মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ (ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. এর যাদুল মা‘আদ হতে সংক্ষেপিত)
লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন উসমান আল-মাযইয়াদ
১০
(৮) মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফন প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ: ১/৪৭৯।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/10
১. মৃতব্যক্তির কাফন-দাফন প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা ছিল সর্বাধিক পূর্ণাঙ্গ এবং অন্যান্য জাতির নীতিমালা হতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং মৃতব্যক্তির প্রতি তার পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-পরিজনের দয়া-অনুগ্রহের সর্বোত্তম নিদর্শন; যার প্রথমে ছিল অসুস্থতার সময় তাকে দেখা-শোনা করা, পরকালীন জীবনের সুখ-শান্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং তাকে ওসীয়্যাত ও তাওবা করার জন্য উৎসাহিত করা। আর উপস্থিত লোকদের নির্দেশ প্রদান করা তারা যেন তাকে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সাক্ষ্যবাণীর তালক্বীন করে থাকে, যাতে উক্তবাণী তার সর্বশেষ কথা হয়।
২. তিনি ছিলেন আল্লাহর ফায়সালার উপর সৃষ্টির সর্বাধিক সন্তুষ্ট এবং সর্বাধিক তাঁর প্রশংসাকারী, তিনি ছেলে ইবরাহীমের মৃত্যুতে দয়াপরশ হয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্রন্দন করেন, কিন্তু তাঁর অন্তর আল্লাহর সন্তুষ্টি ও শোকরে পরিপূর্ণ এবং যবান মুবারাক আল্লাহর যিকর ও প্রশংসায় মাশগুল ছিল। তিনি বলেন: “চক্ষু অশ্রুসিক্ত এবং অন্তর দুঃখিত, কিন্তু মুখে শুধু এমন কথাই বলব, যাতে প্রভু হন সন্তুষ্ট।” [বুখারী ও মুসলিম।]
৩. জাহিলী যুগের অনুসরণে গাল চিরে, জামা-কাপড় ছিঁড়ে ও চিৎকারে করে মৃত্যের জন্য বিলাপ করতে তিনি নিষেধ করেছেন।
৪. তাঁর আদর্শ ছিল মাইয়্যেতের কাফন-দাফনে তাড়াহুড়া করা, মাইয়্যেতকে পরিষ্কার-পবিত্র করা এবং সাদা কাপড় দ্বারা কাফন দেওয়া।
৫. তাঁর আদর্শ ছিল মাইয়্যেতের মুখমণ্ডল ও শরীর ঢেকে দেওয়া এবং চক্ষুদ্বয় বন্ধ করে দেওয়া।
৬. তিনি কখনো কখনো মাইয়্যেতকে চুমু দিতেন।
৭. তিনি মাইয়্যেতকে তিনবার, পাঁচবার, প্রয়োজনবোধে আরো বেশীবার ধৌত করার এবং শেষ বারে তার গায়ে কর্পুর কিংবা কর্পুর জাতীয় কোনো সুগন্ধ বস্তু ছিটিয়ে দিতে আদেশ করেন।
৮. তিনি যুদ্ধে নিহত শহীদকে গোসল দিতেন না এবং তাঁদের থেকে চামড়ার নির্মিত বস্তু ও লোহা জাতীয় জিনিসগুলো খোলে নিতেন, আর তাঁদেরকে রক্তমাখা কাপড়-চোপড়সহ দাফন করতেন এবং তাঁদের উপর জানাযার সালাত কখনও পড়েননি।
৯. হজ্জ-ওমরার ইহরামকারী ব্যক্তিকে কুল পাতা মিশানো পানি দ্বারা গোসল দিতে এবং তার ইহরামের কাপড় দ্বারা কাফন দিতে নির্দেশ দেন, আর তাকে কোনো সুগন্ধি বস্তু স্পর্শ করানো এবং তার মাথা চাদর দ্বারা ঢেকে দিতে নিষেধ করেন।
১০. তিনি মৃতের অভিভাবককে সুন্দর ও সাদা কাপড়ে কাফন দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং কাফনে বেশী দামী কাপড় ব্যবহার করতে বারণ করেন।
১১. তাঁর আদর্শ ছিল যদি কাফন ছোট-খাট হতো, যাদ্বারা মাইয়্যেতের সম্পূর্ণ শরীর আবৃত করা যেতো না, তাহলে তিনি তার মাথা ঢেকে পায়ের দিকে কিছু তাজা ঘাস রেখে দিতেন।”
(ক) জানাযার সালাত প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ: ১/৪৮৫।]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের বাহিরে মাইয়্যেতের উপর জানাযার সালাত আদায় করতেন, আবার কখনো মসজিদের ভিতর জানাযার সালাত পড়েন, কিন্তু তা তাঁর নিয়মিত আদর্শ ছিল না।
২. যখন তাঁর কাছে কোনো মাইয়্যেত আনা হতো, তখন তিনি তার ঋণ পরিশোধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন।” [বুখারী, মুসলিম।] তার উপর কোনো ঋণ না থাকলে জানাযার সালাত পড়তেন, নচেৎ তিনি নিজে তার উপর জানাযার সালাত পড়তেন না, সাহাবীদেরকে পড়ার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর আল্লাহ্ যখন তাঁকে বিজয়ী করেন, তখন তিনি ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির উপর জানাযার সালাত পড়েন এবং নিজেই তার ঋণ পরিশোধ করতেন, আর তার পরিত্যক্ত ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে দিতেন।
৩. তিনি যখন জানাযার সালাত শুরু করতেন তখন তাকবীর দিতেন তারপর আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করতেন এবং দু‘আ করতেন, আর তিনি চার তাকবীর দ্বারা জানাযার সালাত আদায় করতেন, তবে কখনো কখনো পাঁচ তাকবীর দেন।
৪. তিনি মাইয়্যেতের জন্য নিষ্ঠার সাথে দু‘আ করার নির্দেশ দেন এবং তাঁর থেকে নিম্নোক্ত দু‘আ পাঠ সংরক্ষিত আছে:
( اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وأنثانا، اللهم من أحييته منا فأحيه على الإسلام، ومن توفيته منا فتوفه على الإيمان، اللهم لا تحرمنا أجره ولا تفتنا بعده ).
“হে আল্লাহ! আমাদের জীবতি ও মৃত, উপস্থিত-অনুপস্থিত, আর আমাদের ছোট-বড় এবং আমাদের নর-নারী সবাইকে ক্ষমা করে দাও, হে আল্লাহ! আমাদের মধ্য হতে যাকে তুমি জীবিত রাখতে চাও, তাকে তুমি ইসলামের উপর জীবিত রাখো, আর যাকে তুমি মৃত্যু দিতে চাও, তাকে তুমি ঈমানের উপর মৃত্যু দাও, হে আল্লাহ্! এই মাইয়্যেতের প্রতিদান থেকে আমাদের বঞ্চিত করো না এবং এর পরে আমাদের ফেতনায় লিপ্ত করো না।
( اللهم اغفر له، وارحمه، وعافه، واعف عنه، وأكرم نزله، ووسع مدخله، واغسله بالماء والثلج والبرد، ونقه من الخطايا كما نقيت الثوب الأبيض من الدنس، وأبدله خيراً من داره وأهلاً من أهله، وزوجاً خيراً من زوجه، وأدخله الجنة وأعذه من عذاب القبر ومن عذاب النار )
“হে আল্লাহ্ তুমি তাকে মাফ কর, তার উপর রহম কর, তাকে পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখ, তাকে ক্ষমা কর, মর্যাদার সাথে তার আতিথেয়তা কর, তার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও, তুমি তাকে ধৌত কর পানি, বরফ ও শিশির দিয়ে, তুমি তাকে গুনাহ হতে এমনভাবে পরিষ্কার কর যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিষ্কার করা হয়, আর তার পার্থিব ঘরের চেয়ে তুমি তাকে একটি উত্তম ঘর দান কর এবং তার পরিবারের বদলে এক উত্তম পরিবার এবং জোড়ার চেয়ে এক উত্তম জোড়া দান কর, আর তাকে তুমি জান্নাতে দাখিল কর এবং কবরের আযাব ও জাহান্নামের আগুনের শাস্তি থেকে তাকে মুক্তি দাও।
৫. তিনি পুরুষ লাশের মাথা বরাবর এবং মহিলা লাশের মাঝ বরাবর দাঁড়াতেন।
৬. তিনি নাবালেগ শিশুর উপর জানাযার সালাত পড়তেন, আর তিনি আত্মহত্যাকারী এবং গনীতমের মালে খেয়ানতকারীর উপর জানাযার সালাত পড়তেন না।
৭. তিনি জুহানিয়্যাহ গোত্রের সেই মহিলার উপর জানাযার সালাত পড়েন, যার উপর তিনি ব্যভিচারের দণ্ডবিধি প্রয়োগ করেছিলেন।
৮. তিনি বাদশাহ নাজাশীর উপর গায়েবী জানাযা পড়েন, কিন্তু প্রত্যেক মাইয়্যেতের উপর গায়েবী জানাযা পড়া তাঁর আদর্শ ছিল না।
৯. তাঁর আদর্শ ছিল কারো উপর জানাযার সালাত ছুটে গেলে, তিনি তা তার কবরের উপর আদায় করতেন।”
(খ) দাফন ও তার সংশ্লিষ্ঠ বিষয়াদি প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ: ১/৪৯৮]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযা শেষে লাশের আগে-আগে পাঁয়ে হেঁটে গোরস্থান পর্যন্ত যেতেন এবং যানবাহনে আরোহণকারীদের জন্য লাশের পিছনে থাকা সুন্নাত করেন, আর পাঁয়ে হেঁটে গমনকারীগণ যেন লাশের নিকটে থাকে সামনে কিংবা পিছনে, ডানে কিংবা বামে এবং লাশ বহন করে তাড়াতাড়ি চলার নির্দেশ দেন।
২. তিনি বসতেন না যতক্ষণ না যমীনে লাশ রাখা হতো।
৩. তিনি জানাযার সম্মানার্থে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন, কিন্তু বসে থাকাও তাঁর থেকে সহীহ্ হাদীসে প্রমাণিত আছে।
৪. তাঁর আদর্শ ছিল সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্ত এবং ঠিক দুপরের সময় মাইয়্যেত দাফন না করা।
৫. তাঁর আদর্শ ছিল কবর লাহদ করা, কবর গভীর করা এবং মাইয়্যেতের মাথা ও পাঁদ্বয় বরাবর কবরকে প্রশস্ত করা।
৬. তিনি দাফন শেষে মাইয়েতের উপর তার মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি নিক্ষেপ করতেন।
৭. তিনি মাইয়্যেত দাফন শেষে তার কবরের উপর দাঁড়িয়ে সাওয়াল-জওয়াবে সাবিত থাকার জন্য দু‘আ করেন এবং সাহাবীগণকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেন।” [আবু দাউদ।]
৮. তিনি কবরের উপর বসে (কুরআনুল কারীম হতে) কিছু পাঠ করতেন না, আর না মাইয়্যেতকে সাওয়াল-জওয়াব শিক্ষা দিতেন।
৯. তাঁর আদর্শ ছিল মাইয়্যেতের জন্য চিৎকার করে কান্নাকাটি না করা, বরং তিনি তা থেকে কঠোরভাবে বারণ করতেন।”
(গ) কবর ও শোকবার্তা বা সান্তনা প্রদান প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ : ১/৫০৪।]
১. তাঁর আদর্শ ছিল না কবরসমূহ উঁচু করা, তার উপর ঘর তৈরী করা, পাথর-ইট ইত্যাদি দিয়ে গম্বুজের মত তৈরী করা।
২. তিনি আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-কে ইয়ামেন দেশে প্রেরণ করেন, যাতে সকল মুর্তি ভেঙ্গে চুর্ণ বিচুর্ণ করে ফেলেন এবং উঁচু কবরকে ভেঙ্গে সমান করে দেন। অতএব তাঁর আদর্শ হলো উঁচু কবরকে ভেঙ্গে সমান করে দেওয়া।
৩. তিনি কবর চুনা করা, কবরের উপর ঘর তৈরী করা এবং কবরের উপর নাম-ঠিকানা লিখে রাখতে নিষেধ করেন।
৪. যে কবরের পরিচয় রাখতে চায়, তিনি তার উপর একটুকরা পাথর রেখে দিতে বলতেন।
৫. তিনি কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা এবং এসব কর্মে লিপ্ত লোকদের প্রতি অভিসম্পাত করেন।
৬. তাঁর আদর্শ ছিল কবরসমূহ অপমানিত বা পদদলিত না করা, কবরের উপর না বসা এবং তার উপর ঠেস না লাগানো এবং কবরকে মহৎ কিছু মনে না করা।
৭. তিনি সাহাবীদের কবর যিয়ারত করতেন, তাদের জন্য দু‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করার লক্ষ্যে, আর কবর যিয়ারতকারীর জন্য এ দু‘আ পাঠ করা সুন্নাত করেন:
( السلام عليكم أهل الديار من المؤمنين والمسلمين، وإنا إن شاء الله بكم لاحقون، نسأل الله لنا ولكم العافية )
“হে কবরের অধিবাসী মু’মিন-মুসলিমগণ! তোমাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক, আর আমরাও ইন-শা-আল্লাহ্ তোমাদের সাথে মিলিত হবো, আমরা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য এবং তোমাদের জন্য নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।”
৮. তাঁর আদর্শ ছিল মাইয়্যেতের শোকার্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়া, কিন্তু সান্ত্বনা প্রদানের জন্য একত্রিত হওয়া এবং মাইয়্যেতের জন্য কবরের পার্শ্বে কিংবা অন্য কোথাও কুরআনখানী করা তাঁর আদর্শ ছিল না।
৯. তাঁর আদর্শ ছিল মাইয়্যেতের পরিবার যেন লোকদের খাবারের আয়োজনের কষ্ট না করে, বরং তিনি লোকদের নির্দেশ প্রদান করেন: তারা যেন মাইয়্যেতের শোকার্ত পরিবারের জন্য খাবারের আয়োজন করে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।