hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহমদ দীদাত রচনাবলি - ফজলে রাব্বী ও মুহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা

লেখকঃ আহমদ দীদাত

আল-কুরআনঃ এক বিস্ময়কর অলৌকিক মহাগ্রন্থ অধ্যায় একঃ প্রারম্ভিক পটভূমি
স্মরণাতীত কাল থেকেই মানুষের সাধারণ একটা বৈশিষ্ট্য এই যে, মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যে সৃষ্টিকর্তার তরফ থেকে তাঁর ইচ্ছা ও পরিকল্পনা মাফিক যখনি কোন পথ প্রদর্শক আবির্ভূত হন, তখন তাঁদের সেই মূল্যবান বাণীসমূহ গ্রহণ না করে, মানুষ সেই সব প্রেরিত পুরুষদের কাছ থেকে অলৌকিক কিছু প্রমাণ চেয়ে বসে।

দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, ধর্মোপদেশ প্রদানের জন্যে হযরত ঈসা আলায়হিস সালাম যখন বনী ইসরাইলদেরকে শুধুমাত্র প্রচলিত ধর্মাচরণ থেকে বিরত থেকে আল্লাহ্ প্রদত্ত আইন ও নির্দেশ বিমণ্ডিত সত্যিকার নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের আহবান জানালেন, তখন তাঁর সেই প্রচারিত সত্যের প্রমাণ স্বরূপ তারা তাঁর কাছে অলৌকিকত্ব দাবি করে বসলো। যেমন মথি লিখিত সুসমাচারের ১২ অধ্যায়ে ৩৮ ও ৩৯ নম্বর শ্লোকে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তখন কয়েকজন অধ্যাপক ও ফরীশী তাকে বলল, “আমরা আপনার কাছে কোন চিহ্ন দেখতে ইচ্ছে করি।” তিনি উত্তর করে তাদের বললেন, “এই কালের ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদের দেওয়া যাবে না।” আপাতদৃষ্টিতে যদিও তিনি তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কিন্তু সুসমাচারের অনেক কাহিনীতেই আমরা দেখতে পাই, প্রচুর অলৌকিকত্ব প্রদর্শন করেছেন তিনি!

প্রত্যাদিষ্ট মহাপুরুষের নিকট তাদের প্রভুর কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছিল, বাইবেল সেই অলৌকিক কাহিনীতে ভরপুর। বস্তুত এই সব লক্ষণ এই সব বিস্ময়কর ঘটনা, এই সব মুযিজা বা অলৌকিকত্ব সেই মহান আল্লাহর; কিন্তু তার মনুষ্য প্রতিনিধি মারফত ঐগুলো কার্যকর হয়েছে বলে আমরা সেসব বিস্ময়কর ঘটনাকে আখ্যায়িত করে থাকি মূসা আলাইহিস সালাম বা ঈসা আলাইহিসসালাম-এর অলৌকিকত্ব বা মুজিজা বলে।

আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ঈসা আলায়হিস সালাম-এর প্রায় ছয়’শ বছর পরে। ৪০ বছর বয়সে যখন তিনি দ্বীনের প্রচার শুরু করলেন, তাঁর স্বদেশবাসী তখন তার কাছে অলৌকিকত্ব প্রদর্শনের সেই একই প্রার্থনা জানালো, যেমনটি জানিয়েছিল হযরত ঈসা আলায়হিস সালাম-এর সমকালীন লোকেরা তাদের প্রতিশ্রুত ত্রাণকর্তার কাছ থেকে। এ সম্পর্কে কুরআনুল করীমে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

( وَقَالُوا۟ لَوۡلَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡهِ ءَایَـٰت مِّن رَّبِّهِۦۚ )

ওরা বলে, তার প্রতিপালকের নিকট হতে তার কাছে নিদর্শন প্রেরিত হয় না কেন?

– কুরআন ২৯: ৫০

তাদের দাবির এটা ছিল সাধারণ একটা প্রবণতা! সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বক্তব্য ছিল, তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম শূন্য আকাশে মই স্থাপন করে তাঁর প্রভুর নিকট থেকে তাদেরই চোখের সামনে নিয়ে আসুন একটা গ্রন্থ “তাহলেই আমরা বিশ্বাস করবো” অথবা অদূরে অবস্থিত ঐ পাহাড়টা রূপান্তরিত করুন সোনায়—তাহলে আমরা বিশ্বাস করবো কিম্বা মরুর বুকে প্রবাহিত করুন ঝর্ণা তাহলেও আমরা বিশ্বাস করবো।

প্রত্যাদেশে সন্ধিগ্ধ সেইসব অযৌক্তিক দাবির সামনে শুনুন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর শান্ত মধুর জবাবঃ “তোমাদের কাছে কি আমি বলি যে, প্রকৃতই আমি একজন আসমানী দূত? তোমাদের কাছে কি আমি বলি, আমার হাতেই রয়েছে আল্লাহর অফুরন্ত সম্পদ? - আমার কাছে যা প্রত্যাদিষ্ট হয় শুধু তাই অনুসরণ করি আমি।” অবিশ্বাসীদের জন্য আরও শুনুন তার প্রভু নির্দেশিত মহাসম্মানিত বাঙ্ময় জবাবঃ

( قُلۡ إِنَّمَا ٱلۡـَٔایَـٰتُ عِندَ ٱللَّهِ وَإِنَّمَاۤ أَنَا۠ نَذِیر مُّبِینٌ )

বলুন, নিদর্শন আল্লাহরই ইখতিয়ারে। আমি তো একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র।

—কুরআন ২৯: ৫০

বিশেষ নির্দশন বা অলৌকিকত্ব প্রদর্শনের সেই কপট দাবি, যা তাদের নির্বোধ পৌত্তলিক মানসিকতাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, তারই সার্থক ও সমুচিত জবাব হিসেবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয়েছে কুরআনুল করীমের নিম্নোক্ত আয়াত শরীফ মারফতঃ

( أَوَلَمۡ یَكۡفِهِمۡ أَنَّاۤ أَنزَلۡنَا عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ یُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّ فِی ذَ  ٰ⁠ لِكَ لَرَحۡمَة وَذِكۡرَىٰ لِقَوۡم یُؤۡمِنُونَ )

ইহা (আল-কুরআন) কি ওদের জন্যে যথেষ্ট নয়, যে আমি আপনার নিকট (হে মুহাম্মদ) কুরআন অবতীর্ণ করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে। সেই কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।

– কুরআন ২৯: ৫১

পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনের অনুপম সত্যতা ও অলৌকিক তাৎপর্থের প্রমাণ স্বরূপ এখানে দু’টি যুক্তি উপস্থাপন করা যেতে পারেঃ

১. “আমি (আল্লাহ সর্বশক্তিমান) আপনার নিকট এই মহাগ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি”। আপনি অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে যিনি একজন অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ। একজন উম্মী নবী যিনি পড়তে ও লিখতে জানেন না, নিজের নাম পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে যিনি অসমর্থ। টমাস কালাইল তাঁর “হিরো এ্যাণ্ড হিরো ওয়ারশিপ” বক্তৃতামালায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই শিক্ষাগত যোগ্যতার সাক্ষ্য প্রদান করেছেন বড় সুন্দরভাবেঃ “আমরা আর একটি ঘটনা নিশ্চয়ই বিস্মৃত হবো না যে, তার কোন স্কুল শিক্ষা ছিল না, স্কুল শিক্ষা বলতে আমরা যা বুঝি তার একটুও না।”

আল-কুরআন যে কখনোই রচনা করেননি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম, এই মহাগ্রন্থের রচয়িতা যে কখনোই তিনি নন তার এই দাবির প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ্ কী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন দেখুনঃ

( وَمَا كُنتَ تَتۡلُوا۟ مِن قَبۡلِهِۦ مِن كِتَـٰب وَلَا تَخُطُّهُۥ بِیَمِینِكَۖ إِذ ا لَّٱرۡتَابَ ٱلۡمُبۡطِلُونَ )

আপনি তো (হে মুহাম্মদ)-এর আগে কোন কিতাব পাঠ করেন নি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখেনও নি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।

— কুরআন ২৯: ৪৮

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যদি একজন বিদ্বান ব্যক্তি হতেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যদি পড়তে ও লিখতে জানতেন, তাহলে “আল কুরআনই আল্লাহর বাণী”, তাঁর এই স্পষ্ট উক্তিতে বাচালদের সন্দেহ করার মত হয়তো বা একটা যুক্তি হতে পারতো। তিনি যদি শিক্ষিত ব্যক্তি হতেন তাহলে এই মহাগ্রন্থ ইহুদী বা খৃস্টানদের পবিত্র গ্রন্থ থেকে তিনি স্রেফ কপি করেছেন বা এরিস্টোটল ও প্লেটো পড়ে এবং “তওরাত”, “জবুর” ও “ইঞ্জিল” পাঠ করে সুন্দর ও সুললিত ভাষায় তিনি ইহা গ্রন্থনা করেছেন। তাঁর শত্রুদের এই বক্রোক্তি হয়তো বা প্রাসঙ্গিক হতো; তাহলে সেই অহংকারী মিথ্যাচারীদের উক্তির একটা সার্থকতা থাকতো। কিন্তু এটা এমনি একটা নাজুক যুক্তি যা ছিদ্রান্বেষী অবিশ্বাসীদের কাছেও অসত্য, এটা এমনি খোঁড়া যুক্তি, যা সত্যিকারভাবেই অবিশ্বাসীদের কাছেও অবিশ্বাস্য!

২. গ্রন্থখানি? হ্যাঁ, এই পবিত্র গ্রন্থখানিই সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করছে যে, এটি আল্লাহরই অমোঘ বাণী! যে কোন দিক থেকে অধ্যয়ন করুন একে সুস্পষ্টভাবে পর্যালোচনা করুন এই গ্রন্থখানি, দেখবেন সন্দেহকারীদের অমূলক সন্দেহ কী সুন্দরভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন পবিত্র এই গ্রন্থের গ্রন্থকার আল্লাহ জাল্লা শানহু নিজেইঃ

( أَفَلَا یَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَیۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُوا۟ فِیهِ ٱخۡتِلَـٰف ا كَثِیر ࣰا)

তবে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে অনুধাবন করে না? এটি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বাণী হতো তবে নিশ্চয়ই এতে তারা অনেক অসঙ্গতি পেত।

— কুরআন ৪: ৮২

কোন মানুষের পক্ষেই একটানা তেইশ বছর ধরে তার শিক্ষা ও উপদেশাবলির মাঝে অবিচল থাকতে পারে না। চরম পরস্পর বিরোধী জীবনের উত্থান-পতনময় পথ অতিক্রমকালে একজন মানুষ কোথাও-না-কোথাও একটা রফা করে ফেলে, নিজের মধ্যে নিজেই প্রতিবাদী হয়ে ওঠে! কোন মানুষই ধর্মোপদেশমূলক কোন বক্তৃতা একই রকম থাকতে পারে না। যেমনটি অবিচল, সম্পূর্ণরূপে সুসমঞ্জস পবিত্র এই আল কুরআনের বাণী। হতে পারে, অবিশ্বাসীদের প্রতিবাদ কিন্তু শুধু প্রতিবাদের খাতিরেই এবং তাদের নিজেদের বিচার-বিবেচনার বিরুদ্ধেই হয়তো তর্কজনিত নিষ্ফল প্রতিবাদ।

বারবার যখন আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে নিদর্শন বা অলৌকিকত্ব দাবি করা হলো, তখন তাকে কুরআনুল করীমের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করতে বলা হলো; বলা হলো, ঊর্ধ্ব আকাশের বাণী। - এটা এক মহান মোযেজা - অনেক মো'যেজার চরম মো'যেজা এটি এবং পণ্ডিত ও গুণীজন, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক পরিজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, যারা সত্যিকারভাবে সত্যপরায়ণ, তাঁরা আল কুরআনকে একটা অকৃত্রিম মো’যেজা হিসেবেই স্বীকার করেছেন, শ্রদ্ধাভরে গ্রহণ করেছেন। কুরআনুল করীমে দয়াময় আল্লাহ্ তাই ঘোষণ করেনঃ

( بَلۡ هُوَ ءَایَـٰتُۢ بَیِّنَـٰت فِی صُدُورِ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡعِلۡمَۚ وَمَا یَجۡحَدُ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ إِلَّا ٱلظَّـٰلِمُونَ )

বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি এক স্পষ্ট নিদর্শন। কেবল জালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে।

—কুরআন ২৯: ৪৯

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন