মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআনের আলোকে মূসা আলাইহিস সালামের ব্যক্তিত্ব ও দা‘ওয়াহ কার্যক্রম
লেখকঃ মো: আবদুল কাদের
২২
(ঠ) পারস্পরিক কথোপকথন ও যুক্তিতর্ক খণ্ডন
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/466/22
আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অনুযায়ী মূসা আলাইহিস সালাম ফের‘আউনের নিকট দীনে হকের দা‘ওয়াত নিয়ে উপস্থিত হন এবং পারস্পারিক সংলাপ ও কথোপকথনের মাধ্যমে দা‘ওয়াত উপস্থাপন করেন। সর্বপ্রথম তিনি (মূসা) তাকে আল্লাহ একত্ববাদের স্বীকৃতিদানের আহ্বান জানান এবং সাথে সাথে নিজের রাসূল হওয়ার খবর দিলেন। কিন্তু ধূর্ত ফের‘আউন এ সম্পর্কিত আলোচনায় না যেয়ে মূসা আলাইহিস সালাম এর ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে এমন সব অভিযোগ তুলতে শুরু করে যা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিপক্ষকে দুর্বল করে ফেলে। সুচতুর প্রতিপক্ষ সাধারণতঃ যখন আসল বিষয়ের জবাব দিতে অক্ষম হয়, তখন অপরপক্ষের ব্যক্তিগত দুর্বলতা খোঁজ করে এবং বর্ণনা করে, যাতে সে লজ্জিত হয়ে যায় এং জনমনে তার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়। তাই ধূর্ত ফের‘আউন ও এ পন্থাই বেছে নেয় এবং দু‘টি বিষয় বর্ণনা করে।
এক. তুমি আমাদের গৃহে লালিত-পালিত হয়েছ এবং এখানেই যৌবনে পদার্পন করেছ। তোমার প্রতি আমাদের অনেক অনুগ্রহ রয়েছে। কাজেই, তোমার সাধ্য কি যে, আমাদের সামনে কথা বল।
দুই. তুমি একজন কিবতীকে অহেতুক হত্যা করেছ। এটা যেমন যুলুম তেমনি নিমকহারামী ও কৃতঘ্নতা। যে সম্প্রদায়ের স্নেহে লালিত-পালিত হয়েছ এবং যৌবনে পদার্পণ করেছ, তাদেরই একজনকে তুমি হত্যা করেছ।
এ সবের মাধ্যমে ফের‘আউনের উদ্দেশ্য ছিল, যুক্তি প্রমান উপস্থাপনে নৈতিকভাবে মূসা আলাইহিস সালামকে দুর্বল করে ফেলা। মূসা আলাইহিস সালাম ফের‘আউনের এসব কটুকথা এবং অমূলক অভিযোগ জনিত সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতার সমাধান প্রক্রিয়া পূর্বেই আল্লাহর নিকট হতে শিখে নিয়েছিলেন। তাই তিনি এসব অমূলক অভিযোগের জবাব দিয়ে তাকে নিরুত্তর করে ফেলেন। ফের‘আউনকে প্রতিটি কথার জবাবে তিনি রাব্বুল আ‘লামীন তথা নিখিল জাহানের পালনকর্তা আল্লাহ তা‘আলার এসব গুণ-বৈশিষ্ট্যপূর্ণ পরিচিতি উল্লেখ করেছিলেন। ফের‘আউন দেখল রব বা পালনকর্তা বলে সে ব্যতীত অন্য কোন সত্তাকে উদ্দেশ্য করা হচ্ছে আর এর মাধ্যমে মূসা (আ.) এর উদ্দেশ্য পরিষদের কাছে পরিস্ফুটিত হয়ে উঠেছে। অপরদিকে মূসা আলাইহিস সালাম এর বক্তব্য এড়িয়ে যাওয়ায় তার যে একঘেয়ে মানসিকতা ও প্রবণতা তাও উপস্থিত শ্রোতামণ্ডলির বোধগম্য হওয়া স্বাভাবিক। তাই সে নিতান্ত বাধ্য হয়েই মূসা আলাইহিস সালাম এর কথিত রাববুল আ‘লামীন সম্পর্কিত আলোচনায় ফিরে আসে। এবার সে বলল, হে মূসা! আমি ব্যতীত কি এমন কোন সত্তা আছে যাকে তুমি বিশ্ব রব বলে আখ্যায়িত করছ। এ মর্মে কুরআনে এসেছ, ‘‘হে মুসা! কে তোমাদের প্রতিপালক?’’ [আল-কুরআন, সূরা ত্ব-হা: ৪৯।] কুরআনের অন্যত্রে এসেছে ফের‘আউন কলল, জগতসমূহের প্রতিপালক আবার কি? [আল-কুরআন, সূরা আশ্-শু‘আরা: ২৩।] ‘‘তখন মুসা আলাইহিস সালাম অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে জবাব দিলেন:
‘‘তিনি বলেন, তিনি আসমানসমূহ ও যমীনের এবং এতদুভয়ের মধ্যকার সব কিছুরই রব, যদি তোমরা বিশ্বাসী হতে চাও।’’ [আল-কুরআন, সূরা আশ্-শু‘আরা: ২৪।]
এ জগতসমুহের পালনকর্তা তিনি যিনি এ দৃশ্যমান আসমান ও যমীন এবং এর মধ্যবর্তী সবকিছু মেঘ, বৃষ্টি, বায়ু, শস্যাদি, প্রাণীকুল তথা যাবতীয় জিনিস সৃষ্টি করেছেন। জ্ঞানী মাত্রই জানেন যে, এসব জিনিস আপনা আপনি সৃষ্টি হয়নি। নিশ্চয় এর একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। জ্ঞানী মাত্রই জানেন যে, এসব জিনিস আপনা আপনি সৃষ্টি হয় নি। নিশ্চয় এর একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। তিনিই হলেন আল্লাহ জগতসমুহের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। মূসা আলাইহিস সালাম এখানে আল্লাহর ক্ষমতার পরিচয় তুলে ধরেছেন। [ড. ফুয়াদ আব্দুল্লাহ ওমর, আর উনসুল জালীল ফী কিসসাতে মূসা ওয়া ফিরআউন ওয়া বনী ইসরাঈল, কুয়েত: মাকতাবাত মানার আল ইসলামীয়্যাহ, ১ম সঙস্করণ, ১৯৯৮ খৃ. পৃ. ৫৮।] উল্লেখিত বক্তব্য পেশের মধ্য দিয়ে মূসা আলাইহিস সালাম ফের‘আউনকে একথাই জানিয়ে দিলে যে, আমি যে সত্তাকে বিশ্ব রব হিসেবে দাবী করছি, তোমার মাঝে যদি নূন্যতম বিবেক বুদ্ধিও অবশিষ্ট থাকত, তাহলে তুমি নিশ্চয় তা বুঝতে পারতে। অতএব, নিজেকে রব বা পালনকর্তা দাবীর স্বপক্ষে তোমার কাছে কি কি প্রমাণ রয়েছে? আসমান যমীনের সব কিছুর রব কি তুমি? সুতরাং কিসের ভিত্তিতে তুমি এমন অমুলক দাবী করছ? ফের‘আউন দেখল, তার মিথ্যা দাবীর স্বরূপ অচিরেই পরিষদের কাছে উদঘটিত হতে চলেছে। তাই সে সভাসদকে বিভ্রান্ত করার জন্য তাদের উদ্দেশ্যে ব্যঙ্গ করে বলল,
‘‘সে কি বলছে তোমরা কি তা শুনতে পাচ্ছ না?’’ [আল-কুরআন, সূরা আশ্-শু‘আরা: ২৫।]
তার এ ব্যঙ্গোক্তির উদ্দেশ্য ছিল, উপস্থিত শ্রোতাদের চিন্তা স্রোতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা এবং মূসা আলাইহিস সালাম এর উপস্থাপিত যুক্তি-প্রমাণ ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও অমূলক সাব্যস্ত করা। কিন্তু মূসা আলাইহিস সালাম ধূর্ত ফের‘আউনের এসব কুটচালে দমবার পাত্র নন। তাই তিনি রবের পরিচয় আরো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘‘মূসা আলাইহিস সালাম বলেন, তিনিই আমাদের রব যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যথার্থ রূপ দিয়েছিল। তারপর পথ প্রদর্শন করেছেন। [আল-কুরআন, সূরা ত্বা-হা: ৫০।]
মূসা (আ) এর এ জবাব পেয়ে ফের‘আউন আরও বিব্রতকর অবস্থায় পতিত হয়। কেননা, রবের পরিচয়ে ফের‘আউন বলল, তিনিই আমাদের প্রতিপালক যিনি সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা আকৃতিদাতা ও পথপ্রদর্শক। ইবন আব্বাসের মতে, তিনি সবকিছু জোড়াজোড়া সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তাদের বিবাহ-শাদী, খানা-পিনা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। [কুরতুবী, প্রাগুক্ত, ১১শ খ-, পৃ. ২০৪।] প্রত্যেক সৃষ্টির জন্য যা উপযোগী তা-ই তিনি তাদের প্রদান করেছেন। অথচ ফের‘আউন যে সামান্য একটি মাছিরও সৃষ্টিকর্তা নয় বা যোগ্যতাও রাখে না। এটা সবাই জানে। সুতরাং মূসা আলাইহিস সালাম এর জবাবে তার সকল অমূলক দাবীর সর্বনাশ হয়েছে। এবার সে মূসা আলাইহিস সালামকে উপস্থিত জনসাধারণের সম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে বসল, ‘‘ঐ সব লোকের কি অবস্থা হবে যারা (প্রথম যুগে) অতীতে চলে গেছে।’’ [আল-কুরআন, সূরা ত্বা-হা: ৫১।]
এখানে পূর্ববর্তী বা প্রথম যুগ বলতে নূহ আলাইহিস সালাম, হূদ আলাইহিস সালাম ও সালেহ আলাইহিস সালাম এর সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়েছে, যারা মূর্তি পূজায় লিপ্ত ছিল এবং রবের ইবাদতের স্বীকৃতি দিত না। [ড. ফুয়াদ আব্দুল্লাহ ওমর, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৯।] তাহলে তাদের পরিণাম কি হবে? এ প্রশ্নে ফের‘আউনের উদ্দেশ্য ছিল, যেহেতু আগেকার প্রায় সব সম্প্রদায়ের লোকেরা দেব-দেবীর মূর্তির উপাসনা করত। তারা বর্তমান জীবিতদের পিতৃপুরুষ আর মূসা আলাইহিস সালাম মূর্তিপুজার কারণে তাদের সকলকে পথভ্রষ্ট বললে, উপস্থিত শ্রোতামণ্ডলি মূসা আলাইহিস সালামকে নিন্দা জানাবে এবং তার প্রতি সন্দেহপরায়ণ হবে। ফলে তারা মূসা আলাইহিস সালাম এর উপস্থাপিত সব যুক্তি-প্রমাণের প্রতি আস্থা হারাবে। কিন্তু মূসা আলাইহিস সালাম ফের‘আউনের ষড়যন্ত্র অনুধাবন করে ফেলেন এবং এমন বিজ্ঞজনোচিত জবাব দিলেন, যার মাধ্যমে মূল বক্তব্যও ফুটে উঠেছে এবং ফের‘আউনও বিভ্রান্তি ছড়াবার সুযোগ পায় নি। তাই তাদের পরিণাম সম্পর্কে নিজে কিছু না বলে আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করে মূসা আলাইহিস সালাম বললেন, “তাদের পরিণাম আমার পালনকর্তার কাছে লিখিত আছে। আমার পালনকর্তা ভ্রান্ত হন না এবং বিস্মৃতও হন না।’’ [আল-কুরআন, সূরা ত্বা-হা: ৫২।]
উপরোক্ত অকাট্য ও যুক্তিপূর্ণ আলোচনায় ফের‘আউন নির্বাক, আর উপস্থিত শ্রোতামণ্ডলি মূসা আলাইহিস সালাম এর উপস্থাপিত যুক্তির অকাট্যতা ও শক্তিমত্তা দেখে বিস্ময়াভিভূত হয়। সুতরাং যতই সময় যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি প্রতিকূল হচ্ছে। তাই ফের‘আউন আর আগ্রহ না বাড়িয়ে আজকের মত আলোচনায় ইতি টানে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/466/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।