hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল যেভাবে রমজান যাপন করেছেন

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

৪৭
রোজার আহকাম ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে রাসূলের নির্দেশনা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে সাহাবিদের রোজা বিষয়ক বিধি-বিধান সম্পর্কে জ্ঞাত করাতেন, রমজানের উদ্দেশ্য ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করতেন সকলকে। বিশেষভাবে তিনি সকলকে বলতেন রমজানে আত্মার পবিত্রতা অর্জন করতে, পাপ পরিহার করে চলতে, কারণ, রমজান ও অন্যান্য সময় সমকাতারের নয়।

জ্ঞান ও চরিত্রের গঠনমূলক কাজে যারা নিয়োজিত, তাদের ক্ষেত্রে এ এক কঠিন সত্য, এই দুর্বলতা হতে তারা কোনভাবেই মুক্ত নয়।

এ বিষয়ে রাসূল কতটা গুরুত্ব প্রদান করতেন, তার একটি উত্তম উদাহরণ পাই আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত হাদিসে। তিনি বলেন, রাসূল বলেছেন :—

من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه .

যে ব্যক্তি মিথ্যা কথন, সে অনুসারে আমল ও মূর্খতাপূর্ণ আচরণ পরিত্যাগ করবে না, তার পানাহার পরিত্যাগে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই (আল্লাহ তাকে কোন সওয়াব প্রদান করবেন না)। [বোখারি : ৬০৫৭।]

অপর এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন—

رب صائم حظه من صيامه الجوع والعطش، ورب قائم حظه من قيامه السهر .

কেউ কেউ আছে, ক্ষুৎপিপাসাই যার রোজার ফলাফল, অনেক রাত জেগে সালাত আদায়কারী আছে, যার প্রাপ্তি কেবল রাত্রি জাগরণ। [আহমদ : ৮৮৫৬।]

তিনি আরো বলেন : রাসূল বলেছেন—

الصيام جُنَّة فلا يرفث ولا يجهل، وإن امرؤ قاتله أو شاتمه فليقل : إني صائم -مرتين -

রোজা হচ্ছে ঢাল স্বরূপ, সুতরাং, তাতে কটু কথা বলবে না, এবং অজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করবে না। যদি কেউ তার সাথে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়, কিংবা গালমন্দ করে, তবে সে বলবে : আমি রোজাদার। ...দু বার...। [বোখারি : ১৮৯৪।]

ভিন্ন রেওয়ায়েতে আছে—

لا تسابّ وأنت صائم، فإن سابَّك أحد، فقل : إني صائم، وإن كنت قائماً فاجلس .

তুমি রোজা রেখে গালমন্দ কর না, যদি কেউ তোমাকে গালমন্দ করে, তবে বল: আমি রোজাদার। তুমি যদি দাঁড়িয়ে থাক, তবে বসে পড়। [ইবনে খুযাইমা : ১৯৯৪, সূত্রটি শুদ্ধ।]

আবু উবাইদা বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন : আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, রোজা ঢাল স্বরূপ—যতক্ষণ না তা ফুটো করা হয়। আবু মোহাম্মদ ব্যাখ্যা করে বলেন : অর্থাৎ যতক্ষণ না গিবতের মাধ্যমে তা ফুটো করা হয়। যে ব্যক্তি তার রোজাকে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয় হতে বিরত-মুক্ত না রাখবে, তার রোজা অপূর্ণ। কখনো কখনো এমনকি রোজার মৌলিক উদ্দেশ্যই এতে ব্যাহত হয়ে পড়ে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন—

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ [ البقرة :183].

হে মোমিনগণ ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। [সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৩।] আয়তটি বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করে তোলে।

উক্ত আয়াত ও হাদিস এবং এ জাতীয় অন্যান্য শরয়ি বর্ণনা হতে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজা, তার আদব ও আমলের মাধ্যমে আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের দিকে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা রেখেছেন। এর গূঢ় উদ্দেশ্য হচ্ছে—তাকওয়া, বিনয়, আত্মসমর্পণ, আল্লাহর তরে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বান্দা আপনাকে শোভিত করে তুলবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ, জান্নাতের অনপনেয় নেয়ামত ও জাহান্নামের অগ্নিশিখা হতে মুক্তি লাভের মাধ্যমে মহান করে তুলবে তার ঐহিক ও পারত্রিক জীবন। ধৈর্য ও শয়তানের আক্রমণকে দুর্বল করে দেওয়ার ক্রমাগত অনুশীলনে নিজেকে ঋদ্ধ করবে। আত্মার নিয়ন্ত্রণ, তার লাগাম সঠিক হাতে স্থাপন, ইহকাল ও পরকালের যা কল্যাণকর ও সৌভাগ্যময়, তাতে পূর্ণ আত্মনিয়োগ, অন্তরের অন্তস্তলে আল্লাহ-ভীতি ও ধ্যান সর্বদা জাগরূক রাখা, হৃদয়কে প্রজ্বলিত রাখা, কঠোরতা দুরিকরণ, জিকির ও পরকাল চিন্তায় তাকে নিয়োগ করা, নেয়ামতের মহিমা, মানুষের মানবিক দুর্বলতা, শারীরিক ও মানসিকভাবে যাবতীয় রোগ-ব্যাধি হতে দেহের মুক্তি ও সংরক্ষণ—ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেকে উত্তরোত্তর উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাবে।

রোজা, তাই,—ইমাম রাজির বক্তব্য অনুসারে—দম্ভ, ঔদ্ধত্য, অহংকার আর মন্দ বিষয় হতে মানুষকে বিরত রাখে, পার্থিবের আস্বাদ ও তার কর্তৃত্ব খর্ব করে। কারণ, রোজা উদর এবং যৌনাঙ্গের কামনা প্রশমিত রাখে। যে ব্যক্তি অধিক-হারে রোজা রাখবে, তার জন্য এ দুটিকে সামলানো সহজ হয়ে যাবে, বাধা প্রাপ্ত হবে এর সরবরাহ। রোজা ব্যক্তিকে হারাম ও অশ্লীল বিষয় হতে বাধা প্রদান করবে, পার্থিবের কর্তৃত্ব শিথিল করে দেবে। এসবই তাকওয়ার সমন্বয়ক। [রাজি : মাফাতিহুল গায়েব : খন্ড : ৫, পৃষ্ঠা : ৭০।]

নফস—যেমন বলেছেন আবু সোলাইমান দারানি—যখন ক্ষুধার্ত হয়, আক্রান্ত হয় অসহনীয় পিপাসায়, বিশুদ্ধ হয় তখন, হয়ে উঠে তীক্ষ্ণ। আর যখন তা ভরপুর পরিতৃপ্ত থাকে, অন্ধ হয়ে যায় তখন। [ইবনে জাওজি, সিফাতুস সাফওয়া : খন্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ২২৫।]

এই ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি, যে ব্যক্তি তার রোজাকে পূর্ণাঙ্গ করতে চায়, পেতে চায় পূর্ণ সওয়াব, আগ্রহী যে ব্যক্তি রোজার মর্যাদায় নিজেকে মর্যাদাবান করে তুলতে, তার কর্তব্য, রোজার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে যথারীতি জ্ঞান অর্জন করা, এ ব্যাপারে যাবতীয় আলস্য পরিত্যাগ করে কেবল সমাজ ও প্রচলিত রীতি অনুসরণ করে নয় ; এবাদত করা স্বেচ্ছায়, স্বত:স্ফূর্তভাবে, বুঝে-শুনে। সামাজিক প্রচলনের বশবর্তী হয়ে এবাদত এক প্রকার অপূর্ণতা ও বিপদের সৃষ্টিকারী—শায়েখ দাউসারি মন্তব্য করেন—পরকালীন জীবনারম্ভের পূর্বেই যদি মানুষ ইলাহি নীতিমালা প্রণয়নের হিকমত সম্পর্কে জ্ঞাত না হয়, সজাগ না হয় তার ইহকালীন ফলাফলের ব্যাপারে, তবে তার পক্ষে একে পূর্ণতায় কিংবা বিশুদ্ধ প্রক্রিয়ায় তুলে আনা কখনো সম্ভব হবে না। [... : সিফাতুল আসার ওয়াল মাফাহিম : খন্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৮৩।]

এমনিভাবে, তাকে পালন করতে হবে যাবতীয় অবশ্য পালনীয় বিধানগুলো, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য বর্জনীয় কর্ম-কথা হতে পবিত্র রাখতে হবে নিজেকে। ইখলাসকে করে তুলতে হবে পূর্ণাঙ্গ, মহীয়ান। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণই হবে তার একমাত্র অবলম্বন। ব্যক্তি ওয়াজিব আদায়ের পাশাপাশি মোস্তাহাব আমল আদায়ের মাধ্যমেও তার পরকালীন প্রাপ্তিকে বৃদ্ধির প্রয়াস চালাবে। কারণ, বান্দা এর মাধ্যমে পূর্ণতার উচ্চ শিখরে উন্নীত হয়। জাবের রা. মন্তব্য করেন—যখন তুমি রোজা রাখ, তখন তোমার শ্রবণ, দৃষ্টি, ও কথাকে মিথ্যা ও পাপ হতে মুক্ত রাখ। তুমি তোমার রোজা ও পানাহারের দিবসকে সম-কাতারের করে ফেল না। [ইবনে আবি শায়বা : ৮৮৮০।]

আবু হুরায়রা রা. বলতেন : গিবত রোজাকে ফুটো করে দেয়, এস্তেগফার সে ফুটোতে তালি দেয়। পরবর্তী দিবসে তোমাদের যার পক্ষে রোজা রেখে ফুটো বন্ধ করা সম্ভব, সে যেন তাই করে। [বাইহাকি : শুআবুল ঈমান : ৩৬৪৪।]

তরবিয়ত বিষয়ে রাসূলের হেদায়েত সম্পর্কে যার ন্যুনতম পাঠ রয়েছে, দেখতে পাবে তার নীতিমালা ও ভিত্তি গড়ে উঠেছে আন্তর নীতিমালার প্রতি লক্ষ্য রেখে, একেই নিরূপণ করা হয়েছে এবাদতের মৌলিক ভিত্তি হিসেবে। তাই অন্তর পূর্ণতা লাভ করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মের মাধ্যমে। ‘সে তার প্রবৃত্তি ও পানাহার আমার কারণে পরিত্যাগ করেছে’ [মুসলিম : ১১৫১।]—হাদিসে কুদসির এ বাক্যাংশের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইবনে কায়্যিম বর্ণনা করেন—রোজাদারের বাহ্যিক ও প্রকাশ্য পানাহার বিষয়েই কেবল সকলে অবগত হতে পারে, অন্যথায় আল্লাহর উদ্দেশ্যে পানাহার ও প্রবৃত্তি হতে নিজেকে মুক্ত রাখা এমন এক বিষয়, যা কোন বান্দাই অবগত হতে সক্ষম না। এটাই হল রোজার হাকিকত ও প্রকৃত রূপ। [যাদুল মাআদ : ইবনে কায়্যিম : খন্ড : ২, পৃষ্ঠা : ২৯।]

সুতরাং, বর্তমান সময়ে চরিত্র ও অভ্যাস গঠনমূলক অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই আমরা দেখতে পাই, বাহ্যিক গঠনের প্রতিই কেবল জোর দেওয়া হচ্ছে, তাতে আরোপ করা হচ্ছে নানারূপ কঠোরতা, পাপ ও অপরাধের যা প্রকাশ্য ও দৃশ্যমান, অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা হচ্ছে কেবল তার প্রতি। অন্যদিকে যা বান্দার আন্তর সম্পর্কিত, সম্পর্কিত তার পাপ ও সওয়াবের সাথে, তার প্রতি প্রদর্শিত হচ্ছে সীমাহীন দৌর্বল্য ও আলস্য। রাসূলের বিভিন্ন হাদিস দ্বারা আমরা জানতে পারি যে, আন্তর সম্পর্কিত বিষয়ই মূলত: অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শুদ্ধতা ও বিনষ্টের গভীরতার মাপকাঠি।

হাদিসে এসেছে, রাসূল বলেছেন—

ألا وإن في الجسد مضغة، إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله؛ ألا وهي القلب .

নিশ্চয়, দেহে একটি মাংসপিন্ড রয়েছে, যখন তা ভাল থাকে, ভাল থাকে পুরো দেহ। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায় পুরো দেহ। শোন, তা হচ্ছে অন্তর। [বোখারি : ৫২।] আন্তর বিষয়ের প্রতি এভাবে উদাসীন থাকা বোকামি ব্যতীত কিছু নয়। আত্মিক সমর্পণের চূড়ান্ত পর্যায় হচ্ছে, কেননা, অন্তরের বিনয়, কথায় ও কাজে পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর তরে নিজেকে বিলীন করে দেয়া। আল্লাহর ভালোবাসা ও মহত্ত্ব সঞ্জাত এ বিনয় যখন অর্জিত হবে, নিশ্চয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাকে অনুসরণ করবে।

আত্মিকভাবে স্বত:প্রণোদিত হয়ে, স্বত:স্ফূর্তভাবে পাপ ও অপরাধ ত্যাগ করার মাধ্যমেই কেবল আত্মার পরিশুদ্ধিতে সাফল্য লাভ সম্ভব। মানুষের আন্তর বিষয়গুলো তার সর্বোচ্চ মনোযোগ প্রাপ্তির অধিকারী। এভাবে, মানুষ আল্লাহ তাআলার রহমত, বরকত ও বিশেষ দৃষ্টির মাধ্যমে সফল হয়ে উঠবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে এরশাদ করেছেন—

إن الله لا ينظر إلى صوركم وأموالكم، ولكن ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم .

আল্লাহ তাআলা তোমাদের বাহ্যিক প্রতিমূর্তি ও সম্পদের দিকে তাকান না, বরং তাকান অন্তর ও কর্মের প্রতি। [মুসলিম : ২৫৬৪।]

রমজান হচ্ছে এ ক্ষেত্রে এক বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন সাধনের সুবর্ণ সুযোগ। নৈর্ব্যক্তিক, সামাজিক বা ব্যক্তিক যে উপায়েই তা সংঘটিত হোক না কেন, উম্মতের জন্য তা বয়ে আনবে সমূহ কল্যাণ ও প্রাপ্তি।

নববি আদর্শের সম্পূর্ণ বিপরীত কিছু রীতি ও ধারা আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে, যা চরমভাবে রোজার উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। কেউ কেউ রোজার ওজর পেশ করে সময় মত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন না, বরং, বিষয়টি কখনো কখনো এতদূর গড়ায় যে, কেউ কেউ সালাতই ত্যাগ করে বসে ! সালাত হচ্ছে রোজা ও যাকাতেরই সমকাতারের—বরং, তার তুলনাতেও অধিক ফজিলতপূর্ণ। যে ব্যক্তি একে সহজভাবে নিবে, সে অবশ্যই বিপদাপন্ন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন—

بين الرجل وبين الشرك والكفر ترك الصلاة .

ব্যক্তি এবং শিরক-কুফরের মাঝে পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত ত্যাগ। [মুসলিম : ৮২।]

অপর স্থানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন :—

العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر .

আমাদের ও তাদের মাঝে অঙ্গিকার হচ্ছে সালাত, যে তা ত্যাগ করবে, সে কাফেরে পরিণত হবে। [তিরমিজি : ২৬২১, হাদিসটি সহি।] অপর হাদিসে রাসূল সালাত অস্বীকারকে নয়, ত্যাগ করাকেই কুফরে প্রবেশের কারণ বলেছেন। [আল্লামা ইবনে উসাইমিন তার ফাতাওয়া গ্রন্থে (খন্ড : ২০, পৃষ্ঠা : ৮৭) এ বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ফতওয়া প্রদান করেছেন। তার মন্তব্য : যে ব্যক্তি রোজা রেখে সালাত আদায় করে না, তার রোজা কোন কাজে দিবে না, তার রোজা কবুল হবে না। সে তার জিম্মা হতে মুক্তি পাবে না, বরং, সালাত আদায় না করলে তার উপর এ দায় থেকে যাবে। কারণ, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে না, সে ইহুদি ও নাসারার মত হয়ে যায়। কোন ইহুদি কিংবা নাসারা যদি রোজা রাখে, তা কি কবুল করা হবে ? তোমার কি মত ? নিশ্চয় তার রোজা কবুল করা হবে না। সুতরাং, তুমি সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট তওবা কর, এবং রোজা রাখ। যে আল্লাহর কাছে তওবা করে, আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।]

ওয়াজিব আদায়ে যদি কারো অপূর্ণতা থেকে যায়, কিংবা স্খলন ঘটে কোন প্রকার, তাহলে দেখা যায়, কোন কোন মূর্খ একে রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে ঘোষণা করেন। এ ক্ষেত্রে তার অনুসরণীয় হচ্ছে ইবনে হাযম-এর মত আহলে জাওয়াহেরগণ, কিংবা যে মনে করে যে, যে-কোন পাপের কারণে রোজা বিনষ্ট হয়ে যায়। কারণ—তাদের মত—রোজা রেখে পাপের ফলে সঠিক উপায়ে রোজা রাখা হয় না, পালিত হয় না ঠিক যেভাবে আল্লাহ তাআলা রোজা পালনের নির্দেশ প্রদান করেছেন। [দ্র : মুহাল্লা : ইবনে হাযম, খন্ড : ৬, পৃষ্ঠা : ১৭৮।]

এ খুবই বিভ্রান্তিকর একটি ফতওয়া। বিশুদ্ধ মত হচ্ছে, রোজা পালনকালীন পাপ করলে সওয়াব কমে যায়, বরং কখনো কখনো সওয়াব বিনষ্টই হয়ে যায়। কিন্তু এর ফলে রোজা বাতিল হয়ে যায় না, এবং কাজাও ওয়াজিব হয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন