hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

১৬
রাসূল সা.-এর সওমে ওসাল
রাসূল কখনো কখনো রাত-দিন পূর্ণ সময় অনাহারে কাটাতেন এবং রোজা পালন করতেন। পুরো সময় যেন আল্লাহর এবাদতে পালিত হয়—সওমে ওসাল পালনের মাধ্যমে এটাই ছিল তার উদ্দেশ্য। [দ্র : ইবনে কায়্যিম, যাদুল মাআদ : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৩২] প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি হাদিস এ স্থানে উল্লেখ্য : আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন :—

لا تواصلوا , قالوا : إنك تواصل؟ ! ، قال : لست كأحد منكم؛ إني أُطعم وأُسقى -أو إني أبيت أُطعم وأُسقى -

তোমরা সওমে ওসাল (রাত-দিন একত্রে রোজা) পালন কর না। সাহাবিগণ বললে, আপনি তো তা পালন করেন ?! তিনি উত্তরে বললেন : আমি তো তোমাদের কারো মত নই। আমাকে (আল্লাহর পক্ষ হতে, আত্মিক ভাবে) পানাহার করানো হয়, আমি রাত যাপন করি পানাহার করানো অবস্থায়। [বোখারি : ১৯৬১।]

আবু হুরায়রা কর্তৃক বর্ণিত : তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা ওসাল করতে বারণ করেছেন। মুসলমানদের একজন তাকে প্রশ্ন করলেন : হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি তো তা করেন ? উত্তরে রাসূল বললেন : তোমাদের কেউ কি আমার অনুরূপ ? আমি রাতযাপন কালে আল্লাহ আমাকে পানাহার করান। যখন তারা ওসাল করতে নাছোড় হল, তখন রাসূল তাদের সাথে একদিন সওমে ওসাল করলেন, অত:পর আরেকদিন করলেন। এরপর চাঁদ উঠল। অত:পর রাসূল বললেন : যদি চাঁদ উঠতে আরো বিলম্ব হত, তবে আমি আরো বৃদ্ধি করতাম। সওমে ওসালের ব্যাপারে তারা নাছোড় হলে রাসূল তাদের তিরস্কার করে এমন বলেছিলেন। [বোখারি : ১৯৬৫।]

উল্লেখিত হাদিসগুলোর পর্যালোচনায় প্রমাণ হয়, সওমে ওসাল একমাত্র রাসূলের জন্য বিশিষ্ট ; অন্য কারো জন্য তা পালন বৈধ নয়। তবে, কেউ যদি একান্তভাবে তা পালন করতে চায়, তাহলে সেহরি অবধি বিলম্বিত করার বৈধতা রয়েছে। এক হাদিসে এসেছে, রাসূল বলেন :—

لا تواصلوا، فأيكم إذا أراد أن يواصل فليواصل حتى السحر .

তোমরা সওমে ওসাল কর না, কেউ যদি ওসাল করতে আগ্রহী হয়, তবে সে যেন সেহরি অবধি করে। [বোখারি : ১৮৬২।]

সেহরি অবধি ওসাল করার ক্ষেত্রে কেবল বৈধতা প্রদান করা হয়েছে, উৎসাহ কিংবা সম্মতি দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন হাদিসে, কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্রুত ইফতার করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। সাহল বিন সাআদ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল বলেছেন :—

لا يزال الناس بخير ما عجلوا الفطر .

মানুষ যতক্ষণ দ্রুত (সময় হওয়া মাত্রই) ইফতার করবে, ততক্ষণ ভালো থাকবে। [বোখারি : ১৮৫৬।]

রাসূলের উক্তি—— إني أبيت يطعمني ربي ويسقين সম্পর্কে আলেমদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেন : আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূলের উক্ত খাদ্য ও পানীয় ছিল ইন্দ্রিয়গত, অনুভবীয়। অর্থাৎ, আধ্যাত্মিকভাবে নয়, তাকে সরাসরি খাদ্যই প্রদান করা হত। এ ব্যাপারে তাদের যুক্তি, হাদিসের বাহ্যিক শব্দ-প্রয়োগ এ অর্থই বহন করছে, সুতরাং, তা থেকে সরে এসে ভিন্ন কোন অর্থ নেওয়ার মানে নেই।

অপর কেউ বলেন : এ আহার কোনভাবেই ইন্দ্রিয়গত বা অনুভবীয় ছিল না। বরং, আল্লাহ তাকে আপন জ্ঞানভান্ডার হতে তাকে যে মহান তত্ত্ব দান করতেন, মোনাজাতের মাধ্যমে অপার আস্বাদ, ভালোবাসা, এবং আল্লাহ তাআলার পরম নৈকট্যের যে ভূষণে তাকে শোভিত করতেন, এ তারই প্রতি ইঙ্গিতসূচক। যদি তাকে আমরা ইন্দ্রিয়গত ও অনুভবীয় পানাহার হিসেবেই সাব্যস্ত করি, তবে তাতে রাসূলের অক্ষমতাই কেবল প্রকাশ পাবে, সওমে ওসাল পালনকারী বলা হবে না। শেষোক্ত মতকেই অধিক যুক্তিযুক্ত মনে হয়।

এতে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও এবাদতে নিজেকে লীন করে দেওয়া, প্রবৃত্তীয় যাবতীয় লালসা ও আকাঙ্ক্ষা হতে মুক্ত থেকে আল্লাহকে ধ্যান-জ্ঞান বানিয়ে যাপন করা বান্দার জন্য নির্মাণ করে এক অপার্থিব রক্ষাব্যুহ, যা ভেদ করে শয়তানি শত্রু তাকে আক্রান্ত করতে পারে না কোনভাবে, এর ফলে প্রবৃত্তিজাত দৌর্বল্যগুলো মানুষ অতি সহজে কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ যতটা পরিমাণে দৈহিক প্রয়োজন ও চাহিদাগুলো এড়াতে পারবে, দমন করতে পারবে প্রবৃত্তির আকাঙ্ক্ষা, সাফল্যের পালক ততটাই বৃদ্ধি পাবে তার হিসেবের খাতায়, ইচ্ছা ও প্রতিজ্ঞায় বলীয়ান হয়ে উঠবে। রোজা তার জন্য, তখন, হবে রক্ষাকবচ—যাবতীয় পাপ ও গোনাহ হতে।

রাসূল সওমে ওসাল পালন করতেন, যা ছিল তার জন্য মোস্তাহাব আমলের তুলনায় ঊর্ধ্বের। এ পালন প্রমাণ করে, তার মানসিকতা ছিল অধিক কল্যাণব্রতিতায় নিরত, নফ্সকে প্রবৃত্তির বন্ধ্যাত্ব হতে মুক্ত রাখবার জন্য আত্মমগ্ন। তার আত্মা সন্তোষ প্রকাশ করত প্রয়োজনীয় পার্থিব আস্বাদ পেয়ে এবং মুক্ত থাকত যাবতীয় গাফলত ও উদাসীনতা হতে। তিনি পার্থিব যাবতীয় কর্ম সম্পাদন করে স্রষ্টার জন্য সর্বোত্তম সময়টুকু বের করে আনতেন, মগ্ন হতেন তাতে তার এবাদতে। তার এ মানসিকতার সর্বোত্তম প্রকাশ ছিল রমজান মাসে, যে মাস রহমত-বরকতের মাস, এবাদত ও যুহুদ পালনের মহত্তম মৌসুম।

সওমে ওসাল ইঙ্গিত করে, আল্লাহ তাআলা কখনো কখনো বান্দার জন্য এমন কর্মের আদেশ প্রদান করেন, বাহ্যিক দৃষ্টিতে যাকে মনে হবে অনুপযোগী, মানুষের স্বাভাবিক স্বভাব ও প্রকৃতির প্রতিকুল—খোলা চোখে যার যৌক্তিকতা আমাদের কাছে ধরা দেয় না।

রাসূলের, স্বয়ং ওসাল করা সত্ত্বেও, সাহাবিদের ওসাল হতে বিরত থাকার আদেশ প্রদান প্রমাণ করে, উম্মতের ব্যাপারে তিনি ছিলেন খুবই দয়ার্দ্র চিত্তের, ও সহনশীল। নিষেধ ব্যতীত সাহাবিগণ তার কর্মের পূর্ণ অনুবর্তনে ছিলেন ব্রতী, তার অনুসরণে আত্মনিয়োগকারী। [ইবনে হাজার : ফাতহুল বারি : খন্ড : ৬, পৃষ্ঠা : ২২৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন