মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রমাযান কোরআন নাযিলের মাস; অথচ আমি এই কোরআনকে ভাল করে পড়লাম না, বুঝলাম না, আমলও করলাম না, তাহলে এই কোরআন কি আমার জন্য শাফায়াত করবে?
আমি রোযা রাখলাম; কিন্তু মিথ্যা বলতে ও পরের দোষচর্চা করতে আমার ভয় হল না, অশস্নীল গান-বাজনা শোনা থেকে, টেলিভিশনের কুদৃশ্য দেখা থেকে বিরত থাকলাম না, তাহলে এই রোযা কীভাবে আলস্নাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং আমার নাজাতের উসীলা হবে?
রোযার কারণে আমি দিনের বেলায় বিড়ি-সিগারেট থেকে দূরে থাকলাম; কিন্তু ইফতারের পরেই ধূমপান শুরম্ন করে দিলাম- যা শরীয়াতের দিক থেকে নিষিদ্ধ এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকেও ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। তাহলে এই রোযার সার্থকতা কী থাকল? আমার নাফসকে তো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না।
রোযা রাখলাম ঠিকই; কিন্তু হারাম উপার্জন ছাড়লাম না, ব্যবসায় মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি ত্যাগ করলাম না, অন্যায় থেকে বিরত হতে পারলাম না, জাহান্নামের আগুনকে একটু ভয় করলাম না, তাহলে রোযা রেখে আমি কতটুকু তাকওয়া অর্জন করতে পারলাম?
আলস্নাহ যিনা-ব্যভিচার হারাম করেছেন এবং যিনাকারী ছেলে-মেয়েকে একশত বেত্রাঘাত করতে বলেছেন; অথচ বর্তমানে অহরহ যিনা হচ্ছে। আলস্নাহ অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন এবং এজন্য ক্বিসাসের বিধান দিয়েছেন; অথচ পশু-পাখীর মত মানুষ মারা হচ্ছে। আলস্নাহ চোর নারী-পুরম্নষের হাত কেটে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন; অথচ বরাবর চুরি হচ্ছে কারো হাত কাটা হচ্ছে না। আমরা জানি যে, এ বিধানগুলো পালন করতে হলে সরকারী ক্ষমতার প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সংঘবদ্ধ হয়ে আলস্নাহর দ্বীন কায়েমের জন্য কোন চেষ্টা ফিকির করলাম না।
রোযা রেখে একটি ফরয পালন করলাম; কিন্তু এই মহান ফরযটি পালনের চিমত্মাও করলাম না। এখন আমরা আলস্নাহর কাছে গিয়ে কী জবাব দেব? অথচ এই দ্বীন কায়েমের জন্য নবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম সাহাবীদের নিয়ে এই রোযার মাসেই শত্রম্নদের মুকাবেলা করার জন্য বদর প্রামত্মরে যুদ্ধ করেছেন এবং কয়েকজন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছেন।
আমি একজন মহিলা, আলস্নাহ তা‘আলা আমার সতীত্বকে হেফাযত করতে বলেছেন; কিন্তু আমি পর্দা করলাম না, আমার শরীরের অঙ্গগুলো পরপুরম্নষের সামনে প্রকাশ করলাম অথবা রোযার মাসে পর্দা করলাম পরে আর করলাম না, আলস্নাহকে ভয় করলাম না তাহলে যে গুণটি অর্জনের জন্য একমাস রোযা রাখলাম তা তো অর্জিত হল না।
বৎসরে বার মাসের মধ্যে পূর্ণ একমাস আলস্নাহ আমাদেরকে রোযা রাখার হুকুম দিয়েছেন যেন এই একমাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়ার গুণ এতটুকু অর্জিত হয় যা পরবর্তী এগার মাসের জন্য যথেষ্ট হতে পারে; অথচ দেখা যায়, রোযার মাসটি শেষ হওয়ার পর শাওয়ালের প্রথম দিনেই ঈদকে কেন্দ্র করে শহরে-বন্দরে যেসব অশস্নীলতা, নগ্নতা, যুবক-যুবতীদের অবাধ আড্ডা শুরম্ন হয় তা দেখে মনে হয় যে, একমাসের তাকওয়া পরহেযগারীকে তারা রমাযান মাস শেষ হওয়ার সাথে সাথেই বমি করে ফেলে দিয়েছে।
আমাদের মধ্যে অনেক ভাই-বোন রয়েছেন যারা রোযার মাসে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন, মোটামুটি আলস্নাহর হুকুম মেনে চলার চেষ্টা করেন; কিন্তু রোযার মাস শেষ হলে তারা আবার আগের মত হয়ে যান। এতে মনে হয় যে, একমাসের রোযা তাদের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। এর উদাহরণ হচ্ছে এরূপ যেমন : কোন লোক ভাত খেয়ে বমি করে ফেলে দিল। এখন যে উদ্দেশ্যে সে খেয়েছিল তা আর অর্জিত হল না, যেহেতু হজম হওয়ার আগেই সে তা বের করে দিয়েছে। অনুরূপভাবে যারা রোযার মাসে নামায পড়েন, আলস্নাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করেন; কিন্তু রোযার পরে তা ছেড়ে দেন তারাও যেন একমাসে যেটুকু আলস্নাহর ভয় অর্জিত হয়েছিল রমাযান শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা বমি করে বের করে দেন। এখন তারা রোযা রেখেছেন ঠিকই; কিন্তু রোযার উদ্দেশ্য অর্জিত হয়নি। যদি হত তাহলে তারা সারা বছর আলস্নাহর বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করত।
আসল ব্যাপার হচ্ছে, নামায-রোযাকে আমরা ইবাদাতের অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে দিয়েছি। এর বাইরে এগুলোর কোন প্রভাব পড়ছে না। বিয়ে-শাদী, সমাজগঠন, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন ও রাষ্ট্র পরিচালনা এসব ক্ষেত্রে আমরা ইসলামের বিধান সঠিকভাবে পালন করি না। এটাই আমাদেরকে পিছিয়ে রেখেছে।
রমাযান বিদায় নিল, তাই বলে কি মু’মিনের আমল ভরা দিনগুলো শেষ হয়ে গেল? না, মু’মিনের আমল তো কোন দিন শেষ হওয়ার নয়। মু’মিনের কর্তব্য হল, নিয়মিত আমল করে যাওয়া। মহান আলস্নাহ বলেন-
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتّٰى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ
মৃত্যু আসা পর্যমত্ম তোমার প্রতিপালকের ইবাদাত করতে থাক। (হিজর- ৯৯)
মহানবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়াসালস্নাম বলেছেন, আলস্নাহর নিকট সেই আমল সবচেয়ে অধিক পছন্দনীয় যা নিয়মিত পালন করা হয়; যদিও তা পরিমাণে কম হয়। (সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৪; সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৬)
রোযার মাস বিদায় নিয়েছে; কিন্তু রোযা বিদায় নেয়নি। যেহেতু রমাযানের রোযা ছাড়াও অন্যান্য সুন্নাত ও নফল রোযা রয়েছে।
তারাবীর নামাযের মাস চলে গেল; কিন্তু নফল নামায ও কিয়াম কেবল রোযার মাসেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং মু’মিনের প্রত্যেক রাতের একটি অংশ তাহাজ্জুদের জন্য খাস হওয়া উচিত।
কোনো নেক আমল আলস্নাহর দরবারে কবুল হওয়ার অন্যতম লক্ষণ এই যে, আমলকারী পুনরায় অন্যান্য সৎকর্ম করে থাকে। সুতরাং রমাযানের পর অন্যান্য নেক আমল করতে থাকলে রোযা ও তারাবীহ মহান আলস্নাহর দরবারে কবুল হয়েছে বলে বুঝা যাবে ।
তাই আসুন! আমরা জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বদা ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলি, সাহাবাদের ঈমানের মত আমাদের ঈমানকেও মযবুত করি- এটাই হোক রমাযান মাসে আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
অতএব হে মুসলিম ভাই-বোনেরা! আপনারা আরামের নিদ্রা থেকে জেগে উঠুন। সফরের জন্য কিছু পথের সম্বল সংগ্রহ করে নিন। আলস্নাহর দিকে ফিরে আসুন, হয়তবা তাঁর সাড়া পাবেন। তাঁর রহমত পেয়ে সৌভাগ্যবান হবেন। আলস্নাহর ভয়ে, জাহান্নামের ভয়ে চোখের পানি ফেলে রমাযান মাসকে বিদায় জানান। কারণ আমরা জানি না আগামী বছর আবার সেই প্রিয়তমের সাথে সাক্ষাত হবে কি না? আবার ফরয রোযা পালন করার ও তারাবীর নামায পড়ার সুযোগ হবে কি না?
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।