মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ (ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. এর যাদুল মা‘আদ হতে সংক্ষেপিত)
লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন উসমান আল-মাযইয়াদ
১২
(১০) সিয়াম বা রোযা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালার বিবরণ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/12
(ক) রমযানের রোযা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ : ২/৩০।]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখে চাঁদ দেখা কিংবা কোনো সাক্ষ্যদাতার সাক্ষ্যবাণী ছাড়া মাহে রমযানের রোযা শুরু করতেন না, নচেৎ শা‘বান মাসের গণনায় ত্রিশ দিন পূর্ণ করতেন।
২. ৩০শে শা‘বানের রাত মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে চাঁদ দেখা না গেলে, তিনি মাহে শা‘বানকে ৩০ দিন পূর্ণ করতেন এবং সন্দেহের দিন তথা মেঘাচ্ছন্ন শা‘বানের ৩০ তারিখ মাহে রমাযানের প্রথম দিন হওয়ার সন্দেহে সেই দিন রোযা রাখতেন না, আর না তার নির্দেশ দেন।
৩. তাঁর আদর্শ ছিল মাহে রমযানের ২৯ তারিখে রোযা শেষ করা দু’জন লোকের শাওয়ালের চাঁদ দেখার সাক্ষ্যবাণীর মাধ্যমে।
৪. ঈদের সালাতের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর দু’জন ব্যক্তি চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান করলে তিনি রোযা ছেড়ে দেন এবং সাহাবীদেরকে রোযা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন, অতঃপর দ্বিতীয় দিন সকালে ঈদের সালাত আদায় করেন।
৫. তিনি সূর্যাস্তের সাথে সাথে অনতিবিলম্বে ইফতার করতেন এবং তজ্জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন আর সেহরী খেতেন এবং তজ্জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন এবং সেহরী শেষ রাত পর্যন্ত বিলম্ব করে খেতেন এবং বিলম্ব করে সেহরী খাওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন।
৬. তিনি সালাত আদায়ের পূর্বে ইফতার করতেন এবং তিনি তাজা-পাকা খেঁজুর দ্বারা ইফতার করতেন, তা না পেলে শুষ্ক খেঁজুর দ্বারা এবং তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।
৭. তিনি ইফতার শেষে বলতেন :
( ذهب الظمأ وابتلت العروق وثبت الأجر إن شاء الله )
“পিপাসা দূরীভূত হয়েছে, ধমনীগুলি সিক্ত হয়েছে এবং সাওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইনশা-আল্লাহ।”
৮. তাঁর আদর্শ ছিল মাহে রমাযানে বিভিন্ন প্রকারের ইবাদত অধিক পরিমাণে করা। মাহে রমযানে জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর সাথে পর্যায়ক্রমে কুরআন পাঠ দান করতেন।
৯. তাঁর আদর্শ ছিল মাহে রমযানে অধিক পরিমানে সদকা-খায়রাত, তিলাওয়াতে কুরআন ও যিকর এবং ই‘তেকাফ করা।
১০. তিনি রমযানে কতিপয় ইবাদত বিশেষভাবে করতেন যা তিনি অন্য কোনো মাসে করতেন না, তিনি কখনো সাওমে বেসাল অর্থাৎ বিরতিহীন রোযা রাখতেন, কিন্তু সাহাবীদেরকে তা থেকে বারণ করেন, তবে তাদেরকে সেহরী খাওয়ার সময় পর্যন্ত বিরতিহীন রোযা রাখার অনুমতি দেন।”
(খ) রোযা অবস্থায় জায়েয-নাজায়েয বিষয়াদি প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল-মা‘আদ।]:
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালনকারীকে অশ্লীল কথাবার্তা, গালি-গালাজ ও তার প্রতোত্তর এবং ঝগড়া বিবাদ করা হতে বারণ করেন, বরং যদি কেউ তাকে গালি দেয়, তবে সে উত্তরে ‘আমি সিয়াম পালনকারী’ বলার নির্দেশ দিতেন।” [বুখারী ও মুসলিম।]
২. তিনি মাহে রমযানে সফরকালে কখনো রোযা রাখেন আবার কখনো রোযা ছেড়ে দেন, অনুরূপ সাহাবীদেরকে সফরে রোযা রাখা, না রাখা উভয়ের অনুমতি দেন।
৩. তিনি সাহাবীদেরকে রোযা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিতেন যখন তারা রণাঙ্গনে শত্রুসেনার নিকটবর্তী হতো।
৪. তাঁর আদর্শ ছিল না দূরত্ব বা সীমা নির্ধারণ করা যা অতিক্রম করার পর রোযাদার রোযা ছাড়বে।
৫. বরং সাহাবীগণ সফর শুরু করলেই রোযা ছেড়ে দিতেন এলাকার ঘর-বাড়ী অতিক্রম করার চিন্তা-ভাবনা ছাড়া এবং তাঁরা বলেন: এটা তাঁর আদর্শমালা ও সুন্নাতের অন্তর্গত।
৬. কখনো স্ত্রী সহবাসজনিত অপবিত্র অবস্থায় তাঁর ফযর হয়ে যেতো, তখন তিনি ফজরের পর গোসল করতেন এবং রোযা রাখতেন।
৭. তিনি মাহে রমযানে রোযা অবস্থায় কখনো তাঁর কোনো স্ত্রীকে চুমু দিতেন।
৮. তিনি রোযা অবস্থায় মিসওয়াক করতেন এবং রোযা অবস্থায় মাযমাযা বা কুলি ও ইস্তিন্শাক্ব বা নাকে পানি গ্রহণ করতেন এবং রোযা অবস্থায় প্রচণ্ড গ্রীষ্মজনিত তাপ হ্রাস করার লক্ষ্যে স্বীয় মাথার উপর পানি ঢালতেন।
৯. তাঁর আদর্শ ছিল রোযাদার ভুলবশত পানাহার করলে তার থেকে কাযার হুকুম প্রত্যাহার করে রোযা পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া।
১০. তিনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তি ও মুসাফিরের জন্য রোযা না রেখে পরে কাযা করার অনুমতি দেন, অনুরূপ বিধান গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলাদের জন্য যদি তারা রোযা রাখার দরুন নিজেদের অথবা তাদের শিশুদের ক্ষতির আশংকা রোধ করে থাকে।”
(গ) নফল রোযা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ।]:
১. এ প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা ছিল পূর্ণাঙ্গ ও উদ্দেশ্য হাসিলে শ্রেষ্ঠতম এবং আত্মার উপর সহজতর। তিনি কখনো এতো অধিক রোযা রাখতেন যে, বলা হতো: হয়তো তিনি রোযা আর ছাড়বেন না, আবার তিনি রোযা ছেড়ে দিতেন এমনভাবে যে, বলা হতো: হয়তো তিনি সহসা আর রোযা রাখবেন না, তিনি মাহে রমযান ব্যতীত অন্য কোনো মাসে পূর্ণ মাস রোযা রাখেননি এবং শা’বান মাস ছাড়া আর কোনো মাসে এত অধিক নফল রোযা রাখেননি, আর এমন কোনো মাস অতিবাহিত হতো না যে মাসে তিনি অবশ্যই কয়েক দিন রোযা না রাখতেন।
২. তাঁর আদর্শ ছিল শুধু জুমআর দিনে রোযা রাখা অপছন্দ করা এবং তিনি প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার জন্য খুবই সচেষ্ট থাকতেন।
৩. তিনি আইয়্যামে বীদ্ব তথা প্রতি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোযা রাখা ছাড়তেন না, না সফরে না গৃহে অবস্থানকালে এবং তিনি আইয়ামে বীদ্বে রোযা রাখার জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন।
৪. তিনি প্রত্যেক মাসের শুরুতে তিন দিন রোযা রাখতেন।
৫. তিনি শাওয়ালের ছয় রোযা প্রসঙ্গে বলেন: রমযানের সাথে শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখা সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য।” [মুসলিম।]
আর তিনি রমযানের পর আশুরার (১০ই মুহাররামের) দিনের রোযাকে অন্য যে কোনো দিনের রোযা অপেক্ষা মাহাত্ম্যপূর্ণ মনে করতেন।
৬. তিনি আরাফার (৯ই যুলহাজ্জের) দিনের রোযা প্রসঙ্গে বলেন: উক্ত রোযা বিগত এক বছরের এবং আগামী এক বছরের পাপরাশিকে মোচন করে দেয়।” [মুসলিম।] তবে তাঁর আদর্শ ছিল আরাফার দিন ময়দানে আরফায় অবস্থানকালে রোযা না রাখা।
৭. তাঁর আদর্শ ছিল না সারা বছর রোযা রাখা, বরং এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন: যে কেউ সারা বছর রোযা রাখলো, প্রকৃতপক্ষে সে না রোযা রাখলো, আর না সে রোযা ছাড়লো।” [নাসাঈ।]
৮. তিনি কখনো নফল রোযার নিয়্যাত করতেন, অতঃপর রোযা ছেড়ে দিতেন, আবার কখনো স্বীয় পরিবারের নিকট এসে জিজ্ঞেস করতেন: তোমাদের নিকট কি খাবারের কিছু আছে? যদি তারা উত্তরে বলতো: না, তখন তিনি বলতেন: তাহলে আমি সিয়াম পালন করলাম।” [মুসলিম।]
৯. তিনি বলেছেন : যদি তোমাদের কাউকে খাবারের প্রতি আহ্বান করা হয় অথচ সে রোযাদার, তখন সে উত্তরে বলবে : ‘আমি সিয়াম পালন করছি।”
(ঘ) ই‘তেকাফ প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ : ২/৮২।]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশ দিন মসজিদে এ‘তেকাফ করতেন, যতক্ষণ না আল্লাহ্ আয্যা-ওয়াজাল্লা তাঁকে উঠিয়ে নেন। তবে তিনি একবার ই‘তেকাফে ছিলেন না, অতঃপর তা শাওয়ালে কাযা করেন।
২. তিনি ‘লাইলাতুল ক্বদর’ তালাশ করার লক্ষ্যে একবার প্রথম দশ দিনে ই‘তেকাফ করেন, তারপর মধ্যম দশ দিনে, তারপর শেষ দশ দিনে, অতঃপর যখন তিনি জেনে নিলেন যে, ‘লাইলাতুল ক্বদর’ শেষ দশ দিনে বিদ্যমান, তখন থেকে তিনি সর্বদা শেষ দশ দিনে ই'তেকাফ করতেন, যতক্ষণ না তিনি আল্লাহর নিকট প্রত্যাগমণ করেন।
৩. তিনি কখনই রোযা ছাড়া ই‘তেকাফ করেননি।
৪. তাঁর নির্দেশে মসজিদে একটি ক্ষুদ্রাকৃতির তাঁবু স্থাপন করা হতো, আর তিনি তাতে নির্জনতা অবলম্বন করতেন।
৫. তিনি ই‘তেকাফের ইচ্ছা করলে ফজরের সালাতের পরেই প্রবেশ করতেন।
৬. তিনি ই‘তেকাফ করলে তাঁর বিছনা-পত্র ই‘তেকাফস্থলে রাখা হতো এবং তাতে তিনি একলা নির্জনে প্রবেশ করতেন।
৭. তিনি মানবিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরে যেতেন না।
৮. তিনি স্বীয় মাথা উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা এর ঘরের দিকে বের করে দিতেন, তখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর মাথা আঁচড়ে দিতেন যখন তিনি হায়েয অবস্থায় থাকতেন।
৯. তিনি ই‘তেকাফে থাকা অবস্থায় তাঁর কোনো কোনো স্ত্রী সাক্ষাত করতে যেতেন, সাক্ষাৎ শেষে প্রত্যাবর্তন কালে তিনি তাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্যে বের হন, তখন রাত্রিবেলা ছিল।
১০. তিনি ই‘তেকাফ থাকা অবস্থায় তাঁর কোনো স্ত্রীর সাথে সহবাস করতেন না, আর না কোনো স্ত্রীকে চুমু দিতেন।
১১. তিনি প্রত্যেক বছর দশ দিন করে ই‘তেকাফ করতেন, কিন্তু যেই বছর তিনি মারা যান, সেই বছর বিশ দিন ই‘তেকাফ করেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/12
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।