hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদ ও আকাইদ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ, কামালুদ্দিন মোল্লা, ইকবাল হোসাইন মাসুম

১০৯
(২) কোরআনুল কারীম হিফয করা :—
কুরানুল কারীম হিফয করা, কোরআনের গুরুত্ব প্রদান এবং তদানুযায়ী আমলের আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহের দলিল বহন করে। তাছাড়া একজন মুসলমানকে দৈনন্দিন জীবনে যে কাজগুলো করতে হয় সেগুলো সুন্দর ও সার্থক ভাবে সম্পূর্ণ করতে হলে কোরআন হিফয ছাড়া উপায় নেই। কারণ তাকে সালাতে ইমামতি করতে হয়। সেখানে কোরআনের প্রয়োজন। ধর্মীয় আলোচনা করতে হয়। খুতবা দিতে হয় সেখানে কোরআন থেকে দলিল উপস্থাপনার প্রয়োজন পড়ে। বাচ্চাদের হিফয করাতে হয়—এতসব কাজ করতে গেলে কোরআন হেফয না করে কি ভাবে সম্ভব ?

তাছাড়া পৃথিবীতে হাফেযে কোরআনরাই কোরআনে কারীমের তেলাওয়াত সবচে বেশি করেন। তারা যখন হেফয করে তখন একটা আয়াত কতবার করে পড়তে হয় ? হেফয শেষ করে ইয়াদ রাখার জন্য সারা জীবন খুব করে তেলাওয়াত করতে হয়। এছাড়া একজন হাফেযে কোরআন কোরআন মুখস্থ থাকার কারণে যখন ইচ্ছা যেখানে ইচ্ছা...তেলাওয়াত করতে পারেন। যেমন সালাত, চলার পথে, গাড়িতে থাকা অবস্থায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইত্যাদি। এ সুযোগ তো হাফেয ব্যতীত অন্যরা পায় না।

এত সব কারণে কোরআন হেফয করার ফজিলত সম্পর্কে অনেক গুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

(১) কোরআন ভালভাবে হিফযকারী পূত-পবিত্র। সম্মানিত ফেরেশতাদের শ্রেণিভুক্ত। রসুলুল্লাহ সা. বলেন :—

مثل الذي يقرأ القرآن، وهو حافظ له مع السفرة الكرام البررة، مثل الذي يقرأ القرآن وهو يتعاهده، وهو عليه شديد فله أجران . رواه البخاري .

হাফেযে কোরআন যিনি সব সময় তেলাওয়াত করেন তার তুলনা লেখার কাজে নিয়োজিত পূত পবিত্র, সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে, আর যিনি কষ্ট স্বীকার করেও নিয়মিত তেলাওয়াত করেন, তার সওয়াব দ্বিগুণ। [বোখারি।]

(২) হাফেযে কোরআন সালাতে ইমামতির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য। রাসূল সা. বলেন—

يؤم الناس أقرأهم لكتاب الله . مسلم .

‘আল্লাহর কিতাব সর্বাধিক পাঠকারী অভিজ্ঞরাই লোকদের ইমামতি করবে।’ [মুসলিম ও শরীফ]

(৩) হাফেযে কোরআন হেফয করার মাধ্যমে জান্নাতের উচ্চ মাকামে আরোহণ করতে পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন—

يقال لقارئ القرآن : اقرأ وارق، ورتل كما كنت ترتل في الدنيا، فإن منزلتك عند آخر آية تقرأها . رواه أحمد والترمذي

কোরআন তেলাওয়াতকারীকে বলা হবে, পড়তে থাক এবং মর্যাদার আসনে উন্নীত হতে থাক এবং তারতীলের সাথে সুন্দর করে পড়। যেরূপ পৃথিবীতে পড়তে। নিশ্চয় তোমার মর্যাদার আসন হবে তোমার পঠিত আয়াতের শেষ প্রান্তে। [আহমদ, তিরমিজি।]

এ হাদিসে তেলাওয়াতকারী বলতে হাফেযকে বুঝানো হয়েছে। এ দাবির সমর্থনে দু’টি যুক্তি পেশ করা যায়।

(ক) তাকে বলা হবে— إقرأ অর্থাৎ তুমি পড়। অথচ সেখানে কোন মাসহাফ থাকবে না। (যে দেখে দেখে পড়বে)

(খ) এখানে একটি তুলনা মূলক বিশেষ সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি মাসহাফ থেকে দেখে দেখে তেলাওয়াত করাকেও শামিল করা হয় তাহলে এখানে তার বিশেষত্ব রইল কোথায় ? কারণ তখন তো সকল মানুষই এ মর্যাদার অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। সুতরাং এখানে হাফেযে কোরআনই উদ্দেশ্য। তেলাওয়াতকারী হাফেয তার হেফযকৃত অংশ তেলাওয়াত করে এক পর্যায়ে শেষ করে বিরতি দেয় ও থামে। এ ভাবে তার মর্যাদার আসন ও তেলাওয়াত করে সমাপ্তকৃত আয়াতের শেষ প্রান্তে।

(৪) হাফেযে কোরআনকে সম্মানের মুকুট ও মর্যাদার পোশাক পরানো হবে। এবং মহান আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন :—

يجيئ القرآن يوم القيامة فيقولون يا رب حله، فيلبس تاج الكرامة، فيقول : يارب زده فيلبس حلة الكرامة، ثم يقول : يارب ارض عنه، فيقال : اقرأ وارق ويزاد بكل حرف حسنة . رواه الترمذي .

কিয়ামতের দিবসে কোরআন এসে বলবে হে আমার প্রতিপালক : একে (হাফেয) পোশাক পরিধান করাও। তখন মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। এর পর বলবে হে মালিক, আরো পরাও। তখন তাকে সম্মানের পোশাক পরানো হবে। অত:পর (কোরআন) বলবে : হে পরওয়ারদেগার, তুমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাও। তখন বলা হবে : পড়তে থাক এবং মর্যাদার ধাপে উন্নীত হতে থাক এবং তাকে প্রত্যেক অক্ষরের বিনিময়ে নেকি বাড়িয়ে দেয়া হবে। [তিরমিজি শরীফ]

(৫) কোরআন মজিদ হেফয করা মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার উৎকৃষ্ট ও পবিত্র আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং প্রশংসিত ঈর্ষণীয় ক্ষেত্র বা বস্ত্ত। নবী সা. বলেন—

لاحسد إلا في اثنتين : رجل آتاه الله القرآن، فهو يقوم آناء الليل وآناء النهار، ورجل آتاه الله مالا، فهو ينفقه آناء الليل وآناء النهار . متفق عليه .

একমাত্র দুই ব্যক্তির উপর ঈর্ষা করা যায়। এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তাআলা কোরআনের ইলম দান করেছেন, সে দিবা রাত্রি ঐ কোরআন.তেলাওয়াতে ব্যস্ত থাকে। দ্বিতীয় সে ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তাআলা ধন-সম্পদ দান করেছেন। সে তা দিনরাত (বৈধ কাজে) খরচ করে। [বোখারি, মুসলিম]

হাদিসে বর্ণিত হাসাদ (হিংসা) এর অর্থ এখানে গিবতাহ। (ঈর্ষা) হাসাদ ও গিবতাহর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে—গিবতাহ বলা হয় :—

تمنى النعمة له مع عدم تمنى زوالها عن الغير .

অর্থাৎ অপরের নেয়ামত দেখে সেটি ধ্বংস ও নি:শেষ হয়ে যাওয়ার কামনা না করেই নিজের মধ্যে অর্জন করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করা। আর হাসাদ বলা হয়—

تمنى زوال النعمة عن الغير

অর্থাৎ কারো নেয়ামত দেখে তা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কামনা করা। এবং অন্তর জ্বালায় ভুগতে থাকা।

কোরআন হেফয করার এতসব মর্যাদা ও সম্মান ; তাই সংগত কারণেই সকল মুসলমানের উচিত হবে স্বীয় ক্ষমতা ও শক্তি অনুযায়ী কোরআন হেফয করার এ মহৎ কাজে অংশ গ্রহণ করা। পূর্ণ কোরআন না হোক অন্তত যেটুকু পারা যায় সেটুকুই হোক। একে বারে কিছু না হওয়ার চেয়ে অল্প হোক তাও ভাল। এক্ষেত্রে সর্ব প্রথম ও প্রধান আদর্শ হচ্ছেন স্বয়ং রাসূলে কারীম সা.—যিনি সর্ব প্রথম কোরআন হেফযকারী। অত:পর তার সাহাবিবৃন্দ রা. যাদের মধ্যে অনেক হাফেয ছিলেন। কেউ পূর্ণ কোরআন হেফয করেছেন আবার কেউ কিছু অংশ।

বিরে মাউনার যুদ্ধেই তাদের সত্তরজন শহীদ হয়েছেন আর নবুয়্যতের ভন্ড দাবিদার মুসাইলামাতুল কাযযাব-এর সাথে সংঘটিত ইয়ারমুক লড়াইয়ের আরো সত্তরজন।

বিশেষ করে বর্তমান যুগে হেফয করা কত সহজ হয়েছে, যা বিগত দিনে তাদের যুগে ছিল না। বর্তমানে সুন্দর সুন্দর ছাপার মাসহাফ রয়েছে বাজারে। হেফযের প্রশিক্ষকগণ অধিকহারে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন প্রতি নিয়ত। এছাড়া আরো বহু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যা কোরআন হেফয করাকে অতি সহজ করে দিয়েছে। তাই আমাদের সকলেরই এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া দরকার। এতে করে আমাদের হৃদয় আল্লাহর জিকির দ্বারা আবাদ থাকবে।

এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ বিষয়ে আমাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া এবং তাদেরকে কোরআন হেফয করানোর বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কেননা ছোটরা হেফযের ক্ষেত্রে বড় ও বয়স্কদের চেয়ে অধিক সামর্থ্যবান। প্রবাদ আছে :

الحفظ في الصغر كالنقش في الحجر .

ছোট বয়সে হেফয করা যেমন পাথর খোদাই করে চিত্রাঙ্কন করা। এ বয়সে তাদের মন মস্তিষ্ক থাকে পরিষ্কার। সময় পায় প্রচুর। অবসরে থাকে বিস্তর সময়। তা ছাড়া আমরা তাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বশীল। আল্লাহ তাআলা বলেন —

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ ﴿6﴾ ( التحريم :6)

হে মোমিনগণ ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোর স্বভাব ফেরেশতাগণ, তারা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন তা অমান্য করেন না, এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তা-ই করে। [সূরা : তাহরীম : ৬]

তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে, কোরআনুল কারীমের শিক্ষা দেয়া, এবং এটিই হেদায়াত ও হেদায়াতের উপর অটল অবিচল থাকার বড় মাধ্যম এটি এমন একটি ফলদায়ক আমল যার কার্যকারিতা মৃত্যুর পর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

কোরআন হেফয করা যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটুকু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হেফয সমাপন করার পর তা ধরে রাখার জন্য বেশি বেশি ও বার বার তেলাওয়াত করা। কেননা কোরআন স্মৃতি থেকে খুব দ্রুত হারিয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন—

تعاهدوا القرآن، فوالذي نفس محمد بيده، لهو أشد تفلتا من الإبل في عقلها . متفق عليه ,

‘তোমরা কোরআন তেলাওয়াতে খুব যত্নবান হও। কসম সে সত্তার যার হাতে মুহাম্মদের জীবন, নিশ্চয় কোরআন রশিতে বাধা উটের চেয়েও অধিক পলায়নপর। [বোখারি-মুসলিম।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন