hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের কিশতী

লেখকঃ ডঃ মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান আল উরাইফী

৪৩
একটি গুরুতর অপরাধ
নিশ্চয় একটি বড় গুণাহ্‌ এবং গুরুতর অপরাধ হল ছালাত পরিত্যাগ করা। ছালাত পরিত্যাগকারীগণ শয়তানের সাহায্যকারী, আল্লাহ্‌র শত্রু, মুহমিনদের বিরুদ্ধাচরণকারী এবং কাফেরদের ভাই। তাদের হাশর-নশর হবে ফেরাউন হামানের সাথে। তাদের সাথে জাহান্নামের আগুনে তাদেরকে উলট-পালট করা হবে।

জাবের (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,( إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ ) দুআ একজন ব্যক্তির মাঝে এবং কুফর ও শির্কের মধ্যে পার্থক্য হল ছালাত পরিত্যাগ করা । (মুসলিম) ইমাম তিরমিযী এবং হাকেম আবদুল্লাহ্‌ বিন শাক্বীকের বরাতে আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,

( كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الْأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلَاةِ ) দুআরাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর ছাহাবীগণ ছালাত ব্যতীত অন্য কোন আমল পরিত্যাগ করার কারণে কাউকে কাফের বলতেন না ।

শাইখ ইবনু ঊছাইমীন (র:) বলেন, দুআছালাত পরিত্যাগকারীর উপর যখন এবিধান প্রযোজ্য হবে যে সে কাফের, তখন তার উপর মুরতাদের বিধান কার্যকর করতে হবে। তার সাথে কোন মুসলিম নারীর বিবাহ বৈধ হবে না। ছালাত ত্যাগ অবস্থায় যদি বিবাহের আকদ হয়, তবে সে বিবাহ বাতিল। আর যদি বিবাহের আকদ সম্পন্ন হওয়ার পর ছালাত ত্যাগ শুরু করে, তাহলে তার বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে- উক্ত স্ত্রী তার জন্য হালাল হবে না। ছালাত পরিত্যাগকারীর যবেহকৃত প্রাণী খাওয়া যাবে না। কেননা তা হারাম। সে মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না। কোন নিকটাত্মীয় মৃত্যু বরণ করলে তার মীরাছ লাভ করবে না। তার মৃত্যু হলে গোসল, কাফন এবং জানাযা ছাড়াই দাফন করতে হবে, তবে মুসলমানদের গোরস্থানে নয়। ক্বিয়ামত দিবসে কাফেরদের সাথে তার হাশর-নশর হবে। সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তার পরিবারের কারো জন্য বৈধ নয় তার জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দুআ করা। কেননা সে কাফের। আর মৃত্যুক্ষণে ছালাত ত্যাগীর অবস্থা খুবই নিকৃষ্ট ভয়ানক ।

ইমাম ইবনুল ক্বাইয়েম জনৈক মুমূর্ষু ব্যক্তির ঘটনা উল্লেখ করেন। সে ছিল অশ্লীলতায় লিপ্ত একজন পাপাচারী এবং আল্লাহ্‌র বিধি-নিষেধকে লংঘনকারী। মৃত্যু যন্ত্রনা তার শুরু হয়েছে। তা দেখে লোকেরা ভীত হয়ে গেল। সবাই চতুর্দিকে একত্রিত হয়ে তাকে আল্লাহ্‌র কথা স্মরণ করাতে লাগল। কালেমা ওলাইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌হ বলার জন্য তালক্বীন [. অর্থাৎ- উক্ত কালেমা পড়ার জন্য তাকে অনুরোধ করা এবং তার সামনে তা বার বার উচ্চারণ করতে থাকা।] দিতে লাগল। কিন্তু সে নিজের কথা আওড়াতে থাকলো। যখন তার প্রাণ বায়ু বের হতে শুরু করেছে এমন সময় চিৎকার করে উঠল: বলল, আমি ওলাইলাহা ইল্লাল্লাহ বলব? লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌হ আমার কি উপকার করবে? আমি আল্লাহ্‌র জন্য তো কোন দিন ছালাত আদায় করিনি। তারপর সে ভয়ানক চিৎকার করে উঠল, শেষে মৃত্যু বরণ করল।

আমের বিন আবদুল্লাহ্‌ বিন যুবাইর (র:) মৃত্যু শয্যায় শায়িত। জীবনের শেষ নিঃশ্বাসগুলো গণনা করছেন। পরিবারের লোকেরা চারপাশে কান্নাকাটি করছে। তিনি যখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এমন সময় শুনতে পেলেন মুআয্‌যিন মাগরিব ছালাতের আযান দিচ্ছে। আত্মা কন্ঠনালীতে এসে পড়েছে। অবস্থা খুবই সঙ্গীন। মৃত্যুর বিপদ খুবই বড়। এমতাবস্থায় তিনি আযানের ধ্বনী শুনে চারপাশের লোকদের বলছেন, তোমরা আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে চল। তারা বলল, কোথায়? তিনি বলছেন, মসজিদের দিকে! তারা বলল আপনার এ অবস্থা তারপরও? তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ্‌! আমি আযানের ধ্বনী শুনছি; কিন্তু তার জাবাব দিব না? তোমরা আমার হাত ধর। দুহজন লোক তাঁকে মসজিদে বহণ করে নিয়ে গেল। তিনি ইমামের সাথে এক রাকাহআত ছালাত আদায় করলেন। তারপর সিজদা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলেন...।

আত্বা বিন সায়েব বলেন, আমরা আবু আবদুর রহমান আস্‌ সুলামীর নিকট আগমণ করলাম। তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিন্তু তিনি মসজিদের মধ্যে স্বীয় মুছল্লায় অবস্থান করছিলেন। দেখা গেল মৃত্যু যন্ত্রনা যেন শুরু হয়ে গেছে। আত্মা বের হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা অনুরোধ করলাম, আপনি যদি শয্যা গ্রহণ করতেন, তবে বেশী ভাল হত। তিনি নিজ আত্মার উপর ছবর করে বললেন, উমুক ব্যক্তি আমার কাছে হাদীছ বর্ণনা করেছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

( لاَ يَزَالُ أحَدُكُمْ فِيْ الصَّلاَةِ ماَ داَمَ فِيْ مُصَلاَّهُ يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ )

দুআতোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত স্বীয় মুছল্লায় উপবিষ্ট থেকে ছালাতের অপেক্ষা করবে, সে ছালাত অবস্থাতেই রয়েছে বলে গণ্য হবে । (বুখারী ও মুসলিম, ভাষ্য মুসলিমের) তাই আমি চাই এ অবস্থায় আমার রূহ কবজ করা হোক যে, আমি মসজিদে বসে ছালাতের অপেক্ষা করছি।

তাই তো যে ব্যক্তি ছালাত আদায় করেছে, নিজ মাওলার আনুগত্য ধৈর্য সহকারে পালন করেছে। তাঁর রেযামন্দীর সাথেই তার অন্তিম মুহূর্ত অতিবাহিত হয়েছে।

সাহদ বিন মুহআয (রা:) একনিষ্ঠ সৎ ব্যক্তি ছিলেন। ছিলেন ইবাদত গুজার ও পরহেজগার। রাতে তিনি পরিচিত ছিলেন শেষরাতের ক্রন্দনকারী হিসেবে। দিনে পরিচিত ছিলেন ছালাত-ছিয়াম এবং ইস্তেগ্‌ফারকারী হিসেবে। বানু কুরায়যার যুদ্ধে তিনি আহত হন। অসুস্থ থাকেন বেশ কিছু দিন। অবশেষে মৃত্যু নেমে আসে তাঁর জীবনে। যখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে খবর পেলেন, সাথীদেরকে বললেন, চল ওখানে। জাবের (রা:) বলেন, তিনি বের হলেন আমরাও তাঁর সাথে বের হলাম। তিনি এত দ্রুত চলতে লাগলেন যেন আমাদের জুতার ফিতা ছিড়ে যাচ্ছে, গায়ের চাদর পড়ে যাচ্ছে। সাথীগণ এ দ্রুততা দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তিনি বললেন, আমি আশংকা করছি আমাদের আগেই হয়তো ফেরেস্তারা পৌঁছে গিয়ে সাহদকে গোসল দিতে শুরু করবে। যেমনটি হানযালার বেলায় হয়েছিল। শেষে তিনি সা'দের গৃহে পৌঁছে দেখেন তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর বন্ধুরা তাঁকে গোসল দিচ্ছেন এবং তাঁর মাতা ক্রন্দন করছেন। তখন রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ( كُلُّ باَكِيَةٍ تَكْذِبُ إلاَّ أمُّ سَعَدٍ ) দুআসা'দের মাতা ব্যতীত সকল ক্রন্দনকারীনী মিথ্যা ক্রন্দন করে । তারপর সাহদকে নিয়ে যাওয়া হল কবরে। রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে শেষ বিদায় দিতে চললেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সা'দের চাইতে হালকা কোন লাশ আমরা কখনো বহণ করিনি। তিনি বললেন, হালকা হবে না কেন- এত এত ফেরেস্তা নাযিল হয়েছে যারা ইতপূর্বে কোন দিন নাযিল হয়নি- ওরা তোমাদের সাথে সা'দের লাশ বহণ করছে। শপথ সেই সত্বার যার হাতে আমার প্রাণ! ফেরেস্তাগণ সা'দের রূহ পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন এবং তাঁর মরণে আল্লাহ্‌র আরশ কেঁপে উঠেছে।

إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ عَنْهَا حِوَلًا

দুআনিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎআমল করেছে তাদের বাসস্থান হল জান্নাতুল ফিরদাউস। তারা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে, সেখান থেকে অন্য কোথাও যেতে চাইবে না । (সূরা কাহাফ- ১০৭/১০৮)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন