hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

১৭
রমজানে সফর করা, রোজা রাখা কিংবা ভঙ্গ করা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে সফর করতেন ; সফরে তিনি কখনো কখনো রোজা পালন করতেন, কখনো ত্যাগ করতেন, এবং পানাহার করতেন, অন্যদেরও আদেশ দিতেন রোজা ভঙ্গের। এ ব্যাপারে নানা হাদিস পাওয়া যায়—ইবনে আববাস হতে তাউস বর্ণনা করেন : রাসূল রমজানে রোজা পালনরত অবস্থায় সফরে বের হলেন, পথে উসফান নামক এলাকায় পৌঁছে পানিপাত্র আনার নির্দেশ দিলেন। লোকদের দেখানোর জন্য তিনি প্রকাশ্যেই পানি পান করলেন। মক্কায় পৌঁছা অবধি তিনি পানাহার করতে থাকলেন। ইবনে আববাস বলতেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে সফররত অবস্থায় রোজা পালন করেছেন এবং ভঙ্গ করেছেন। সুতরাং, যার ইচ্ছা রোজা রাখবে, যার ইচ্ছা ভঙ্গ করবে। [বোখারি : ৪২৮৯।]

রমজানে সফররত অবস্থায় রাসূলের রোজা রাখা এবং ভঙ্গ করার বিষয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, যদি কষ্টের সম্ভাবনা না থাকে, রোজা ভাঙ্গার মত কিছু না ঘটে, তবে রোজা রাখাই উত্তম। কারণ, রাসূল এমনই করেছেন। আবু দারদার হাদিসে এসেছে—তিনি বলেন: প্রচন্ড তাপে আমরা রাসূলের সাথে রমজানে সফরে বের হলাম, এমনকি আমাদের কেউ কেউ অধিক তাপের ফলে মাথায় হাত দিচ্ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা ব্যতীত আমাদের মাঝে কেউ রোজাদার ছিলেন না। [মুসলিম : ১১২২&] হাদিসটি প্রমাণ করে, সম্ভব হলে রোজা পালনই উত্তম। এর মাধ্যমে বান্দা দ্রুত দায়-মুক্ত হবে, রোজা পালন করতে পারবে সঠিক সময়ে, সকলের সাথে একই সময়ে রোজা রাখার ফলে বিষয়টি তার জন্য সহজ হবে।

তবে, রোজা ভাঙ্গার মত যদি কোন কারণ থাকে, তবে রোজা না রাখাই উত্তম। এক হাদিসে রাসূল এরশাদ করেন :—

إن الله يحب أن تؤتى رخصه كما يكره أن تؤتى معصيته .

আল্লাহ পছন্দ করেন তার প্রদত্ত রুখসত যাপন করা, যেমন অপছন্দ করেন তার পাপে লিপ্ত হওয়া। [আহমদ : ৫৮৬৬, হাদিসটি সহি।]

কখনো কখনো, বরং, এ অবস্থায় রোজা রাখা মাকরূহ। কারণ, মক্কা অভিযান কালীন রমজান মাসে রাসূল রোজা পালন করেননি। ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রোজা পালনরত অবস্থায় রাসূল কুদাইদ ও উসফান নামক স্থানের মধ্যবর্তী প্রস্রবনে অবতীর্ণ হয়ে রোজা ভেঙে ফেললেন, মাস শেষ হওয়া অবধি তিনি এভাবেই পানাহার করে চললেন। [বোখারি : ৪২৭৫।]

আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমরা রাসূলের সাথে ছিলাম, আমাদের মাঝে অধিক ছায়া গ্রহণকারী ছিল সে ব্যক্তি, যে তার কাপড় দিয়ে ছায়া নিচ্ছিল। যারা রোজাদার ছিল তারা কিছুই করল না, আর যারা পানাহার করেছিল, তারা বাহন হাঁকাল, কাজে আত্মনিয়োগ করল, এবং প্রচুর পরিশ্রম করল। রাসূল বললেন : পানাহারকারীগণ আজ সওয়াব নিয়ে গেছে। [বোখারি : ২৭৩৩।]

যদি রোজা পালন খুবই কঠিন হয়ে পড়ে, এবং পানাহার আবশ্যক হয়, তবে পানাহার বাধ্যতামূলক। কারণ, রাসূল এমন কঠিন অবস্থায় রোজা পালনকারীকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন :

أولئك العصاة، أولئك العصاة .

এরা পাপী, এরা পাপী। [মুসলিম : ১১১৪।]

এক ব্যক্তি, যে এমন কঠিন দু:সাধ্য সময়ে রোজা রেখেছিল, তাকে ঘিরে ছিল একদল লোক, এবং ছায়া দিচ্ছিল ; দেখে রাসূল বললেন :

ليس من البر الصيام في السفر .

(এভাবে) সফরে রোজা পালন কোন পুণ্যের কাজ নয়। [আবু দাউদ : ২৪০৭।]

আবু সাঈদ খুদরি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রোজা পালনরত অবস্থায় আমরা রাসূলের সাথে মক্কায় সফরে বের হলাম। এক স্থানে যাত্রা বিরতিকালে রাসূল বললেন : তোমরা শত্রুব্যুহের কাছাকাছি পৌঁছে গেছ, পানাহার তোমাদেরকে শারীরিকভাবে সবল করে তুলবে। সুতরাং, আমাদের রুখসত প্রদান করা হয়েছিল। আমাদের কেউ রোজা রেখেছিল, পানাহার করেছিল কেউ কেউ। অত:পর ভিন্ন এক স্থানে উপনীত হলে রাসূল আমাদের উদ্দেশ্য করে বললেন : তোমরা ভোরে শত্রুর মুখোমুখি হবে, পানাহার হবে তোমাদের জন্য বলদায়ক, সুতরাং, তোমরা পানাহার কর। পানাহার ছিল বাধ্যতামূলক। তাই আমরা সকলে পানাহার করলাম। তিনি বলেন : এরপর আমরা অনেকবার রমজানের সফরে রাসূলের সাথে রোজা রেখেছি। [মুসলিম : ১১২০।] ইবনে কায়্যিম বলেন : পানাহারের জন্য বাসস্থান অতিক্রম করতে হবে রাসূল এমন বলেননি, এ ব্যাপারে রাসূল থেকে সহি কিছুই পাওয়া যায় না। [যাদুল মাআদ, খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৫৫-৫৬। পূর্ণ উদ্ধৃতিটি এরূপ...সাহাবিগণ যখন সফরের সূচনা করতেন, গৃহ প্রাঙ্গন অতিক্রম ব্যতীতই পানাহার করে নিতেন। তারা একে রাসূলের সুন্নত মনে করতেন। ... মোহাম্মদ বিন কাব হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি রমজানে আনাস বিন মালেকের নিকট আগমন করলে দেখতে পেলাম তিনি সফরে মনস্থ হয়েছেন, তার ঘোড়া প্রস্ত্তত হয়েছে, পরিধান করেছেন তিনি সফরের পোশাক। তিনি খাবারের নির্দেশ দিলেন এবং খাদ্য গ্রহণ করলেন, আমি বললাম : এটাই কি সুন্নত ? তিনি বললেন, হ্যা, সুন্নত। অত:পর তিনি সফরে বের হলেন।]

আমাদের মতে, এ মত ব্যক্তিগতভাবে আনাস রা.-এর। সফরের সূচনা ব্যতীত কেউ রুখসত পালন করতে পারবে না। কারণ, রাসূলের অসংখ্য সফরের কোথাও আমরা এর দৃষ্টান্ত পাই না। এবং কোরআনে এসেছে—

فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ [ البقرة : 184]

তোমাদের মাঝে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, ভিন্ন সময় রোজা রেখে নিবে। [সূরা বাকারা : ১৮৪।] যে সফরের সূচনা করেনি, সে সফরকারী হতে পারে না। অধিকাংশ আলেমের মতামত—সফরের সূচনা ব্যতীত পানাহার করা যাবে না।

সফরে রোজা পালনের উত্তম-অনুত্তম বিচারে শাস্ত্রজ্ঞ ও তত্ত্ববিদদের যাবতীয় বর্ণনা ও মতামতকে সামনে রেখেই আমরা বলতে পারি : সফরে রোজা পালন কিংবা ভঙ্গ করা—উভয়টিই রাসূলের আচরিত পথ। সফরের রোজা কিংবা পানাহারের বিষয়টি অযৌক্তিকভাবে যারা খারিজ করে দেন, তাদেরকে এ বিষয়ের প্রতি সবিশেষ যত্নবান হতে হবে—সন্দেহ নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন