মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আহমদ দীদাত রচনাবলি - ফজলে রাব্বী ও মুহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা
লেখকঃ আহমদ দীদাত
১৭
অধ্যায় নয়ঃ ভবিষ্যদ্বাণী ও সিদ্ধিলাভ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/599/17
হৃদয়স্পর্শী এই সব অলৌকিক ঘটনাসমূহের নিরিখে আমরা উপনীত হতে বাধ্য যে, কোন—মানুষই এমনকী গোটা মানবজাতি তাদের সমস্ত কমপিউটার ও ক্যালকুলেটর সহ প্রচেষ্টা চালিয়েও চরম ও পরম অলৌকিকত্ব সৃষ্টির সর্বশেষ মোযেজা এই পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন রচনা করতে সমর্থ নয়। এরপরও যদি এর পবিত্র গ্রন্থস্বত্ব নিয়ে আপনাদের এতটুকু সন্দেহের উদ্রেক হয়, তবে জিজ্ঞাসা করুন না কেন আপনাদের কপিউটারকে?
হ্যাঁ, ইতিমধ্যেই কুরআনকে বিন্যস্ত করা হয়েছে কমপিউটারে। ডক্টর রাশাদ খলিফা বিরচিত “দি পারপিচুয়্যাল মির্যাল অব মুহাম্মদ (সা)” [বইটি সংগ্রহের জন্য রশীদ খলিফার ঠিকানা হচ্ছেঃ Islamic Production 5937 Pima Street Tucson. AZ 85712 U.S.A.] পুস্তকখানির উল্লেখ করা যেতে পারে এখানে। পূর্বলিখিত সমকালীন ঘটনা বা “ঘটনাচক্র” কপিউটারে বিন্যস্ত করার এই বৈদ্যুতিক ইন্দ্রজালকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পরস্পর বন্ধনযুক্ত ১৯ সংখ্যার বুননে আল কুরআনে মত একটি মহান গ্রন্থ আকস্মিকভাবে কোন মানুষের পক্ষে রচনা করা কি আদৌ সম্ভব? কমপিউটারের জবাবঃ ৬২৬ সেপটিলিয়ন বার প্রচেষ্টা চালানোর পর হয়তো বা মাত্র একটিবারই সংঘটিত হতে পারে অনুরূপ একটি ঘটনা। বিস্ময়কর এই বিরাট অংককে সহজবোধ্য করবার জন্য এমনিভাবে সাজিয়ে নিলে অর্থাৎ ৬২৬,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০, ০০০,০০০ বার প্রচেষ্টা চালানোর পর আকস্মিভাবে সফলতা আসতে পারে মাত্র ১ বারই।
এই একই গাণিতিক ভিত্তিতে অবিরামভাবে আবিষ্কৃত হয়ে চলেছে নিত্য নতুন তথ্য; আর এমনিভাবেই “কো-ইনসিডেন্স” বা ঘটনাচক্রের বিরুদ্ধে অনবরত বেড়েই চলেছে বিতর্ক।
ঘটনাচক্রের ধারাবাহিকতা বা আকস্মিকভাবে এই পৃথিবীতে জীবন সৃষ্টির অনুক্রম, অজ্ঞেয়বাদীরা যেমনটি আমাদেরকে বিশ্বাস করাতে তৎপর, এর চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ উল্লিখিত সংখ্যাটি। বিস্তৃত এই পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব, আর টিকে থাকার জন্য এখানে পূর্বাহ্নেই প্রয়োজন এমনিই কিছু দৈব ঘটনা।
১. পৃথিবীকে অবশ্যই সাড়ে ২৩ ডিগ্রী ঝুঁকে থাকতে হবে তার অক্ষরেখার উপর।
২. পৃথিবীর চক্রাকারে আবর্তন অবশ্যই হতে হবে যথার্থ গতিবেগ সম্পন্ন।
৩. সূর্য থেকে অবশ্যই অধিক নিকটবর্তী বা অধিক দূরবর্তী হবে না পৃথিবীর দূরত্ব।
৪. চাঁদকেও অবশ্যই অবস্থান করতে হবে বর্তমান দূরত্বেই।
৫. আমাদের চতুর্দিকে পরিবেষ্টিত গ্যাসের ব্যাপ্তি অবশ্যই থাকতে হবে বর্তমান অনুপাতেই ইত্যাদি ইত্যাদি।
জীবন ধারণের জন্য সম্ভাব্য উপাদানের প্রতিটি উপাদান ঠিক যেমনিভাবে পরিবেষ্টিত করে রেখেছেন আমাদেরকে তা দৈবক্রমে সংঘটিত হতে পারে লক্ষ কোটির মধ্যে মাত্র ১টি বারই। কিন্তু কুরআনিক মোজেযার একটি মাত্র দৃষ্টিকোণ এই আকস্মিকতাকে উপস্থাপিত করেছে সেপটিলয়নে। আল্লাহর মহান এই বিস্ময়কর গ্রন্থের অন্যান্য দিকের আবিষ্কার এখনো করে যেতে হবে আমাদেরকে।
এই সর্বশেষ কুরআনিক আবিষ্কারের উদ্দেশ্যবা তাৎপর্য কী হতে পারে আমাদের নিকট-মুসলমানদের নিকট? আজকের পৃথিবীতে আমরা রয়েছি নব্বই কোটি মুসলমান কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোন কাজেই লাগতে পারিনি আমরা। আসলে আমরা গণ্য হয়ে আছি একটি তৃতীয় শ্রেণীর জাতিরূপে। ইসলামী উম্মাহর পুনর্গঠনে যদি গঠনমূলকভাবে আমাদের সমস্ত পেট্রো ডলারও কাজে লাগাই তবুও রাশিয়া, চায়না বা আমেরিকার নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে না আমাদের পক্ষে, এই মুসলমানদের পক্ষে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, পারমাণবিক পদার্থ বিজ্ঞানে এবং মহাশূন্য গবেষণায় যদি আমরা এক ধাপ এগুই তো উপরোল্লিখিত জাতিসমূহ এগিয়ে থাকবে ১০ ধাপ। তাদের নাগাল পাওয়া কখনোই সম্ভব হবে না আমাদের পক্ষে। তাই বলে হতাশাগস্ত হওয়া উচিত হবে না আমাদের, এটা সত্য; কিন্তু আমাদেরকে হতে হবে বাস্তববাদী।
তথাপি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর অভ্রান্ত, নিখুঁত ও স্বচ্ছ -সাবলীল মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর দীনকেই (দীন অর্থ ও জীবন বিধান। সাধারণতঃ ধর্ম হিসেবেই যা অনূদিত) শ্রেষ্ঠত্ব দান করবেন অন্যান্য দীনের উপর। মহান আল্লাহ্ তা'আলার ঘোষণাঃ
তিনিই পাঠিয়েছেন তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ, সকল দীনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দানের জন্য, যদিও মুশরিকগণ, অপছন্দ করে তা।
—কুরআন ৬১: ৯
এই একই অঙ্গীকার পুনরাবৃত্ত হয়েছে “সূরাতুল ফাত্হ” শরীফের ২৮ নং আয়াত শরীফে, সামান্য কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে,
...... এবং সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
পৃথিবীর হাস্যাস্পদ জাতি হিসেবে আমরা যখন পরিণত, তখন এইসব ভবিষ্যত্বাণী কার্যে পরিণত হবে কীভাবে? কীভাবে এই পৃথিবীতে প্রমাণ ও যুক্তির মাধ্যমে আমাদের দীনের ওপর নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, খৃস্টান, কমিউনিস্ট ও অন্যান্য জাতির বিশ্বাস জন্মাতে আমরা সক্ষম হবো, যখন আমাদের সমস্ত সম্পদ আমরা অযথা অপব্যয় করে চলেছি নেহায়েত বাজে কাজে? যাই হোক, আমাদের বর্তমান বিষাদময় করুণ অবস্থা সত্ত্বেও বিজয়ী আমরা হবোই। যাঁর কুদরতি হাতে রয়েছে অসীম ক্ষমতা, সেই সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহই কার্যকর করবেন এই অলৌকিক ঘটনা।
وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقّ ࣰ اۚ
..... আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য ....
—কুরআন ৪: ১২২
ইতিহাসে এটা বারবার নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে, কিভাবে আল্লাহ তাঁর পরিকল্পনাসমূহ কার্যকর করেন। ইসলামের পরশ নিয়ে অশ্লীলতার অন্ধকার থেকে মহত্ত্বের স্বর্ণশিখরে আরব জাতির আকস্মিক উত্থানের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদানে সক্ষম নয় ইতিহাসবেত্তাগণ। টমাস কার্লাইল তাঁর প্রচলিত অননুকরণীয় পন্থায় বিষয়টি বর্ণনা করেছেন এইভাবেঃ “পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে এর মরুভূমির বুকে অগোচরে ঘুরে বেড়িয়েছে একটি নিঃস্ব যাযাবর জাতিঃ (কেউ-ই তাদের প্রতি দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দেয়নি-মহামতি আলেকজান্ডার তাদেরকে লক্ষ্য করেননি, পারসীয়ানরা তাদেরকে লক্ষ্য করেনি, রোমানরা তাদেরকে লক্ষ্য করেনি। এই মুনষ্য জঞ্জাল- হবু বিজেতাদের সকলের কাছেই বিবেচিত হয়েছে একটা দারুণ দায় হিসেবে) “একজন মহান পয়গম্বরকে পাঠানো হয়েছিল এমন একটি বাণী দিয়ে যা তারা বিশ্বাস করতে পারতো? লক্ষ্য করুন, অনাদৃত জাতি হলো আদৃত, অখ্যাত পরিণত হলো পৃথিবী খ্যাত জাতি হিসেবে; এর পর মাত্র একটি শতাব্দীর মধ্যে আরব হলো একদিকে গ্রানাডা আর অন্যদিকে পরিণত হলো দিল্লীতে; - শৌর্যে অত্যুৎকর্ষ আর প্রতিভার দীপ্তিতে ভাস্বর জজিরাতুল আরব পৃথিবীর এক বিরাট অংশ জুড়ে অনেকদিন পর্যন্ত রইলো আলোকোজ্জ্বল। ...... এই আরব জাতি, মানুষ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এবং একটা মহান শতাব্দী; যেন মনে হয়, পতিত হয়েছিল একটা স্ফুলিঙ্গ পৃথিবীর অনাদৃত অন্ধকারাচ্ছন্ন মরুভূমির বুকে পতিত হয়েছিল একটা অত্যুজ্জ্বল আলো। আর দেখুন, মরুভূমির সেই বালুকণা বিস্ফোরক পাউডার হিসেবে প্রমাণিত হয়ে আকাশচুম্বী তার আলোকচ্ছটা প্রসারিত করলো দিল্লী থেকে গ্রানাডা পর্যন্ত। এগুলো তো হলো বন্ধুভাবাপন্ন সমালোচকের উক্তি, কিন্তু এগুলোকেই তুলনা করুন বিদ্বেষপূর্ণ একজন ইহুদীর উক্তির সাথে, চিকিৎসাশাস্ত্র রচনায় যিনি তাঁর সেমিটিক জ্ঞাতিভাইকে তীব্র বিদ্রুপাত্মক খোচায় জর্জরিত করেছেন “উটচালক ও ছাগপালক বসেছে সীজারের সিংহাসনে।” কি নিগূঢ় সত্য ঘটনা বিবৃত হয়েছে ঘৃণমূলে। সেমিটিকদের প্রায় সকলেই ফিনিসীয়রা ইউরোপে গিয়েছিল বণিক হিসেবে, ইহুদীরা গিয়েছিল বন্দী হিসেবে, কেবল মাত্র আরবীয়রাই ইউরোপে গমন করেছিল রাজা হিসেবে।
এইভাবে আল্লাহ তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন অতীতে এবং তিনি অতি সহজেই পারেন সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। স্মরণ করুন মঙ্গোলিয়াদের কথা, কিভাবে ইসলাম বশীভূত করেছে ইসলামী সাম্রাজ্য বিজেতাদের? প্রারম্ভিক বর্বরোচিত প্রচণ্ড আক্রমণের পর শতাব্দী ধরে ইসলামের যোগ্য রক্ষক ও ধারক হয়ে থাকার জন্য তারা পরিণত হয়েছে ইসলামের একনিষ্ঠ সেবকে।
দয়াময় আল্লাহ তার প্রচণ্ড কুদরতী শক্তিবলে একটি জাতিকে মুহূর্তের মধ্যে অবনতির অতল গহবর থেকে গৌরবময় অবস্থানে উন্নীত করতে পারেন, সেই সব দৃষ্টান্তে ইতিহাস ভরপুর। অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য তাঁর অনন্ত কুদরতী শক্তির প্রতি লক্ষ্য করুন। আজকের বৃহৎ শক্তিবর্গের হাতে, তাদের আনবিক অস্ত্র তাদের মহাশূন্য ক্ষেপণাস্ত্র, তাদের সুবৃহৎ মুদ্রাযন্ত্র ও সাংগঠনিক নৈপুণ্য এবং তাদের সকল প্রকার গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ দ্বারা যদি তাঁর দীনকে তিনি ন্যস্ত করতে চান, তাহলে এতে বিস্ময়ের কিছুই থাকবে না। কিন্তু জীবন যুদ্ধে পরাজিত, দুর্বল, অক্ষম ও অবহেলিত জনগোষ্ঠি দ্বারা যদি পৃথিবীর ক্ষমতাশালী, উদ্ধত শাসকবর্গকে তিনি পরাভূত করতে চান, তবে অবশ্যই সেটা হবে একটা অলৌকিক ঘটনা।
সংগ্রামে বিশ্বমানবতাকে জয় করার জন্য আমাদের মুসলমানদের রয়েছে বিশেষ কিছু সুবিধা, সেই সুবিধা বন্দুক বা ডিনামাইটের সুবিধা নয়, সে সুবিধা বুদ্ধি দীপ্ত অস্ত্রের সুবিধা। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে দিয়েছেন কর্তৃত্ব। আমাদের তিনি দিয়েছেন একটি জীবন বিধান; অতপর আমাদেরকে আর কারুর কাছেই হাত পাততে হবে না। মানব জাতির প্রতিটি সমস্যারই সমাধান রয়েছে ইসলামে। প্রথমে, বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত সমর্থন আদায় করতে হবে অবিশ্বাসীদের কাছ থেকে, তাহলে আপনা-আপনিই আসবে অবশিষ্টাংশ - যেমন করে রাত্রির পরে আসে দিন। আমাদের প্রতিপক্ষের কাছে প্রমাণ করতে হবে আল-কুরআন “আল্লাহরই অমোঘ বাণী”। নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে হবে, এর অলৌকিক পদবিন্যাস, যা কেবল মাত্র রচনা করতে সক্ষম সর্বশক্তিমান, সর্বদর্শী এক মহান সত্তা।
এক হাতে আল কুরআন আর অন্য হাতে তর্কবিজ্ঞান নিয়ে অবিশ্বাসীদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোই হবে আমাদের বড় কর্তব্য। মানবজাতির হৃদয় ও মন জয় করবার জন্য আসুন আমরা সামনে এগিয়ে যাই।
ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِیلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ
.... তুমি আহবান কর (সবাইকে) তোমার প্রতিপালকের পক্ষে জ্ঞান দ্বারা ...
এবং জ্ঞানের দাবি এটাই যে, একটা সম্প্রদায়ের কাছে তাদের মানসিক পটভূমিকা ও অভিজ্ঞতার প্রতি লক্ষ্য রেখেই রাখা উচিত আমাদের বক্তব্য। আমরা এখন বাস করছি কমপিউটার যুগে। এই ঈন্দ্রজালিক জন্তুটি ছাড়া আমাদের সব অগ্রগতিই হয়ে পড়বে অচল। আমাদের বিমানসংস্থা, আমাদের ব্যাংকের কারবার, আমাদের টেলিফোন সংস্থা হয়ে পড়বে সম্পূর্ণ বিকল এই ভৃত্যটি ব্যতিরেকে, যে-ভৃত্য রূপান্তরিত হয়েছে প্রভুতে। মাত্র একদিনের জন্য যদি আমেরিকার টেলিফোনগুলো কমপিউটারহীন করা হতো, তবে ১৮ থেকে ৪৫ বছরের প্রতিটি মহিলাকে নিয়োগ করতে হতো এই একটি মাত্র সেবা-প্রতিষ্ঠানকে চালু রাখতে। এবং হস্তকৃত সরঞ্জামের আর কোন অস্তিত্বই থাকত না।
প্রত্যেকেই, সে এই কপিউটার দেখুক আর নাই দেখুক, এই যন্ত্রটির বিস্ময়করতা সম্বন্ধে শুধু জ্ঞাত আছে, তার-ই জীবন প্রভাবান্বিত হবে এর দ্বারা। এবং আশ্চর্যজনকভাবে সব সময়ই এটা প্রদান করে সঠিক উত্তর, হোক না তা খ্রিস্টান কিংবা অন্য ধর্মাবলম্বী অধিকৃত। আপনি যদি কপিউটারকে জিজ্ঞেস করেন, এমনকি আপনার নিজের পূর্ব ধারণা নিয়েও জিজ্ঞেস করেন, “এক যোগ এক যোগ এক” কত হয়? সব সবই নির্ভুল উত্তর আসবে “তিন”। রোমান ক্যাথলিক স্বত্বাধিকারী কপিউটারকে আপনি যদি প্রশ্ন করেন God the father, God the son এবং God the Holy Ghost কতজন God বা ঈশ্বর? একটু লজ্জিত বা দ্বিধান্বিত না হয়ে সঙ্গে সঙ্গে এটা উত্তর দেবে “তিন”। এতটুকুও অনুভূতি বা সহানুভূতি লক্ষিত হবে না এর মালিকের প্রতি যিনি উত্তর প্রত্যাশা করেন “এক”।
পৃথিবীর শিক্ষিত জনগোষ্ঠির কাছে বক্তব্য রাখুন এমন ভাষায়, যে ভাষা তারা বুঝতে পারেনঃ যথার্থ বিজ্ঞানের ভাষা- গাণিতিক ভাষায় তাদেরকে আহবান করুন। আল কুরআন এর অত্যাশ্চর্য অবিচ্ছেদ্য গাণিতিক বন্ধনের বৈশিষ্ট্য ও অলৌকিকত্ব প্রদর্শন করুন তাদের সামনে দেখিয়ে দিন সব রকম মানবিক অন্যায় হস্তক্ষেপ থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ কিভাবে রক্ষা করেছেন তাঁর মহা গ্রন্থ আল- কুরআনকে এবং চ্যালেঞ্জ করুন মহান গ্রন্থকার আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেঃ
বল, যদি এই কুরআনের অনুরূপ আনয়নের জন্য মানুষের ও জ্বিন সমবেত হয়, এবং তারা পরস্পরকে সাহায্য করে, তবুও তারা এর অনুরূপ আনয়ন করতে পারবে না।
— কুরআন-১৭: ৮৮
কুরআনুল করীমের আধুনিক তথ্যানুসন্ধানের মাধ্যমে আমরা পেতে পারি নিম্নলিখিত ৫টি ফলাফলঃ
১. ইসলামের বিরুদ্ধাবাদীদের অন্তরে এটা সৃষ্টি করবে মহা আতংক।
২. এটা যে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করবে জুলস মেসারম্যান বা মাইকেল হার্ট-এর মত যথার্থ ইহুদী ও খৃস্টানদের মনে, যারা ইসলাম সম্বন্ধে অনুকূল ধারণা পোষণ করে, মুহাম্মদ (সা)-এর প্রত্যাদেশের উৎস হলো সর্বশক্তিমান আল্লাহ্, এবং আল-কুরআন আল্লাহরই অমোঘ বাণী, যা সংরক্ষিত রয়েছে যথার্থ অবস্থায়।
৩. এটা আরও দৃঢ় ও শক্তিশালী করবে মুসলমানদের বিশ্বাস, যারা ইতিমধ্যেই কুরআনুল করীমকে করেছে আল্লাহরই কালাম বা বাণী বলে।
৪. মুসলমানদের, এবং এই পবিত্র গ্রন্থের অনুসারীদের সর্বপ্রকার দীর্ঘস্থায়ী সন্দেহ দূর করবে এটা।
৫. এবং অবশেষে এটা উন্মোচিত করবে সেই সব হতভাগ্য ধর্মান্ধ ভণ্ডদের, যারা স্বেচ্ছায় প্রত্যাখ্যান করেছে তার পথনির্দেশ; আর সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তাদেরই জন্য নির্ধারিত করে রেখেছেন নিকৃষ্টতম গন্তব্যস্থল-জাহান্নাম।
উপসংহারে, আমার বিনীত প্রার্থনা এটাই যে, পরম করুণাময় আল্লাহ তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট করুণা বর্ষণ করুন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের উপর এবং মুসলমানদের অনুপ্রাণিত করুন তাঁর কৃপা ও শ্রদ্ধা অর্জনে, যা তিনি প্রদান করেছেন সবাইকে- যারা কৃতজ্ঞতাভরে একাত্মতার সাথে করছে তার ইবাদত।
আমিন!
( وَسَیَجۡزِی ٱللَّهُ ٱلشَّـٰكِرِینَ )
কিন্তু আল্লাহ শীঘ্রই পুরস্কৃত করবেন কৃতজ্ঞদেরকে।
– কুরআন ৩: ১৪৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/599/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।