মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে সাহাবিদেরকে সর্বাত্মক সৎকর্মে নিয়োগ করতেন, তাদেরকে উৎসাহ উদ্দীপনা জোগাতেন নানা কল্যাণ-কর্মে। আবু হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে—রাসূল এক হাদিসে কুদসিতে এরশাদ করেন:—
والذي نفسـي بيده لخلوف فم الصائم أطيب عند الله تعالى من ريح المسك؛ يترك طعامه وشرابه وشهوته من أجلي؛ الصيام لي وأنا أجزي به، والحسنة بعشر أمثالها .
যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ ! রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ মেশকের তুলনায় আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয় ; সে আমার উদ্দেশ্যে তার পানাহার ও প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করে, রোজা আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান। পুণ্যকর্মের প্রতিদান দশগুণ। [বোখারি : ১৮৯৪।]
ভিন্ন শব্দে একই হাদিস এসেছে এভাবে—
كل عمل ابن آدم يضاعف، الحسنة عشرة أمثالها إلى سبعمائة ضعف، قال الله عز و جل : إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزي به، يدع شهوته وطعامه من أجلي . للصائم فرحتان : فرحة عند فطره، وفرحة عند لقاء ربه . ولخلوف فيه أطيب عند الله من ريح المسك .
আদম সন্তানের যাবতীয় আমলই বৃদ্ধি পায়। পূন্যকর্মের প্রতিফল দশ থেকে সাত শত গুণ বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন : ...তবে রোজা এর ব্যতিক্রম, নিশ্চয় তা আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান। রোজাদার তার প্রবৃত্তি ও পানাহার পরিত্যাগ করেছে আমার জন্য। রোজাদারের আনন্দের মুহূর্ত দুটি—ইফতারকালিন ও রবের সাথে সাক্ষাৎকালীন। নিশ্চয় তার মুখের দুর্গন্ধ মেশকের সুগন্ধি হতেও আল্লাহর নিকট অধিক উত্তম। [মুসলিম : ১১৫১।]
উসমান বিন আবুল আস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি রাসূলকে বলতে শুনেছি যে,
الصيام جُنَّة من النار، كجُنَّة أحدكم من القتال .
রোজা তোমাদের ব্যবহৃত যুদ্ধের ঢালের মত জাহান্নাম হতে রক্ষা পাওয়ার ঢাল। [ইবনে মাজা : ১৬৩৯, হাদিসটি সহি।]
আবু হুরায়রা রা. রাসূল হতে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেছেন:—
الصيام جُنَّة، وحصن حصين من النار .
রোজা ঢাল, এবং জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী মজবুত দুর্গ। [আহমদ : ৯২১৪, সূত্রটি হাসান।]
আবু সাইদ খুদরি রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি—
من صام يوما في سبيل الله بَعَّد الله وجهه عن النار سبعين خريفا .
যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তার মুখমন্ডলকে জাহান্নাম হতে সত্তুর বছর দূরে রাখবেন। [বোখারি : ২৬৮৫।]
الصيام والقرآن يشفعان للعبد، فيقول الصيام : أي رب، إني منعته الطعام والشهوات بالنهار فشفعني فيه، ويقول القرآن : منعته النوم بالليل فشفعني فيه، فيُشَفَّعان .
সিয়াম ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। সিয়াম বলবে : হে প্রতিপালক ! দিবসে আমি তাকে পানাহার ও প্রবৃত্তি হতে বাধা দিয়েছি, সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে : রাতে আমি তাকে নিদ্রা হতে বিরত রেখেছি, সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন ; তাদের উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে। [বাইহাকি, শুআবুল ঈমান অধ্যায় : ১৯৩৮, হাদিসটি সহি।]
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন—
من قام ليلة القدر إيماناً واحتساباً غفر له ما تقدم من ذنبه، ومن صام رمضان إيماناً واحتساباً غفر له ما تقدم من ذنبه .
ইমান ও ইহতেসাবের সাথে যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর যাপন করবে, তার ইতিপূর্বের যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজান মাস জুড়ে ইমান ও ইহতেসাবের সাথে রোজা রাখবে, তারও ইতিপূর্বের যাবতীয় পাপ মোচন করে দেয়া হবে। [বোখারি : ১৯০১।]
তারই বর্ণিত ভিন্ন এক হাদিসে এসেছে—
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে রমজানে রাত যাপনের জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন। তিনি বলতেন :—
من صام رمضان إيماناً واحتساباً غفر له ما تقدم من ذنبه .
যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতেসাবের সাথে রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার ইতিপূর্বের যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [মুসলিম : ৭৫৯।]
অপর হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা বলেন : আমি রাসূলকে রমজানের রাত যাপনে উৎসাহ দিতে শুনেছি।
আবু সাইদ খুদরি বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
... ثم قال : كنت أجاور هذه العشر، ثم قد بدا لي أن أجاور هذه العشر الأواخر، فمن كان اعتكف معي فليثبت في معتكفه، وقد أُريت هذه الليلة ثم أُنسيتها؛ فابتغوها في العشر الأواخر، وابتغوها في كل وتر .
অত:পর তিনি বললেন : আমি এ দশে সম্মিলিতভাবে এতেকাফ যাপন করতাম, অত:পর আমাকে জানান হল শেষ দশ দিনে সম্মিলিতভাবে যাপনের জন্য। যে আমার সাথে এতেকাফে আগ্রহী, সে যেন তার এতেকাফগাহে অবস্থান করে। এ রাত আমাকে দেখানো হয়েছিল, কিন্তু আমি তা বিস্মৃত হয়েছি। তোমরা শেষ দশ দিনে তার সন্ধান কর। তোমরা প্রত্যেক বেজোড়ে তা অনুসন্ধান কর। [বোখারি : ২০১৮।]
অন্য রেওয়ায়েতে আছে—
যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এতেকাফে আগ্রহী, সে যেন ফিরে আসে (এতেকাফে বসে), আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, আমি তা বিস্মৃত হয়েছি। নিশ্চয় তা শেষ দশ দিনের বেজোড়ে। [বোখারি : ৮১৩।]
উবাদা বিন সামেত বর্ণিত হাদিসে এসেছে—লাইলাতুল কদর সম্বন্ধে অবগত করানোর জন্য রাসূল বের হলেন, তখন দেখতে পেলেন, মুসলমানদের দু ব্যক্তি বাদানুবাদে লিপ্ত, অত:পর তিনি বললেন : আমি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে তোমাদের জানানোর জন্য বেরিয়ে ছিলাম। অমুক অমুক ব্যক্তির বাদানুবাদের ফলে তা তুলে নেয়া হয়। হয়তো তাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। সুতরাং, তোমরা (শেষ দশ দিনের) সাত, নয় ও পাঁচে তার অনুসন্ধান কর। [বোখারি : ৪৯।]
ثلاثة لا ترد دعوتهم : الإمام العادل، والصائم حتى يفطر، ودعوة المظلوم تحمل على الغمام، وتفتح لها أبواب السماء، ويقول الرب عزو جل : وعزتي لأنصرنك ولو بعد حين .
তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না : ন্যায়পরায়ণ শাসক, ইফতার করা অবধি রোজাদার, এবং মজলুমের দোয়া—যা মেঘকে ছাড়িয়ে যায় এবং আকাশের দ্বার যার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, আল্লাহ পাক বলেন : আমার ইজ্জত ও মর্যাদার শপথ ! বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করব। [আহমদ : ৮০৪৩।]
আবু সাইদ খুদরি রা, বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন :—
إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة - يعني في رمضان -، وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة .
রমজানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তাআলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলমানের দোয়া কবুল করা হয়। [সহি আত তারগিব ওয়াত তারহীব : ১০০২।]
যায়েদ বিন খালেদ জুহানি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন :—
من فطّر صائماً كان له مثل أجرهم، من غير أن ينقص من أجورهم شيئاً .
যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। [ইবনে মাজা : ১৭৪৬।] ইফতার পরিমাণে স্বল্প হোক কিংবা অধিক—উভয় ক্ষেত্রে একই হুকুম। এ আল্লাহ তাআলার রহমত, ফজিলত ও এহসানের অনুপম নিদর্শন।
জাবের রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন—
عمرة في رمضان تعدل حجة .
রমজানে ওমরা হজের সমতুল্য। [আহমদ : ১৪৩৭।]
অপর এক হাদিসে তিনি বলেন, রাসূল বলেছেন :—
إن لله عند كل فطر عتقاء . وذلك في كل ليلة .
প্রতি ইফতারকালে আল্লাহ তাআলা অনেককে মুক্তি প্রদান করেন, আর তা প্রতি রাতেই ঘটে থাকে। [ইবনে মাজা : ১৬৪৩, হাদিসটি হাসান।]
সাহাবিদেরকে ক্রমাগত সৎকাজে এভাবে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, রাসূল তাদের কল্যাণ বিষয়ে ছিলেন সর্বোচ্চ সচেতন। আত্মা পূর্ণতার যতই ঊর্ধ্বে আরোহণ করুক না কেন, তা সর্বদা উপদেশ ও দিক নির্দেশনার মুখাপেক্ষী।
ওয়াজ এক ধরনের উপদেশ প্রদান পদ্ধতি, যা নববি আদর্শে উজ্জ্বল ও মহিমান্বিত, যা সকলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, যে ওয়াজ করবেন, স্থান-কাল-পাত্রের ভেদ ও পদ্ধতিগত কৌশল সম্পর্কে তাকে সজাগ থাকতে হবে।
ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব যত্নের সাথে সে দিনগুলোতে আমাদের ওয়াজ করতেন, এবং আমরা বিরক্ত হচ্ছি কি না তার প্রতিও খেয়াল রাখতেন। [বোখারি : ৬৮।] স্বত:স্ফূর্ত থাকাকালীন তিনি আমাদের ওয়াজ-নসীহত করতেন, এবং সর্বদা তা করতেন না।
উম্মতের মহান পূর্বসূরীগণের মাঝে আমরা এমন কয়েকজন বিদগ্ধ ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি লক্ষ্য করি, ওয়াজ পদ্ধতি অবলম্বনের ক্ষেত্রে যারা ছিলেন প্রবাদতুল্য ; যেমন হাসান বসরি, ইবনে জাওজি।
ইমাম আহমদ বলেন : মানুষের জন্য একজন সত্য গল্পকারের খুবই প্রয়োজন। [তালবিসে ইবলিস : ইবনে জাওজি, ১৫০।] তবে, বর্তমান যুগে একটি শ্রেণি সেই মহান পূর্বসূরীগণের অনুসরণের নামে প্রচলন করেছে ওয়াজের এমন পদ্ধতি, কৌশলগতভাবে যা খুবই বিভ্রান্তিকর ও দুর্বল। আত্মায় তার সামান্য প্রভাব পরিলক্ষিত হয় না। তাদের ওয়াজ কখনো হয় দুর্বল, সকলের মন জুগিয়ে বলা, ফলে শুভ-পরিণাম শূন্য, আর কখনো কঠোর, মানুষের মন-মানসিকতার প্রতি পরোয়াহীনভাবে বলা—এ ধরনের ভারসাম্যহীন ওয়াজ পদ্ধতির ফলে আমরা দেখছি এই সমাজে ওয়াজ হয়ে পড়েছে খুবই ঠুনকো ব্যাপার, যা বিন্দুমাত্র প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় না।
পূর্বের মহান ওয়ায়েজগণ মানুষের বিবেক ও আকলের দ্বারে আঘাত করতেন, জাগিয়ে তুলতেন শুভবুদ্ধির প্রাণ। কোরআন এক ভারসাম্যপূর্ণ নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে সকলকে সত্য পথে আহবানের কর্মপন্থা বাতলে দিয়েছে, কোরআন একই সাথে ওয়াজ করে, এবং সম্বোধন করে বিবেককে, বিবেকের দ্বারে বারংবার হানা দেয়, তাকে জাগিয়ে তোলে-উৎসাহিত করে সত্য-সুন্দর পথে পরিচালিত হতে।।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/130/43
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।