hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

৩১
শিক্ষাদান
রাসূল রমজান মাসে নানাভাবে তার স্ত্রী-গণকে শিক্ষা দান করতেন। হাদিসের পাঠক মাত্রই বিষয়টি স্বীকার করবেন, কারণ, রমজান বিষয়ক অধিকাংশ হাদিস তার স্ত্রী-গণ কর্তৃক বর্ণিত। স্ত্রীদের শিক্ষা ব্যাপারে রাসূলের গুরুত্বারোপের উত্তম প্রমাণ এগুলো। প্রমাণ স্বরূপ কয়েকটি হাদিস এ স্থানে উল্লেখ করা যেতে পারে—

আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, ‘হে আল্লাহর রাসূল আপনার কি মত ? আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জ্ঞাত হই, তাহলে আমি কি দোয়া পাঠ করব ?’—এ প্রশ্ন করার পর রাসূল তাকে বললেন :—

قولي : اَللّهُم إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيْمٌ تٌحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ .

তুমি দোয়া করবে ‘হে আল্লাহ ! আপনি ক্ষমাশীল সম্মানিত, আপনি ক্ষমা পছন্দ করেন, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন। [তিরমিজি : ৩৪৩৫।]

জনৈকা নারী আয়েশা রা.-কে প্রশ্ন করল : যে হায়েজা নারী রোজার কাজা করে, সালাতের কাজা করে না, তার কী হুকুম ? তিনি বললেন : আমাদেরও এমন হয়েছিল, আমদেরকে কেবল রোজা কাজা করার আদেশ দেয়া হয়েছে, সালাত কাজা করার হুকুম দেয়া হয়নি। [মুসলিম : ৩৩৫।]

আয়েশা রা. অপর হাদিসে বর্ণনা করেন : বেলাল রাত থাকতেই আজান দিয়ে দিতেন, রাসূল তাই সকলকে বললেন ইবনে উম্মে মাকতুম আজান দেয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করে যাও, কারণ, ফজর উদয় হওয়া ব্যতীত সে আজান দেয় না। [বোখারি : ১৮১৯।]

এ দু প্রকার হাদিস থেকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া যায়।

প্রথমত : শরিয়তের সাব্যস্ত নসের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন ও সর্বান্তঃকরণে তা গ্রহণ আবশ্যক। এ, সন্দেহ নেই, দ্বীনের খুবই মৌলিক একটি বিষয়, মোমিনদের আবশ্যিক গুণ ও বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন :—

إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ [ النور : 51]

যখন মোমিনদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য তাদেরকে আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তাদের উক্তি হয় এই—আমরা শ্রবণ করালাম এবং আনুগত্য করলাম। আর তারাই সফলকাম। [সূরা নূর : আয়াত ৫১।]

فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىَ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُواْ فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجاً مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسْلِيماً [ النساء :65].

কিন্তু না, আপনার প্রতিপালকের শপথ ! যতক্ষণ না তারা তাদের বিবাদের বিচারের দায়িত্ব আপনার উপর অর্পণ না করে, অত:পর আপনার সিদ্ধান্ত বিষয়ে তাদের মনে কোন-রূপ দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা মোমিন হবে না। [সূরা নিসা : আয়াত ৬৫।]

এ বিষয়টি সাহাবিদের জীবন ও জীবনাচারে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন মুগাফ্ফাল একবার দেখতে পেলেন জনৈক সাহাবি পাথর ছুঁড়ে মারছে। তিনি বললেন, তুমি পাথর ছুঁড়ে মের না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর ছুঁড়ে মারতে নিষেধ করেছেন, কিংবা তিনি একে অপছন্দ করতেন। কিন্তু এরপরও তিনি দেখতে পেলেন যে, উক্ত সাহাবি পাথর ছুঁড়ে মারছে। তাই তিনি বললেন, আমি তোমাকে হাদিস বর্ণনা করছি যে, রাসূল পাথর ছোঁড়া হতে নিষেধ করেছেন, কিংবা তিনি একে অপছন্দ করেছেন, অথচ তুমি পাথর ছুঁড়ছ! তোমার সাথে এ ব্যাপারে আর কিছুই বলব না। [বোখারি : ৫১৬২।] ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বললেন—

تمتع النبي صلي الله عليه و سلم، فقال عروة : نهى أبو بكر وعمر عن المتعة، فقال : أراهم سيهلكون، أقول : قال النبي صلي الله عليه و سلم، ويقولون : نهى أبو بكر وعمر .

রাসূল তামাত্তু হজ পালন করেছেন। তার বিরোধিতা করে উরওয়া মন্তব্য করেন যে, আবু বকর ও উমর রা. তামাত্তুর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। উত্তরে ইবনে আববাস বলেন যে, আমি দেখছি তারা ধ্বংস হবে। আমি বলছি রাসূল বলেছেন। আর তারা বলছে যে, আবু বকর ও উমর নিষেধ করেছেন। [ইবনে আব্দুল বার : জামে বায়ানিল ওয়া ফাজলিহি : ২৩৮১।]

দ্বিতীয়ত : ফজরের আজানের মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সকলকে ফজরের উদয় সম্পর্কে সচেতন করা। মুয়াজ্জিনের আজানের সূচনার পর কোনভাবে পানাহার বৈধ নয়, তবে যদি নিশ্চিত হওয়ার যায় যে, মুয়াজ্জিন ফজর উদয়ের পূর্বেই আজান দিচ্ছেন, তবে অবৈধ নয়। যে ব্যক্তি ফজর উদয়ের ক্ষেত্রে মুয়াজ্জিনের আজানের মাধ্যমে সচেতন হয় না, তার কথা ভিন্ন ; তার রোজা হবে কি-না সন্দেহ। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

তৃতীয়ত : মাগরিবের ক্ষেত্রে সূর্যাস্তের পরও আজানে কিছুটা বিলম্ব করার যে রীতি ক্যালেন্ডার ও কোন কোন মুয়াজ্জিনের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়, তার শরয়ি কোন ভিত্তি নেই। এমনিভাবে, সতর্কতা বশত: ফজরে সাদেক উদিত হওয়ার পূর্বেই যে আজান দেওয়া হয়, তারও কোন বৈধতা পাওয়া যায় না। এ ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন খুবই অসিদ্ধ একটি বিষয়। কারণ, এর ফলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে অসময়ে সালাত আদায় করে, পানাহার ত্যাগ করে সময় শেষ হওয়ার পূর্বে। নাজাত প্রত্যাশী ব্যক্তি মাত্রই যেন এ বিষয়গুলো এড়িয়ে যায় সযত্নে। দ্বীনের ক্ষেত্রে এগুলো বাড়াবাড়িতুল্য, রাসূলের স্পষ্ট উক্তির মাধ্যমে যার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। রাসূল এরশাদ করেন—

هلك المتنطعون، قالها ثلاثاً .

অতিরঞ্জনকারীরা ধ্বংস হয়েছে—তিনি এটি তিন বার বললেন। [মুসলিম : ২৬৭০।]

কল্যাণকর ও পূর্ণাঙ্গ হেদায়েতের একমাত্রিক নিদর্শন হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হেদায়েত। বেদআত মাত্রই বিভ্রান্তির নামান্তর, যে কোন বিভ্রান্তির অবশ্যম্ভাবী ফলশ্রুতি জাহান্নাম। রাসূল ও তার সম্মানিত সাহাবিগণ যখন সূর্যাস্তের ব্যাপারে প্রবল ধারণায় উপনীত হতেন—এমনকি, মেঘলা দিনেও, খোঁজ-অনুসন্ধানের বাহুল্য ছাড়াই দ্রুত ইফতার করে নিতেন। আসমা বিনতে আবু বকর রা.-এর হাদিসে পাওয়া যায়, তিনি বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবিত থাকাকালীন একবার মেঘলা দিনে আমরা ইফতার করার পর সূর্যোদয় হল। [বোখারি : ১৮৫৮। ইবনে উসাইমিন : মাজমুউ ফাতাওয়া : খন্ড : ১৯, পৃষ্ঠা : ২৬৯।]

তার বর্ণিত অপর এক হাদিসে পাওয়া যায়, তিনি বলেন :—

أن النبي صلي الله عليه و سلم قال : إن ابن أم مكتوم يؤذن بليل، فكلوا واشربوا حتى يؤذن بلال، وكان بلال يؤذن حين يرى الفجر .

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইবনে উম্মে মাকতুম রাতে আজান দেয়, সুতরাং তোমরা বেলালের আজান অবধি পানাহার কর। বেলাল রা. ফজর দেখে অত:পর আজান দিতেন। [ইবনে হিববান : ২৪৭৩, তার সূত্র খুবই শক্তিশালী। প্রসিদ্ধ হল, রাতের অংশে প্রথম আজান ছিল বেলাল রা. প্রদত্ত, উম্মে মাকতুমের নয়। দ্র : মুসলিম : ১০৯২। সুতরাং, এ হাদিসটি এক ধরনের আপাত বিরোধ তৈরি করে। তবে, বিষয়টি তলিয়ে দেখলে এমন মনে হবে না। কারণ, রাসূল তাদের উভয়ের মাঝে আজানের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিলেন। সুতরাং, বেলাল রা. কখনো কখনো ফজরের নয়, নিদ্রাগ্রহণকারী ও রাত জাগরণকারীদের সতর্ক করার জন্য আজান দিতেন রাতের অংশে। একে বলা হত প্রথম আজান। এ সময়ে দ্বিতীয় আজান দিতেন উম্মে মাকতুম। কখনো কখনো রাতের অংশের আজান দিতেন উম্মে মাকতুম, বেলাল রা. দিতেন ফজরের আজান। সুতরাং উভয় হাদিসের মাঝে আপাত বিরোধ মনে হলেও মৌলিকভাবে তাতে কোন বিরোধ নেই। সহি ইবনে হিববান : খন্ড ৮, পৃষ্ঠা : ২৫২-২৫৩।]

ভিন্ন এক হাদিসে তিনি বর্ণনা করেন, রাসূল এরশাদ করেছেন:—

مـن مـات وعليه صيام صام عنه وليه .

রোজার দায়িত্ব রেখে কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার পক্ষ হতে তার উত্তরাধিকারী রোজা আদায় করে নিবে। [বোখারি : ১৯৫২।]

হাফসা রা. বর্ণনা করেন :—

أن رسول الله صلي الله عليه و سلم قال : من لم يُجمع الصيام قبل الفجر فلا صيام له .

রাসূল বলেছেন, যে ফজরের পূর্বেই রোজার সূচনা না করে, তার রোজা নেই। [আবু দাউদ : ২৪৫৪, হাদিসটি সহি।] বর্তমান সময়ের নারী সমাজের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখতে পাব, তারা নানা রকম মূর্খতা ও বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত, এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে তারা অনবগত, যা কোনভাবেই বরদাশত করা যায় না। যদিও এর দায়-দায়িত্ব পুরোটাই নারীর উপর বর্তে, যেহেতু রাসূল এরশাদ করেছেন :—

من عمل عملاً ليس عليه أمرنا فهو رد .

যে এমন কাজ করবে, যা আমাদের ধর্মে নেই, তা পরিত্যাজ্য।—কিন্তু পরিবারের কর্তাব্যক্তি যে, তার পক্ষে কখনো দায় এড়ানো যাবে না। সন্দেহ নেই, আমানত নষ্ট ও দায়িত্ব পালনে অবহেলার পুরো দায় চাপবে তার ঘাড়ে। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার জন্য রাসূলের এ উক্তিই যথেষ্ট :—

كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته، فالرجل راع في بيته وهو مسؤول عن رعيته .

তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে, ব্যক্তি তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্বের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হবে। [বোখারি : ৮৫৩।]

অপর হাদিসে এসেছে, রাসূল বলেন :—

كفى بالمرء إثماً أن يضيع من يقوت .

ব্যক্তির জন্য পাপ হিসেবে এ-ই যথেষ্ট যে, যার ভোরণ-পোষণ তার দায়িত্ব তাকে সে বিনষ্ট করে দেয়। [আহমদ : ৬৪৯৫, হাদিসটি সহি লিগায়রিহ।]

সাহাবায়ে কেরামের আদর্শের সাথে তুলনা বা বিচার করলে আমাদের পরিবার ও তার ব্যবস্থাপনার দৈন্যের প্রকট রূপ ধরা পড়বে। রাসূলের সাহাবিগণ তাদের নারীদের প্রতি লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি শিশুদের প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতেন। রুবাইয়ি বিনতে মুআউয়িজ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আশুরার ভোরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত আনসারদের গ্রামে বার্তা পাঠালেন : যে ব্যক্তি রোজা রেখেছে, সে যেন রোজা পূর্ণ করে নেয়, আর পানাহার করছে যে, সে যেন পূর্ণ দিবস এভাবেই অতিবাহিত করে। এরপর আল্লাহ চাহে তো নিশ্চয় আমরা রোজা পালন করব, ছোট ছোট শিশুদেরও রোজা রাখতে বলব। তাদের নিয়ে আমরা মসজিদে গমন করব, তাদের হাতে তুলে দেব পশমের খেলনা। খাবারের জন্য কেউ যদি কাঁদে, তবে ইফতারের সময়ে তাদের খেতে দেব। [মুসলিম : ১১৩৬।]

শিশুদের এই দিকটি সম্পর্কে আমরা খুবই অবহেলা প্রবণ। আমাদের কেউ কেউ বরং, শিশুদের আগ্রহ সত্ত্বেও, তাদের রোজা, রাত-জাগরণ ও এবাদত হতে বিরত রাখে। শিশুরা ক্লান্ত হয়ে পড়বে, এ ভয়ে তারা ভীত। তাদেরকে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত রাখার এ হচ্ছে ভুল ও বিভ্রান্তিকর কৌশল। আল্লাহই ভাল জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন