hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

৪১
সাহাবিদের তালিম দান
সাহাবিদের তালিম-তরবিয়তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতটা প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালাতেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ক্ষেত্রে প্রমাণের দ্বারস্থ হওয়া এক প্রকার বাতুলতা। কারণ, তার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, মৌলিক দায়িত্বই ছিল সাহাবিদের তালিমকে কেন্দ্র করে।

সামুরা বিন জুন্দুব রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন—

لا يغرَّنَّ أحدكم نداء بلال من السحور، ولا هذا البياض حتى يستطير

সেহরির জন্য বেলালের আজান এবং পূর্ণ বিকশিত ও ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত এ ফর্সা আলো যেন তোমাদের ধোঁকায় না ফেলে। [মুসলিম : ১০৯৪।]

উমর বিন খাত্তাব রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সা. বলেছেন—

إذا أقبل الليل من ها هنا، وأدبر النهار من ها هنا، وغربت الشمس فقد أفطر الصائم .

রাত্রি যখন এ-স্থলে এগিয়ে যাবে, দিবস সরে যখন হটে যাবে এখান থেকে এখানে, সূর্য অস্তমিত হবে, তখন রোজাদার ইফতার করবে। [বেখারি : ১৮৫৩। দ্র : ইবনে উসাইমিন, মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উসাইমিন।]

এ জাতীয় হাদিস ও কোরআনের এ উক্তি—

وَكُلُواْ وَاشْرَبُواْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ الصِّيَامَ إِلَى الَّليْلِ [ البقرة : 187]

আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না রাত্রির কৃষ্ণ-রেখা হতে উষার শুভ্র-রেখা প্রতিভাত হয়। অত:পর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর। [সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৭।]

—প্রমাণ করে, রোজার সময়ের সূচনা ফজরের উদয় হতে, এবং তার বিস্তৃতি সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত। রোজাদার পূর্ণ দিবস পানাহার হতে বিরত থাকবে। দীর্ঘ হোক কিংবা সংক্ষিপ্ত—দিবসের বিস্তৃতি যতক্ষণ প্রচলিত সময় অনুসারে ২৪ ঘন্টায় সীমাবদ্ধ থাকবে, ততক্ষণ রোজাদারকে এ সময়টুকু পানাহার হতে বিরত থেকে রোজা রাখার যাবতীয় বিধি ও নিয়ম পালন করতে হবে। তবে, যে সকল স্থানে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে দিবস ও রাত্রির গমনাগমন হয় না, তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিকটবর্তী দেশের হুকুম পালন করতে হবে, যেখানে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে সময়ের আবর্তন-বিবর্তন হয়। [বোখারি : ১৮৫৩। দ্র : মাজমুউ ফাতাওয়ায়ে ইবনে উসাইমিন।]

শাদ্দাদ বিন আউস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের আঠারতম দিন অতিক্রান্তের পর আমার হাত ধরে বাকি’ অঞ্চলে এক ব্যক্তির নিকট গেলেন, সে সিংগা নিচ্ছিল। রাসূল বললেন :—

أفطر الحاجم والمحجوم .

সিংগাগ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়ের রোজা নষ্ট হয়ে গেছে। [আবু দাউদ : ২৩৬৯। হাদিসটি সহি।]

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি এরশাদ করেছেন—

من أفطر في شـهر رمضـان ناسـياً فلا قضاء عليه ولا كفارة .

রমজানে কেউ যদি ভুলে খাদ্যগ্রহণ করে, তবে তার উপর কাজা ও কাফ্ফারা— কোনটিরই প্রয়োজন নেই। [ইবনে খুযাইমা : ১৯৯০, ইবনে হিববান : ৩৫২১, সূত্রটি হাসান।]

অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে—

من أكل ناسيا وهو صائم فليتم صومه، فإنما أطعمه الله وسقاه

রোজা অবস্থায় যে ব্যক্তি ভুলে খাবার গ্রহণ করবে, সে যেন রোজা পূর্ণ করে নেয়, কারণ, আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন। [বোখারি : ৬২৯২।]

আবু যর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ...অত:পর রাসূল বললেন, ইমাম সালাত সমাপ্ত করা অবধি যে ব্যক্তি তার সাথে সালাত আদায় করে যাবে, তাকে পূর্ণ রাত্রির সওয়াব প্রদান করা হবে। [আবু দাউদ : ১৩৭৫, হাদিসটি সহি।]

আব্দুল্লাহ বিন আউফা বর্ণিত হাদিসে আমরা দেখতে পাই, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্মের মাধ্যমে সাহাবিদের সামনে নমুনা পেশ করে তাদের শিক্ষা প্রদান করেছেন। উক্ত সাহাবি বলেন : একবার আমরা রমজান মাসে রাসূলের সাথে সফরে ছিলাম। সূর্য অস্তমিত হলে তিনি বলেন : হে অমুক ! নেমে এসে আমাদের জন্য ছাতু-মিশ্রিত ইফতার পেশ কর। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল ! এখনও তো দিবস অবশিষ্ট রয়েছে !? তিনি পুনরায় বললেন : নেমে এসে ছাতু মিশ্রিত ইফতার পেশ কর। লোকটি তখন নেমে খাবার পেশ করল। অত:পর রাসূলের নিকট তা উপস্থিত করলে তিনি তা পান করলেন। এরপর হাতের ইশারায় বললেন, সূর্য যখন এ স্থান হতে এ স্থানে অস্ত যাবে, এবং রাত্রি এ অবধি চলে আসবে, তখন রোজাদার ইফতার করবে। [মুসলিম : ১১০১।]

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল এরশাদ করেছেন :—

من ذرعه القيء فليس عليه قضاء، ومن استقاء فليقضِ .

যার অনিচ্ছায় বমি হবে, তার কাজা নেই, আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করবে, সে কাজা করে নেয়। [আহমদ : ১০৪৬৮, হাদিসটি সহি।]

তালিম ও শিক্ষাদানই পৃথিবীতে আগত নবি ও রাসূলদের কর্তব্য, যারা অনুসারী দায়ি ও সালিহীন, তাদের কর্তব্যও তাই হবে—এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। রাসূল এরশাদ করেছেন—

إن الله لم يبعثني معنتاً ولا متعنتاً، ولكن بعثني معلماً ميسراً .

নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আমাকে (অপরকে) কষ্ট প্রদানকারী কিংবা কষ্টে নিপতিতরূপে প্রেরণ করেননি ; বরং, তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন সারল্য আনয়নকারী শিক্ষকরূপে। [মুসলিম : ১৪৭৮।]

উমর বিন খাত্তাব কূফাবাসীর নিকট বার্তা পাঠালেন যে, আমি আম্মারকে আমিররূপে প্রেরণ করেছি, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদকে প্রেরণ করেছি শিক্ষক ও গভর্ণররূপে। [বোখারি : ৬৭৩৪।]

তালিম উম্মতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক দায়িত্ব, যা একই সাথে সম্মানের ও মর্যাদার, ব্যক্তির মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় যাকে কেন্দ্র করে, বৃদ্ধি পায় পরকালীন পুরস্কার, সৎকাজের অপার সম্ভাবনা, বিস্তৃত হয় সার্বিক কল্যাণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়টির প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করেছেন, কথায়-বক্তব্যে, কর্মে-প্রতিফলনে রূপ দিয়েছেন পূর্ণাঙ্গভাবে। রাসূলের পুণ্যবান সাহাবিগণ এ ব্যাপারে নানা সাক্ষ্য দিয়েছেন। মুআবিয়া বিন হাকাম হতে বর্ণিত, রাসূলের তালিমের উল্লেখ করে তিনি বলেন : আমার পিতা-মাতা তার তরে উৎসর্গিত, আমি তার পূর্বে কিংবা পরে তার তুলনায় উত্তম কোন শিক্ষকের সন্ধান পাইনি। আল্লাহর শপথ ! তিনি কখনো আমার সাথে কঠোরতা করেননি, প্রহার করেননি কখনো, কিংবা কটুবাক্য বলেননি। [মুসলিম : ৭৩৫।]

রমজান হচ্ছে আলেম ও দায়িদের জন্য তালিম ও দাওয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ ও উপযুক্ত সময়,—ইসলাম ও ঈমানের হাকিকত এবং স্বরূপ মানুষের সামনে তুলে ধরে, সর্বাত্মক শ্রম ব্যয়ে তাদের সামনে ইসলামি জীবন-যাপনের মাহাত্ম্য ও ফলশ্রুতির উত্তম নমুনা পেশ করে তারা এ সময়টির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারেন। রমজানে অধিক হারে মানুষের মসজিদমুখী হওয়ার ফলে সময়টি আমাদের জন্য খুবই উপযোগি—সন্দেহ নেই। এতে আমরা মানুষকে দ্বীনের ব্যাপারে আরো গভীর অনুসন্ধানী ও আগ্রহী করে তুলতে পারি, উদ্দীপিত করতে পারি কল্যাণ ও সৎকাজের পথে।

বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাই, সমাজে যারা বিভ্রান্ত মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর, শ্রমে ও নিষ্ঠায় নানা উপকরণ ব্যবহার করে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের ভ্রষ্ট মতবাদ। বরং, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, মতবাদ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ পরিকল্পনা ও পদ্ধতি নির্ধারণে তারা খুইয়ে দিচ্ছে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, ফলশ্রুতিতে ক্রমে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যাচ্ছে তাদের বিভ্রান্ত মতবাদ ও জীবনাচার, সত্যপথ-বিচ্যুত হচ্ছে অগণিত জনগোষ্ঠী।

তাই, এ ক্ষেত্রে পদ্ধতি ও প্রস্ত্ততিগত সূচনায় দাওয়াত ও ইসলাহের মহান ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত সচেতন কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। উদ্ভাবন করতে হবে পদ্ধতিগত নতুনত্ব। ফলে মানুষ সৎকাজ ও সৎপথে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে, তাদের মাঝে বিস্তার ঘটবে ইলম ও আমলের, রক্ষা পাবে প্রবৃত্তির আকর্ষণ হতে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন