মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআনের আলোকে মূসা আলাইহিস সালামের ব্যক্তিত্ব ও দা‘ওয়াহ কার্যক্রম
লেখকঃ মো: আবদুল কাদের
৫
৩. মূসা আলাইহিস সালাম-এর সমকালীন অবস্থাঃ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/466/5
মূসা আলাইহিস সালাম এর আবির্ভাবের সময় মিসরের শাসন ক্ষমতায় ফের‘আউন [ফের‘আউন কোন ব্যক্তি বিশেষের আম নয়। যে কোন মিশরীয় বাজার নামও নয় । এটি বংশীয় উপাধী কিবতী ভায়ায় এর অর্থ মহান বংশ। (দ্র.ড. মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান কুরআন পরিচিতি, (ঢাকা: খোসরোজ কিতাব মহল, ১৯৯৯ খ্রি.) , পৃ. ৯৯) এটা মিশরের শাসকবর্গের উপাধী হিসেবে খ্যাত। তার বংশক্রম নিন্মরূপ: ওয়ালিদ ইবনে মুসয়াব ইবনে মুয়াবিয়া ইবনে আবি নু‘মাযের ইবনিল হাওয়াশ ইবনে লায়ছ ইবনে হারান ববিনে আমর ইবনে আমলাক। (দ্র. ইবনুল জাওযী, আল মুনতাজাম ফি তারীখিল মুলুক ওয়াল উমাম, বৈরম্নত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ-১৯৯৫ খ্রি.), পৃ. ৩৩২।] অধিষ্ঠিত ছিল। তার নাম কাবুস ইবন মুস‘আব ইবন মুযারিফ। কারো কারো মতে, ওয়ালিদ ইবনে মুস‘আব ইবন রাইয়্যান। সে ছিল কিবতী বংশোদ্ভুত (আমালেকা গোত্রের)। তৎকালীন সময়ে মিসরে আরেক শ্রেণী লোকের আবাস ছিল যাদেরকে বনী ইসরাঈল [হযরত উয়াকুব (আ.) এর অপর নাম ইসরাঈল। তার বংশধরদেরকে বনী ইসরাঈল বলা হয়। (দ্র. ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, প্রগুক্ত, পৃ. ১০০।) ইসরাইল হিব্রু ভাষার শব্দ। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে তাদেরকে বনী ইয়াকুব সম্মোধন না করে বনী ইসরাঈল নাম ব্যবহার করেছেন। যাতে স্বয়ং নিজেদের নাম ও উপাধি থেকেই বুঝতে পারে যে, তারা আব্দুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা। মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শফী, প্রগুক্ত, পৃ.৯৭৫। বনী ইসরাঈল ছিল অত্যন্ত ন্যায়নিষ্ঠ ও ধার্মিক । জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও সাহিত্যে তারা মিসরীদের হার মেনে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হচ্ছিল। তাদের এ দ্রুত অগ্রগতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং মিসরীয়দের মনে তাদের প্রতি হিংসার বীজ তৈরী করেছিল। (দ্র. মোস্তফা সায়িদ কানিজ, কুরআনে নবীদের ইতিহাস, (কলকাতা: বানী প্রকাশ, ১৯৯০), পৃ. ৬২-৬৩।) তারা ছিল শাম দেশের বাসিন্দা। স্বদেশ যেতে তাদেরকে ফের‘আউন বাধা দিত। এভাবে চারশত বছর ধরে তারা ফেরআউনের বন্দীশালায় গোলামীর জীবন-যাপন করেছিল। অবশেষে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ছয় লাখ ত্রিশ হাজার। (মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শফী, প্রাগুক্ত, পৃ. ৯৭৫।)] নামে আখ্যায়িত করা হত। পবিত্র কুরআনে তাকে বা সত্মম্ভ অধিপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অহংকারে নিজেকে সে প্রভু বলে দাবী করত। পৃথিবীর ইতিহাসে সে আজো একজন যালিম শাসক হিসেবে পরিচিত।
ফের‘আউন নিদারুণ স্বেচ্ছাচারী ও অত্যাচারী শাসক। বনী ইসরাঈলকে সে নিদারুন জীবন যাপনে বাধ্য করেছিল। তার পূর্বেকার সব ফের‘আউন-ই বনী ইসরাঈলের উপর অত্যাচার করত। কিন্তু মূসা আলাইহিস সালাম এর সময়কার ফের‘আউনের অত্যাচারই ছিল সবচেয়ে কঠোর ও দীর্ঘমেয়াদী। সে তাদেরকে দাস-দাসী বানিয়ে রাখে এবং কঠিনতর কাজে নিয়োগ করে। এক শ্রেণীকে গৃহ নির্মাণ কাজে, এক শ্রেণীকে কৃষি কর্মে ও এক শ্রেণীকে উৎপাদন কর্মে ব্যস্ত রাখত। আর যে কোন কর্মে নিয়োজিত ছিল না, তাকে রাজস্ব কর দিতে হত। এভাবে তাদেরকে বিভিন্ন দল ও গোত্রে বিভক্ত করে। [‘আফিফ ‘আবদুল ফাত্তাহ, বৈরুত: দারুল ইলম লিল মালাঈন, ১৬শ সংস্করণ, ১৯৮৭ ১৬ পৃ. ২১৭-২১৮।]
সে তাদের দ্বারা ‘রামসিস’ ও ‘তাফায়ছুন’ নামক দু‘টি শহর নির্মাণ করে। প্রত্নতাত্বিক খননের দ্বারা উক্ত শহর দু‘টির পরিচয় পাওয়া যায়। একটির শিলালিপি হতে জানা যায় যে, একটার নাম ‘বার তুম’ অথবা ‘ফয়ছুম’ যার অর্থ ‘তুম দেবতার ঘর’ অপরটির নাম ‘রামসিস’ যার অর্থ ‘রামসিস’ প্রাসাদ’। [হিফজুর বহমান সিউহাররী, প্রাগুক্ত, ১ম খ-, পৃ. ৩৬১-৩৬২।] এতদ্ব্যতীত সে বনী ইসরাঈলকে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও অপদস্ত করতঃ তাদের ছেলেদের হত্যা করত এবং মেয়েদের জীবিত রাখত। পবিত্র কুরআন তার অত্যাচারের চিত্রটি তুলে ধরেছে। ইরশাদ হয়েছে:
‘নিশ্চয় ফের‘আউন তার দেশে ঔদ্ধত্য এবং দেশবাসীকে নানা দল-উপদল ও গোত্রে বিভক্ত করে তাদের একদলকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সে তাদের পুত্র সন্তানদের হত্যা করত এবং নারীদের জীবিত রাখতো। নিশ্চয়ই সে ছিল বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী। [আল-কুরআন, সূরা আল-কাসাস : ৪।]
এখানে বুঝানো হয়েছে যে, ফের‘আউন দাসত্বের স্থান থেকে উঠে সেচ্ছাচারী ও প্রভুর রুপ ধারণ করেছে। অধীন হয়ে থাকার পরিবর্তে প্রবল হয়ে গেছে এবং স্বৈরাচারী ও অহংকারী হয়ে যুলুম করতে শুরু করেছিল। [সাইয়েদ আবুল ‘আলা মওদুদী, তাফহীমুল কুরআন, অনু: আব্দুল মান্নান তালিব, ঢাকা: আধুনিক প্রকাশনী, ৫ম প্রকাশ, ২০০৩, ১০ম খ-, পু, ২২০-২২১।] ইবন কাছীর বলেন, ফের‘আউন যমীনে মাথা উঁচু করে ও অহংকার প্রদর্শন করে চলতো। আর দেশের অধিবাসীদের নানা দলে বিভক্ত করে রাখত এবং প্রত্যেক দলকে দিয়ে সাম্রাজ্যের যে কাজ ইচ্ছা তা করাতো। তাদের এক দলকে দুর্বল মনে করত, আর সে দলটি ছিল বনী ইসরাঈল। অথচ তারা ছিল সে সময়ের উত্তম জাতি। [ইবন কাছীর, তাফসীরূল কুরআনিল আযিম, বৈরুত: দারুল ফিকর, ১৪০ হি., ৩য় খ-, পৃ. ৩৩৪৫।] তাদেরকে যেমনি বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে রাখত, তেমনিভাবে তাদের মাঝে শত্রুতা সৃষ্টি করে রাখত, যাতে তারা ঐক্য হতে না পারে। কিবতীদের সম্মানিত আসনে সমাসীন করত এবং বনী ইসরাঈলকে লাঞ্ছিত ও অপামনিত করত। [কাজী ছানাউল্লাহ পানিপথি, আত তাফসীরূল মাযহারী, দিল্লী: নদওয়াতুল মুসান্নিফীন, তা. বি, ৭ম খ-, পৃ. ১৪৩।] মিসরে এভাবে সুদীর্ঘ ৪০০ বছর যাবৎ ফের‘আউন বনী ইসরাঈলদের উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। [মুহাম্মদ আলী আছ-ছাবুনী, আন-নবুয়ত ওয়াল আম্বিয়া, বৈরুত। মুা‘আসসাসাতুদুদিয়ান, ১৯৯৯ খৃ., পৃ. ১৮৪।]
সে এ অত্যাচার এজন্য করত যে, বনী ইসরাঈলের মধ্যে প্রচলিত একটি সুসংবাদ তাকে প্রভাবিত করেছিল, তা হল: ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর স্ত্রী সারার সাথে মিসর অধিপতি কুকর্ম করতে চেয়েছিল, যা আল্লাহর রহমতে বাস্তবায়িত হয়নি। তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, তার বংশে অতিসত্তর এমন এক সন্তান জন্ম নিবে, যার হাতে মিসরের বাদশাহর পতন হবে। এ সুসংবাদ বনী ইসরাঈলের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিল। অতঃপর কিবতীগণও এটা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে, যা মন্ত্রীবর্গের মাধ্যমে ফের‘আউনের কর্ণগোচর হয়। তাই এ শিশুর আবির্ভাবের ভয়ে সে বনী ইসরাঈলের পুত্র সন্তানদের হত্যার নির্দেশ দেয়। [ইবন কাছীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১ম খ-, প্রাগুক্ত, পৃ. ২২২] মূলতঃ ফের‘আউন বনী ইসরাঈলদের বংশ বৃদ্ধি, সুখ-স্বাচ্ছন্দে বসবাস ও মিসরীদের তুলনায় স্বতন্ত্র আবাস গ্রহণ সর্বোপরি জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাদের উন্নতির প্রতি হিংসার বশবর্তী হয়ে এবং নিজের আধিপত্য দীর্ঘমেয়াদী টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে তাদের উপর এরূপ যুলুম করত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/466/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।