hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের কিশতী

লেখকঃ ডঃ মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান আল উরাইফী

১৩
দুঃখ জনক পরিস্থিতি
বর্তমান যুগের মানুষদের ঈমান-আক্বীদাহ্‌ সংক্রান্ত দুঃখ জনক যে পরিস্থিতি তার সংক্ষিপ্ত চিত্র নিম্নে উল্লেখ করা হল।

মিছর: মিছরের শহর ও গ্রামে ওলীদের যে সমস্ত মাজার ও দরবার আছে তার সংখ্যা প্রায় ৬০০০ (ছয় হাজার)। এ সমস্ত স্থান হল, মুরীদ ও ভক্তদের জন্য উরূস উদ্‌যাপনের কেন্দ্রবিন্দু। সারা বছরের মধ্যে এমন কোন দিন খুঁজে পাওয়া কঠিন যখন মিছরের কোন না কোন স্থানে কোন না কোন ওলীর উরূস হচ্ছে না। বরং যদি এমন কোন গ্রাম পাওয়া যায় যেখানে কোন মাজার বা দরবার নেই, তবে মনে করা হয় সেখানকার গ্রামবাসী বরকত মুক্ত। এ সমস্ত দরবার বা মাজার দুভাগে বিভক্ত: কতগুলো ছোট কতগুলো বড়। বিল্ডিং এবং মাজারের প্রশস্থতা যত বেশী হয়, তার সুখ্যাতি তত বেশী প্রচার প্রসার হয়, মানুষ তার কথা বলেও বেশী, আর যিয়ারতের ভিড়ও হয় সেখানে অধিক।

মিছরের কায়রোতে যে সমস্ত বড় বড় মাজার ও দরবার রয়েছে, তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, হুসাইনের মাজার, যাইনাবের মাজার, আয়েশার মাজার, সাকীনার মাজার, নাফীসার মাজার, ইমাম শাফেঈর মাজার, মুহাদ্দেছ লাইছ বিন সাওআদের মাজার।

তাছাড়া ত্বনত্বা এলাকায় বাদাভীর মাজার, দাসোক্ব এলাকায় দাসোকীর মাজার. হুমাইছারাহ্‌ গ্রামে শাযলীর মাজার...।

এ সমস্ত মাজারে নানারকম শির্ক ও বিদআতের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেমন- হুসাইনের মাজারে মানুষ হজ্জ করার উদ্দেশ্যে গমণ করে, নযর মানত এবং পশু যবেহ্‌ করার মাধ্যমে তার নৈকট্য কামনা করে। কখনো এর তওয়াফ করা হয়, রোগ মুক্তির প্রার্থনা জানানো হয়, প্রয়োজন পুরণের দরখাস্ত পেশ করা হয়...।

বাদাভীর মাজারে বছরে যে উরূস হয় তাতে প্রায় হজ্জের মতই লোকের সমাগম হয়। দেশের ভিতর-বাইরে থেকে শিয়া-সুন্নী সব ধরণের মানুষের সমাগম ঘটে। জালালুদ্দীন রূমী তার কবর ও মাজারের উপর যা লিখেছেন তা ইসলাম, ইহুদী ও খৃষ্টান তিনটি ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বর্তমানে মুসলমানদের (?) এই মূর্তীকে বলা হয় ওমহান কুতুবহ।

সিরিয়া: নির্ভরযোগ্য পর্যবেক্ষকগণ উল্লেখ করেছেন যে, সিরিয়ার দামেশক শহরেই শুধু ১৯৪টি মাজার রয়েছে। তম্মধ্যে ৪৪টি সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। বলা হয় এর মধ্যে ২৭টি কবর বিভিন্ন ছাহাবীদের। দামেশকেই একটি মাজার রয়েছে যা হযরত ইয়াহইয়া বিন যাকারিয়া (আ:)এর মাজার নামে পরিচিত। উহা মসজিদে উমুভীতে প্রতিষ্ঠিত। এ মসজিদের পার্শে ছালাহুদ্দীন আইয়্যুবী, ঈমাদুদ্দীন যানকী ও আরো অনেকের মাজার রয়েছে। মানুষ এ সমস্ত মাজার যিয়ারত করার জন্য দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে এবং এদের অসীলা করে প্রার্থনা করে।

তুর্কী: এ দেশে ৪৮১টির বেশী জামে মসজিদ আছে। এমন কোন জামে মসজিদ নেই যা মাজার থেকে মুক্ত। এগুলোর মধ্যে সুবিখ্যাত জামে মসজিদটি কুসতুনতুনিয়ায় (ইস্তাম্বুল) আবু আইয়্যুব আনছারীর (রা:)এর দিকে সম্বন্ধকৃত কবরের উপর প্রতিষ্ঠিত।

ইরাক: শুধু মাত্র বাগদাদ শহরে ১৫০এর মত জামে মসজিদ রয়েছে। মাজার নেই এমন জামে মসজিদ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ওমুছেলহ শহরে ৭৬টি বিখ্যাত মাজার রয়েছে। প্রতিটিই জামে মসজিদ সংলগ্ন। সাধারণ মসজিদ সংশ্লিষ্ট মাজার এবং আলাদাভাবে মাজার যে এসব দেশের শহর-গ্রামগুলোতে কত রয়েছে তার সংখ্যা হিসাবের বাইরে...। (দেখুন: আল্ ইন্হিরাফাত আল্ আকাদীয়্যা পৃ: ২৮৯, ২৯৪, ২৯৫)

পাকিস্তান: এদেশের বড় মাজার গুলোর মধ্যে লাহোরের আলী হিজুরী, মুলতানের বাহাউদ্দীন যাকারিয়ার মাজার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। এসমস্ত মাজারে হরদম শির্কের মহড়া চলছে। অথচ প্রতিবাদী সোচ্চার কোন কন্ঠ নেই।

ভারত: এদেশে কয়েক হাজার মাজার রয়েছে। তম্মধ্যে ১৫০টি অতি বিখ্যাত। লক্ষ লক্ষ মানুষের আনাগোনা হয়ে থাকে এসব মাজারে। এবং নানাভাবে আল্লাহর অধিকার সমূহ এখানে পদদলিত হয়। বিশেষ করে আজমীরের খাজা মাইনুদ্দীন চিশতীর মাজার সর্বাাধিক প্রসিদ্ধ। [. বাংলাদেশেও মাজারের সংখ্যা কয়েক হাজার। সেগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার সিলেটের শাহজালালের মাজার সুবিখ্যাত। যে কোন প্রয়োজন দেখা দিলে বা বিপদাপদের সম্মুখিন হলেই হাজার হাজার মানুষ ছুটে যায় এসমস্ত মাজারে এবং নযর মান্নতের মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করে। নির্বাচনে জেতার জন্য আমাদের নেতা-নেতৃরাও তাদের প্রচারাভিযান শুরু করেন এসমস্ত মাজারের বরকত (?) নিয়ে। মজার ব্যাপার হল, মানুষ মাজারের ওলীর অসীলা করেই ক্ষ্যান্ত হয় না বরং মাজার সংলগ্ন জীবজন্তুরও পূজা শুরু করে দেয়। যেমন বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারে কচ্ছপ পূজা করে, শাহজালালের মাজারে গজার মাছের পূজা করে। (হায় হতভাগ্য মুসলিম জাতি! হায় বিবেকহীন তাওহীদী জনতা!!?) এর চাইতে দুঃখের কথা হল, শাহাজালাল (র:) এর মাজার- যেখানে চবিবশ ঘন্টা শির্কের চর্চা হয়- তার এরিয়ার মধ্যে একটি কওমী মাদ্রাসা রয়েছে। যেখানে দওরায়ে হাদীছ পর্যন্ত শিক্ষা দান করা হয়। সে মাদ্রাসার ব্যয়ভার পরিচালনা করা হয় মাজারের ইনকাম থেকে!? কি আশ্চর্য শিক্ষা ব্যবস্থা! শির্ক থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে কুরআন-হাদীছ শিক্ষা দান?]

আশ্চর্যের কথা যে, এ ধরণের মাজার অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিথ্যা মাজার হয়ে থাকে, যার বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

* হুসাইন (রা:)এর কবর মিছরের কায়রোতে দাবী করা হয়। মানুষ তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য সেখানে গমণ করে, নানারকম ইবাদত সেখানে করা হয়। যেমন, তাঁর কাছে দুওআ চাওয়া, সেখানে পশু যবেহ্‌ করা, এমনকি তওয়াফও চলে।

অথচ দাবী করা হয় যে, ফিলিস্তিনের আসক্বালানহ শহরেও হুসাইনের কবর রয়েছে।

সিরিয়ার হালাবের পশ্চিমে জোশান পাহাড়ের চুঁড়ায় একটি মাজার আছে। বলা হয় এখানে হুসাইন (রা:) এর মাথা রয়েছে।

আরো চার স্থানে হুসাইন (রা:) এর মাথার সমাধি রয়েছে বলে দাবী করা হয়: ১) দামেশক ২) হানানা [ইরাকের নজফ এবং কূফার মধ্যবর্তী একটি স্থান] ৩) মদীনা মুনাওয়ারায় তাঁর মাতা ফাতিমার (রা:) কবরের সাথে। ৪) ইরাকের নজফ এলাকায় একটি কবরের কাছে যা তাঁর পিতা আলী (রা:) এর কবর বলে উল্লেখ করা হয়।

আরো দাবী করা হয় যে, ইরাকের কারবালায় হুসাইনের (রা:) কবর রয়েছে। এখানে তাঁর মাথা ফিরিয়ে নিয়ে এসে দেহের সাথে দাফন করা হয়।

এসমস্ত স্থানের কবরগুলোর অধিকাংশের মধ্যে অনুরূপ শির্ক ঘটে থাকে।

* যায়নাব বিনতে আলী (রা:) মদীনা মুনাওয়ারায় মৃত্যু বরণ করেন। তাঁকে বাক্বী গোরস্থানে দাফন করা হয়। অথচ শিআরা তার নামে দামেশকে একটি কবর তৈরী করেছে।

এমনিভাবে কায়রোতেও তার মাজারের দাবী করা হয়। অথচ ইতিহাসে এমন কোন প্রমাণ নেই যে, তিনি (যায়নাব) জীবিত বা মৃত কখনো মিছর গিয়েছেন!

* মিছরের ইসকান্দারীয়ার অধিবাসীগণ দৃঢ়ভাবে এ বিশ্বাস করে যে, আবূ দারদা (রা:) তাদের শহরে তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত মাজারের মধ্যে সমাধিস্থ রয়েছেন। অথচ বিজ্ঞজনরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, উক্ত শহরে তাঁকে কবর দেয়া হয়নি।

* এরূপই কথা হল রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)এর মেয়ে রুকাইয়া (রা:) এর কবর সম্পর্কে। যে ব্যাপারে দাবী করা হয়, এটি মিছরের কয়রোতে রযেছে। উক্ত নামে কায়রোতে এ মাজারটি প্রতিষ্ঠা করে ফাতেমী খলীফা ওআমের বি আহকামিল্লাহ্‌হর স্ত্রী। অনুরূপ কথা হল সাকীনা বিনতে হুসাইন বিন আলী (রা:) এর মাজার সম্পর্কে।

* আর একটি সুপরিচিত মাজার হল, ইরাকের নাজাফ এলাকায় হযরত আলী বিন আবূ তালিব (রা:) এর দিকে সম্বন্ধকৃত মাজার। এটি একটি মিথ্যা কবর। কেননা তিনি তৎকালীন রাজধানী কূফার রাজকীয় মহলে সমাধিস্থ হন।

* ইরাকের বছরায় ছাহাবী আবদুর রহমান বিন আউফের (রা:) নামে একটি কবর রয়েছে। অথচ নিশ্চিত কথা হল, তিনি মদীনায় মৃত্যু বরণ করেন এবং বাক্বী গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

* সিরিয়ার হালাবে ছাহাবী জাবের বিন আবদুল্লাহ্‌র (রা:) নামে একটি মাজার রয়েছে। অথচ তিনি মদীনায় মৃত্যু বরণ করেন।

* বরং সিরিয়ায় অবস্থিত দুওটি মাজার সম্পর্কে মানুষের ধারণা যে, এ দুওটি কবর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)এর দুওমেয়ে উম্মু কুলছুম এবং রুকাইয়ার (রা:)। অথচ এঁরা দুজনই হযরত ঊছমান বিন আফ্‌ফান (রা:)এর স্ত্রী ছিলেন। আর তাঁরা রাসূলের (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশাতে মদীনাতেই মৃত্যু বরণ করেন এবং বাক্বী গোরস্থানে তাঁদেরকে দাফন করা হয়।

* বিজ্ঞজনদের ঐক্যমতে আরো মিথ্যা কবরের অন্তর্গত হল, হুদ (আ:) এর নামে সম্বন্ধকৃত কবরটি। যা দামেশকের জামে মসজিদে রয়েছে। কেননা হুদ (আ:) কখনো শাম বা সিরিয়ায় গমণ করেননি। এমনিভাবে হুদ (আ:) এর নামে ইয়ামানের হাযরামাওত এলাকায়ও একটি কবর উল্লেখ করা হয়!

হাযরামওত: ইয়ামানের হাযরামওত এলাকায় একটি মাজার আছে। মানুষের ধারণা কবরটি হযরত ছালেহ্‌ (আ:) এর। অথচ তিনি হিজাযে মৃত্যু বরণ করেন। আশ্চর্যের বিষয় তাঁর নামে ফিলিস্তিনের ইয়াফা এলাকায়ও একটি মাজার রয়েছে! ওখানে (ইয়াফাতে) আইয়্যুব (আ:) এর মাজারও দাবী করা হয়।

চিন্তার বিষয় যে, পেট পূজার জন্য মানুষকে কতবড় ধোকায় ফেলা হয়েছে। ওলী এবং বুযুর্গদের নিয়ে রিতিমত ব্যবসা করা হচ্ছে। মিথ্যা এবং ধোকার ভিত্তির উপর শির্ক ও বিদআতের বিশাল বিশাল ইমারত তৈরী করা হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন