hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

২৫
রাসূলের বিনয় ও যুহুদ
যার অন্তর লীন হয়েছে, বিনম্র হয়েছে মহান সত্ত্বার সামনে, সন্ধান পেয়েছে প্রকৃত মাবুদের, অনুভব করেছে আত্মিক দৌর্বল্যের, বিনয়-যুহুদ তার পরিচয় ও নিদর্শন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—রবের পরিচয় লাভ ও তার তরে লীন হওয়ার ক্ষেত্রে যিনি ছিলেন সর্বোত্তম আদর্শ—এমন পরিচয় ও নিদর্শনই ধারণ করেছিলেন নিজের জন্য। শরিয়ত, শরিয়ত প্রদত্তার মহত্ত্ব, তার সাথে সম্পর্কের প্রবৃদ্ধি, পার্থিবে অনাসক্তি ও পরকালে প্রবল আসক্তি—ইত্যাদির জন্য অন্তরের বিনয় ও নিবেদনের মাধ্যমে এ মারেফাত ও আল্লাহ ভীতির জন্ম নেয়। অভ্যাস ও আচরণের নানা ক্ষেত্রে রাসূল যুহুদ অবলম্বন করতেন, আচরণে অবলম্বন করতেন বিনয়ের সর্বোচ্চ পরাকাষ্ঠা।

রাসূল এক চাটাইতে পূর্ণ রাত্রি কাটিয়ে দিতেন। আয়েশা রা. বর্ণনা করেন :—

كان الناس يصلون في المسجد في رمضان أوزاعاً، فأمرني رسول الله صلي الله عليه و سلم فضربتُ له حصيراً فصلى عليه .

রমজানে লোকেরা মসজিদে দলে দলে সালাত আদায় করত ; রাসূল আমাকে নির্দেশ দিলে আমি তার জন্য একটি চাটাই বিছিয়ে দিলাম, তিনি তাতে সালাত আদায় করলেন। [আবু দাউদ : ১৩৭৪, হাদিসটি হাসান।]

রাসূল রমজানে এতেকাফ পালন করতেন একটি তুর্কি তাঁবু টানিয়ে, যার প্রবেশমুখে ঝুলান থাকত একটি চাটাই। আবু সাইদ খুদরি বর্ণিত হাদিসে এসেছে—রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতেকাফ পালন করলেন একটি তুর্কি তাঁবুতে, যার প্রবেশমুখে ছিল একটি চাটাই। তিনি বলেন : রাসূল স্বহস্তে উক্ত চাটাই ধরে একপাশে সরিয়ে দিলেন, অত:পর মুখ বের করে মানুষের সাথে কথা বললেন। [ইবনে মাজা : ১৭৭৫, হাদিসটি সহি।]

শুকনো খেজুর পাতায় নির্মিত তাঁবুতে রাসূল এতেকাফ পালন করতেন। ইবনে উমর রা. বলেন : রাসূল রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ পালন করলেন, তার জন্য শুকনো খেজুর পাতা দিয়ে গৃহ-সদৃশ বানান হল। [আহমদ : ৫৩৪৯, হাদিসটি সহি।] মসজিদের ছাদ দিয়ে তার জায়নামাজে পানি গড়িয়ে পড়ত, তিনি মাটি আর কাদাতেই সেজদা করতেন। আবু সাইদ খুদরি রা. বর্ণিত হাদিসে আছে—...সে রাতে আকাশ-ঝেপে বৃষ্টি হল, একুশ তারিখের রাতের ঘটনা, রাসূলের জায়নামাজে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। রাসূলের উপর আমার দৃষ্টি পড়ল। আমি দেখলাম, সকাল হয়ে এসেছে, পানি আর কাদায় তার মুখমন্ডল মাখামাখি হয়ে আছে। [বোখারি : ২০১৮।]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই সাদামাটাভাবে ইফতার ও সেহরি গ্রহণ করতেন। তার খাদেম আনাস বিন মালেক বর্ণনা করেন : রাসূল সালাত আদায়ের পূর্বে কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, ভেজা খেজুর না হলে শুকনো খেজুর গ্রহণ করতেন। শুকনো খেজুরও না থাকলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করতেন। [তিরমিজি : ৬৯৬, হাদিসটি সহি।] অপর এক হাদিসে তিনি বলেন : একদা সেহরিকালে রাসূল আমাকে লক্ষ্য করে বলেন—

يا أنس إني أريد الصيام؛ أطعمني شيئاً ! ، فأتيته بتمر وإناء فيه ماء، وذلك بعد ما أذن بلال .

হে আনাস আমি রোজা রাখতে আগ্রহী, আমাকে কিছু আহার করাও। আমি তার জন্য খেজুর ও এক পাত্রে পানি এনে হাজির করলাম। এ ছিল বেলালের (প্রথম) আজানের পরে। [নাসায়ি : ২১৬৭, হাদিসটি সহি।]

তিনি ছিলেন খুবই স্বল্পাহারী। যামারা বিন আব্দুল্লাহ বিন আনিস তার পিতা হতে বর্ণনা করেন : আমি বনি সালামার এক মজলিসে বসা ছিলাম—আমি ছিলাম তাদের মাঝে সর্বকনিষ্ঠ—তারা বলাবলি করল, লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আমাদের পক্ষ হতে রাসূলকে কে প্রশ্ন করবে? এটি ছিল একুশে রমজানের সকালের ঘটনা। আমি বেরিয়ে মাগরিবের সালাতে রাসূলের নিকট উপস্থিত হলাম। অত:পর তার গৃহের দরজায় দন্ডায়মান হলে তিনি পাশ দিয়ে গমন করলেন। বললেন, প্রবেশ কর। প্রবেশ করলে আমাকে তার রাতের খাবার প্রদান করা হল। তিনি দেখতে পেলেন খাদ্য স্বল্পতার কারণে আমি খাদ্যগ্রহণ হতে বিরত থাকছি। [আবু দাউদ : ১৩৭৯, হাদিসটি হাসান।]

এ থেকে প্রমাণ হয় রাসূলের হেদায়েত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ জুড়ে রয়েছে বিনয় ও যুহুদ। বিনয় ও যুহুদের অর্থ হল : পরকালে কল্যাণ সাধন করে না, এমন যাবতীয় কিছু পরিহার করা, উদারতা, লোক-দেখানো জাঁকজমক না করা, পার্থিব বিষয় যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়া, কখনো কখনো কঠোরতা অবলম্বন, জরাজীর্ণ বেশ ধারণ—ইত্যাদি ; যেন আত্মা প্রবৃত্তির দাসত্বে আকণ্ঠ নিমজ্জিত না হয়ে পড়ে। এবাদতের মৌলিকত্ব হল আত্মার বিনয়, আগ্রহ ও ব্যাকুলতার সাথে শরিয়তের প্রতি সর্বস্ব নিয়োগ। পার্থিবের সাথে প্রগাঢ় সম্পর্ক, তার জাঁকজমক নিয়ে সর্বদা মেতে থাকা এ পথের সবচেয়ে বড় বাধা। এর মাধ্যমে প্রমাণিত যুহুদ ও বিনয়ের সর্বনিম্ন স্তর অর্জন যে কোন মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। এ ব্যাপারে মৌলনীতি হচ্ছে : বান্দা হারাম প্রবৃত্তির পরওয়া করবে না বিন্দুমাত্র, বৈধ হোক কিংবা অবৈধ—ওয়াজিব আদায়ের ক্ষেত্রে যে বিষয় বাধা, তাকে এড়িয়ে যাবে দৃঢ়তার সাথে।

তবে, এর উদ্দেশ্য এই নয় যে, প্রবৃত্তির যে কোন আস্বাদকে মানুষ সর্বদা এড়িয়ে যাবে ; প্রকারান্তরে যা পর্যবসিত হয় পার্থিব বৈরাগ্যে, আল্লাহ তাআলা ইসলামকে এ জাতীয় অসামাজিক বৈরাগ্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রেখেছেন। আমরা বরং, সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল ও তার পুণ্যবান সাহাবাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করব, বিচার-বিশ্লেষ ব্যতীত কোন বিষয়কে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাব না, কিংবা গ্রহণ করব না অমূলকভাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেদায়েত দান করুন, প্রদর্শন করুন সঠিক ও ঋজু পথ।

এই সূত্র ধরে বলা যায়, মৌলিকভাবে সম্পদ অর্জন অবাঞ্ছিত নিন্দনীয় বিষয় নয়, তবে সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে বান্দাকে আল্লাহর তরে অন্তরকে করে তুলতে হবে বিনয়ী, একমুখী ; অন্তরের প্রশান্তি ও সন্তোষ সম্পদে নয়, পেতে হবে আল্লাহর সাথে সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে, পরকালীন চিন্তাই হবে তার সার্বক্ষণিক চিন্তা ও ধ্যান, সাফল্যের মাপকাঠি। যুহুদের প্রকৃত স্বরূপ এর মাঝেই নিহিত। সম্পদ চিন্তা ও মোহে আকণ্ঠ নিমজ্জন, সম্পদের অর্জন ও প্রবৃদ্ধির লালসা—যুহুদের সাথে এগুলোর ন্যুনতম সম্পর্ক নেই ; টাকা ও অর্থের দাসত্বের অনুরূপ এগুলো হচ্ছে পার্থিবের দাসত্বের প্রতিফল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন