মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রাত্যহিক জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু সহীহ হাদীস
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/310/39
এই অধ্যায়ে প্রাত্যহিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু সহীহ হাদীস উল্লেখ করা হলো। অনেকেই এই হাদীসগুলো জানা না থাকার কারণে আমল করতে পারেন না বা অন্য কোন মুসলিম ভাইকে এর উপর আমল করতে দেখে তাকে ভিন্ন চোখে দেখেন। তাই আপনাদের জানার ও আমলের সুবিধার্থে সহীহ বুখারী থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সহীহ হাদীস উল্লেখ করা হলো। উল্লেখ্য যে, সহীহ বুখারী হলো হাদীসের কিতাবসমূহের মধ্যে সবচেয়ে সহীহ কিতাব, যাতে কোন জয়ীফ ও জাল হাদীস নাই। তারপর মুসলিম শরীফ। আপনাদের সুবিধার্থে হাদীসগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ বুখারী থেকে নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ এসব সহীহ হাদীসের কিতাব কিনুন।
১. আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস (রঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি উমর (রাঃ)-কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন শুনেছিঃ প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের জন্য অথবা কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে-সেই উদ্দেশ্যই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য। বুখারী, ১ম খন্ড, হাদীস নং ১।
শিক্ষাঃ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই নেকীর কাজ করুন। ঈমানসহ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাসূল ﷺ এর পদ্ধতিতে আমল করলেই কেবল তা কবুল হবে।
২. ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি- (১) আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ ﷺ আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য দেয়া, (২) সালাত কায়েম করা, (৩) যাকাত দেয়া, (৪) হজ্জ করা এবং (৫) রমযান মাসে সিয়াম পালন করা।
বুখারী ১ম খন্ড, হাদীস নং ৭।
৩. আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, প্রকৃত মুসলিম সে, যার জিহবা ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে এবং প্রকৃত মুহাজির সে, যে আল্লাহ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে।
বুখারী, ১ম খন্ড, হাদীস নং ৯।
৪. আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলামে কোন্ কাজটি উত্তম? তিনি বললেন, যার জিহবা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। বুখারী ১ম খন্ড, হাদীস নং ১০।
অন্য বর্ণনায়, তুমি খাবার খাওয়াবে ও পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম করবে। বুখারী, হাদীস নং ১১ ও ২৭
রাসূল ﷺ বলেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হবে না যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করবে।
বুখারী, হাদীস নং ১২।
শিক্ষাঃ কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না। ইসলামে সন্ত্রাস, হরতাল, ভাংচুর, অন্যকে কষ্ট দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৫. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, সেই পবিত্র সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে বেশী প্রিয় হই।
বুখারী হাদীস নং ১৩।
৬. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশী প্রিয় হই। বুখারী, হাদীস নং ১৪।
৭. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায়- ১। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয়, ২। কাউকে খালিসভাবে আল্লাহর জন্যই মুহববত করা, ৩। কুফরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা।
বুখারী, হাদীস নং ১৫ ও ২০।
জ্ঞাতব্যঃ রাসূল ﷺ এর প্রিয় হলো সে, যে সুন্নত অনুযায়ী আমল করে এবং বিদআতকে বর্জন করে।
৮. আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ সাহাবীদেরকে যখন কোন আমলের নির্দেশ দিতেন, তখন তাঁরা যতটুকুর সামর্থ রাখতেন ততটুকুরই নির্দেশ দিতেন। একবার তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো আপনার মত নই। আল্লাহ আপনার পূর্বের ও পরের সকল ত্রুটি মাফ করে দিয়েছেন। একথা শুনে তিনি রাগ করলেন, এমনকি তাঁর চেহারায় রাগের চিহ্ন প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের চাইতে আল্লাহকে আমিই বেশি ভয় করি ও বেশি জানি। বুখারী, হাদীস নং ১৯।
৯. রাসূল ﷺ বলেন, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হল, ইলম (জ্ঞান) লোপ পাবে, অজ্ঞতার বিস্তৃতি ঘটবে, মদপান ব্যাপক হবে ও ব্যাভিচার ছড়িয়ে পড়বে। বুখারী, হাদীস নং ৮০।
জ্ঞাতব্যঃ চারিদিকে পাপাচার ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামের নামে শিরক-বিদআত বাড়ছে। অধিকাংশ লোক দ্বীনকে দুনিয়া লাভের জন্য ব্যবহার করছে। তাই যথাসম্ভব বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘরে বসে কুরআন-সুন্নাহ (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ইত্যাদি) থেকে দ্বীন ইসলামের জ্ঞান অর্জন করুন। সেই অনুযায়ী আমল করুন।
১০. আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেন, তোমরা আমার উপর মিথ্যারোপ করো না, কারণ আমার উপর যে মিথ্যারোপ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। বুখারী,১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭৭, হাদীস ১০৭।
তাই সাবধান, যাচাই বাচাই না করে জাল/জয়ীফ হাদীস প্রচার করা থেকে বিরত থাকুন। অনুবাদসহ কুরআন পড়ুন এবং বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও নাসাঈ থেকে সহীহ হাদীস পড়ুন। বিশুদ্ধভাবে নিজে আমল করুন। সহীহ হাদীস প্রচার করুন।
১১. হুযায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রুকু-সিজদা পুরোপুরি আদায় করছিল না। সে যখন সালাত শেষ করলো তখন তাকে হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, তোমার সালাত ঠিক হয়নি। এ কথাও বলেন, এ অবস্থায় তোমার মৃত্যু হলে তা মুহাম্মদ ﷺ এর তরীকা অনুযায়ী হবে না।
১২. আবু কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকাত সালাত আদায় করে। পৃ-২৪৪, হাদীস ৪৩১। মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ এসব কিতাবেও হাদীসটি আছে।
এটি রাসূল ﷺ এর নির্দেশ যা অমান্য করা অন্যায়। মসজিদে গিয়ে বসার পূর্বে দু’রাকাত সালাত আদায় করুন। সালাতের নেকীর সাথে সুন্নত জিন্দা করার সওয়াব পাবেন।
* মসজিদ নিয়ে গর্ব করা ও মসজিদ অতিরিক্ত সৌন্দর্যমন্ডিত করা ইয়াহুদী ও নাসারাদের কাজ। পৃ-২৪৪-২৫৫।
উল্লেখ্য যে, পরিস্কার রাখা আর সৌন্দর্যমন্ডিত করা এক নয়। মসজিদে অপ্রয়োজনীয় সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার চেয়ে বিদআত মুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। সহীহ হাদীসের দলিলবিহীন, শিরক বিদআতে ভরা, মুরুবিব/বুজুর্গদের কিচ্ছা কাহিনী ও স্বপ্নের বিবরণ লেখা কিতাব পড়া ও শোনা থেকে বিরত থাকুন। মসজিদে কুরআন ও সহীহ হাদীসের (বুখারী, মুসলিম) তালিম চালু করুন। সাধারণ মুসলিম কুরআনের জ্ঞান শূণ্য। মসজিদে কুরআন বুঝার ক্লাশ ও তাফসীর পড়া চালু করুন। অনেক নেকী হবে।
১৩. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবনে মাসউদ (রাঃ) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার প্রতি সদ্বব্যবহার। আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৭, বুখারী, হাদীস নং ৫০২।
১৪. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূল ﷺ কে বলতে শুনেছেন, বলত যদি তোমাদের কারো বাড়ীর সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। রাসূল ﷺ বললেন ঃ এ হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। বুখারী, ২য় খন্ড, পষ্ঠা ৭, হাদীস ৫০৩।
* বিনয়/খুশু-খুযুর সাথে সালাত আদায় করুন।
১৫. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আজকাল কোন জিনিসই সে অবস্থায় পাই না, যেমন নবী ﷺ এর যুগে ছিল। প্রশ্ন করা হল, সালাতও কি? তিনি বললেন, সে ক্ষেত্রেও যা হক নষ্ট করার তা-কি তোমরা করনি।
বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-৮, হা ৫০৪ ও ৫০৫।
অন্য হাদীসে আছে, তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে গোপনে কথা বলে (মুনাজাত করে)।
বুখারী,২য় খন্ড, পৃ-৮, হা-৫০৬।
উল্লেখ্য, ফরজ সালাতের পরে সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করার কথা কোন হাদীসে পাওয়া যায় না তাই এটা বিদআত। এটা বর্জন করুন। ফরজ সালাতের পর সহীহ হাদীসে উল্লেখিত মাসনুন দু‘আগুলো পড়ুন।
১৬. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আসরের সালাত আদায় করতাম, তারপর আমাদের কোন গমনকারী কুবার দিকে যেত এবং সূর্য যথেষ্ট উপরে থাকতেই সে তাদের কাছে পৌঁছে যেত। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-১৫, হা-৫২৩।
১৭. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তির আসরের সালাত ছুটে যায়, তাহলে যেন তার পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদ সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেল। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-১৬, হা-৫২৫।
যে ব্যক্তি আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার আমল নষ্ট হয়ে যায়।
বুখারী, হা-৫২৬, ৫৬৭।
১৮. রাফি ইবনে খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমরা নবী ﷺ এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করে এমন সময় ফিরে আসতাম যে, আমাদের কেউ (তীর নিক্ষেপ করলে) নিক্ষিপ্ত তীর পতিত হওয়ার স্থান দেখতে পেত।
বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-২০, হা-৫৩২।
* প্রথম ওয়াক্তে (আওয়াল ওয়াক্তে) সালাত আদায় করুন।
১৯. মুহাম্মদ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ যোহরের সালাত প্রচন্ড গরমের সময় আদায় করতেন। আর আসরের সালাত সূর্য উজ্জল থাকতে আদায় করতেন, মাগরিবের সালাত সূর্য অস্ত যেতেই আর ইশার সালাত বিভিন্ন সময়ে আদায় করতেন। যদি দেখতেন, সবাই সমবেত হয়েছেন, তাহলে তখনই আদায় করতেন। আর যদি দেখতেন লোকজন আসতে দেরী করছে তাহলে বিলম্ব করতেন। আর ফজরের সালাত রাসূল ﷺ অন্ধকার থাকতে আদায় করতেন। বুখারী, হা-৫৩৩।
অবশ্য প্রচন্ড গরমের সময় দেরী করে যোহরের সালাত আদায়েরও হাদীস আছে।
২০. আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মুসলিম মহিলাগণ সর্বাঙ্গ চাদরে ঢেকে রাসূল ﷺ এর সঙ্গে ফজরের জামা’আতে হাযির হতেন। তারপর সালাত আদায় করে তারা যার যার ঘরে ফিরে যেতেন। হালকা আঁধারের কারণে তাঁদেরকে চিনতে পারত না। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-২৮, হা-৫৫১।
২১. আবু বারযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল ﷺ ইশার পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-২৪, হা-৫৪১ ও ৫৭২।
২২. রাসূল ﷺ বলেছেন, প্রত্যেক আযান ও ইকামাতের মধ্যে সালাত রয়েছে। একথা তিনি তিনবার বলেন, তারপর বলেন, যে চায় তার জন্য।
বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-৪৯, হা-৫৯৬, ৫৯৯।
২৩. রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকাত সালাত আদায় করে। বুখারী-৪৪৪, মুসলিম-৭১৪, আবু দাউদ-৪৬৭, তিরমিযি-৩১৬, নাসাঈ-৭৩০, ইবনে মাজাহ-৭৯৯।
২৪. রাসূল ﷺ বলেছেন, আযান ও ইকামাতের মাঝখানের দু‘আ কখনো ফেরত দেয়া হয় না। আবু দাউদ-৫২১, তিরমিযি, নাসাঈ।
২৬. রাসূল ﷺ বলেছেন, যখন তোমরা ইকামাত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত ধীরস্থিরতা ও গাম্ভীর্য বজায় রাখা। তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পুরা করে নিবে। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-৫৪, হা-৬০৮, ৬১০।
২৮. অন্য হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি সকালে বা বিকালে যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর আয়োজন করেন।
বুখারী, হাদীস নং-৬২৯।
* সালাতের জন্য দৌড়ে আসা নিষেধ। ধীরে ধীরে আসুন।
২৯. রাসূল ﷺ এক ব্যক্তিকে দু’রাকাত সালাত আদায় করতে দেখলেন তখন ইকামত হয়ে গেছে। সালাত শেষে লোকেরা তাকে ঘিরে ধরল, রাসূল ﷺ বললেন, ফজরের সালাত কি চার রাকাত? ফজরের সালাত কি চার রাকাত?
* ইকামাত হয়ে গেলে অন্য সালাত আদায় করা যাবে না।
(বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-৬৪, হা-৬৩০)
৩০. আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ ঘরে থাকা অবস্থায় কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন, পরিবারকে সহায়তা করতেন আর সালাতের সময় হলে সালাতে চলে যেতেন। বুখারী, হাদীস নং ৬৪২।
৩১. একবার মালিক ইবনে হুওয়াইরিস (রাঃ) মসজিদে সালাত আদায় করে লোকদেরকে রাসূল ﷺ এর সালাত আদায়ের পদ্ধতি দেখালেন। তাতে তিনি প্রথম রাকাতের সিজদা শেষ করে যখন মাথা উঠাতেন, তখন দাঁড়াবার আগে একটু বসে নিতেন। (শিক্ষনীয় অংশবিশেষ)
বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৭০, হাদীস নং-৬৪৩।
৩২. আনাস (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ সালাত সংক্ষেপে এবং (রুকু, দাড়ানো, সিজদা, বসা ইত্যাদি) পূর্ণভাবে (ধীরে-সুস্থে) আদায় করতেন।
২য় খন্ড, পৃ-৮৭, হা-৬৭১।
৩৩. নবী ﷺ বলেন, আমি অনেক সময় দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি।
২য় খন্ড, হা-৬৭২-৬৭৫।
শিক্ষাঃ মসজিদে মহিলাদের জন্য সালাতের ব্যবস্থা থাকা ভাল। মহিলারা পর্দার সাথে শিশুদের নিয়েও মসজিদে যেতে পারবে। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-১৬০-১৬৩ দেখুন।
মার্কেটে, পার্কে, পিকনিকে, বেহায়াপনায়, নাচ-গানের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করুন।
৩৪. নুমান ইবনে বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নিবে, তা না হলে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করে দিবেন। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-৯৩, হা-৬৮২, ৬৮৩।
৩৫. আনাস (রাঃ) বলেন, সালাতের ইকামাত হচ্ছে, এমন সময় রাসূল ﷺ আমাদের দিকে মুখ করে তাকালেন এবং বললেন, তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নাও আর মিলে দাঁড়াও। বুখারী, পৃ-৯৩, হা ৬৮৪ (কাতার সোজা করার সময় মুক্তাদিদের প্রতি ইমামের ফিরে দেখা অনুচ্ছেদ)
কাতার সোজা করা সালাতের পূর্ণতার অঙ্গ। সালাতের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকেই তার পাশ^র্বর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম। বুখারী, পৃ-৯৫, হা-৮৯। কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলানো অনুচ্ছেদ।
বিস্তারিত জানার জন্য মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ ইত্যাদি কিতাবসমূহের ‘‘কাতার সোজা করা’’ অধ্যায় দেখুন।
শিক্ষাঃ ইমামকে ইকামাত হওয়ার পর মুসল্লিদের দিকে ফিরে বলতে হবে, ‘‘কাতার সোজা করে দাঁড়ান, মিলে মিশে দাঁড়ান, দুজনের মাঝখানে ফাঁকা বন্ধ করুন, ফাকা থাকলে সেখানে বকরীর বাচ্চার মত শয়তান প্রবেশ করে ওসওয়াসা দিয়ে সালাতের মনোযোগ নষ্ট করে।’’ আবু দাউদ। জামায়াতে সালাত আদায়ের সময় মুসল্লিদেরকে পরস্পরের কাঁধের সাথে কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে।
এটা নবীর নির্দেশ, সাহাবীদের আমল। ফাকা রাখা সুন্নতের খেলাফ। এজন্যই হয়ত আমাদের মাঝে এত মতবিরোধ। মতভেদ বাদ দিয়ে সুন্নতের উপর আমল করুন। সুন্নত জিন্দা করুন।
৩৬. তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাতরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেঁধে রাখতেন। সুনানে আবু দাউদ, ১ম খন্ড, কিতাবুস সালাত অধ্যায়, পৃষ্ঠা নং ৪১১, বুখারী, হাদীস নং ৭৫৯। এই হাদীসটি সহীহ, সহীহ ইবনে খুযায়মাতে এর একটি সাহেদ (সমার্থক) হাদীস আছে, বুখারী, হাদীস নং ৪৫৯।
নাভীর নিচে হাত বাঁধার হাদীসগুলো সহীহ নয়। দেখুন আবু দাউদ, পৃষ্ঠা নং ৪১০।
দল-মত মতভেদ ভুলে নাবী ﷺ এর অনুরূপ আমল করাটাই (সালাতে বুকের উপর হাত বাঁধাটাই) মুসলিম উম্মাহর জন্য নিরাপদ ও সঠিক। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকটা বুঝার ও আমল করার জন্য তৌফিক দান করুন। আমিন।
৩৭. সালিম ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বলেন, রাসূল ﷺ যখন সালাত শুরু করতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপভাবে দু’হাত উঠাতেন এবং সামিআ’ল্লাহু লি মান হামিদাহ ও রাববানা ওয়া লাকাল হামদ বলতেন। কিন্তু সিজদায় এরূপ করতেন না। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ১০০, ৬৯৯। বর্ণনাকারী রাবীঃ আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রঃ)। এই হাদীস অনেক সনদে আছে।
৩৮. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি রাসূল ﷺ কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন এবং যখন রুকু’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন এবং সামিআ’ল্লাহু লি মান হামিদাহ বলতেন। কিন্তু সিজদায় এরূপ করতেন না। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১০০, হাদীস নং ৭০০, অনুচ্ছেদঃ তাকবীরে তাহরীমা, রুকুতে যাওয়া এবং রুকু থেকে উঠার সময় উভয় হাত উঠানো।
৩৯. আবু কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মালিক ইবনে হুওয়ায়রিস (রাঃ) কে দেখেছেন, তিনি যখন সালাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসূল ﷺ এরূপ করেছেন।
বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১০১, হাদীস ৭০১। বর্ণনাকারীঃ ইসহাক ওয়াসিতী (রঃ)। এই হাদীস অনেক সনদে আছে।
৪০. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ কে তাকবীর দিয়ে সালাত শুরু করতে দেখেছি, তিনি যখন তাকবীর বলতেন তখন তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং কাঁধ বরাবর করতেন। আর যখন রুকুর তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন সামিআ’ল্লাহু লি মান হামিদাহ বলতেন তখনও এরূপ করতেন এবং রাববানা ওয়া লাকাল হামদ বলতেন। কিন্তু সিজদায় যেতে এরূপ করতেন না।
৪১. নাফি (রঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনে উমর (রাঃ) যখন সালাত শুরু করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং দু’হাত উঠাতেন আর যখন রুকু করতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এর যখন সামিআ’ল্লাহু লিমান হামিদাহ বলতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন এবং দু’রাকাত আদায়ের পর যখন দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন।
এ সমস্ত রাসূল ﷺ থেকে বর্ণিত বলে ইবনে উমর (রাঃ) বলেছেন। এ হাদীসটি হাম্মাদ ইবনে সালামা ইবনে উমর (রাঃ) এর সূত্রে নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনে তাহমান, আইউব ও মূসা ইবনে উকরা (রঃ) থেকে এ হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১০২, হাদীস ৭০৩।
এসব হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, সালাতে রুকুতে যাওয়ার সময়, রুকু থেকে উঠার পর ও ৩/৪ রাকাতের সালাতের ২য় রাকাত থেকে উঠার পর দু’হাত কাধ পর্যন্ত উঠানো (রফউল ইয়াদাইন করা) রাসূল ﷺ এর একটি উত্তম সুন্নত- যা তাঁর সাহাবীগণ ও যুগে যুগে তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী, ইমাম, মুহাদ্দিসগণ পালন করেছে এবং সর্বযুগের সুন্নতের অনুসারী মুসলিমগণ পালন করছেন। হাজীদের কাছে জেনে দেখুন মক্কা-মদিনা ও আরব বিশে^র বহু মুসল্লিরা এটা পালন করেন। ইমাম বুখারী এ ব্যাপারে ’’জুজউল রউফল ইয়াদাইন’’ নামে স্বতন্ত্র একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। সুতরাং রউফল ইয়াদাইনকে আহলে হাদীসদের রীতি বলে বিদ্বেষবশত পরিত্যাগ করা রীতিমত অন্যায়। ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেন, হাদীস সহীহ হলে সেটাই আমার মাযহাব। এর উপর আমল না করা সুন্নতের পরিপন্থী। আর রসুল ﷺ এর সুন্নতকে অপছন্দ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহের একটি অন্যতম কারণ। সুতরাং সাবধান। রাফউল ইয়াদাইন না করলে আপনার সালাত রাসূল ﷺ এর সালাতের মত হলো না। আর রাসূল ﷺ কে আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাত শেখানো হয়েছে, জিবরাঈল (আঃ) ক্বাবা ঘরের পাশে নিজে নবী ﷺ কে সালাত আদায় করে শিখিয়েছেন। বুখারী, ২য় খন্ড, ৪৯৭; মুসলিম, ২য় খন্ড, ১২৫৪, ১২৫৫, তিরমিযি-১৪২, মিশকাত, আলীম ক্লাসে পাঠ্য, ২য় খন্ড ৫৩৭।
রাসূল ﷺ এর সুন্নতকে অনুসরণ করা সকল মুসলিমের জন্য অপরিহার্য আর রাসূল ﷺ এর সুন্নতের বিরুধীতা করা মারাত্মক গুনাহ। (আখেরাতে মুক্তি পাবার জন্য কুরআন ও সহীহ হাদীস বুঝে বুঝে পড়ে দেখুন)।
রাসূল ﷺ কে সত্যিই যদি ভালোবেসে থাকেন আর আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চান (সূরা আলে ইমরান ৩১) এবং আমল নষ্ট না করতে চান (সূরা মুহাম্মদ ৩৩) তবে সালাতে রফউল ইয়াদাইন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অন্যান্য সুন্নতকে ভালবাসুন, আমল করুন এবং সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত সুন্নতকে নয় বরং সকল প্রকার শিরক-বিদআত পরিত্যাগ করুন। না জানার কারণে আমরাও আগে আমল করিনি। কিন্তু এখন করছি এবং আমাদের মত অনেকেই এখন আমল করছে। আপনিও করুন। সুন্নত জিন্দা করার দলে যোগ দিন। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার জন্য তৌফিক দান করুন। আমিন।
সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর সূরা ফাতেহা পড়া জরুরী, মুকীম অবস্থায় হোক বা সফরে, সশব্দ কিরাআতের সালাত হোক বা নিঃশব্দের, সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর সূরা ফাতেহা পড়া জরুরী। বুখারী, ২য় খন্ড, পৃ-১০৮, অনুচ্ছেদ-৪৮৭।
৪৩. রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাতে সূরা ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হল না। বুখারী, হা-৭২০।
৪৪. ইমামের সশব্দে আমীন বলা। আতা (রঃ) বলেন, আমীন হল দু‘আ। তিনি আরও বলেন আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) ও তাঁর পিছনের মুসুল্লীগণ এমনভাবে আমীন বলতেন যে, মসজিদে গুমগুম আওয়াজ হতো। (মক্কা-মদিনায় আজও হয়, হাজিদের জিজ্ঞাসা করুন) আবু হুরায়রা (রাঃ) ইমামকে ডেকে বলতেন আমাকে আমীন বলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবেন না। নাফি (রঃ) বলেন, ইবনে উমর (রাঃ) কখনই আমীন বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদেরকে আমীন বলার জন্য উৎসাহিত করতেন। বুখারী, পৃ-১২০।
রাসূল ﷺ বলেছেন, ইমাম যখন আমীন বলেন, তখন তোমরাও আমীন বল। কেননা, যার আমীন ও ফিরিশতাদের আমীন এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ইবনে শিহাব (রঃ) বলেন, রাসূল ﷺ আমীন বলতেন। বুখারী, পৃ-১২১, হা-৭৪৪। মুক্তাদীর সশব্দে আমীন বলা। অনুচ্ছেদ ৫০৪।
মুসলিম, আবু দাউদ সহ অন্যান্য হাদীসের কিতাবেও দেখতে পারেন। অন্য কারো কথা মানবেন না, গুনাহ মাফের এত বড় সুযোগ ছাড়বেন না। জেহরী সালাতে উচ্চস্বরে আমিন বলুন। এটাই সঠিক। না জানার কারণে আমরাও এই হাদীসগুলোর উপর আমল করতাম না। এখন জানার পর আমল করছি। আপনারাও আমল করুন।
৪৫. রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অন্যকে কুরআন শিক্ষা দেয়। বুখারী, হা- ৫০২৭।
৪৬. রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমরা কুরআন পাঠ কর, কুরআন কিয়ামতের দিন পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে। মুসলিম, হা- ১৭৪৭,।
৪৭. রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ কি পছন্দ করে বুহতান নামক জায়গা থেকে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করে দুইটি উট নিয়ে আসবে। সাহাবীরা বলছেন, আমরা সবাই পছন্দ করি। রাসূল ﷺ বললেন, তোমাদের কেউ সকালে মসজিদে গিয়ে কুরআন থেকে দুইটি বা তিনটি আয়াত শিখে বা অন্যকে শিখায় না কেন? মুসলিম, হা- ১৯০৯।
কুরআন পড়া, শিক্ষা দেয়া, অনুবাদসহ পড়ে শোনানোর জন্য উত্তম সময় হলো ফজরের সালাতের পর। দিনের অন্যান্য সময় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই যারা কুরআন পড়তে পারেন তাদের কাছে অনুরোধ ফজরের সালাতের পর মাসনুন দু‘আগুলো শেষ করে যারা কুরআন পড়তে পারেন না তাদেরকে কুরআন শেখান, অনুবাদসহ পড়ে শোনান। আগ্রহী কেউ না থাকলে অন্তত নিজে কিছুক্ষণ কুরআন পাঠ করুন। তাহলে অন্যদের আগ্রহ বাড়বে। যারা পড়তে পারেন না তারা যারা পড়তে পারেন তাদের কাছে পড়তে শিখুন। ৩০/৪০ দিনের মধ্যেই কুরআন পড়া শিখতে পারবেন ইন-শা-আল্লাহ।
অনেকেই মসজিদে প্রবেশ করে সময় থাকলেও বসে পড়েন। এটা সুন্নতের বিরোধী। মসজিদে প্রবেশের পর সময় থাকলে বসার পূর্বে দুই রাকাত সালাত আদায় করুন, তারপর সময় থাকলে একা একা হাত তোলে চুপি চুপি দু‘আ করুন। (হাদীস উপরে উল্লেখ্য করা হয়েছে)। আমাদের দেশে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে এমনিতেই বসে থাকেন। মক্কা মদীনায় দেখেছি সময় পেলেই লোকজন কুরআন পাঠ করছে। এটা খুবই ভাল অভ্যাস। তাই সময় থাকলে নিমণস্বরে কুরআন পাঠ করুন। একদিকে কুরআন পাঠ করার জন্য নেকী পাবেন অন্যদিকে আপনাকে দেখে প্রভাবিত হয়ে বা আপনার প্রচারে অন্য যারা আমল করবেন তাদের নেকীও আপনি পাবেন।
৪৮. রাসূল ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ ফজরের সালাতের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে বসে আল্লাহর যিকির করে অতপর দুই রাকাত সালাত আদায় করে সে এক কবুল হজ্বের ও উমরার সওয়াব পাবে। তিরমিযী, হা- ৫০৮৬।
আল্লাহ আমাদের বুঝার ও আমল করার তৌফিক দিন। আমিন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/310/39
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।