hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহমদ দীদাত রচনাবলি - ফজলে রাব্বী ও মুহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা

লেখকঃ আহমদ দীদাত

২৯
অধ্যায় পাঁচঃ ইহুদীদের নতুন প্রজন্ম
( مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ )

তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মু’মিন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশ সত্যত্যাগী।

— কুরআন ৩: ১১০

কুরআনের কথা সত্য

ইহুদীদের মধ্যে অনেক বিশ্বাসী ন্যায়পরায়ণ ও ভাল মানুষ আছে, এই সংবাদ আমাদের নিকট প্রায়ই এসে পৌঁছায়। প্রমাণিত হয় উপরের আয়াতের কথা সত্য।

(১) ডেইলি টেলিগ্রাফ, লন্ডন, তারিখ ৪/৮/৭১।

ইসরাইলের ইতিহাসে সর্বপ্রথম একজন আঠারো বছরের তরুণ এই বলে তার কলআপ কার্ড ফেরত দিয়েছে- “অত্যাচার করার জন্য আমরা জন্মে স্বাধীন হইনি এবং অত্যাচার করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ কোন মহৎ মৃত্যু নয়।”

জেনারেল দায়ান মিসেস ও গোল্ডমায়ারকে লিখিত পত্রের তারা বলেছে “আমাদের পিতা পিতামহ অথবা পূর্বপুরুষের প্রতি যে নির্যাতন চালিত হয়েছিল সেই একই নির্যাতন অন্য জাতির উপর করতে আমরা প্রস্তুত নই।”

(২) সানডে, ট্রিবিউন, ডারবান, তাং ২৮/১০/৭৩

বন্দীদেরকে নিরাপদ স্থানে বাসে করে নিয়ে যাওয়ার সময় একজন ইসরাইলি সৈন্য বলছে, “আমার মনে হয় এই এই লোকগুলো বেশ সুন্দর। তারাও আমাদের মত কিতাবি জাতি। যুদ্ধ তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তেমনি আমাদের উপরও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, জানি না এই যুদ্ধ শেষ হবে।”

(৩) হেনরি কাতজিউ- দক্ষিণ আফ্রিকার একজন সাংবাদিক, বর্তমানে ইসরাইলের অধিবাসী। তিনি জোহানসবার্গ শহরের “দি স্টার” পত্রিকায় ৫-১২-৭৩ তারিখে লিখেছেনঃ ইসরাইল কি চিরকাল যুদ্ধের মধ্যে বসবাস করবে? ইসরাইলের জন্মকাল থেকেই আজ পঁচিশ বছর যাবত ইহুদী-আরব সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এই পঁচিশ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে রাজনৈতিকভাবে ইসরাইলের সমস্যার সমাধান হবে না। তাদেরকে অবশ্যই বিকল্প হিসাবে আধ্যাত্মিক শক্তির আশ্রয় নিতে হবে। কেবলমাত্র আধ্যাত্মিক বিপ্লব তাদেরকে অফুরন্ত উন্নয়নের সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাবে.....”

আমার মনে হয় আমি ইতোপূর্বে যে আধ্যাত্মিক পরিবর্তন অথবা নামপত্র পরিবর্তনের কথা বলেছিলাম তিনি সেই কথাই বলেছেন। তবে আমার মত স্পষ্ট করে বলতে ভয় পেয়েছেন। আমি বলেছিলাম লেবেল পরিবর্তন করতে। তিনি বলেছেন আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের কথা। মনে হয় তিনি আমার শ্রোতাদের একজন। যে বলেছিল আপনার বাণী আমি ইসরাইলে পৌঁছে দেব।

(৪) ১৯৮২ সালে সাবরা ও শাতিলায় গণহত্যার প্রতিবাদে তেলআবিবে তিন লক্ষ ইহুদী সমবেত হয়ে প্রতিবাদমুখর শ্লোগান দিচ্ছিল “বেগিন ওসারন পদত্যাগ কর। তোমাদের হাতে রক্ত লেগে আছে।” মুসলমানরা কি অস্বীকার করতে পারে কিছু সংখ্যক ইহুদীর কিছুটা মহানুভবতা রয়েছে।

(৫) জোহানসবার্গের সানডে স্টার নববর্ষ সংখ্যায় প্রতিবেদন। ইসরাইলি সৈন্য বাহিনীর সংরক্ষিত দলের একজন সদস্য হিসাবে ডানি বেনতাল লিখেছেন গাজা পরিদর্শনকালে তিনি ভেবেছেন ফিলিস্তীনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা প্রকৃতই হেরে গিয়েছিল। তিনি সিমিটি বিরোধী অথবা আত্মবিরোধী ইহুদী নন। বরং পবিত্র কুরআনের বর্ণনা মত একজন মুমিন। তিনি লিখেছেন।

(ক) “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই বিষয়ে কোন ভুল নেই। জা বালিয়া ও শাতীতে এই রাষ্ট্র রয়েছে। এই রাষ্ট্র রয়েছে মসজিদে ও মানুষের মনে।

পিএলও পতাকা যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে আমাদের ধারণা আমরা এই যুদ্ধে হেরে গিয়েছি। এরেজ ইসরাইলের অর্থাৎ ভূমির এই বর্গমাইলে যে যুদ্ধ সেই যুদ্ধে আমরা পরাজিত। প্রথমত ইনতিফাদা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কেউ কেউ আমাদের মধ্যে এ কথা অনুধাবন করতে পেরে রীতিমত শঙ্কিত। কিন্তু অনেক ইসরাইলি বুঝতে চায় না কি ঘটছে। তাতে কি আসে যায়। এক প্রকার স্থিতিস্থাপকতায় পৌঁছানো গিয়েছে। তাদের হারাবার কিছুই নেই তারা তাদের গর্ব তাদের জাতীয় পরিচিতি ও স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে। স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে আমরা যতই ভীতির সঞ্চার করি না কেন আমরা তাদের জীবনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে পারছি না। সর্বশেষ পরাজয়ের সকল লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বার বছরের এক শিশুকে দেখেছি পাথর ছুড়ে মারছে। সে জানে তার কি হতে পারে। সেই ভীতির পিছনে আমি লক্ষ্য করেছি এক প্রকার গর্ব। সৈন্যরা চিৎকার বলে ওকে গুলি করে মাথা গুড়িয়ে দাও। তার হাত ভেঙ্গে দাও। এমন শিক্ষা দাও আর যেন পাথর ছুড়ে না মারে। এ কথাগুলো একজন সৈনিকের, যে একদিন আগে আইন মান্যকারী খোদাভীরু সেই রাষ্ট্রের নাগরিক যে রাষ্ট্র ইহুদীদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঠিক একই আবেগ হতে সৃষ্টি হয়েছিল। পৃথিবীর অন্য কোন জাতি না বুঝতে পারলেও আমাদের বোঝা উচিত। যখনই কোন তরুণ আমার দিকে প্রস্তর নিক্ষেপ করে আমি নিজেকে অপরাধী না ভেবে পারি না। কারণ আমি যদি অনুরূপ পরিস্থিতি, থাকতাম আমিও প্রস্তর নিক্ষেপ না করে পারতাম না। কিন্তু একজন সৈন্য হিসাবে তার দিকে ফিরে বলতে পারি অন্যদের হাতে ইহুদী জাতি যে নির্যাতন সহ্য করেছে সেই হিসাবে আমি তোমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এই শিশুগুলি কি সুন্দর ময়লা, ডাস্টবিন ও নোংরা থেকে উঠে আসছে। তরুণ স্বচ্ছ মুক্তর মত ধূসর বর্ণের মুখমণ্ডল প্রস্তুত উজ্জ্বল ও নির্দোষ তাদের চোখ। তিন বছরের শিশু আমাদের দিকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানায়। পাঁচ বছরের শিশু ইতোমধ্যেই জেনেছে আমরা তাদের শত্রু। হাসতে হাসতে তারা আমাদেরকে দুই আঙ্গুল দিয়ে “V" চিহ্ন দেখায়। এর প্রকৃত অর্থ কি জানে না। আমরা জানি কি করতে হবে। কঠোরভাবে অথচ ভদ্রতা সহকারে যেমন পরিস্থিতি চায় কিন্তু পরিস্থিতি এমনই হয় যে আমরা একটা শূকরের বাচ্চায় পরিণত হই। একুশ বছর গত হয়েছে যখন থেকে এই এলাকা ইসরাইলীদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। একটি পূর্ণ বংশ এখানেই বড় হয়েছে। তথাপি আজও তারা আমাদের বিদেশী শক্তি ব্যতীত আর কিছুই ভাবে না। ইহুদী বসতি স্থাপনকারীরা সরকারি ভর্তুকি প্রদত্ত আবাসন গৃহে মিথ্যার মধ্যে বসবাস করছে। অদূরেই রয়েছে মারমুখী প্রতিবেশী। তারা অনুধাবন করে যে সৈন্যবাহিনীর উপর তাদের নিরাপত্তা নির্ভরশীল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তারা মিনিবাস করে বেড়াতে বের হয়। আর প্রহরারত ক্লান্ত সৈনিকদের মাঝে গরম সুপ ও খাবার পরিবেশন করে। অধিকাংশ সৈন্য কৃতজ্ঞচিত্তে আবার গ্রহণ করে। অনেকে নিজেদেরকে এই বলে ধোঁকা দেয় যে যুক্তিসঙ্গত অনুরোধের মাধ্যমে একদিন তারা বসতি স্থাপনকারীদেরকে বোঝাতে পারবে যে তাদের বিচারের দিন একদিন আসবে আর তারা ইসরাইলে বসবাসের জন্য ফিরে যাবে। আর সরকারি ভর্তুকির কারণে তাদের ব্যাংক একাউন্ট ক্রমাগত ভারী হয়ে উঠছে। আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক আদর্শবাদী শান্তিরক্ষক তাদের কোন দান বা উপহার গ্রহণ করে না। আর সামান্যতম যদি মনে হয় জোর করে অধিকার করা সেগুলো তারা ক্ষমা করে না।

(৬) এতদসত্ত্বেও ইসরাইলি রাজনীতিবিদরা তাদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মিথ্যা আশ্বাস প্রচার করে চলেছে যে ইনতিফিদা অতি তুচ্ছ বিষয়। যারা দাবি করে যে তৃণমূল পর্যায়ের বিপ্লব দমন করা সম্ভব তারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। এ কথা মানতে হবে এই রাজনৈতিক সমস্যা কোন সামরিক সমাধান সম্ভব নয়। এ বছর সংরক্ষিত সেনাবাহিনীর প্রায় সকলেই যারা কিছুকাল এই এলাকায় থেকেছে তারা সকলেই দেখেছে।

(৭) আমরা যদি এখানে অবস্থান করি তাহলে ক্রমাগত গভীর পঙ্কিলতায় আমরা ডুবে যাব। সেই সঙ্গে সমগ্র বিশ্বের জনমত আমাদের বিরুদ্ধে চলে যাবে। তারপর এক সময় এক ধরনের সমাধান আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে তখন আমরা লেজ গুটিয়ে পশ্চাদ অপসরণ করব।

শেষ প্রচেষ্টাও চূড়ান্ত সমাধানে স্বাভাবিক পরিণতি হচ্ছে গণযুদ্ধ (ইনতিফাদাহ বা উত্থান)। সেটি হয়ে দাঁড়ায় বিপ্লব। ডেনিবেনতাল লিখেছেন পরবর্তী পর্যায়ে চরম হতাশার মধ্যে ফিলিস্তীনীরা গোলাগুলির বদলে পাথর ছুড়ে মারার কারণে একদিন বাধ্য হয়ে আমরা উপযুক্ত শাস্তি দিতে বাধ্য হব। তখন আর কোন পথ থাকবে না। আমার ভয় হচ্ছে সেদিন আর বেশি দূরে নয়।

চারটি যুদ্ধের প্রথম উদ্যোগ

হেনরি কাদাজিউ যে আধ্যাত্মিক বিকল্পের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অথবা ইহুদী ছাত্রদের নিকট আমি যে নামপত্র পরিবর্তনের ধারণা উপস্থাপন করেছিলাম সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করার পূর্বে ইহুদী-আরব সংঘর্ষে বারবার আমাদের পরাজয়ের কারণগুলো ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। (১৯৪৮-১৯৭৩ পর্যন্ত চারবার পরাজয় হয়েছিল)। পঁচিশ বছরের মধ্যে সর্বপ্রথম আরবরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ইহুদীদেরকে সাবধান করে জানিয়ে দিয়েছিল যে আরবরা উদ্যোগ নিচ্ছে। আমেরিকা তার সেটেলাইট থেকে জানতে পেরেছিল কিন্তু ইহুদীরা বিশ্বাস করেনি। তারা ভেবেছিল আরব চাচাতো ভাইদের তারা খুব ভাল করেই জানে। তারা ধুমধাম না করে সামরিক প্রস্তুতি নিতে পারে না। তাদের এসব হৈ চৈ আগে থেকেই ইহুদীদেরকে সতর্ক করে দিত। কিন্তু আনোয়ার সাদাত ১৯৭৩ সালে রমযানের যুদ্ধে সত্যই অতর্কিত আক্রমণ করে ফেলেছিল। মিসরীয় বাহিনী দুর্ভেদ্য বারলেব লাইন ভেঙ্গে সিনাইতে ঢুকে পড়েছিল এবং ইসরাইলিদের গলা চেপে ধরেছিল। সঙ্গে সঙ্গে ইহুদীরা তাদের পালক পিতা আমেরিকানদের সাহায্য প্রার্থনা করে এস ও এস পাঠালো। তখন পালক পিতা যন্ত্রপাতি ও সৈন্যবাহিনী দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধক্ষেত্রে নেমে পড়ল। আটলান্টি মহাসাগরে আজর দ্বীপ থেকে তাদের বোমারু ও ফাইটার প্লেন পাঠাতে লাগল।

ইহুদীদের প্রধান ভিত্তি আমেরিকা

এর থেকে প্রমাণিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আরবদের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবেই ইহুদীদের পক্ষ অবলম্বন করে। আমরা যখনই ইহুদীদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাব তখনই সেই যুদ্ধ হবে মহাশক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। খ্রিস্টান যুক্তরাষ্ট্র কি কারণে ইহুদীদেরকে এত ভালবাসে। এই ভালবাসার কারণ কি? কারণ আর কিছু নয়। আমেরিকার ইহুদী লবি এর বড় কারণ, সেখানে ৬০ লক্ষ ইহুদী বসবাস করে। তারা অর্থাৎ এই ইহুদী অত্যন্ত সংঘবদ্ধ সম্প্রদায়। তারা জানে কিভাবে তাদের টাকা, তাদের বুদ্ধি ও তাদের জনশক্তি ব্যবহার করতে হয়। ইহুদী সমর্থন ব্যতীত কোন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারে না।

ইহুদী শক্তির রহস্য

১৯৪৮ সালে আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুমেন অসতর্কভাবে এই রহস্যের কথা বলে ফেলেছিলেন। ১৯৪৮ সালে ১৪ মে তেলআবিব রেডিও থেকে বেনগুরিয়ান যখন স্বাধীন ইসরাইলি রাষ্ট্রের ঘোষণা দিলেন তখন সময় ক্ষেপণ না করে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী জাতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। লোকে বলে এই স্বীকৃতি দিতে মাত্র দুই মিনিট সময় লেগেছিল। ট্রুমেন সেদিন নতুন জামাইয়ের মত মিনমিন করে কথা বলছিল যেন জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তুমি এই মহিলাকে অর্থাৎ ইসরাইলকে তোমার আইনসঙ্গত স্ত্রী মনে কর? হ্যাঁ, ট্রুমেন ইসরাইলকে তার কেবল স্ত্রী নয়, তাকে তার পুত্র এবং উত্তরাধিকারী হিসাবে গ্রহণ করেছিল।

এত তাড়াহুড়া করে ইহুদী রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুলেছিল। তারা বলেছিল, আমরা ইসরাইলকে যথাসময় স্বীকৃতি দিতে পারতাম। কিন্তু আপনি এত তাড়াহুড়া করলেন কেন? আপনি কি জানেন না সেখানে এক কোটি আরব রয়েছে, তারা অসন্তুষ্ট হবে? তিনি সত্য কথাই বললেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় কোন আরব নেই, তার অর্থ ইহুদীরা ভোট দিয়ে আমাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আমেরিকা ৬০ লক্ষ ইহুদী বসবাস করছে। ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে তার এই নির্বাচনী এলাকায় সমসংখ্যক মুসলমানকে আমেরিকায় অভিবাসন দিতে হবে।

পাল্টা ব্যবস্থা

এ কথা মানতেই হবে যুক্তরাষ্ট্র কোনক্রমেই সেখানে মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যক মুসলমানকে তার উদ্দেশ্যে অভিবাসনের অনুমতি দেবে না। এই মুসলমানরা আরব, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ অথবা তুরস্ক যেখান থেকে হোক না কেন। এমনকি তুরস্ক যাকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ঠাণ্ডা লাগলে তুরস্ক হাঁচি দেয় তাদের সম্পর্ক এমনই। কিন্তু সেখান থেকেও অধিক সংখ্যক মুসলমানকে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে দেবে না। একমাত্র মেধা আমদানির জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু মেধাবীকেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের অনুমতি দেবে। তাহলে এই ৬০ লক্ষ ইহুদী লবির কি পাল্টা ব্যবস্থা করা যেতে পারে? জবাব সোজা। ৬০ লক্ষ আমেরিকানকে মুসলমান বানাও। ও আল্লাহ! আমরা যতটা ভাবছি তার থেকে অনেক সহজ। আল্লাহ্ সুববনাহু ওয়াতায়ালা বলেনঃ

( لَا تَقۡنَطُوا۟ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ )

আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না ...।

— কুরআন ৩৯: ৫৩

আমেরিকার প্রয়োজন ইসলাম

আমেরিকার জনগণ তাদের পরিচিত জীবন ব্যবস্থায় ভীষণভাবে বিরক্ত ও হতাশাগ্রস্ত। তাদের সমকামিতা, মাতলামি, উদ্বৃত্ত নারী, ধর্ষণ, খুন ইত্যাদি জঘন্য বিষয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। এর থেকে তারা মুক্তি চায়। প্রতিবছর সানফ্রানসিসকো শহরে তিন লক্ষ সমকামী মিছিল করে সমবেত হয়। এটা যেন তাদের তীর্থযাত্রা। সংবাদপত্রে সম্প্রতি আমরা এ খবর নিয়মিত পাই। তারা সমকামীদেরকে বলে ‘গে'। নিউইয়র্ক, লসএ্যাঞ্জেলস, সানফ্রানসিসকো শহরে কোন আমেরিকান মেয়র পদে এই “গে”দের সমর্থন ব্যতীত নির্বাচিত হতে পারে না। আমেরিকার এক ধর্ম প্রচারক জিমি সর্গট বলেছিলেন, “হে আমেরিকা! আল্লাহ তোমাদের বিচার করবেন। তিনি যদি বিচার না করেন তাহলে সডোম ও গোমরাদের কাছে তাকে মাফ চাইতে হবে।

আমেরিকার আরেকটি বড় সমস্যা সেখানকার উদ্বৃত্ত নারী। আমেরিকার সমস্ত পুরুষ যদি একজন করে মেয়েকে বিয়ে করে তাহলেও ৮০ লক্ষ নারী অবিবাহিত থাকবে। তাদের জন্য কোন স্বামী পাওয়া যাবে না। একমাত্র নিউইয়র্ক শহরে পুরুষের চেয়ে দশ লক্ষ মহিলা বেশি রয়েছে। আর এই পুরুষের এক-তৃতীয়াংশ ‘গে’। ফলে তাদের সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। আমেরিকায় মাতালের সংখ্যা এক কোটি দশ লক্ষ। এদেরকে বলা হয় প্রবলেম ড্রিংকার। তদুপরি রয়েছে চার কোটি চল্লিশ লক্ষ হেভি ড্রিংকার। তাদেরকেও বলা হয় প্রবলেম ড্রিংকার। এর অর্থ সব মিলিয়ে পাঁচ কোটি পঞ্চাশ লক্ষ মাতাল। স্বাভাবিকভাবেই বেচারা আমেরিকানরা যে কোন খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে চায়। সেইজন্য দেখা যাচ্ছে কোরিয়া থেকে আগত এক ভদ্রলোক নিজেকে দ্বিতীয়বার আবির্ভূত যিশু বলে দাবি করেছেন। তার অনুসারীদেরকে বলা হয় “মানমিয়োং মনস”। তারপর রয়েছে ‘ফাদার ডিভাইন' নামে আমেরিকার একজন নিগ্রো। সে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করে। তারপর রয়েছে রেভারেন্ড জিম জোনস, কুক্লাম ক্লান, হরে কৃষ্ণ। আরও আছে শয়তান পূজারী করার দল। যা কিছু আসে আমেরিকানরা তাই আঁকড়ে ধরতে চায়।

মুসলমানদের প্রয়োজন আমেরিকা

আমেরিকার সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামে। তেমনি ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান ইসলামের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু এ কাজ কে করবে? মিসর, আরব, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া থেকে আগত প্রবাসীরা এ কাজ করতে পারবে? সত্যি কথা বলতে কি সারা দুনিয়ার মুসলমান আজ চরম কাপুরুষ। আমেরিকান গ্রীন টিকেট তারা দেখেছে। তারা নানা রকম হীনমন্যতায় ভুগছে। কিছু বলা বা করার সাহস তাদের নেই। নতুন পাওয়া স্বর্গের মত দেশ থেকে যদি তাদের বের করে দেওয়া হয়। সবচেয়ে উপযুক্ত জনগোষ্ঠী হচ্ছে আফ্রো-আমেরিকান মুসলমান। তারাই আমেরিকাকে মুসলমান বানাতে পারে। তিনশো বছরের দাস জীবন ও হাতুড়ি পেটা খেয়ে খেয়ে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে মজবুত যুদ্ধাদেহী মুসলমানে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে শক্তিশালী কর। তারা যাতে আমেরিকাকে মুসলমান বানাতে পারে সেই ব্যাপারে সাহায্য কর। আমেরিকা ও ইসরাইলকে আরমাগেডন দখল করার আগেই এই কাজ করতে হবে। দূরপ্রাচ্য, মধ্যপ্রাচ্য ও প্রাচ্যের মুসলমান ভাইদের আমি বলব, আমার বক্তব্যের কারণে তারা যেন ইহুদীদের মত হিংসাপরায়ণ হয়ে না ওঠেন। হিংসা করার কোন কারণ নেই। আরবদের নিকট আল্লাহর বাণী অবতীর্ণ হওয়া তাদের চাচাতো ভাই ইহুদীরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। আল্লাহ্ তা'আলা এখন হয়তো পাশ্চাত্যে পরিবর্তন আনার মহৎ দায়িত্ব কালোদের উপর অর্পণ করেছেন। সবই আল্লাহর ইচ্ছা।

( وَإِن تَتَوَلَّوۡا۟ یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَكُمۡ ثُمَّ لَا یَكُونُوۤا۟ أَمۡثَـٰلَكُم )

যদি তোমরা বিমুখ হও তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারা তোমাদের মত হবে না।

— কুরআন-৪৭: ৩৮

ইহুদী লবিকে প্রতিহত করা যায় তার জন্য এই ষাট লক্ষ আমেরিকানের মধ্যে পরিবর্তন আসতে যে ব্যয় হবে তার খরচ একটা ফাইটার প্লেন ক্রয়ের... এই কাজটা করলে আল্লাহ্ রসূলও খুশি হবেন আর রক্তপাতও হবে না।

আজ ইসরাইল বেঁচে আছে তার একমাত্র কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ও অব্যাহত প্রশ্রয়। দুষ্কর্ম ও খুনোখুনি চলছেই। খ্রিস্টান ও ইহুদীদেরকে জাগাতেই হবে। তাদেরকে ইসলামের অধিকার, ফিলিস্তীনীদের অধিকার, স্বীকার করতেই হবে। ইহুদীরা যদি ফিলিস্তিনিদেরকে অংশীদার করতে অস্বীকার করে তাহলে সেটা হবে। একটা রাজনৈতিক আত্মহনন।

ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার সকল প্রচেষ্টা আজ অবধি ব্যর্থ হয়েছে। শান্তি ও সমৃদ্ধি নিহিত রয়েছে মানব জাতির প্রতি আল্লাহ্ তা'আলার সর্বশেষ আহবানের মধ্যেঃ

( یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ  ٰ⁠ ۤءِیلَ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتِیَ ٱلَّتِیۤ أَنۡعَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ وَأَوۡفُوا۟ بِعَهۡدِیۤ أُوفِ بِعَهۡدِكُمۡ وَإِیَّـٰیَ فَٱرۡهَبُونِ )

হে বনী ইসরাঈল! আমার সেই অনুগ্রহকে তোমরা স্মরণ কর যার দ্বারা আমি তোমাদেরকে অনুগৃহীত করেছি এবং আমার সঙ্গে তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে আমার অঙ্গীকার পূর্ণ করব এবং তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর।

—কুরআন- ২: ৪০

যারা বিশ্বাস করে এবং আল্লাহর সঙ্গে যে চুক্তি সাধিত হয়েছিল তা পরিপূর্ণ করে, ফিলিস্তীন তাদের জন্য।

সমাপ্ত

ইফাবা——২০০৩-২০০৪ প্র/৯৪৭৬(উ)-৫,২৫০

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন