মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দেখুন! মানুষের বিবেক নিয়ে শয়তান কিভাবে খেলা করে। এমনকি আসমান-যমীনের স্রষ্টার ইবাদত থেকে মানুষের ইবাদত, মৃতের তাওযীম.. বরং প্রাণী এবং জড়বস্তুর তাওযীমের দিকে আহ্বান করে।
কখনো একটি মিথ্যা কবর প্রতিষ্ঠা করে তার প্রচার করা হয়। মানুষের কাছে তার কারামতের কথা নানাভাবে উল্লেখ করা হয়। যাতে করে এ দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা লাভবান হতে পারে। শেষ পর্যন্ত মানুষ তা বাস্তব মনে করে। অত:পর শুরু হয় শির্কের খেলা। তওয়াফ হয়, দুওআ চাওয়া হয়, নযর-মানত হয়... অন্যান্য কবরে যা হয় এখানেও তাই। চাই উক্ত কবর যার নামে প্রচার করা হয় তা সত্য হোক বা মিথ্যা।
জনৈক ব্যক্তি আমার কাছে শায়খ বরকতের এরকমই একটি কিচ্ছা উল্লেখ করেছে। ঘটনাটির সূচনা হয় দুওজন যুবকের দ্বারা। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আদেল ও সাঈদ। পড়াশোনা শেষ করে একটি গ্রামে তারা স্কুলের শিক্ষকতা কর্মে নিয়োজিত। গ্রামটিতে কবর ও মাজার খুব বেশী। মানুষ ওগুলোর তাওযীম করে, নাযর-নিয়ায পেশ করে, উরূস করে...।
স্কুলে যেতে হয় বাসে চড়ে। একদিন বাসের উপর আদেল ও সাঈদ পারস্পরিক কথাবার্তায় লিপ্ত। এমন সময় জনৈক বৃদ্ধ বাসে উঠে ভিক্ষা চাইতে লাগল। গায়ে তার হাজার তালির পোষাক। তাও ময়লা মাখা। বয়সের ভারে কাঁপছে। দেখে মনে হচ্ছে অর্ধ পাগল, মুখের লালা বারবার মুছে ফেলছে হাতের আস্তিনে। গাড়িতে চড়ে সে যাত্রীদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে, তাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে, দাবী করছে তার দুআ সর্বদায় কবূল হয়ে থাকে, সে যদি বদ দুআ করে তবে বাস উল্টে যেতে পারে...।
সাঈদ এমন পরিবারে প্রতিপালিত হয়েছে যারা ওলী-আউলিয়া, তথা কথিত পীর-ফকীর, দরবেশ, কুতুব, আবদাল... দ্বারা প্রভাবিত। সে ভীত ও পেরেশান হয়ে সাথী আদেলকে অনুরোধ জানায় ভাই কিছু দিয়ে দাও। কেননা এ দরবেশ খুব বরকতময় লোক। সর্বদা তার দুআ কবূল হয়। হতে পারে বাস্তবিকই তার বদ দুআয় বাস উল্টে যাবে।
আদেল তার কথায় খুবই আশ্চর্য হল। বলল, হ্যাঁ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা কারামতে বিশ্বাস করে; কিন্তু নেককার ও পরহেযগার লোকদের কারামত। যারা লোক দেখানোর জন্য আমল করে না। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি কামনার্থে গোপনে সৎআমল করে। এ সমস্ত ভন্ড ও ভবঘুরে লোকদের কারামত নয়। যারা নিজেদের দ্বীন বেচে অর্থ উপার্জন করে।
সাঈদ চিৎকার করে উঠল। কি তুমি আজেবাজে কথা বলছ! এই দরবেশের কারামতের কথা ছোট-বড় সব লোকেরই জানা! একটু পরেই দেখবে তিনি এখন বাস থেকে নেমে যাবেন। আর আমরা গ্রামে পৌঁছার আগেই তিনি হেঁটেই আমাদের আগে পৌঁছে যাবেন। এটা তাঁর কারামাত। তুমি কি ওলীদের কারামাতকে অস্বীকার কর?
আদেল: আমি কখনই কারামাতের অস্বীকার করি না। আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করতে পারেন। কিন্তু এটা হতে পারে না যে, এই কারামতের দরজা দিয়ে আমাদের মধ্যে শির্ক প্রবেশ করবে- আমরা এ সমস্ত মানুষকে, মৃত ওলীদেরকে আল্লাহ্র সাথে অংশীদার মনে করব? সৃষ্টি, নির্দেশ, জগতের পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষমতা আল্লাহ্ তাদেরকে দিয়েছেন এ বিশ্বাস করব? আর তাদেরকে আমরা ভয় করব, তাদের ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করব? এটা সম্ভব নয়।
সাঈদ: তুমি কি বিশ্বাস কর না যে, শায়খ ওআহমাদ আবূ সারুদহ হজ্জে এসে আরাফাতের দিন (তুরস্কের) ইস্তাম্বুল গিয়ে নিজ পরিবারের সাথে খাদ্য খেয়ে আবার আরাফাতে ফিরে এসেছেন?
আদেল: আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। কিন্তু সাধারণ মানুষের অবান্তর কথা আর তাদের কুসংস্কারের কোন প্রতিবাদ করা যাবে না এমন তো নয়।
সাঈদ: কিন্তু এ সমস্ত কারামাতের কথা শুধু সাধারণ মানুষের মুখেই শোনা যায় না; বড় বড় আলেম ওলামাগণও এ সমস্ত মাজার ও দরবারের অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ণনা করে থাকেন! বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে এসমস্ত বিষয় ব্যাপকহারে আলোচনা হয়।
আদেল: ঠিক আছে সাঈদ, তোমার কি মত আমি যদি বাস্তবে প্রমাণ করে দিতে পারি যে, এসমস্ত মাজার ও দরবারের অধিকাংশই মিথ্যা ও কাল্পনিক? এ সব মাজারের অধিকাংশের হাক্বীকত নেই- কবর নেই, লাশ নেই, কোন ওলী নেই। কিছু মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের কারণে মানুষের কাছে তা সত্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
একথা শুনে সাঈদ ক্রোধে ফুঁসে উঠল এবং বলতে লাগল, আঊযুবিল্লাহ্! আঊযুবিল্লাহ্!
উভয়ে কিছুক্ষণ নীরব থাকল। বাস তাদেরকে নিয়ে গ্রামে প্রবেশের আগে চৌরাস্তার মোড়ে যখন পৌঁছল তখন আদেল সাঈদকে লক্ষ্য করে বলল, সাঈদ! রাস্তার এ মোড়ে কি কোন ওলীর কবর বা দরবার বা মাজার আছে?
সাঈদ: না, এটা কোন যুক্তি সংগত কথা হল না কি- একজন ওলীকে চৌরাস্তায় বা রাস্তার মোড়ে দাফন করা হবে?
আদেল: তাহলে তোমার কি মত, যদি আমরা গ্রামে প্রচার করে দেই যে, এই চৌরাস্তায় জনৈক নেক ব্যক্তির পুরাতন কবর আছে, যার চিহ্ন আজ মিটে গেছে এবং নষ্ট হয়ে গেছে? এরপর আমরা তার কারামতির কিছু ঘটনা, তার কাছে দুওআ কবূল হওয়ার কিছু গল্প মানুষের সামনে পেশ করব। দেখি মানুষ বিশ্বাস করে কি না? আমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখি মানুষ ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবে; বরং হতে পারে পরবর্তী বছর তারা এখানে একটি বিরাট মাজার বা দরবার প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে। এরপর শুরু হবে সেখানে শির্ক। অথচ এখানে শুধু মাটিই মাটি- যদি ওরা যমীনের পাতাল পর্যন্ত খনন করে তো কিছুই পাবে না।
সাঈদ: কি সব আজেবাজে কথা বলছ? তুমি কি মনে করেছো মানুষ এতই বোকা ও নির্বোধ?
আদেল: ঠিক আছে, তুমি যদি আমাকে এব্যাপারে সহযোগিতা কর এবং মত দাও তাতে তো তোমার কোন ক্ষতি নেই? নাকি তুমি ফলাফলের ব্যাপারে আশংকা করছ?
সাঈদ: না, ভয় করি না। তবে বিষয়টিতে আমি তেমন সন্তুষ্ট নই।
আদেল: বুঝা গেল তোমার মত আছে। তুমি কি মনে কর যদি আমরা যদি প্রস্তাবিত ওলীর নাম রাখি ওশায়খ বরকত?
সাঈদ: ঠিক আছে, তুমি যা চাও।
এরপর দুবন্ধু বিষয়টি খুব ধীরে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিল। এক্ষেত্রে তারা প্রথমে চায়ের স্টল সেলুন প্রভৃতি দোকান থেকে শুরু করবে। কেননা এসব স্থান থেকেই যে কোন সংবাদ দ্রুত প্রসার হয়। তারা গ্রামে পৌঁছে সলিমের সেলুনে গেল। তার সামনে ওলী-আউলিয়াদের কথা আলোচনা করার পর বলল, জনৈক নেক ওলী অনেক বছর থেকে সমাধিস্থ আছেন। অথচ আল্লাহ্র দরবারে তাঁর মর্যাদা অনেক বেশী; কিন্তু তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার লোকের সংখ্যা খুব কম।
সেলুনের নাপিত জিজ্ঞেস করল, কোথায় সে কবরটি? তারা বলল, গ্রামে প্রবেশের আগে যে চৌরাস্তা রয়েছে তার মোড়ে!
নাপিত: আল্ হামদুলিল্লাহ্। আল্লাহ্র সব তারীফ, তিনি আমাদের গ্রামে একজন ওলী দিয়ে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। আমি বহুকাল থেকে এরকম একটা আশা করছিলাম। এটা কি কোন যুক্তি সঙ্গত কথা হতে পারে- পার্শবর্তী নতুন গ্রামে নারায়নপুর মে দশ জনের বেশী ওলী-আওলিয়া আছেন- আর আমাদের গ্রামে একজনও থাকবে না?
আদেল: সলিম ভাই! ও শায়খ বরকত খুব বড় মাপের ওলী ছিলেন। আল্লাহ্র দরবারে তাঁর খুব মান-মর্যাদা ছিল।
নাপিত চিৎকার করে উঠল: শায়খ বরকত (ক্বাদ্দাসাল্লাহু সির্রাহু) সম্পর্কে আপনি এত কিছু জানেন, তারপরও চুপ রয়েছেন?
এরপর শায়খ বরকতের খবর শুষ্ক ঘাসে আগুন দেয়ার মত গ্রামের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ল। মানুষের মুখে মুখে সে কথা আলোচনা হতে লাগল। এমনকি মানুষ স্বপ্নেও তা দেখতে লাগল।
বিভিন্ন চায়ের দোকানে, মজলিসে, বাজারে, মসজিদে..ওশায়খ বরকতেরহ নানান বরকতের কথা, তার মাথার চুল কত দীর্ঘ ছিল, পাগড়ী কত লম্বা ছিল, অসংখ্য-অগণতি কারামতির কথা- আযানের সময় হওয়ার সাথে সাথে মিনার নীচে নেমে আসত... ইত্যাদি.. ইত্যাদি।
স্কুলের শিক্ষকদের মাঝেও বিষয়টি বাদ-প্রতিবাদের সাথে আলোচিত হতে লাগল। যখন সীমা ছাড়িয়ে গেল, তখন শিক্ষক সাঈদ ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে চিৎকার করে উঠল, ওহে বিবেকবানের দল! আপনারা ছাড়ুন এ সমস্ত কুসংস্কার ও অমুলক বিশ্বাসের কথা! শিক্ষকগণ সমস্বরে বলে উঠল, কুসংস্কার.. তুমি বলতে চাও এখানে শায়খ বরকত নেই?
সাঈদ: অবশ্যই নেই। এধরণের কোন কবর এখানে নেই। এটি একটি অপপ্রচার। চৌরাস্তার মোড়ে শুধু মাটি আর মাটি। না কোন শায়খ বা ওলী বা দরবার ছিল বা না আদৌ আছে।
শিক্ষকগণ যেন কেঁপে উঠলেন। একযোগে বললেন, কি বল তুমি? ওশায়খ বরকতহ সম্পর্কে এমন কথা বলার স্পর্ধা তোমার হল কিভাবে? ওশায়খ বরকতেরহ বরকতে গ্রামের পশ্চিমের নদীটি ভরাট হয়েছে। তিনিই ...।
তাদের চেঁচামেচীতে সাঈদ পেরেশান হয়ে উঠল। তারপরও সে তাদেরকে লক্ষ্য করে বলল, আপনারা নিজের বিবেক বিক্রয় করে দিবেন না। আপনারা শিক্ষিত ও বিবেকবান মানুষ। কোন কবর বা মাজার সম্পর্কে একজন এসে কিছু বলল বা স্বপ্নে শয়তান কিছু দেখালো আর তাই বিশ্বাস করে নিবেন?
এতক্ষণ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীরব ছিলেন। তিনি আলোচনায় যোগ দিলেন। বললেন, ওশায়খ বরকতেরহ গুণাগণ আছে এবং তা নিশ্চিত। তুমি কি গতকালের পত্রিকা পড়নি?
সাঈদ: আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল, পত্রিকাতেও! কি লিখা হয়েছে তাতে?
প্রধান শিক্ষক: পত্রিকা বের করে সকলের সামনে পাঠ করছেন। পত্রিকার সবচেয়ে বড় শিরনাম হচ্ছে ( اكتشاف مقام الشيخ بركات ) ওশায়খ বরকতের দরবার আবিস্কারহ। লিখা হয়েছে: দুআশায়খ বরকত (দামাত বারাকাতুহু) ১১০০ হি: সনে জম্ম গ্রহণ করেন। তিনি হযরত খালেদ বিন ওয়ালীদের (রা:) ৩৩তম অধঃস্তন সন্তান। অনেক উলামায়ে কেরামের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। যেমন উমুক.. উমুক.. উমুক..। তিনি তুর্কী সৈন্য বাহিনীর সাথে খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শরীক হয়েছেন। যুদ্ধ যখন ভীষণ আকার ধারণ করে, তিনি খৃষ্টান বাহিনী লক্ষ্য করে একটি ফুঁ মারেন। সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড় খৃষ্টান বাহিনীর উপর প্রচন্ড আঘাত হানে। ঝড় তাদেরকে উড়িয়ে নিয়ে একশ মিটার দূরে নিক্ষেপ করে। সবাই আর্তচিৎকার করতে করতে রক্তাক্ত অবস্থায় ধুলায় লুটিয়ে পড়ে...।
প্রধান শিক্ষক: এগুলো সত্য কথা। তুমি কি মনে কর এসব কথা তার বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছে? এগুলো ইতিহাস..।
সাঈদ: কিন্তু এসব দাবীর পক্ষে দলীল থাকা জরুরী। যে কোন দাবী এলেই তার বিশুদ্ধতা যাচাই করা আপনার উপর আবশ্যক। অন্যথা যে কেহ যা ইচ্ছা দাবী করতে পারে.. কবর.. ওলী-আউলিয়া, কারামাত...।
তারপর সাঈদ চিৎকার করে উঠল। আপনারা আমার সুষ্পষ্ট কথা শুনুন, শায়খ বরকত নামের এ দরবার বা মাজার একটি মিথ্যা ও অপপ্রচার মাত্র। আমি এবং স্যার আদেল মিলে এটি উদ্ভাবন করেছি। প্রকৃতপক্ষে এখানে কিছুই নেই। আমাদের উদ্দেশ্য হল, মানুষের মূর্খতা এবং ভ্রষ্টতা যাচাই করে দেখা। স্যার আদেল আপনাদের সামনে আছেন তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন!
শিক্ষকগণ আদেলের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে বললেন, এলোকও তো তোমার মত বিতর্ক পসন্দ করে। সব বিষয়ে দলীল চায়। সে তো ওলী-আউলিয়ার দুশমন।
তুমি আর আদেল যা-ই বল না কেন- আমরা বিশ্বাস করি শায়খ বরকত (দামাত বারাকাতুহু) যুগ যুগ ধরে এখানে রয়েছেন। দুনিয়ার কোন স্থান ওলী-আউলিয়া, পীর-দরবেশ, গাউছ-কুতুব থেকে খালি নয়। তোমার বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা থেকে আমরা আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় কামনা করি।
সাঈদ ও আদেল নিশ্চুপ হয়ে গেলেন। ক্লাশের বেল বেজে উঠল। সবাই নিজ নিজ শ্রেণী কক্ষে চলে গেলেন।
ওস্তাদ সাঈদ যা দেখছেন এবং শুনছেন তাতে অস্থির হয়ে উঠলেন। চিন্তা করছেন শায়খ বরকত.. কারামতী.. সম্ভব.. অসম্ভব? এটা কি সম্ভব এত লোক সবাই ভুলের মধ্যে রয়েছে? পত্রিকার রিপোর্ট মিথ্যা?
আশ্চর্যের বিষয়, এলাকার বুযুর্গ, আলেম-ওলামাগণ তো কিছু দিন আগে চৌরাস্তার মোড়ে শায়খ বরকতের নামে উরূস মোবারকও উদযাপন করলেন? কিন্তু শায়খ বরকত তো ওস্তাদ আদেলের পক্ষ থেকে বানোয়াট একটি নাম.. কিন্তু এটা কি করে সম্ভব যে, এত লোক সবাই প্রলাপ বকছে? অসম্ভব.. অসম্ভব..।
ধীরে ধীরে সাঈদের মগজে নতুন চিন্তা প্রবেশ করতে লাগল। হয়তো শায়খ বরকত আছেনই। ওস্তাদ আদেল হয়তো আগে থেকেই ব্যাপারটা জানতেন। কিন্তু মানুষকে সন্দেহে ফেলার জন্য এখন হয়তো বলছেন, আমি নিজে ওশায়খ বরকতহ নামে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছি।
সাঈদ স্যার বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তা-গবেষণা করলেন। এ থেকে বের হওয়ার জন্য শয়তান থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলেন। কিন্তু কোন কাজ হল না। তার মগজে বিষয়টি যেন ভালভাবেই স্থান পেয়েছে।
পরবর্তী দিন.. পরের দিন.. বিষয়টি নিয়ে স্কুলে আলোচনা-পর্যালোচনা হতে থাকল। তখন ছিল শিক্ষা বর্ষের শেষের দিক। বাৎসরিক ছুটি হল। শিক্ষকগণ নিজ নিজ এলাকায় ছুটি কাটাতে চলে গেলেন।
নতুন শিক্ষা বর্ষ শুরু হল। শিক্ষকগণ দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরে এসেছেন। আদেল ও সাঈদ আগের মত বাসে চড়ে গ্রামের স্কুলে যাচ্ছেন। আদেল স্যার ওশায়খ বরকতেরহ বিষয়টি বেমালুম ভুলেই গিয়েছেন। অথচ তিনিই এ ঘটনার জম্মদাতা। কিন্তু বাস যখন গ্রামের প্রবেশ পথে সেই চৌরাস্তায় পৌঁছেছে, তখন আদেল লক্ষ্য করলেন, স্যার সাঈদ যেন গুণগুণ করে কি কি দুআ যিকির পাঠ করছেন।
ওদিকে স্যার আদেল বিস্ময়ে হা হয়ে গেলেন। তিনি একি দেখছেন? চৌরাস্তার মোড়ে কত সুন্দর মাজার বানানো হয়েছে। মাজারের উপর আকাশচুম্বী বিশাল গম্বুজ ঝলমল করছে। পাশে তুর্কী স্টাইলে বানানো সুবিশাল মসজিদ।
আদেল মুচকি হেঁসে মনে মনে বলল মানুষ কত নির্বোধ! শয়তান তাদেরকে শির্কে লিপ্ত করার ক্ষেত্রে কতই না কামিয়াব হয়েছে! তিনি স্যার সাঈদকে হাঁসিতে শরীক করার উদ্দেশ্যে তার দিকে নযর দিলেন, কিন্তু একি তিনি তো দুআর জগতে ডুবে আছেন..। এক সময় তিনি চিৎকার করে বাস চালককে অনুরোধ করছেন, এখানে একটু থাম। তারপর তিনি দুহাত উঠিয়ে শায়খ বরকতের রূহের উপর ফাতিহাখানি পাঠ করলেন...। (লন্ডন থেকে প্রকাতি মাসিক আল বায়ান (আরবী) পত্রিকা)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/40/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।