোতে ইবাদাতের প্রতি বিশেষ গুরম্নত্ব দিতেন, কোমর কষে বাঁধতেন। তিনি নিজে জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরকেও জাগাতেন। (সহীহ বুখারী, হা/২০২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪২২)

লাইলাতুল কদরে পড়ার দু‘আ :

আয়েশা (রাঃ) নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নামকে বললেন, আমি যদি লাইলাতুল কদর পাই তবে কী পড়ব? তিনি বলেন এ দু‘আ পড়-

اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ .

আলস্নাহুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউউন তুহিববুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী ।

অর্থ : হে আলস্নাহ! তুমি বড়ই ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে তুমি ভালবাস। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিযী, হা/৩৫১৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৫০)

৮. ফিতরা আদায় করা

ইসলাম শামিত্ম ও সমতার ধর্ম। একজন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে আর একজন না খেয়ে মরবে- এই নীতিকে ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলাম সম্পদের আবর্তন চায়। সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে,

كَيْ لَا يَكُوْنَ دُولَةً بَيْنَ الْأَغْنِيَاءِ مِنْكُمْ

‘‘সম্পদ শুধুমাত্র তোমাদের ধনীদের মধ্যে যেন কেন্দ্রীভূত না থাকে।’’

وَفِيْ أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُوْمِ

‘‘আর তাদের সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে।’’ (সূরা যারিয়াত ১৯)

এজন্যই ইসলাম এমন কিছু বিধান ফরয করেছে যাতে করে গরীবরা ধনীদের সম্পদের কিছু অংশ ভোগ করতে পারে। এরই একটি অংশ হচ্ছে সাদাকাতুল ফিতর। দু’টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ সাদাকাহ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একটি হল রোযাকে ত্রম্নটিমুক্ত করা, অপরটি হল গরীবদেরকে ঈদের আনন্দে শরীক করা। মানুষের মধ্যে নানাবিধ দুর্বলতা রয়েছে, আলস্নাহর হুকুম পালন করতে কতইনা ভুল-ত্রম্নটি হয়ে যায়। বান্দা দীর্ঘ একটি মাস রোযা পালন করেছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই কিছু ত্রম্নটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। বান্দার এ ঘাটতি যাতে পূর্ণ হয়ে যায় তাই ইসলাম বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কিছু দান-সাদাকাহ করার নির্দেশ দিয়েছে। অপর দিকে ঈদের দিনটি হচ্ছে মুসলিম জাতির এক চরম আনন্দের দিন। কিন্তু যারা অর্ধাহারে অনাহারে কালযাপন করছে, আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, তারা তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে কী করে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবে? মুসলিম সমাজের এই বৈষম্য দূর করার জন্য বিশেষ করে ঈদের দিনে গরীবদেরকে সাহায্য করে ঈদের আনন্দে তাদেরকে শরীক করার জন্য ইসলাম এই সুন্দর ব্যবস্থা দিয়েছে।

ফিতরা ছোট বড় সকলের পক্ষ থেকে আদায় করতে হবে :

عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ فَرَضَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثى وَالصَّغِيْرِ وَالْكَبِيْرِ مِنْ الْمُسْلِمِيْنَ وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدّى قَبْلَ خُرُوْجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلَاةِ .

আবদুলস্নাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম মুসলমানদের প্রত্যেক স্বাধীন-পরাধীন, নারী-পুরম্নষ, ছোট-বড়, সকলের উপর এক ‘সা’ পরিমাণ যব দিয়ে ফিতরা আদায় করা ফরয করেছেন এবং ঈদের নামাযে যাওয়ার আগে তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী, হা/১৫০৩; নাসাঈ, হা/২৫০৪)

এ হাদীসসহ অন্যান্য হাদীসে খাদ্যদ্রব্য দিয়ে ফিতরা আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যে দেশে যে খাদ্য প্রধান খাদ্য হিসেবে বিবেচিত সেখানে ঐ খাদ্যকেই ফিতরার জন্য নির্বাচন করতে হবে। আমাদের দেশের প্রধান খাদ্য চাল, দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে গম। তাই আমরা যারা যে দামের চাল খাই সেই দামের চাল দিয়ে ফিতরা দেয়া উত্তম হবে।

ফিতরার পরিমাণ হল এক ‘সা’। আমাদের দেশের হিসাবে এক ‘সা’ হচ্ছে সেরের মাপে পৌনে তিন সের এবং কেজির মাপে আড়াই কেজি প্রায় ।

ফিতরার হক্বদার হচ্ছেন মিসকীন ও ফকীরগণ। তাছাড়া সূরা তাওবার ৬০ নং আয়াতে বর্ণিত যাকাত প্রদানের যে ৮টি খাত উলেস্নখ করা রয়েছে এসব খাতেও ফিতরা দেয়া যাবে।

নিজের কোন আত্মীয় গরীব থাকলে তাকে ফিতরা বা অন্যান্য দান-সাদাকা দিলে দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যায়। একটি হল দানের সওয়াব, অপরটি হল আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার সওয়াব। (ইবনে মাজাহ, হা/১৮৪৪)

৯. ঈদের নামায আদায় করা

রমাযান মাস শেষে পশ্চিমাকাশে যখন শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখা যায় তখন মুসলিম সমাজের মধ্যে এক নতুন আনন্দ বিরাজ করে। সবাই ঈদের খুশীতে মেতে উঠে। তবে এই খুশীতে শয়তানী কার্যকলাপ না ঢুকিয়ে নবীর শিক্ষা ও আমলের অনুসরণ করা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব।

ঈদ শব্দটি আরবী عَوْدٌ থেকে এসেছে, এর অর্থ হচ্ছে বার বার ফিরে আসা। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দু’টি দিন প্রতি বছর একবার করে ফিরে আসে বিধায় এ দু’টি দিনকে ইসলামী শরীয়াতে ঈদের দিন বলা হয়েছে। তাছাড়া ঈদের অপর অর্থ আনন্দ, উৎসব। মুসলিম সমাজ এ দু’টি দিনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে এবং আনন্দ করে, তাই এ দিনগুলোকে ঈদের দিন বলা হয়।

মুহাম্মাদ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম-এর পূর্বে কোন নবীর শরীয়াতে ঈদের কোন অনুষ্ঠান ছিল না। মহানবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম মদীনায় হিজরত করার পর দ্বিতীয় হিজরীর শাওয়াল মাসে প্রথম ঈদের নামায আদায় করেন। আরবের মুশরিকরা বৎসরে দু’টি পর্বে আনন্দ উৎসব করত। এর বিপরীতে আলস্নাহ তা‘আলা মুসলিম জাতিকে দু’টি পবিত্র উৎসবের দিন বদলা দিলেন।

নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন-

يَا أَبَا بَكْرٍ إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيدًا وَهذَا عِيْدُنَا

হে আবূ বকর! প্রত্যেক জাতিরই আনন্দোৎসব রয়েছে। আর আমাদের আনন্দোৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। (সহীহ বুখারী, হা/৯৫২; সহীহ মুসলিম, হা/২০৯৮; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৯৮)

ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া সুন্নাত। নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম এদিন সকালে বেজোড় সংখ্যায় খেজুর খেতেন এরপর ঈদগাহে যেতেন। (সহীহ বুখারী, হা/৯৫২; সহীহ মুসলিম, হা/২০৯৮)

ঈদের দিন শরীর পরিচ্ছন্ন করা, সকালে গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও যথাসম্ভব উত্তম পোশাক পরিধান করা সুন্নাত।

কোন ওযর না থাকলে পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া এবং সম্ভব হলে এক রাসত্মা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাসত্মা দিয়ে ফিরে আসা সুন্নাত।

ঈদের দিন তাকবীর পাঠ করা জরম্নরী :

وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللهَ عَلٰى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

‘‘আলস্নাহ তা‘আলা চান তোমরা রোযার দিনগুলো (রমাযানের সংখ্যা) পূর্ণ কর এবং আলস্নাহর বড়ত্ব ও মাহাত্ম্য বর্ণনা কর, যেভাবে তিনি তোমাদেরকে শিখিয়েছেন। তাহলে আশা করা যায় তোমরা তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারবে।’’ (সূরা বাকারা- ১৮৫)

তাফসীরকুল শিরোমনী আবদুলস্নাহ ইবনে আববাস (রাঃ) এ আয়াতের প্রেক্ষিতে বলেন, প্রত্যেক রোযাদারের কর্তব্য হচ্ছে শাওয়াল মাস শুরম্ন হওয়ার সাথে সাথেই তাকবীর বলতে থাকবে। যতক্ষণ না ঈদগাহ থেকে ফিরে আসে। (ফত্হুল বয়ান ১ম খ- ২৩৯ পৃষ্ঠা)

বিশেষ করে ঈদগাহে যাওয়ার সময় এবং ফিরে আসার সময় তাকবীর বলা মুসত্মাহাব।

নীচের বাক্যগুলোর মাধ্যমে তাকবীর পড়তে হয় :

اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ لَا اِلٰهَ إِلَّا اللهُ اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ وَ لِلّهِ الْحَمْدُ .

আলস্নাহু আকবার, আলস্নাহু আকবার, লা-ইলাহা ইলস্নালস্নাহু, আলস্নাহু আকবার, আলস্নাহু আকবার, ওয়ালিলস্না-হিল হামদ।

অর্থ : আলস্নাহ সবচেয়ে বড়, আলস্নাহ সবচেয়ে বড়, আলস্নাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন উপাস্য নেই, আলস্নাহ সবচেয়ে বড়, আলস্নাহ সবচেয়ে বড়, সকল প্রশংসা আলস্নাহর জন্য।

ঈদের দিন রোযাদাররা বিশেষ সম্মান লাভ করে। আলস্নাহর বান্দারা সারাটি মাস রোযা রাখার পর আলস্নাহর সমত্মুষ্টি লাভের আশা নিয়ে যখন ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হয় তখন আলস্নাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করতে থাকেন এবং বলেন, হে আমার ফেরেশতারা! তোমরা বলত ঐ শ্রমিকের পুরস্কার কী হতে পারে যে তার কাজ পরিপূর্ণ করেছে। তারা বললেন, পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়াই হল তার পুরস্কার। এবার আলস্নাহ তা‘আলা বললেন, হে আমার ফেরেশতাকুল! আমার বান্দা-বান্দীরা তাদের উপর আমার ফরয করা দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। অতঃপর উচ্চ আওয়াজে (তাকবীর) বলতে বলতে দু‘আর জন্য ঈদগাহে রওয়ানা হয়েছে। আমার ইজ্জত, বড়ত্ব, ও উচ্চ মর্যাদার শপথ! আমি অবশ্যই তাদের ডাকে সাড়া দেব।

এবার আলস্নাহ তা‘আলা বলেন, হে আমার বান্দারা! তোমরা ফিরে যাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের গোনাহগুলোকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দিলাম, ফলে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে আসে।

(বাইহাকী থেকে মিশকাত)

প্রিয় ভাই-বোনেরা একটু চিমত্মা করম্নন! এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য ও মর্যাদা আর কী হতে পারে? হে আলস্নাহ! আমাদেরকেও তোমার ক্ষমাপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে শামিল করে নাও। আ-মীন!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন