মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আহমদ দীদাত রচনাবলি - ফজলে রাব্বী ও মুহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা
লেখকঃ আহমদ দীদাত
২২
অধ্যায় পাঁচঃ ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবায়ন
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/599/22
পরন্তু তিনি, সত্যের আত্মা, যখন আসবেন তখন পথ দেখিয়ে তোমাদেরকে সমস্ত সত্য নিয়ে যাবেন
— যোহন (১৬: ১৩)
ক্ষণকালের জন্য শরণার্থী
খ্রিস্টানরা ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে থাকে। হযরত মুহাম্মদ (সা) তাদের পুরাতন ও নতুন নিয়ম বাইবেলের অনেক ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত করেছিলেন। তাদের নিকট ভবিষ্যৎ ঘটনার বর্ণনা প্রকৃত পয়গম্বরের কাজ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
ইসলামের পয়গম্বর অনেক ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারণ করেছেন যেগুলি কুরআন শরীফে বিধৃত আছে। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হল।
১। যিনি তোমার জন্য কুরআনকে করেছেন বিধান তিনি তোমাকে অবশ্যই ফিরিয়ে আনবেন প্রত্যাবর্তন স্থানে।
—কুরআন ২৮: ৮৫
এখানে প্রত্যাবর্তন স্থানে বলতে মক্কা শরীফকে বোঝানো হয়েছে। যখন হয়তো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় গমন করেন সেই সময়কে হিজরত বলা হয়। তখন সময়টি ছিল ভীষণ খারাপ। তার অধিকাংশ অনুসারী মদীনায় চলে গিয়েছে। এবার তার যাবার পালা। হযরত আবু বকর (রা)-কে সঙ্গে নিয়ে যুহফা নামক স্থানে যখন পৌঁছলেন তখন আল্লাহর তরফ থেকে এই সান্ত্বনা দেওয়া হলো যে তিনি আবার তার জন্মস্থান মক্কা শরীফে প্রত্যাবর্তন করবেন এবং তাই তিনি করেছিলেন।
তিনি শরণার্থী হিসেবে গিয়েছিলেন এবং আল্লাহ তাঁকে বিজয়ীরূপে ফিরিয়ে আনলেন। এখানে উপরের ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হয়েছিল।
“And he (Moses) said, The Lord came from Sinai. and rose from Seir unto therm; he shined forth from mount Paran (that is in Arabia), and he (Muhammed) came with ten thousand Saints* from his right hand went a fiery law for them" - (Deuteronomy 33: 2)
তিনি (মূসা) কহিলেন, সদাপ্রভু সীনয় হতে আসলেন, সেয়ীর হতে তাদের প্রতি উদিত হলেন, পারন পর্বত (আরব দেশে) হতে আপন তেজ প্রকাশ করলেন, অযুত অযুত পবিত্রের (সাহাবা) নিকট হতে এলেন তাদের জন্য তাঁর দক্ষিণ হস্তে অগ্নিময় ব্যবস্থা ছিল। দ্বিতীয় বিবরণ – ৩৩: ২
২। রোমকগণ পরাজিত হয়েছে নিকটবর্তী স্থলে, কিন্তু তারা তাদের এই পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে কয়েক বছরের মধ্যে। পূর্বের ও পরের সিদ্ধান্ত আল্লাহরই। আর সে দিন মুমিনগণ হর্ষোফুল্ল হবে।
— কুরআন ৩০: ২-৪
৬১৫/১৬ খ্রিস্টাব্দে রাসূলুল্লাহর নিকট উপরোক্ত ভবিষ্যদ্বাণী প্রত্যাদেশ হিসাবে নাযিল হয়েছিল। রোমের খ্রিস্টান সাম্রাজ্য পারস্যের জেরুজালেম হারিয়েছিল। এবং তারা ধূলায় অবনমিত হয়েছিল। সেকালের বৃহৎ শক্তি ধ্বংসযজ্ঞে মক্কার মুশরিকরা পৌত্তলিক পারসিক কর্তৃক রোমানদের পরাজয়ে বিশেষ আনন্দ অনুভব করেছিল।
পৌত্তলিক আরবরা স্বাভাবিকভাবেই পৌত্তলিক ইরানীদের সহমর্মী ছিল এবং তাদের ধ্বংসাত্মক কাজে তারা আনন্দ অনুভব করেছিল- ভেবেছিল রোমের খ্রিস্টান শক্তির পরাজয় অর্থ রাসূলের বাণীর পরাজয়। অর্থাৎ ঈসা (আ)-এর প্রকৃত উত্তরসূরীর বাণীর পরাজয়। .... যখন সমগ্র বিশ্ব মনে করেছিল পারস্য কর্তৃক রোম সাম্রাজ্য পরাজিত হয়েছে তখন তার নিকট পরিদৃষ্ট হয়েছিল যে পারস্যের এই বিজয় স্বল্প ক্ষণস্থায়ী। এবং অল্প কয়েক বছরের মধ্যে রোমকরা আবার জয়ী হবে এবং পারস্যকে চরম আঘাত হানবে। - আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলী
মাত্র দশ বছরের মাথায় এই ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হয়েছিল।
কুরআন শরীফের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী আহবান
৩। রাসূলুল্লাহ (সা) দাবি করেছিলেন যে পবিত্র কুরআন আল্লাহর নিকট হতে নাযিল হয়েছে এবং তার নিকট এই পবিত্র কুরআন এসেছে। এর ঐশ্বরিক রচনার প্রমাণ রয়েছে এর সৌন্দর্যে, এর প্রকৃতিতে এবং এই পবিত্র কুরআন যে পরিবেশে প্রচারিত হয়েছে তার মধ্যে। তিনি তার দাবির সত্যপরায়ণতা প্রমাণের জন্য আমাদের সম্মুখে অনেক সূরা উপস্থাপন করেছেন। অবিশ্বাসীরা কী অনুরূপ গ্রন্থ তৈরি করতে পারে? এই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের আহবান আজও বর্তমান রয়েছে। এই মহা গ্রন্থে যে-কোন অধ্যায়ের সফল প্রতিদ্বন্দ্বী অথবা সমমানের অথবা উৎকৃষ্টতর রচনা নির্মাণে মানব জাতির অক্ষমতা সম্পর্কে এক চিরকালীন ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে।
আপনি যদি বলেন, “আমি আরবি জানি না”-একথা অর্থহীন কারণ বর্তমানে লক্ষ লক্ষ আরব খ্রিস্টান রয়েছে তারা গর্ব করে বলে একমাত্র মিসরেই কমপক্ষে দশ থেকে পনের মিলিয়ন কপটিক খ্রিস্টান রয়েছে। তারা কেউ ফেল্লাহীন নয়। (আরব দেশীয় কৃষক মজুর) এখানে আল্লাহর নিজের ভাষায়, পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের বিপক্ষে, যে আহবান জানিয়েছে, তা দেওয়া গেলঃ
খ) বল, যদি এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তারা এর অনুরূপ আনয়ন করতে পারবে না। - কুরআন ১৭: ৮৮
গ) তারা কি বলে, “সে এটি রচনা করেছে?” বল, তবে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরাই আনয়ন কর। এবং আল্লাহ ব্যতীত অপর যাকে পার আহবান কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। -কুরআন ১০: ৩৮
ঘ) আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকলে তোমরা তার অনুরূপ কোন সূরা আনয়ন কর এবং তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান কর। যদি তোমরা আনয়ন না কর এবং কখনই করতে পারবে না, তবে সেই আগুনকে ভয় কর মানুষ এবং পাথর হবে যার ইন্ধন, কাফেরদের জন্য যা প্রস্তুত রয়েছে। – কুরআন ২: ২৩-২৪
উপরোক্ত দাবি আজ হতে ১৪শ বছর পূর্বে করা হয়েছে; কিন্তু মানব জাতি আজ অবধি তার চেয়ে উৎকৃষ্ট অথবা অনুরূপ বা সমমানের কোন কিছু তৈরি করতে পারেনি। কুরআন শরীফের ঐশ্বরিক উৎস সম্পর্কে এটাই চিরস্থায়ী প্রমাণ।
আরব খ্রিস্টানদের প্রচেষ্টা
মধ্যপ্রাচ্যের আরব খ্রিস্টানগণ এক ষোলসালা প্রকল্প হাতে নিয়ে নতুন নিয়ম আরবি বাইবেলের কিছু নির্বাচিত অংশ তৈরি করেছে, সেখানে আরবি কুরআন শরীফের হুবহু শব্দ ও বাক্যাংশ ধার করে তারা সেটি করেছে। এটি তাদের এক নির্লজ্জ চোরামির এক নিচতম প্রচেষ্টা। এই নতুন আরবি বাইবেলের প্রতিটি অধ্যায়ের প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম (দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে) বসানো হয়েছে। সেটাকে তো পরাস্ত করতে পারলে না?
কুরআন ও হাদীসের আরও অনেক ভবিষ্যদ্বাণী ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আহ্বান রয়েছে। সেইগুলি আরও বর্ণনার সাহায্যে অর্থ পরিষ্কার করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রটি আজও অবহেলিত রয়েছে। সম্ভবত বহু গ্রন্থ এই বিষয়ে রচনা করা সম্ভব। আমি বিশ্বাস করি মুসলিম পণ্ডিতগণ এই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। কালামে পাক থেকে আর একটি মাত্র ভবিষ্যদ্বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিষয়টির সমাপ্তি টানছি।
ঙ) তিনি তার রাসূলকে প্রেরণ করেছেন হিদায়ত ও সত্য দীনসহ সকল দীনের উপর তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দানের জন্য যদিও মুশরিকগণ তা অপছন্দ করে। —কুরআন ৬১: ৯
কয়েক দশকের মধ্যে উপরোক্ত ভবিষ্যদ্বাণী প্রমাণিত হয়েছিল। ইসলাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। সেকালের দুইটি বৃহৎ শক্তি পারস্য ও রোম মুসলমানদের নিকট পরাভূত হল এবং কয়েক শতাব্দী জুড়ে ইসলাম আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত সগৌরবে মাথা উঁচু করে রইল।
দুর্ভাগ্য, আজ মুসলমানরা কর্মতৎপরতাহীন অবস্থার মধ্যে পতিত হয়ে রয়েছে। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। বিশ্ব ইসলাম আবার জেগে উঠছে। আশা আছে। এমনকি পশ্চিমের অমুসলিম ভবিষ্যৎ দ্রষ্টারা বলছেন যে এর ভাগ্য আকাশচুম্বী।
“আফ্রিকার মহাদেশ সকল ধর্মের জন্য এক খোলা মাঠ। কিন্তু আফ্রিকাবাসীরা সেই ধর্ম গ্রহণ করবে যা তাদের জন্য উপযুক্ত। যে ধর্মে সকলের কথা বলার অধিকার রয়েছে, সেই ধর্ম ইসলাম যা তাদের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।” (H.G. Wells)
“আগামী একশত বছরের মধ্যে যদি কোন ধর্মের পক্ষে ইংল্যাণ্ড জয়ের সম্ভাবনা থাকে, তবে সেই ধর্ম ইসলাম।”—জর্জ বার্নাড ‘শ
মুসলমানদের কোন প্রকার সত্যিকারের প্রচেষ্টা ছাড়াই বর্তমান বিশ্বে ইসলাম ধর্ম সর্বাপেক্ষা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। এ কথা পশ্চিমারাই বলে থাকেন। আশা করি এই সুসংবাদ লাভের পর আমরা যেন ঘুমিয়ে না পড়ি। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য হতে বাধ্য। আমরা সেখানে পৌঁছবই। তবে সেই জন্য আমাদের মুসলমানদের সামান্য প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আল্লাহর ইচ্ছায় সবই পরিবর্তিত হতে পারে। তার ইচ্ছায় জাতি ধর্ম সবই বদলে যেতে পারে। কিন্তু তিনি আমাদেরকে তার ধর্ম (দীন)-কে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। সেই জন্য কিছু করার সুযোগ দিয়েছেন। এই যুদ্ধের উপযুক্ত সৈনিক হতে হলে যোহন ১৬: ৭ একাধিক ভাষায় মুখস্থ করে নিন, দেখবেন আল্লাহ আপনাকে জ্ঞানদান করবেন। প্রভুত্ব করাই আমাদের ভাগ্য। সম ইজমকে অতিক্রম করুন। অবিশ্বাসীরা ইসলামের বাণী শুনতে যতই ঘৃণা বা অনিচ্ছা প্রকাশ করুক না কেন আপনি আপনার কাজ করতে থাকুন।
ঈসা (আ)-কে মহিমান্বিত করা
তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন; কেননা যা আমার, তাই নিয়েই তোমাদেরকে জানাবেন।
—যোহন ১৬: ১৩
যাকে আমি পিতার নিকট হতে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব, সত্যের সেই আত্মা, যিনি পিতার নিকট হতে বড় হয়ে আসেন। যখন সেই সহায় আসবেন তিনিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন।”
— যোহন (১৫: ২৬)
এই প্রতিশ্রুতি সহায় অথবা এমনকি আত্মা যার মধ্যে সত্যের মূর্ত প্রকাশ ঘটেছে তিনি যখন আসবেন তখন তিনি মসীহর সততা সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবেন এবং তার শত্রুদের প্রদত্ত চরিত্র হননকারী মিথ্যাকে খণ্ডন করবেন।
এই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আল আমিন, সত্যের পয়গম্বর অনতিবিলম্বে সক্ষম হয়েছিলেন ঐ কাজগুলি করতে। তিনি সম্ভব করেছেন যে জন্য আজ কোটি কোটি মুসলমান বিশ্বাস করে যে যীশু খ্রিস্ট আল্লাহর একজন প্রধান রাসূল। তারা বিশ্বাস করে তিনি মসীহ, তারা বিশ্বাস করে যে তার জন্ম অলৌকিকভাবে হয়েছিল। অথচ বর্তমানের অনেক আধুনিক খ্রিস্টান ও এমনকি পাদ্রীরাও সেটা বিশ্বাস করতে চায় না। তাছাড়া মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে তিনি অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, এমনকি আল্লাহর ইচ্ছায় মৃতকে জীবিত করেছেন। অন্ধকে দৃষ্টিদান করেছেন এবং কুষ্ঠ রোগাক্রান্তকে রোগমুক্ত করেছেন। কী অসাধারণ শক্তিশালী সাক্ষ্য। কুমারী মেরীকে তার গর্ভে যীশু খ্রিস্ট জন্মগ্রহণ করাবেন বলে যে বার্তা জিব্রাইল (আ) তাকে জ্ঞাপন করেছিলেন তার কাহিনী আরও হৃদয় মন্থনকারী ভাষায় শোনা যেতে পারে।
অলৌকিক গর্ভ ধারণ
“বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লেখিত মরিয়মের কথা, যখন সে তার পরিবারবর্গ হতে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্ব দিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল।
অতঃপর তাদের হতে নিজকে আড়াল করবার জন্য সে পর্দা করল। অতঃ পর আমি তার নিকট আমার রূহকে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।
মরিয়ম বলল, তুমি যদি আল্লাহকে ভয় কর তবে আমি তোমা হতে দয়াময়ের শরণ নিচ্ছি।
সে বলল, আমি তো কেবল তোমার প্রতিপালক -প্রেরিত, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করবার জন্য। মরিয়ম বলল, “কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণী নই?
সে বলল, এরূপ হবে। তোমার প্রতিপালক বলেছেন, এটি আমার জন্য সহজসাধ্য এবং আমি তাকে এজন্য সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন ও আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ; এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।
তৎপর সে গর্ভে তাকে ধারণ করল। অতঃপর তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল।
—কুরআন ১৯: ১৬
বর্তমান বিশ্বে এক বিলিয়ন মুসলমান রাসূলের নির্দেশে ঈসা (আ)-এর অলৌকিক জন্ম বিশ্বাস করেন। ঈসা (আ) তার মা মেরী এবং সমস্ত খ্রিস্টান জগত এই জন্য আল-আমিন (আ) প্রতিকী তথা সত্যের আত্মাকে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিতে পারে না।
ঈসা (আ)-এর প্রতি ইহুদীদের প্রতিক্রিয়া
হা ইয়ারূশালেম, ইয়ারূশালেম, তুমি ভাববাদীগণকে বধ করে থাক, ও তোমার নিকটে যারা প্রেরিত হয় তাদেরকে পাথর মেরে থাক, কুকুটি যেমন আপন শাবকদেরকে পক্ষের নিকট একত্র করে তদ্রুপ আমিও কতবার তোমার সন্তানদেরকে একত্র করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু তোমরা সম্মত হলে না।
– মথি ২৩: ৩৭
এই মহান পয়গম্বর আল্লাহর রাসূল ইহুদীদের পিছনে যেমন মুরগী তার ছানার পিছনে ছুটে বেড়ায় তেমনি ছুটেছিলেন কিন্তু তারা শকুনের মত তাকে ছিন্ন ছিন্ন করতে চেয়েছিল। ক্রমাগত নিষ্ঠুর আচরণ ও অত্যাচার করেও সন্তুষ্ট না হয়ে তারা তার জীবনের উপর আক্রমণ করেছিল। তারা তার মাকে পাপী বলে দোষারোপ করেছিল।
এবং তারা লানতগ্রস্ত হয়েছিল তাদের কুফরীর জন্য এবং মরিয়মের বিরুদ্ধে গুরুতর অপবাদের জন্য।
—কুরআন ৪: ১৫৬
মারাত্মক মিথ্যা অভিযোগটি কী ছিল? প্রকৃত কলঙ্কের অপবাদের কাছাকাছি প্রায়। সে ক্ষেত্রে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যীশুকে যিনি মহিমান্বিত করেছেন, তিনি উচ্চারণ করলেনঃ
হে হারূন-ভগ্নি! তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাতাও ছিল ব্যভিচারিণী।
—কুরআন- ১৯: ২৮
তালমুদ গ্রন্থধারীরা কি বলে
ইহুদীরা এখানে অভিযোগ করেছে যে যীশুর জন্ম অবৈধ। তারা মেরী সম্পর্কে ব্যভিচারের বদনাম আরোপ করেছে। মেরীর সতীত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। কিন্তু কুরআন শরীফের সেই জঘন্য বদনাম সামান্যতমভাবে উচ্চারিত হয়নি। কুরআন শরীফের বক্তব্যের সঙ্গে প্রসিদ্ধ খ্রিস্টান পাদ্রী ডুমেলোর বর্ণনা তুলনা করা যেতে পারে। খ্রিস্টানদের শত্রু সম্পর্কে অপবাদ দিতে গিয়ে তারা কি ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছে “ইহুদী তালমুদ বিশেষজ্ঞরা” বলে, ব্যভিচারিণীর (পবিত্র মেরী) পুত্র মিশর থেকে জাদু নিয়ে এসেছিল। নিজের মাংস কেটে যীশু জাদু দেখাত, ধোঁকা দিত এবং ইসরাইলীদেরকে পৌত্তলিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছিল। অপরপক্ষে বিষয়টি লক্ষণীয় যে মাহমেটই এই সকল ইহুদীদের দেয়া অপবাদকে অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে খণ্ডন করেছেন। (ডুমেলোর বাইবেল ভাষ্য)
ইভানজালিস্টরাও ইহুদীগণের সঙ্গে একমত
ম্যাকডোয়েল তালমুদ ধর্মতত্ত্ব সেমিনারের একজন প্রসিদ্ধ ছাত্র তিনি ৫৩ টি দেশের ৫৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ লাখ ছাত্রকে পড়িয়েছেন। ইতিপূর্বে যে সকল বাইবেল বিশেষজ্ঞের তাদের চেয়ে ইহুদীদের তালমুদ গ্রন্থের তার প্রভু গবেষণা জন্ম সম্পর্কে অনেক বেশি গবেষণা করেছে। তার গ্রন্থ “যে সাক্ষ্য বিচারকের রায় চায়” সেখানে তিনি যীশু যে ঐতিহাসিক ব্যক্তি ছিলেন সেটাই প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন। সেখানে তিনি ব্যাপকভাবে তালমুদ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যেমনঃ যীশুকে বেন পানদেরা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আর সিমন কে আজাই যীশু সম্পর্কে বলেন, “আমি জেরুযালেমের একটি বংশ লতিকা দেখছি সেখানে বলা হয়েছে যে তিনি জারজ সন্তান ছিলেন।”
“মিশনাহ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে তার সম্পর্কে যা বলা হল তাতে কোন সন্দেহ নেই।”
পাদ্রীরা জিহ্বা কামড় দেয়
যীশুর উপাসক, পবিত্র আত্মায় ভরপুর, পুনরায় জন্মবাদী খ্রিস্টান এবং একজন মহান ইভানজালিস্ট ম্যাগডোয়েল যখন তার প্রভু ও ঈশ্বর যীশুর শত্রুদের দেওয়া অপবাদ উল্লেখ করতে গিয়ে জিহ্বায় কামড় দেয়। তার বই খ্রিস্টান জগতে বেস্ট সেলার। সেখানে ঈসা (আ)-এর জন্ম সম্পর্কে যে কুৎসিত ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তার আর উল্লেখ করলাম না। এরাই যদি যীশুর বন্ধু হয় তাহলে আর শত্রু থাকায় দোষ কি?
যোহন অধ্যায়ে যে সকল ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে তার সপক্ষের বন্ধু সহায়, সাহায্যকারী, সান্ত্বনা দানকারী হচ্ছেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম।” লক্ষণীয় যে ইহুদীদের অপবাদ মুখ্যামেড ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/599/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।