hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাদের রোযা কবুল হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৬
রোযা ও আত্মসংযম
 রোযার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অন্যতম সুফল হল রোযা মানুষের মধ্যে আত্মসংযম তৈরী করে। মানুষের নাফস বা প্রবৃত্তি তিন প্রকার :

১. নাফ্সে আম্মারাহ : এটি সর্বদা মানুষকে মন্দ কাজের দিকে প্রেরণা দেয়। সূরা ইউসুফের ৫৩ নং আয়াতে এর উলেস্নখ আছে ।

২. নাফ্সে লাওয়ামাহ : এ নাফসের অধিকারী মানুষ খারাপ কাজ করে ফেলে; কিন্তু পরে যখন তার বিবেক সজাগ হয় তখন সে নিজেকে তিরস্কার করে। সূরা কিয়ামার ২ নং আয়াতে এর উলেস্নখ আছে।

৩. নাফ্সে মুতমাইন্নাহ : প্রশামত্ম আত্মা, নাফসের উপর চেষ্টা সাধনা করতে করতে যখন এমন সত্মরে পেঁŠছে যায় যে, তার মধ্যে মন্দ কাজের কোন স্পৃহা থাকে না, গোনাহের কাজে ভয় পায় আর ভাল কাজে খুশী হয় তখন তাকে নাফসে মুতমাইন্নাহ বলা হয়। এ আত্মাকে বলা হবে-

يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ - ارْجِعِيْ إِلٰى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً - فَادْخُلِيْ فِيْ عِبَادِيْ - وَادْخُلِيْ جَنَّتِيْ

‘‘হে প্রশামত্ম আত্মা! তুমি সমত্মুষ্ট এবং সমেত্মাষভাজন হয়ে তোমার প্রভুর দিকে চল। অতঃপর আমার (নেক) বান্দাদের অমত্মর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং প্রবেশ কর আমার জান্নাতে।’’ (সূরা ফাজর : ২৭-৩০)

 মানুষের নাফস বা আত্মাকে পর্যায়ক্রমে উন্নত করতে হলে এর উপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জন করতে হয় এবং একে আলস্নাহর বিধান অনুযায়ী চালাতে হয়। এটাই হচ্ছে সংযম বা আত্মাকে সংযত করা।

 মানুষের মন হল রাজা আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ হল প্রজা, মন যা পরিকল্পনা করে শরীরের অঙ্গগুলো তা বাসত্মবায়ন করে। এই মনকে ভাল ও কল্যাণকর পরিকল্পনায় নিয়োজিত না করে যে একে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দেয়, তার অবস্থা হয়ে যায় ঐ অশ্বারোহীর মত যে তার অশ্বকে কাবু করতে পারে না, অশ্ব যেদিকে যেতে চায় তাকে নিয়ে সেদিকে চলে যায়।

 এ পৃথিবীতে মানুষের ইতিহাসে যারা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন তারা তাদের আভ্যমত্মরীণ শক্তিকে নিজেদের অধীন ও অনুগত করে নিয়েছিলেন। তারা কোন দিনই নাফসের লোভ-লালসা এবং আবেগের গোলাম হননি। তাদের ইচ্ছা-বাসনা ছিল মযবুত, সংকল্প ছিল অটল।

 মানুষের প্রকৃতিতে পরস্পর বিরোধী দু’টি ভাব সমানভাবে রেখে দেয়া হয়েছে। এর একটি হচ্ছে পশুত্ব, আর অপরটি হচ্ছে মনুষ্যত্ব। যারা পশুত্ব তথা নাফসের দাবী-দাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রেখে আত্মার উন্নতি সাধন করতে পারেন তারাই সফলতা অর্জন করতে পারেন।

 ইসলাম নাফ্সের দাবীগুলোকে গলাটিপে হত্যা করার নির্দেশ দেয়নি। অথচ একদল লোক মানবদেহ হতে পশুত্বের উপাদানগুলোর বিলুপ্তি ঘটানোর কাজে লিপ্ত। তারা খাওয়া-দাওয়া, নিদ্রা ও যৌন চাহিদা- মানবপ্রকৃতির এ দাবীগুলোকে একেবারে শেষ করতে চান। তারা সাধু, সন্ন্যাসী, সেন্ট ও দরবেশরূপে পৃথিবীবাসীর নিকট পরিচিত।

 আরেক দল পশুত্বকে জীবনের চরম সার্থকতা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আহার, নিদ্রা, যৌনসংযোগ ও আরাম-আয়েশ এগুলোকেই তারা জীবনের মূল লক্ষ্যে পরিণত করেছেন। কিন্তু আসল সত্য এ দুয়ের মাঝখানে রয়েছে। আর তা হল- মনের চাহিদাগুলোকে সমূলে ধ্বংস করা যাবে না, আবার মন যা চায় তাই করা যাবে না; বরং মনের চাহিদাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আলস্নাহ ও তাঁর রাসূলের শিখানো পন্থায় পূরণ করতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা।

 মানুষের প্রকৃতিতে যৌন চাহিদা রয়েছে। এটাকে মূলোৎপাটন করে খাসি হয়ে যেতে ইসলাম বলেনি। আবার লাগামহীনভাবে যে যার সাথে ইচ্ছা মিলিত হবে এটাকেও সমর্থন করেনি। ইসলাম কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে মাত্র। ছেলে বা মেয়ে যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখন একে অপরকে পছন্দ করে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এ চাহিদা মিটাবে। এতে একদিকে যেমন মনের চাহিদা মিটবে অন্যদিকে পরিবারের ভিত্তি স্থাপিত হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্থায়ী বন্ধনের ফলে ভালবাসা গাঢ় হবে। সমত্মান প্রজনেমর ধারা অব্যাহত থাকবে। মাতৃত্ব, পিতৃত্ব ও বংশের মর্যাদা রক্ষা হবে। এ বিধানকে উপেক্ষা করে যারা যিনা-ব্যভিচারকে লাইসেন্স দিয়ে অবাধে হালাল করে দিয়েছে তাদের চারিত্রিক, পারিবারিক ও সামাজিক পরিস্থিতির কী যে অবনতি ঘটেছে তা ব্যাখ্যা দিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন বসত্মুবাদী দেশগুলোর দিকে নজর দিলেই সেই দৃশ্য ফুটে উঠবে।

 মানুষের প্রকৃতিতে পেটের ক্ষুধা রয়েছে, সময় হলে বাঁচার জন্য খেতেই হয়। এছাড়াও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা রয়েছে যা পূরণ করতে হলে টাকা-পয়সার দরকার হয়। তাই উপার্জন করতে হবে। এখন ইসলাম উপার্জনের সকল পথ বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে বলেনি; বরং আরো উৎসাহ দিয়েছে। উপার্জনকারীকে আলস্নাহর বন্ধু বলা হয়েছে। ইসলাম উপার্জনের কিছু অবৈধ পন্থাকে নিষিদ্ধ করেছে মাত্র। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি এগুলো যদি হালাল হয়ে যায় তাহলে তো কারও জান-মালের কোন নিরাপত্তাই থাকবে না। সুদ, ঘুষ, ওজনে কম দেয়া, ব্যবসায় প্রতারণা, চাঁদাবাজী, দুর্নীতি, হাইজ্যাক ইত্যাদির কারণে সমাজে আজ কত অশামিত্মকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তা সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। মানুষ নাফস বা কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হওয়ার কারণেই এমনটি হচ্ছে।

 রোযা মানুষের মনের চাহিদাগুলো মেটানোর ক্ষেত্রে খুবই সুন্দরভাবে আত্মসংযমের প্রশিক্ষণ দেয়। রোযা মানুষকে সম্বোধন করে বলে যে, দেখো! তুমি রোযা থাকার কারণে সারাটি দিন তোমার জন্য খাওয়া-দাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রোযা থাকার কারণে হালাল খাবার পর্যমত্ম তোমার উপর হারাম হয়ে গেছে, তাহলে তুমি হারাম পন্থায় কামাই করার চিমত্মা কীভাবে করতে পার? রোযা থাকার কারণে দিনের বেলায় তোমার স্ত্রীর সাথেও যৌনমিলন হারাম হয়ে গেছে, তাহলে তুমি যিনা করার চিমত্মা কীভাবে করতে পার?

 রোযা আরো বলে যে, ফজরের আযানের সাথে সাথেই তোমাকে খানা-পিনা বন্ধ করে দিতে হবে, আবার সূর্য ডুবার সাথে সাথে খাবার খেতেই হবে, এখন খাওয়ার মধ্যেই কল্যাণ।

 রোযা আরো বলে যে, ইফতারের পরেই তুমি আরামে ঘুমাতে পারবে না; তারাবীর নামায পড়তে হবে, তবে সারা রাত নয়; মাত্র দেড়-দু’ঘন্টা। তারাবীর পরে তুমি আরামে ঘুমাও, তবে সকাল পর্যমত্ম নয়; ভোর রাতে উঠে তোমাকে সাহারী খেতে হবে এরপর আবার ফজরের নামায পড়তে হবে।

এভাবে রোযা মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এবং মানুষের জীবনকে উন্নত ও কল্যাণকর করতে সাহায্য করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন