hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহমদ দীদাত রচনাবলি - ফজলে রাব্বী ও মুহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা

লেখকঃ আহমদ দীদাত

অধ্যায় পাঁচঃ আল্লাহর গুণাবলি অসাধারণ
অসীম শক্তিশালী আল্লাহ তাআলা সর্বগুণের আধার। তাঁর গুণাবলি ও ব্যক্তিত্ব অসাধারণ। তাঁকে কোন প্রকার কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। তিনি অতুলনীয়, আমাদের কল্পনায় যা কিছু সম্ভব তার কোন কিছুর সঙ্গেই তিনি তুলনীয় নন। সূরা ইখলাসের শেষ আয়াতে আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তার মতো কেউ নেই। তার মতো কাউকে কল্পনা করা যায় না। তাহলে আমরা তাকে কিভাবে জানব। তার গুণাবলির মাধ্যমে আমরা তাকে অনুধাবন করব।

আল্লাহর সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত প্রত্যাদেশ অর্থাৎ পবিত্র কুরআনে আল্লাহর ৯৯টি নাম বা গুণাবলি দেওয়া আছে। এর সবার শীর্ষে যে নাম সেই নামটি হচ্ছে আল্লাহ্। এই ৯৯টি গুণ বা নামকে বলা হয় আসমাউল হুসনা। সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নামগুলো পবিত্র কুরআনে সর্বত্র ছড়ানো ছিটানো রয়েছে। যেন একটা মুক্তার হার, সঙ্গে একটা লকেট। লকেটটিই হচ্ছে আল্লাহ। এই মুক্তার হারের অংশ বিশেষ নিচে দেওয়া গেল।

( هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِی لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَـٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَیۡمِنُ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ۝ هُوَ ٱللَّهُ ٱلۡخَـٰلِقُ ٱلۡبَارِئُ ٱلۡمُصَوِّرُۖ لَهُ ٱلۡأَسۡمَاۤءُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ یُسَبِّحُ لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ  ٰ⁠ تِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ )

তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত, উহারা যাহাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তাহা হইতে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তাঁরই। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

—কুরআন ৫৯: ২৩-২৪

আসমাউল হুসনা – সকল উত্তম নাম তাঁরই

উপরের দুই আয়াতে ১৩টি নাম রয়েছে। এগুলো পবিত্র কুরআনে সর্বত্র বিভিন্নভাবে ছড়ানো আছে। ইসলামের চরম শত্রুও স্বীকার করতে বাধ্য হবে যে এগুলো অসাধারণ সুন্দর, এমনকি অনুবাদ করলেও সেগুলো সুন্দর। মূল আরবিতে এই শব্দগু লোও তার গঠন প্রকৃতি অতুলনীয় ও লালিত্যে মহত্তম।

একজন উম্মি, অশিক্ষিত ব্যক্তি যিনি জীবনে কোনদিন কারো কাছে লেখাপড়া শেখেননি এবং যিনি এক অশিক্ষিত জাতির মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন তার পক্ষে ১৪০০ বছর আগে আল্লাহ র আনন্দ উচ্ছল সুরধ্বনিময় বক্তব্য তৈরি করা কি সম্ভব ছিল। আমাদের মনে রাখতে হবে সে যুগে এমন বিশ্বকোষ বা জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ ছিল না, যা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম দেখতে পারতেন তাহলে কোথা থেকে তিনি ধর্মতত্ত্বের এমন ধনভাণ্ডার পেলেন? তিনি বলেন, “এই সব কিছুই আল্লাহ্ কর্তৃক অনুপ্রেরণার মাধ্যমে আমাকে প্রদত্ত হয়েছে।” এর ব্যাখ্যা কি?

একটা পরীক্ষা করা যেতে পারে, আমাদের জ্ঞানী বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী যিনি তাকে বলা হোক – আল্লাহর কিছু গুণ তিনি আমাদের জন্য তৈরি করে দিন আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি এই ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক ও ঈশ্বর তত্ত্বের বিশেষজ্ঞ তার অধীত জ্ঞানের সাহায্যে বারটি শব্দ সৃষ্টি করতে পারবেন না। তখন ইহলৌকিক জ্ঞানে, জ্ঞানবান বলবেন, “দেখুন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম একজন প্রতিভাধর ব্যক্তি ছিলেন। যে কোন প্রতিভাধর আমাদের চাইতে দশ গুণ পারদর্শিতা প্রদর্শন করতে পারেন। ” আমরা তখন বলি এ কথা সত্য একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি আমাদের চেয়ে দশ গুণ পারদর্শিতা দেখাতে পারেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ৯৯টি গুণবাচক শব্দ দিয়েছেন। কিন্তু সবচেয়ে অলৌকিক ও ঐশ্বরিক কাজ করেছেন যে তিনি তার তালিকায় ‘পিতা' শব্দটি রাখেননি। এটি সর্বাপেক্ষা অলৌকিক।

স্বর্গের পিতা

মানুষের তৈরি তালিকায় যে কোন রচয়িতা প্রথম আধা ডজন গুণবাচক শব্দ লিখতে গিয়েই ‘পিতা’ শব্দটি উচ্চারণ না করে পারবেন না। অলৌকিক বিষয় যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর তালিকায় সেই একটি শব্দ ব্যতীত ৯৯টি শব্দ রয়েছে। ঈশ্বরের গুণবাচক একটি বিশেষ শব্দ “পিতা” তার নবীজীবনের ২৩ বছর ধরে সম্মুখে ছিল। তিনি এই শব্দটিকে পরিহার করেছেন। জ্ঞানত অথবা নিজেরই অজান্তে তিনি এই শব্দটিকে তার শব্দভাণ্ডার হতে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। কারণ এ শব্দটি ইসলামের বাইরে।

প্রশ্ন উঠতে পারে, “খ্রিস্টানদের প্রভু বন্দনা কেমন?” তা অবশ্য ঠিকই। তারা আমাকে এ বন্দনাটি পাঠ করতে বলল। আমি পাঠ করলামঃ

“হে আমাদের পিতা, যার অবস্থান স্বর্গে, নাম আলোকিত হোক, হে আমাদের পিতা, তোমার রাজ্য আসুক, আমাদের নাও। আমাদের এই পৃথিবীকে তোমার রাজ্য বানাও।”

খ্রিস্টানরা প্রশ্ন করতে পারে যে এই প্রার্থনায় দূষণীয় কি রয়েছে? আমি বলব, না, দূষণীয় কিছুই নেই। কিন্তু মুসলমানরা কেন এই শব্দটি সম্পর্কে স্পর্শকাতর? কেন? আমি আমার প্রতিপক্ষের প্রতি কোন একচোখা দৃষ্টি দিয়ে দেখি না। আমাদের স্বীকার করতেই হবে। খ্রিস্টানদের প্রার্থনা সঙ্গীত অত্যন্ত সুন্দর; কিন্তু সেখানে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ঐ প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের শিশুরা ঈশ্বরের বিভিন্ন নাম জানবে না। তার নাম কি? বাইবেলের নতুন নিয়ম গ্রন্থে ২৭টি পুস্তকের কোথাও ঈশ্বরের নাম নেই। তার পরিবর্তে বলা হয়েছে “পিতা” কিন্তু পিতা তো কোন নাম নয়। একটি গুণের প্রকাশ মাত্র যার অর্থ প্রভু, ঈশ্বর, স্রষ্টা, জন্মদাতা। যেমন ‘হে স্বর্গের পিতা, প্রিয় পিতা’ ইত্যাদি। মুসলমানগণ এই অর্থ আরোপে আপত্তি করবে, কারণ পিতার যে অর্থ দ্যোতনা কখনোই বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। এজন্যই পিতা অর্থ আরোপ করা আমরা পছন্দ করি না।

খ্রিস্ট ধর্মমতে এই সহজ সাধারণ ‘পিতা’ শব্দটি নতুন অর্থ লাভ করেছে। খ্রিস্টান ধর্মমতে তার একটি অবৈধ পুত্র রয়েছে যিশু। তাদের Catechism নামক একটি ধর্মীয় গ্রন্থে বলা হয়েছে যিশু প্রকৃত ঈশ্বরের প্রকৃত ঈশ্বর। পিতা হতে জন্ম, এই জন্ম মানে জৈবিকভাবে জন্ম নয়, ছাড়া নয়, যদি অন্য কোন অর্থ থাকে তাহলে এর অর্থটি কী? অবশ্যই এর কিছু অর্থ আছে। পবিত্র বাইবেল অনুসারে ঈশ্বরের অনেক পুত্র যেমন আদম, ইসরাইল, ইবরাহীম, দাউদ, সোলায়মান ইত্যাদি কিন্তু এগুলো রূপক —আল্লাহ সর্বশক্তিমান। স্রষ্টা এবং পালক হিসাবে সকল প্রাণী ও মানব জাতির রূপক পিতা। তিনি নিজে নিজে জন্মলাভ করেছেন। তাকে তৈরি করা হয়নি। ইসলামে এই ধরনের উচ্চারণ অসম্ভব। আল্লাহর গুণাবলির মধ্যে পশু-চরিত্র প্রদান করা, নিম্নশ্রেণীর পশুর যৌন ক্ষমতা প্রদান করা চরম ঘৃণিত কাজ।

অর্থের পরিবর্তন

প্রথমে ঈশ্বরের পরিবর্তে পিতা শব্দটি ব্যবহার কোন দূষণীয় ছিল না; কিন্তু সময়ে শব্দের অর্থ পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ দুটি শব্দ দেওয়া গেল যেমন কমরেড ও গে। এক সময় কমরেড শব্দের সাদামাটা অর্থ ছিল বন্ধু কিন্তু সেই শব্দটি আমেরিকায় মারাত্মকভাবে ঘৃণার বস্তুতে পরিণত হয়েছে কমরেড অর্থ কমিউনিস্ট। যুক্তরাষ্ট্রে তোমার বন্ধু যদি ভুল করে তোমাকে কমরেড বলে আহবান করে তাহলে তোমার চাকুরী শেষ। গে শব্দের অর্থ ছিল হাসি-খুশি, আনন্দ উচ্ছল ব্যক্তি। বর্তমানে এই শব্দটি অতি জঘন্য নোংরা অর্থে, সমকামী অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। তেমনি “পিতার” একমাত্র জন্মদান এই বিশ্বাস অন্যরূপভাবে “পিতা” শব্দটিকে সংক্রমিত করেছে।

রব অথবা আব্ব?

অসীম ক্ষমতাশালী আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে ঈশ্বরের স্থলে “পিতা” শব্দটি ধর্মীয় শব্দাবলির বাইরে রেখে, ইসলাম এবং মুসলমানদের রক্ষা করেছেন। এ এক অলৌকিক ঘটনা যে, পবিত্র কুরআনে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। তার মধ্যে আছে “রব” যার অর্থ প্রভু, পালনকর্তা, লালনকর্তা ইত্যাদি। এই ‘রব’ শব্দটি প্রায় এক ডজন বার উচ্চারিত হয়েছে কিন্তু আরবি ও হিব্রু ভাষায় পিতা অর্থ “আব্ব” এ সহজ শব্দটি একবারও ব্যবহৃত হয়নি। এর ফলে মুসলমানরা ধর্মের প্রতি অশ্লীল বা কটু বক্তব্য জন্ম প্রাপ্ত পুত্র এই কথা হতে রক্ষা পেয়েছে। এই শুভ কর্মটির দায়িত্ব আমরা কাকে দেব, আল্লাহকে না মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে? মহানবী সব সময় এই প্রকার কৃতিত্বকে অস্বীকার করে বলেছেন এই সকল শব্দ তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে উচ্চারণ করেছেন, এগুলো তার শব্দ নয়, এগুলো আল্লাহর শব্দ, যেমন ভাবে তাকে দেওয়া হয়েছিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন