মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
স্ত্রী-গণের সাথে রাসূলের বান্ধব সুলভ আচরণ ও সম্পর্ক
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/130/36
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রী-গণের সাথে খুবই বান্ধব সুলভ আচরণ করতেন, অভ্যাস-আচরণের এ বৈশিষ্ট্য আজীবন তিনি বজায় রেখেছেন। রমজান মাসের সাথে সম্পৃক্ত করে এ বৈশিষ্ট্যের যে কয়টি হাদিস ও বর্ণনা পাওয়া যায়, তার উদাহরণ নিম্নরূপ :—
রাসূল তাদের প্রতি সর্বদা লক্ষ্য রাখতেন, সচেষ্ট থাকতেন পরিবারের ভিতকে দৃঢ় রাখতে ; তিনি পরিবারকে পরিচালনা করতেন এমন এক আবহে, যা হত লোক-দেখানো চাকচিক্য, ঘৃণা-বিদ্বেষ ও রিয়া হতে মুক্ত। এ কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রী-গণের মাঝে ন্যুনতম অহংকার সৃষ্টির ভয়ে এতেকাফ বর্জন করেছিলেন।
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত : তিনি বলেন,
كان النبي صلى الله عليه و سلم يعتكف في العشر الأواخر من رمضان؛ فكنت أضرب له خباء فيصلي الصبح ثم يدخله، فاستأذنت حفصة عائشة أن تضرب خباء فأذنت لها فضربت خباء؛ فلما رأته زينب بنت جحش ضربت خباء آخر؛ فلما أصبح النبي صلى الله عليه و سلم رأى الأخبية، فقال : ما هذا؟ فأُخْبِر فقال النبي صلى الله عليه و سلم : آلبر تُرَونَ بهن؟ فترك الاعتكاف ذلك الشهر، ثم اعتكف عشراً من شوال .
রাসূল রমজানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ পালন করতেন। আমি তার জন্য একটি তাঁবু টানালাম, তিনি ফজরের সালাত আদায় করে তাতে প্রবেশ করলেন। হাফসা তাঁবু টানানোর জন্য অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন, এবং হাফসা আরেকটি তাঁবু টানালেন। জয়নব বিনতে জাহাশ দেখতে পেয়ে তার নিজের জন্য আরেকটি তাঁবু টানালেন। সকালে রাসূল অনেকগুলো তাঁবু দেখে বললেন : এগুলো কি ? তাকে বলা হলে তিনি এরশাদ করলেন : তোমরা (সাহাবিদের উদ্দেশ্যে) কি একে পুণ্যের মনে কর ? সে মাসে তিনি এতেকাফ পরিত্যাগ করলেন, অত:পর (কাজা স্বরূপ) শাওয়ালের দশ দিন এতেকাফ করলেন। [বোখারি : ২০৩৩।]
ইবনে হাজার রহ. বলেন : রাসূল হয়তো আশঙ্কা করেছিলেন যে, তাদের এবাদত হবে রাসূলের দৃষ্টি ও ভালোবাসা লাভের ক্ষেত্রে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা এবং অহংকারের কারণে, আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা থেকে নয়। ফলে এতেকাফ তার মৌলিকত্ব হারাবে। এ কারণেই তিনি তথা হতে প্রস্থান করেছিলেন। [ইবনে হাজার : ফতহুল বারি : খন্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৩২৪।]
আল্লামা বাজি বলেন : হয়তো রাসূল তাদের সকলকে প্রত্যাবর্তন করাতে চেয়েছিলেন, বিধায় নিজেই প্রস্থান করেছেন। তার প্রস্থানকেই সকলের জন্য কল্যাণকর, শিক্ষণীয় ও সন্তুষ্টির কারণ মনে করেছিলেন। মোমিনদের প্রতি তিনি ছিলেন খুবই দয়ার্দ্র। [বাজি : আল মুনতাকা : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৮৩।]
বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাই যে, অনেক মহান (!) ব্যক্তিবর্গ, বিশেষভাবে রমজান মাসে উমরা, রাত্রি জাগরণ, ও এতেকাফ ইত্যাদি এবাদতে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন, অথচ পরিবার-পরিজনকে রেখে আসেন সম্পূর্ণ অরক্ষিতে। এ ব্যাপারে রাসূলই আমাদের সর্বোচ্চ আদর্শ, মোস্তাহাব এবাদত পরিত্যাগ করে তিনি পরিবারের প্রতি মনোযোগ দেয়াকেই শ্রেয় মনে করেছেন।
রমজানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনকি এতেকাফ সত্ত্বেও, আপন বেশ-ভূষা ও দেহে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন :—
كان النبي صلي الله عليه و سلم إذا اعتكف يدني إلي رأسه فأرجله، وكان لا يدخل البيت إلا لحاجة الإنسان .
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতেকাফকালীন আমার নিকট মস্তক এগিয়ে দিতেন, আমি তার কেশবিন্যাস করে দিতাম, মানবিক প্রয়োজন ব্যতীত তিনি গৃহে প্রবেশ করতেন না। [মুসলিম : ২৯৭।]
অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে : এতেকাফকালীন তিনি তার মস্তক আমার নিকট এগিয়ে দিতেন, আমি হায়েজা অবস্থাতেও তা ধৌত করে দিতাম। [বোখারি : ৩০১।] স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক ও প্রীতির এর চেয়ে উত্তম নিদর্শন রয়েছে বলে আমি অবগত নই।
রোজা অবস্থাতেও রাসূল তার স্ত্রী-গণকে চুম্বন করতেন, মেলামেশা করতেন ঘনিষ্ঠভাবে। উম্মুল মোমিনীন আয়েশা রা.-এর হাদিসে আছে—রমজান মাসেও রাসূল চুম্বন করতেন। [মুসলিম : ১১০৬।] অপর রেওয়ায়েতে আছে : রাসূল রমজানে রোজা রেখে চুম্বন করতেন। [মুসলিম : ১১০৬।] ভিন্ন এক রেওয়ায়েতে এসেছে, আয়েশা রা. বলেন : রাসূল চুম্বনের জন্য আমার নিকট ঝুঁকে এলেন, আমি বললাম : আমি তো রোজাদার ! তিনি বললেন, আমিও রোজাদার। আয়েশা বলেন : অত:পর তিনি ঝুঁকে এসে আমাকে চুম্বন করলেন। [আহমদ : ২৫০২২, সূত্রটি শুদ্ধ।]
হাফসা রা. বলেন : রাসূল রোজা রাখা অবস্থায় চুম্বন করতেন। [মুসলিম : ১১০৭।]
অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখেই তার কোন কোন স্ত্রীর মুখমন্ডলে চুম্বন করতেন। [আহমদ : ২৬৪৪৫।]
উম্মে হাবিবা হতে বর্ণিত, রাসূল রোজা রেখেই চুম্বন করতেন। [আহমদ : ২৬৭৬২।]
ঘনিষ্ঠ মেলামেশার প্রমাণ স্বরূপ আয়েশা রা, বর্ণিত হাদিস : তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আলিঙ্গনাবদ্ধ করলে আমি তাকে বললাম, আমি তো রোজাদার ! তিনি বললেন : আমিও রোজাদার। [আহমদ : ২৫২৯০।] রোজা অবস্থায় মেলামেশা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আয়েশা রা. মাসরুক ও আসওয়াদকে জানান : হ্যা, (তিনি মেলামেশা করতেন) কিন্তু তিনি ছিলেন তোমাদের মাঝে সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণশীল। [মুসলিম : ১১০৬।]
এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে চুম্বন ও মেলামেশার ক্ষেত্রে সকল রোজাদারই সমকাতারভুক্ত নয়। যে ব্যক্তি রাসূলের অনুরূপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, তার জন্য বৈধ, অন্যথায় বীর্যপাত কিংবা সংগমের অবস্থায় এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে যে ব্যক্তি আশঙ্কা করে রোজা বিনষ্ট হওয়ার, তার জন্য চুম্বন বা ঘনিষ্ঠ মেলামেশা বৈধ নয়। আমলের ক্ষেত্রে মৌলনীতি হচ্ছে, যা ওয়াজিব পূর্ণ করার অবলম্বন, তাকে রক্ষা করা ওয়াজিব। এ ক্ষেত্রে যে মাঝামাঝি প্রকৃতির, তার জন্য মাকরূহ।
আয়েশা হতে আরো বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল রোজা রেখে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা করতেন। [মুসলিম : ১১০৬।] ভিন্ন এক রেওয়ায়েতে আছে—রাসূল রোজা অবস্থায় ঘনিষ্ঠ মেলামেশা করতেন, অত:পর উভয় অঙ্গের মাঝে একটি কাপড় স্থাপন করে দিতেন। [আহমদ : ২৪৩১৪, হাদিসটি সহি।]
চুম্বন, আলিঙ্গন ও প্রীতি প্রকাশের নির্দোষ বিষয়গুলোকে রোজা বাধা প্রদান করবে না। তবে, শর্ত হচ্ছে একে একটি নির্দিষ্ট সীমায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, শরিয়তের অবশ্য বিধান লঙ্ঘন করা যাবে না।
তবে, যারা নিজেদের পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে এতটাই মগ্ন হয়ে আছে যে, পার্থিব অর্জনের নিমিত্তে ভুলে বসেছে পরকালের অর্জন ও সাফল্য। পরিবারকে ব্যস্ত রাখছে ইহকালীন নানা ঘটনায়, সুযোগ তৈরি করছে না এবাদত, আনুগত্য ও সওয়াবের কাজের—তাদের পরিণতি খুবই ভয়াবহ ও আতঙ্ককর। আল্লাহ তাআলা বান্দার এ প্রবণতার ফলে পরিবার-পরিজনকে শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কোরআনে এসেছে—
হে ইমানদারগণ ! তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মাঝে রয়েছে তোমাদের শত্রু। সুতরাং, তাদের ভয় কর। [সূরা তাগাবুন : আয়াত : ১৪।] অর্থাৎ, তাদের আকাঙ্ক্ষা ও প্রবণতা তোমাকে যে পথে নিয়ে যাবে, তা শত্রুতার, সুতরাং...।
রমজানের প্রথম বিশ দিনে রাসূল স্ত্রীদের সাথে সহবাসে মিলিত হতেন, তবে শেষ দশ দিনে এতেকাফকালীন তা হতে বিরত থাকতেন, ব্যস্ত থাকতেন নির্জন এবাদতে। রাসূলের এ আচরণ প্রমাণ করে, অধিক-হারে এবাদত সত্ত্বেও পরিবার-পরিজনের হক আদায়ে কোন প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি হয় না।
রাসূলের প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : স্বপ্নদোষে নয়, (সহবাসের কারণে) রমজানে অপবিত্র অবস্থায় রাসূলের ফজর হয়ে যেত। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা পালন করতেন। [মুসিলম : ১১০৯।]
উম্মে সালামা কর্তৃক বর্ণিত অন্য রেওয়ায়েতে আছে :—স্ত্রী সহবাসের ফলে অপবিত্র অবস্থাতেও রাসূলের ফজর হয়ে যেত। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা পালন করতেন। [বোখারি : ১৯২৬।]
ভিন্ন রেওয়ায়েতে আছে : স্বপ্নদোষের কারণে নয়, রাসূল অবশ্যই রমজানে সহবাসের কারণে অপবিত্র অবস্থায় সকাল করতেন, অত:পর রোজা রাখতেন। [মুসলিম : ১১০৯।]
তবে, রাসূল কেবল রমজানের প্রথম বিশ দিনে স্ত্রী সহবাস করতেন, শেষ দশ দিনে তিনি এতেকাফ পালন করতেন। আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
كان النبي صلي الله عليه و سلم إذا دخل العشر شد مئزره وأحيا ليله وأيقظ أهله .
শেষ দশ দিনে রাসূল স্ত্রী সহবাস বর্জন করতেন, রাত্রি জাগরণ করতেন, এবং জাগিয়ে দিতেন পরিবারকে। [বোখারি : ২০২৪।]
ইবনে হাজার شد المئزر -কে ব্যাখ্যা করেছেন স্ত্রী সহবাস পরিত্যাগ অর্থে। [ফতহুল বারি : ইবনে হাজার : খন্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৩১৬।]
ইমাম বাইহাকি বর্ণিত একটি হাদিসে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে। আলী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিনে পূর্ণ প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতেন, বর্জন করতেন স্ত্রী সহবাস। [বাইহাকি : আস সুনানুল কুবরা : খন্ড : ৪, পষ্ঠা : ৩১৪।] সালাত আদায়, কোরআন তেলাওয়াত, ধ্যান, আত্মিক ও মৌখিক জিকির—ইত্যাদির মাধ্যমে রাতকে এবাদত-শোভিত করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।
এ হচ্ছে রাসূলের খুবই ভারসাম্যপূর্ণ গুণ। উল্লেখিত হাদিসগুলোতে রাসূলের কর্ম দ্বারা বিষয়টি প্রমাণিত হয়, আবু দারদা বর্ণিত একটি হাদিসে মৌখিক স্বীকৃতি পাওয়া যায়, সালমান ফারসির এক উক্তি শ্রবণ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন, বলেছেন : সালমান সত্য বলেছে। সালমান রা.-এর উক্ত উক্তি ছিল : তোমার উপর হক রয়েছে তোমার রবের, তোমার আত্মার এবং তোমার পরিবারের ; সুতরাং, তুমি প্রত্যেক হকদারের প্রাপ্য বুঝিয়ে দাও। [বোখারি : ৬১৩৯।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/130/36
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।